অসহায়দের জন্য সপ্তাহে এক দিন খাবার ফ্রি যে হোটেলে
নিজস্ব প্রতিবেদক
২২ অক্টোবর, ২০২২, 9:44 PM
অসহায়দের জন্য সপ্তাহে এক দিন খাবার ফ্রি যে হোটেলে
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় প্রতি সপ্তাহে এক দিন নিজের হোটেলে অসহায়দের বিনামূল্যে খাবার খাওয়ান দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি গত ১০ মাস ধরে তার হোটেল মোহছেন আউলিয়া থেকে সাড়ে তিনশ অসহায় মানুষকে খাবার দিয়ে আসছেন। দেলোয়ার হোসেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের রিফুজি কলোনির বাসিন্দা সিদ্দিক মিয়ার বড় ছেলে। অনেকেই তাকে দেলোয়ার ভান্ডারী নামে চেনেন।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত হোটেল মোহছেন আউলিয়ায় ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, মানসিক ভারসাম্যহীন, রিকশাচালক, দিনমজুরসহ আশপাশের মাদরাসা ও এতিমখানা থেকে ছাত্র-শিক্ষকরা এসে জড়ো হয়েছেন। সকাল থেকেই চলছে রান্নার কাজ। হোটেলের স্টাফরা খাবার তৈরি করছেন।
হোটেল মোহছেন আউলিয়ায়র মালিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি শুক্রবার আমার হোটেলে ৩০০-৪০০ লোক বিনামূল্যে খাবার খায়। আমি লোক দেখানোর জন্য এগুলো করি না। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে গরিব-অসহায়দের জন্য এই খাবারের ব্যবস্থা করি। এই কাজ করতে আমার আনন্দ লাগে। আমার হোটেলে প্রতিদিন ৫-৬ জন পাগল ফকিরকে খাবার খাওয়াই। এই হোটেলের আয় দিয়েও আমার সংসার চলে, আমার কর্মচারীদের চালাই।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার সায়েদাবাদে একটি হোটেল থেকে খাবার না দিয়ে একজন পাগল ফকিরকে বের করে দিতে দেখে গরিব, অসহায় ও ভিখারিদের জন্য কিছু করার ইচ্ছা জাগে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে কঠোর পরিশ্রমী হয়ে গেলাম। এক সময় আল্লাহ আমার ভালো অবস্থান তৈরি করে দেন। তাই আমার হোটেল মোহছেন আউলিয়ায় প্রতি শুক্রবার খাবার খাওয়াই। পথচারীদের মাঝে খাবার বিতরণ করি।
স্থানীয় বাসিন্দা সফিক বলেন, দেলোয়ার মিয়ার হোটেল মোহছেন আউলিয়ার উদ্যোগে প্রতি সপ্তাহে একদিন দেড় থেকে দুইশ অসহায় ,গরিব, মাদ্রাসা ও এতিম খানার শিক্ষার্থীদের মাঝে ফ্রি খাবার দেওয়া হয়। আমি সমাজের উচ্চবিত্তদের দেলোয়ার ভাইয়ের মতো মানুষের জন্য এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক জানান, হোটেল মোহছেন আউলিয়ার মালিক দেলোয়ার ভাই আমাদের শ্রদ্ধাভাজন একজন ব্যক্তি। তিনি প্রতি সপ্তাহে তার বাড়িতে আমাদের দাওয়াত করেন। আল্লাহ যেন তার মনের আশা কবুল করেন। তার মায়ের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
হোটেলের ম্যানেজার রাসেল আহমেদ বলেন, হোটেল মোহছেন আউলিয়ায় অনেক বছর ধরে কাজ করছি। আমাদের হোটেলের মালিক প্রতি শুক্রবার গরিব, অসহায়, ফকির, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ দুই থেকে আড়াইশ মানুষকে ফ্রি খাবার খাওয়ান। তিনি খালি হাতে কাউকে ফিরিয়ে দেন না। প্রতিদিন ৫-১০ জন অসহায় মানুষকে ফ্রি খাওয়ান।
মাদ্রাসাশিক্ষার্থী শরীফুল আজিম বলেন, আমি প্রতি শুক্রবার এখানে খাবার খেতে আসি। আমাদের ফ্রি খাবার দেওয়া হয়। সিএনজিচালক মাসুদ বলেন, প্রতি সপ্তাহে এক দিন এখানে একেক রকমের আইটেম খাওয়ানো হয়। একদিন মাছ, কোনো দিন ডিম ,গরুর মাংস ও সবজি দিয়ে খাওয়ানো হয়। ভিক্ষুক কামাল বলেন, আমি প্রতি সপ্তাহ এক দিন এখানে এসে খাবার খাই।
স্থানীয় কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন বলেন, উনি (দেলোয়ার হোসেন) একজন ধর্মভীরু মানুষ। তিনি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি গরিব-অসহায়দের সাহায্য-সহযোগিতা করে থাকেন। তিনি তার হোটেলে প্রতি শুক্রবার তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ মানুষকে ফ্রি খাবার খাওয়ান।
