শব্দ দূষণের আইনের বাস্তবায়ন হচ্ছেনা
নাগরিক ডেস্ক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৩, 12:05 AM
শব্দ দূষণের আইনের বাস্তবায়ন হচ্ছেনা
শব্দদূষণ হলো মানুষের তৈরি একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য পরিবেশগত সমস্যা। পরিবেশ দূষণ এখন এক অসহনীয় মাত্রায় গিয়ে পৌঁছেছে। বিভিন্নভাবে আমাদের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ যেগুলি রয়েছে তার মধ্যে শব্দদূষণ অন্যতম একটি। বর্তমানে শব্দদূষণ যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, সেটা খুবই আশঙ্কাজনক। কিন্তু এই সমস্যা মানুষেরই তৈরি। বিশ্বের সকল উন্নত প্রাণী তথা মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে শব্দ।
আধুনিক মানুষ শ্রবণ এবং দৃষ্টিসংশ্লেষিত ভাষার মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। শব্দ একদিকে মানুষকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে, অন্যদিকে তেমনি উচ্চ বা প্রকট বা বিকট শব্দ মানুষের শ্রবণেন্দ্রিয়কে প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ফলে মানুষ অনেক ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকার আশপাশে বিকট শব্দ সৃষ্টিকারী যন্ত্র চললেও নীরবে সহ্য করে নেন নগরবাসী।
ভুক্তভোগীরা এ ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন। পাশাপাশি আইন-বিধিমালা সম্পর্কেও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পূর্ণ ধারণা নেই বলেও তারা মনে করেন। আবাসিক এলাকার ভেতরে দেখা যায় বাড়ির সামনে উচ্চমাত্রার ইট ভাঙার মেশিন চলে। এতে আশপাশ এলাকার মানুষ অস্থির হয়ে যায়। শিশুরা দুই কান চেপে ধরে সময় কাটায়। রাস্তা দিয়ে হাটাচলার সময় মানুষ উচ্চশব্দে ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে থাকে।
২০০৬-এর বিধিমালার ধারা ১৭ অনুযায়ী, শব্দের মাত্রা অতিক্রম করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যেকোনো সময়ে যেকোনো ভবন বা স্থানে প্রবেশ করে অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আটক করতে পারবেন এবং দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে প্রথম অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারবেন এবং পুনরায় একই অপরাধ করলে অনধিক ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের আইন অনুযায়ী, আবাসিক এলাকার দিনের বেলার শব্দের সহনীয় মান ৫৫ ডেসিবল। আর রাতের বেলা ৪৫। অথচ এর চেয়ে কয়েক গুণ উচ্চমাত্রার শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে নগরবাসী।
পরিবেশ অধিদপ্তরের আইন শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইট ভাঙার মেশিনের শব্দ সহনীয় মাত্রার চেয়ে কমপক্ষে ১০ গুণ, অর্থাৎ ৪৫০ ডেসিবল।’ অথচ এই শব্দ সঙ্গে নিয়ে থাকতে হচ্ছে নগরবাসীকে। শব্দ দূষণকে বলা হয় নীরব ঘাতক। আর বিশেষ করে ঢাকা শহরে শব্দ দূষণের বহু উৎস রয়েছে যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। গাড়ির হর্ন, নির্মাণকাজ, মাইকের ব্যবহার, শিল্পকারখানা কোন ক্ষেত্রেই শব্দ দূষণ বিষয়ে যেসব নিয়ম রয়েছে তা মানা হচ্ছে না। কিন্তু বাংলাদেশে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে যে বিধিমালা রয়েছে সেখানে বিস্তারিত বলা আছে কোন এলাকায়, দিনের কোন সময়ে, কোন ধরনের শব্দের মাত্রা কেমন হবে।
