জবাবদিহি ছাড়া উন্নয়ন অসম্ভব

#
news image

শিক্ষা খাতকে বলা হয় একটি দেশের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের কারখানা। কিন্তু যখন সেই কারখানার ভিত দুর্নীতির আগ্রাসনে নড়বড়ে হয়ে যায়, তখন ক্ষতিগ্রস্ত হয় শুধু অর্থনীতি নয়, প্রজন্মের মানসিক ও বৌদ্ধিক বিকাশও।

 সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন বিভিন্ন প্রকল্পে যে অনিয়মের চিত্র প্রকাশিত হয়েছে, তা আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ। প্রকল্পের নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম করেও কাজ শেষ হয়নি, অথচ বিল পরিশোধ হয়ে গেছে প্রায় পুরোটা। অনেক ক্ষেত্রে কাজের মান এতটাই নিম্ন যে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ শ্রেণিকক্ষের পরিবর্তে ভাঙা দেয়াল ও অর্ধসমাপ্ত ভবনের মুখোমুখি হচ্ছে।

এই অবস্থায় শিক্ষা গ্রহণের পরিবেশ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি জনগণের করের টাকা যাচ্ছে কিছু অসাধু ঠিকাদার ও কর্মকর্তার পকেটে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের অনেকেই বহাল তবিয়তে থেকে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক প্রভাব ও ক্ষমতার ছত্রছায়ায় তাঁরা তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এতে স্পষ্ট হয় যে দুর্নীতি আর ব্যক্তিগত স্বার্থের জাল শিক্ষা খাতকে গ্রাস করছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় তদন্তের নির্দেশ দিলেও তা যথেষ্ট নয়। তদন্তকে কার্যকর করতে হলে অভিযুক্তদের পদ থেকে সরানো, প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়মিত যাচাই, বিল ছাড়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং তদারকির কাঠামো পুনর্গঠন জরুরি। অন্যথায় তদন্ত কেবল আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ থাকবে এবং দুর্নীতির শিকড় আরো গভীরে প্রবেশ করবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়ন কোনো বিলাসিতা নয়, এটি একটি মৌলিক প্রয়োজন।

শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হলে তার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় উন্নয়নে পড়বে। তাই শিক্ষা খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে প্রকৃত জবাবদিহি নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর দায়িত্ব হলো উদাহরণমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা-যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো শিক্ষার্থী দুর্নীতির কারণে শ্রেণিকক্ষ থেকে বঞ্চিত না হয়। শিক্ষা খাতের প্রতিটি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে না পারলে আমরা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতিই নয়, প্রজন্মের ভবিষ্যৎও হারাব।

নাগরিক সংবাদ অনলাইন

২১ নভেম্বর, ২০২৫,  12:19 AM

news image

শিক্ষা খাতকে বলা হয় একটি দেশের ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের কারখানা। কিন্তু যখন সেই কারখানার ভিত দুর্নীতির আগ্রাসনে নড়বড়ে হয়ে যায়, তখন ক্ষতিগ্রস্ত হয় শুধু অর্থনীতি নয়, প্রজন্মের মানসিক ও বৌদ্ধিক বিকাশও।

 সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীন বিভিন্ন প্রকল্পে যে অনিয়মের চিত্র প্রকাশিত হয়েছে, তা আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ। প্রকল্পের নির্ধারিত সময়সীমা অতিক্রম করেও কাজ শেষ হয়নি, অথচ বিল পরিশোধ হয়ে গেছে প্রায় পুরোটা। অনেক ক্ষেত্রে কাজের মান এতটাই নিম্ন যে শিক্ষার্থীরা নিরাপদ শ্রেণিকক্ষের পরিবর্তে ভাঙা দেয়াল ও অর্ধসমাপ্ত ভবনের মুখোমুখি হচ্ছে।

এই অবস্থায় শিক্ষা গ্রহণের পরিবেশ যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি জনগণের করের টাকা যাচ্ছে কিছু অসাধু ঠিকাদার ও কর্মকর্তার পকেটে। সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁদের অনেকেই বহাল তবিয়তে থেকে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক প্রভাব ও ক্ষমতার ছত্রছায়ায় তাঁরা তদন্ত প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এতে স্পষ্ট হয় যে দুর্নীতি আর ব্যক্তিগত স্বার্থের জাল শিক্ষা খাতকে গ্রাস করছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় তদন্তের নির্দেশ দিলেও তা যথেষ্ট নয়। তদন্তকে কার্যকর করতে হলে অভিযুক্তদের পদ থেকে সরানো, প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়মিত যাচাই, বিল ছাড়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা এবং তদারকির কাঠামো পুনর্গঠন জরুরি। অন্যথায় তদন্ত কেবল আনুষ্ঠানিকতায় সীমাবদ্ধ থাকবে এবং দুর্নীতির শিকড় আরো গভীরে প্রবেশ করবে। আমাদের মনে রাখতে হবে, শিক্ষা অবকাঠামো উন্নয়ন কোনো বিলাসিতা নয়, এটি একটি মৌলিক প্রয়োজন।

শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হলে তার প্রভাব দীর্ঘমেয়াদে জাতীয় উন্নয়নে পড়বে। তাই শিক্ষা খাতকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে প্রকৃত জবাবদিহি নিশ্চিত করা এখন সময়ের দাবি।

সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর দায়িত্ব হলো উদাহরণমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা-যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো শিক্ষার্থী দুর্নীতির কারণে শ্রেণিকক্ষ থেকে বঞ্চিত না হয়। শিক্ষা খাতের প্রতিটি প্রকল্পে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে না পারলে আমরা শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতিই নয়, প্রজন্মের ভবিষ্যৎও হারাব।