আপাতত : ইভিএম না

#
news image

আর্থিক সংকটের কারণে আপতত: ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী জাতীয় নির্বাচনে নুন্যতম ১৫০ আসনে ইভিএম-এ ভোট অনুষ্ঠানের জন্য নতুন দু’লাখ ইভিএম কেনার জন্য ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকার যে প্রকল্প প্রস্তাব নির্বাচন কমিশন পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছিল, তা আপাতত: অনুমোদন হচ্ছে না।

বর্তমানে  নির্বাচন কমিশনের কাছে দেড় লাখ ইভিএম আছে। যা দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৭০ টি আসনে ভোট করা সম্ভব। ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচনের পুরোটা ইভিএম ভোট করার ব্যাপারে অনড় থাকলেও এখন আর তা করা সম্ভব হবে না। তবে ইভিএময়ে ভোট করা থেকে নির্বাচন কমিশন বিরত হচ্ছে না, তাদের কাছে যে ইভিএম আছে তা তারা নির্বাচনে ব্যবহার করবে। ইভিএম দিয়ে ভোট গ্রহণ না করার জন্য বিএনপি, জাতীয় পাটিসহ অধিকাংশ দল আহ্বান জানাচ্ছিল।

দলগুলোর মধ্যে ইভিএম নিয়ে সংশয়, সন্দেহ, অবিশ্বাস ছিল। দেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও রাজনৈতিক দলগুলোর সুরে সুর মিলিয়ে ইভিএম এর বিপক্ষে অবস্থান নেন। শুধু মাত্র ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইভিএম এর পক্ষে অবস্থান নিয়ে ৩০০ আসনে ভোট অনুষ্ঠানের কথা বলেছে। ইভিএম নিয়ে যে সংলাপ নির্বাচন কমিশনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে মোট ২২টি দল ইভিএম নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছে। বিএনপি তো ইভিএমকে কারচুপির যন্ত্র বলে ঘোষণা দিয়েছে। আর জাতীয় পাটিসহ ১৪ দল ইভিএম নিয়ে তাদের সন্দেহ সংশয়ের কথা স্পষ্ট ভাবে বলেছে।

এমনকি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়াল নিজেই সংলাপে বলেছিলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএম বিশ্বাস করছে না।  কিন্তু তারপরও তারা ইভিএময়ে ভোট করার ব্যাপারে গো ধরে বসে থাকেন। নানা আলোচনা সমালোচনার মধ্যে ইভিএম কেনার প্রকল্প তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায়। তা অনুমোদন করতে দফায় দফায় চিঠি চালাচালি করে এবং সর্বশেষ মধ্য জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্প পাস না হলে তাদের পক্ষে ৩০০ আসনে ইভিএম এ ভোট গ্রহণ করা সম্ভব হবে না।

এখন যে ৬০ বা ৭০ টি সংসদীয় এলাকায় ইভিএম ভোট কমিশন নেবে, সেজন্য সব মেশিনগুলো সচল রাখতে সার্ভিসিং শুরু করেছে। বিশ্বমন্দার চলমান এ সময়ে বিশাল অংকের টাকা খরচ করে ইভিএম কেনার বিপক্ষে সব মহল সোচ্চার ছিল।

শেষ পর্যন্ত তাদের আবেদনই জয়ী হলো। অন্যদিকে এভিএম কেনার প্রকল্প স্থগিত হওয়ায় বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের প্রত্যাশা পূরণ হলো। ফলে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটা সম্ভাবনা তৈরি হলো। তবে ব্যালটে ভোট গ্রহণের অভিজ্ঞতা অতিতে খুব একটা সুখকর নয়। তবে আন্তরিক ভাবে যদি সব সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তবে ব্যালটেও সুন্দর, সার্থক, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।

সরকার সব সময় বলছে, নির্বাচনের সময় সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করবে নির্বাচন কমিশন। সরকার কেবল রুটিন ওয়াক করবে। তাহলে নির্বাচন কমিশন শক্ত হাতে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না কেন? ইভিএম থেকে পিছু হটে আসার সিদ্ধান্ত সবার মাঝে যেমন আশার আলো জ¦ালিয়েছে। তেমনি সন্দেহও জন্ম দিয়েছে, এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি না?