আর তা না মেনে চললে সাজার বিধানও রয়েছে। বিধিমালা অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় রাত নটা থেকে ভোর ছটা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল এবং দিনের অন্য সময়ে ৫৫ ডেসিবেল অতিক্রম করতে পারবে না। বাণিজ্যিক এলাকায় তা যথাক্রমে ৬০ ও ৭০ ডেসিবেল। চারপাশে স্বাভাবিক ও সাধারণভাবে তাকালেও লক্ষ্য করা যাবে যে, এই বিধিমালা সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন গবেষণাতেও দেখা গেছে, বাংলাদেশের কোথাও এই মাত্রা মেনে চলা হয় না, শব্দ সব জায়গায় এই মাত্রার চেয়ে বেশি পাওয়া যায়। ঢাকা শহরে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রায়শই দেখা যায় দিন নেই রাত নেই পাইলিং-এর কাজ, ইট ভাঙার যন্ত্র, সিমেন্ট মিক্সারের যথেচ্ছ ব্যাবহার হচ্ছে। আবাসিক এলাকার শেষ সীমানা থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে নির্মাণ কাজের জন্য ইট বা পাথর ভাঙার মেশিন ব্যবহার করা যাবে না।
কিন্তু ঢাকা শহরে আবাসিক এলাকার শেষ সীমানা বলে কিছু আসলে নেই। রাজনৈতিক সভা থেকে শুরু করে বিয়ে, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, পিকনিক সকল ক্ষেত্রে এর কানফাটানো শব্দ চলে। তবে আইনে শর্ত সাপেক্ষে এর অনুমতিও রয়েছে। খোলা জায়গায় বিয়ে, খেলাধুলা, কনসার্ট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক বা অন্য কোন ধরনের সভা, মেলা, যাত্রাগান ইত্যাদির ক্ষেত্রে শব্দের মাত্রা অতিক্রম করে - এমন যন্ত্র ব্যাবহার করা যাবে। তবে তার জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে, পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় এই শব্দ করা যাবে না এবং রাত দশটার মধ্যে এসব অনুষ্ঠান অবশ্যই শেষ করে ফেলতে হবে।
যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা করা হয় না। এমন কোনো গবেষণা বাংলাদেশে নেই বিশেষ করে কলকারখানাগুলোতে অসম্ভব শব্দ হয়। সেখানে শ্রমিকরা যে কাজ করেন, তাঁদের জন্য ‘সাউন্ড প্রুফ রুম' বা ‘লো ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড' থাকার কথা, সেটা কখনোই দেখা হয় না। তাই শব্দদূষণের কারণে অনেক মানুষ বধির হয়ে যাচ্ছেন। একজন মানুষ যখন বধির হয়ে যান, তখন তিনি যে কাজটা করতেন, সেটা করতে পারেন না। তার ওপর আমাদের দেশে যে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা, সেটাও দেয়া হয় না। উন্নত বিশ্বে কিন্তু এটা কঠোরভাবে দেখা হয়। সেখানে শব্দদূষণের কারণে কারো চাকরি ছাড়তে হলে তিনি ক্ষতিপূরণটা নিশ্চিতভাবে পান। আমাদের দেশে আর্থিক ক্ষতিপূরণের কোনো ব্যবস্থা নেই।
অথচ এতে ক্ষতির দিকটা কিন্তু ব্যাপক। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, অতিরিক্ত শব্দদূষণ শিশুসহ সব বয়সের মানুষের জন্য ক্ষতিকর। এর ফলে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি হয়, কর্মক্ষমতা কমে যায়, মেজাজ খিটমিটে হয়ে যায় এবং বিশ্লেষণক্ষমতা কমে যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব নয়েজ কন্ট্রোলের তথ্য অনুযায়ী, স্নায়ুর সমস্যা, আলসার, মাথাব্যথা, উচ্চরক্তচাপ, আত্মহত্যার প্রবণতা, হৃদরাগের মতো জটিল রোগের কারণ হতে পারে উচ্চমাত্রার শব্দ। এমনকি মাতৃগর্ভে থাকা শিশুরও জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে।
নাগরিক ডেস্ক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৩, 12:05 AM