নিজস্ব প্রতিবেদক
২২ অক্টোবর, ২০২২, 9:44 PM
আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় প্রতি সপ্তাহে এক দিন নিজের হোটেলে অসহায়দের বিনামূল্যে খাবার খাওয়ান দেলোয়ার হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী। তিনি গত ১০ মাস ধরে তার হোটেল মোহছেন আউলিয়া থেকে সাড়ে তিনশ অসহায় মানুষকে খাবার দিয়ে আসছেন। দেলোয়ার হোসেন চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের রিফুজি কলোনির বাসিন্দা সিদ্দিক মিয়ার বড় ছেলে। অনেকেই তাকে দেলোয়ার ভান্ডারী নামে চেনেন।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত হোটেল মোহছেন আউলিয়ায় ভিক্ষুক, প্রতিবন্ধী, মানসিক ভারসাম্যহীন, রিকশাচালক, দিনমজুরসহ আশপাশের মাদরাসা ও এতিমখানা থেকে ছাত্র-শিক্ষকরা এসে জড়ো হয়েছেন। সকাল থেকেই চলছে রান্নার কাজ। হোটেলের স্টাফরা খাবার তৈরি করছেন।
হোটেল মোহছেন আউলিয়ায়র মালিক দেলোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি শুক্রবার আমার হোটেলে ৩০০-৪০০ লোক বিনামূল্যে খাবার খায়। আমি লোক দেখানোর জন্য এগুলো করি না। আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে গরিব-অসহায়দের জন্য এই খাবারের ব্যবস্থা করি। এই কাজ করতে আমার আনন্দ লাগে। আমার হোটেলে প্রতিদিন ৫-৬ জন পাগল ফকিরকে খাবার খাওয়াই। এই হোটেলের আয় দিয়েও আমার সংসার চলে, আমার কর্মচারীদের চালাই।
তিনি আরও বলেন, ঢাকার সায়েদাবাদে একটি হোটেল থেকে খাবার না দিয়ে একজন পাগল ফকিরকে বের করে দিতে দেখে গরিব, অসহায় ও ভিখারিদের জন্য কিছু করার ইচ্ছা জাগে। সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে কঠোর পরিশ্রমী হয়ে গেলাম। এক সময় আল্লাহ আমার ভালো অবস্থান তৈরি করে দেন। তাই আমার হোটেল মোহছেন আউলিয়ায় প্রতি শুক্রবার খাবার খাওয়াই। পথচারীদের মাঝে খাবার বিতরণ করি।
স্থানীয় বাসিন্দা সফিক বলেন, দেলোয়ার মিয়ার হোটেল মোহছেন আউলিয়ার উদ্যোগে প্রতি সপ্তাহে একদিন দেড় থেকে দুইশ অসহায় ,গরিব, মাদ্রাসা ও এতিম খানার শিক্ষার্থীদের মাঝে ফ্রি খাবার দেওয়া হয়। আমি সমাজের উচ্চবিত্তদের দেলোয়ার ভাইয়ের মতো মানুষের জন্য এগিয়ে আসার অনুরোধ করছি। স্থানীয় একটি মাদ্রাসার শিক্ষক জানান, হোটেল মোহছেন আউলিয়ার মালিক দেলোয়ার ভাই আমাদের শ্রদ্ধাভাজন একজন ব্যক্তি। তিনি প্রতি সপ্তাহে তার বাড়িতে আমাদের দাওয়াত করেন। আল্লাহ যেন তার মনের আশা কবুল করেন। তার মায়ের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
হোটেলের ম্যানেজার রাসেল আহমেদ বলেন, হোটেল মোহছেন আউলিয়ায় অনেক বছর ধরে কাজ করছি। আমাদের হোটেলের মালিক প্রতি শুক্রবার গরিব, অসহায়, ফকির, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ দুই থেকে আড়াইশ মানুষকে ফ্রি খাবার খাওয়ান। তিনি খালি হাতে কাউকে ফিরিয়ে দেন না। প্রতিদিন ৫-১০ জন অসহায় মানুষকে ফ্রি খাওয়ান।
মাদ্রাসাশিক্ষার্থী শরীফুল আজিম বলেন, আমি প্রতি শুক্রবার এখানে খাবার খেতে আসি। আমাদের ফ্রি খাবার দেওয়া হয়। সিএনজিচালক মাসুদ বলেন, প্রতি সপ্তাহে এক দিন এখানে একেক রকমের আইটেম খাওয়ানো হয়। একদিন মাছ, কোনো দিন ডিম ,গরুর মাংস ও সবজি দিয়ে খাওয়ানো হয়। ভিক্ষুক কামাল বলেন, আমি প্রতি সপ্তাহ এক দিন এখানে এসে খাবার খাই।
স্থানীয় কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন বলেন, উনি (দেলোয়ার হোসেন) একজন ধর্মভীরু মানুষ। তিনি ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি গরিব-অসহায়দের সাহায্য-সহযোগিতা করে থাকেন। তিনি তার হোটেলে প্রতি শুক্রবার তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ মানুষকে ফ্রি খাবার খাওয়ান।