 

 

নাগরিক ডেস্ক

০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩,  6:06 PM

news image

আর্থিক সংকটের কারণে আপতত: ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। আগামী জাতীয় নির্বাচনে নুন্যতম ১৫০ আসনে ইভিএম-এ ভোট অনুষ্ঠানের জন্য নতুন দু’লাখ ইভিএম কেনার জন্য ৮ হাজার ৭১১ কোটি টাকার যে প্রকল্প প্রস্তাব নির্বাচন কমিশন পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছিল, তা আপাতত: অনুমোদন হচ্ছে না।

বর্তমানে  নির্বাচন কমিশনের কাছে দেড় লাখ ইভিএম আছে। যা দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ থেকে ৭০ টি আসনে ভোট করা সম্ভব। ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচনের পুরোটা ইভিএম ভোট করার ব্যাপারে অনড় থাকলেও এখন আর তা করা সম্ভব হবে না। তবে ইভিএময়ে ভোট করা থেকে নির্বাচন কমিশন বিরত হচ্ছে না, তাদের কাছে যে ইভিএম আছে তা তারা নির্বাচনে ব্যবহার করবে। ইভিএম দিয়ে ভোট গ্রহণ না করার জন্য বিএনপি, জাতীয় পাটিসহ অধিকাংশ দল আহ্বান জানাচ্ছিল।

দলগুলোর মধ্যে ইভিএম নিয়ে সংশয়, সন্দেহ, অবিশ্বাস ছিল। দেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও রাজনৈতিক দলগুলোর সুরে সুর মিলিয়ে ইভিএম এর বিপক্ষে অবস্থান নেন। শুধু মাত্র ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ইভিএম এর পক্ষে অবস্থান নিয়ে ৩০০ আসনে ভোট অনুষ্ঠানের কথা বলেছে। ইভিএম নিয়ে যে সংলাপ নির্বাচন কমিশনে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তাতে মোট ২২টি দল ইভিএম নিয়ে তাদের মতামত দিয়েছে। বিএনপি তো ইভিএমকে কারচুপির যন্ত্র বলে ঘোষণা দিয়েছে। আর জাতীয় পাটিসহ ১৪ দল ইভিএম নিয়ে তাদের সন্দেহ সংশয়ের কথা স্পষ্ট ভাবে বলেছে।

এমনকি প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আওয়াল নিজেই সংলাপে বলেছিলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ইভিএম বিশ্বাস করছে না।  কিন্তু তারপরও তারা ইভিএময়ে ভোট করার ব্যাপারে গো ধরে বসে থাকেন। নানা আলোচনা সমালোচনার মধ্যে ইভিএম কেনার প্রকল্প তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায়। তা অনুমোদন করতে দফায় দফায় চিঠি চালাচালি করে এবং সর্বশেষ মধ্য জানুয়ারির মধ্যে প্রকল্প পাস না হলে তাদের পক্ষে ৩০০ আসনে ইভিএম এ ভোট গ্রহণ করা সম্ভব হবে না।

এখন যে ৬০ বা ৭০ টি সংসদীয় এলাকায় ইভিএম ভোট কমিশন নেবে, সেজন্য সব মেশিনগুলো সচল রাখতে সার্ভিসিং শুরু করেছে। বিশ্বমন্দার চলমান এ সময়ে বিশাল অংকের টাকা খরচ করে ইভিএম কেনার বিপক্ষে সব মহল সোচ্চার ছিল।

শেষ পর্যন্ত তাদের আবেদনই জয়ী হলো। অন্যদিকে এভিএম কেনার প্রকল্প স্থগিত হওয়ায় বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের প্রত্যাশা পূরণ হলো। ফলে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের একটা সম্ভাবনা তৈরি হলো। তবে ব্যালটে ভোট গ্রহণের অভিজ্ঞতা অতিতে খুব একটা সুখকর নয়। তবে আন্তরিক ভাবে যদি সব সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তবে ব্যালটেও সুন্দর, সার্থক, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব।

সরকার সব সময় বলছে, নির্বাচনের সময় সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করবে নির্বাচন কমিশন। সরকার কেবল রুটিন ওয়াক করবে। তাহলে নির্বাচন কমিশন শক্ত হাতে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না কেন? ইভিএম থেকে পিছু হটে আসার সিদ্ধান্ত সবার মাঝে যেমন আশার আলো জ¦ালিয়েছে। তেমনি সন্দেহও জন্ম দিয়েছে, এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে কি না?