শব্দদূষণ হলো মানুষের তৈরি একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য পরিবেশগত সমস্যা। পরিবেশ দূষণ এখন এক অসহনীয় মাত্রায় গিয়ে পৌঁছেছে। বিভিন্নভাবে আমাদের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ যেগুলি রয়েছে তার মধ্যে শব্দদূষণ অন্যতম একটি। বর্তমানে শব্দদূষণ যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, সেটা খুবই আশঙ্কাজনক। কিন্তু এই সমস্যা মানুষেরই তৈরি। বিশ্বের সকল উন্নত প্রাণী তথা মানুষের পারস্পরিক যোগাযোগ স্থাপনের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে শব্দ।
আধুনিক মানুষ শ্রবণ এবং দৃষ্টিসংশ্লেষিত ভাষার মাধ্যমে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। শব্দ একদিকে মানুষকে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছে দিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে, অন্যদিকে তেমনি উচ্চ বা প্রকট বা বিকট শব্দ মানুষের শ্রবণেন্দ্রিয়কে প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। ফলে মানুষ অনেক ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন আবাসিক এলাকার আশপাশে বিকট শব্দ সৃষ্টিকারী যন্ত্র চললেও নীরবে সহ্য করে নেন নগরবাসী।
ভুক্তভোগীরা এ ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদাসীনতাকেই দায়ী করছেন। পাশাপাশি আইন-বিধিমালা সম্পর্কেও অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পূর্ণ ধারণা নেই বলেও তারা মনে করেন। আবাসিক এলাকার ভেতরে দেখা যায় বাড়ির সামনে উচ্চমাত্রার ইট ভাঙার মেশিন চলে। এতে আশপাশ এলাকার মানুষ অস্থির হয়ে যায়। শিশুরা দুই কান চেপে ধরে সময় কাটায়। রাস্তা দিয়ে হাটাচলার সময় মানুষ উচ্চশব্দে ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আতঙ্কে থাকে।
২০০৬-এর বিধিমালার ধারা ১৭ অনুযায়ী, শব্দের মাত্রা অতিক্রম করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যেকোনো সময়ে যেকোনো ভবন বা স্থানে প্রবেশ করে অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি আটক করতে পারবেন এবং দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিকে প্রথম অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ এক মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারবেন এবং পুনরায় একই অপরাধ করলে অনধিক ছয় মাস কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের আইন অনুযায়ী, আবাসিক এলাকার দিনের বেলার শব্দের সহনীয় মান ৫৫ ডেসিবল। আর রাতের বেলা ৪৫। অথচ এর চেয়ে কয়েক গুণ উচ্চমাত্রার শব্দে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে নগরবাসী।
পরিবেশ অধিদপ্তরের আইন শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইট ভাঙার মেশিনের শব্দ সহনীয় মাত্রার চেয়ে কমপক্ষে ১০ গুণ, অর্থাৎ ৪৫০ ডেসিবল।’ অথচ এই শব্দ সঙ্গে নিয়ে থাকতে হচ্ছে নগরবাসীকে। শব্দ দূষণকে বলা হয় নীরব ঘাতক। আর বিশেষ করে ঢাকা শহরে শব্দ দূষণের বহু উৎস রয়েছে যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। গাড়ির হর্ন, নির্মাণকাজ, মাইকের ব্যবহার, শিল্পকারখানা কোন ক্ষেত্রেই শব্দ দূষণ বিষয়ে যেসব নিয়ম রয়েছে তা মানা হচ্ছে না। কিন্তু বাংলাদেশে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে যে বিধিমালা রয়েছে সেখানে বিস্তারিত বলা আছে কোন এলাকায়, দিনের কোন সময়ে, কোন ধরনের শব্দের মাত্রা কেমন হবে।
আর তা না মেনে চললে সাজার বিধানও রয়েছে। বিধিমালা অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় রাত নটা থেকে ভোর ছটা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল এবং দিনের অন্য সময়ে ৫৫ ডেসিবেল অতিক্রম করতে পারবে না। বাণিজ্যিক এলাকায় তা যথাক্রমে ৬০ ও ৭০ ডেসিবেল। চারপাশে স্বাভাবিক ও সাধারণভাবে তাকালেও লক্ষ্য করা যাবে যে, এই বিধিমালা সুস্পষ্টভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন গবেষণাতেও দেখা গেছে, বাংলাদেশের কোথাও এই মাত্রা মেনে চলা হয় না, শব্দ সব জায়গায় এই মাত্রার চেয়ে বেশি পাওয়া যায়। ঢাকা শহরে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে প্রায়শই দেখা যায় দিন নেই রাত নেই পাইলিং-এর কাজ, ইট ভাঙার যন্ত্র, সিমেন্ট মিক্সারের যথেচ্ছ ব্যাবহার হচ্ছে। আবাসিক এলাকার শেষ সীমানা থেকে ৫০০ মিটারের মধ্যে নির্মাণ কাজের জন্য ইট বা পাথর ভাঙার মেশিন ব্যবহার করা যাবে না।
কিন্তু ঢাকা শহরে আবাসিক এলাকার শেষ সীমানা বলে কিছু আসলে নেই। রাজনৈতিক সভা থেকে শুরু করে বিয়ে, ধর্মীয় অনুষ্ঠান, পিকনিক সকল ক্ষেত্রে এর কানফাটানো শব্দ চলে। তবে আইনে শর্ত সাপেক্ষে এর অনুমতিও রয়েছে। খোলা জায়গায় বিয়ে, খেলাধুলা, কনসার্ট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, রাজনৈতিক বা অন্য কোন ধরনের সভা, মেলা, যাত্রাগান ইত্যাদির ক্ষেত্রে শব্দের মাত্রা অতিক্রম করে - এমন যন্ত্র ব্যাবহার করা যাবে। তবে তার জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে, পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় এই শব্দ করা যাবে না এবং রাত দশটার মধ্যে এসব অনুষ্ঠান অবশ্যই শেষ করে ফেলতে হবে।
যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা করা হয় না। এমন কোনো গবেষণা বাংলাদেশে নেই বিশেষ করে কলকারখানাগুলোতে অসম্ভব শব্দ হয়। সেখানে শ্রমিকরা যে কাজ করেন, তাঁদের জন্য ‘সাউন্ড প্রুফ রুম' বা ‘লো ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ড' থাকার কথা, সেটা কখনোই দেখা হয় না। তাই শব্দদূষণের কারণে অনেক মানুষ বধির হয়ে যাচ্ছেন। একজন মানুষ যখন বধির হয়ে যান, তখন তিনি যে কাজটা করতেন, সেটা করতে পারেন না। তার ওপর আমাদের দেশে যে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা, সেটাও দেয়া হয় না। উন্নত বিশ্বে কিন্তু এটা কঠোরভাবে দেখা হয়। সেখানে শব্দদূষণের কারণে কারো চাকরি ছাড়তে হলে তিনি ক্ষতিপূরণটা নিশ্চিতভাবে পান। আমাদের দেশে আর্থিক ক্ষতিপূরণের কোনো ব্যবস্থা নেই।
অথচ এতে ক্ষতির দিকটা কিন্তু ব্যাপক। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলছেন, অতিরিক্ত শব্দদূষণ শিশুসহ সব বয়সের মানুষের জন্য ক্ষতিকর। এর ফলে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি হয়, কর্মক্ষমতা কমে যায়, মেজাজ খিটমিটে হয়ে যায় এবং বিশ্লেষণক্ষমতা কমে যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব নয়েজ কন্ট্রোলের তথ্য অনুযায়ী, স্নায়ুর সমস্যা, আলসার, মাথাব্যথা, উচ্চরক্তচাপ, আত্মহত্যার প্রবণতা, হৃদরাগের মতো জটিল রোগের কারণ হতে পারে উচ্চমাত্রার শব্দ। এমনকি মাতৃগর্ভে থাকা শিশুরও জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে।