চিঠির খামে জমে থাকা অশ্রু

জাহিদ হোসেন বিপ্লব
১৪ এপ্রিল, ২০২৫, 1:18 PM

চিঠির খামে জমে থাকা অশ্রু
তোমাকে নিয়ে আজ আবার লিখতে বসেছি... তোমাকে নিয়ে কিছু বলতে বা লিখতে বসলে আমার হাত কাঁপে... ....। আজ থেকে ঠিক ১০ বছর আগে এই দিনে তোমার চলে যাওয়া...। ‘যেখানে এখন থাকো জায়গাটা কেমন? ওখানে কি খুব ঠান্ডা পড়ে? বৃষ্টি পড়ে কি খুব? এক নাগাড়ে অবিরাম... রোদ ওঠে... নাকি স্যাঁতস্যাঁতে...? ঝড় ওঠে ওদিকে? নাকি কেবল ঠান্ডা হাওয়া? কী ভাবে কাটছে তোমার সময়গুলো? এখন তো তোমার কোনও তাড়া নেই।
তোমাকে নিয়ে লিখতে বসলে আমার লেখার হাত তো সচল হতে চাই না। আমার লেখার প্রতিটি ক্ষণে তোমার উপস্থিতি ছিলো; তুমি এখনও আমার অনুপ্রেরণার এক মহান আদর্শ। তোমার অনুপস্থিতি আমার ভাবনা চিন্তাকে হঠাৎ এলোমেলো করে দিয়েছে। তোমার ভালোবাসার কথাতো লিখে শেষ করা যায় না । কোনটা ফেলে কোনটা লিখি। তোমার জীবনইতো ভালোবাসার ইতিহাস, তোমার মৃত্যু আমাকে এত আলোড়িত করেছে আমার জীবনের সব ভাবনা, আনন্দ, হাসি যেন নিমিষেই মিলিয়ে গেলো। পরিবার পরিজন নিয়ে তোমার কত সংগ্রাম আমি আমার নিজের চোখে দেখেছি। কিভাবে তিল তিল করে তুমি গড়ে উঠেছো, আমাদের গড়ে তুলেছো, আমার সকল অপারগতা তুমি ক্ষমা করো।
তুমিই তো ছিলে আমার উৎসাহদাতা ,অনুপ্রেরণা। তোমার মৃত্যুর পর আরও পরিণত ও খ্যাতি পেয়েছি (পেশা-লেখাপড়াই) কিন্তু তারপরও এক ধরণের শূন্যতা - হাহাকার। তোমার জীবনের দু:খের অনুভূতিগুলোর কথা মনে হলে আমি নিজেকে নিজে সংবরন করেতে পারি না। তোমার জম্মওতো সোনার চামচ মুখে দিয়ে হয়নি। বড় অভাব অনটনের মধ্যে বেড়ে উঠা মানুষ ছিলে তুমি। তারপর আবার সেই ২ বছর বয়সে মাতৃহারা। তিলে তিলে বেড়ে উঠে তুমি নিজেই হয়ে উঠেছিলো আপনগুণে এ সমাজের একজন শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্বে।
তোমার ছায়া তলে তো আমাদের ঠিকানা ছিলো। এ পৃথিবীর বুকে আমি ঠিকানা হারা হয়ে গেলাম ,আর তুমি আকাশের ঠিকানায় মিলিয়ে গেলে। েতুমি বলতে আদর্শবান মানুষ হয়ে জীবন ধারণ করতে। তোমার আদর্শে আমি একজন খুব সাধারণ মানুষ হয়ে বেচেঁ থাকতে চাই। অনেক পরিচিতজন যখন তোমার কথা বলে কি এক মায়ায় আমার চোখে জল এসে যায়। আমি স্থির থাকতে পারি না। তোমার বলা কথাগুলো আমার মনে পড়ে প্রতিনিয়ত। যে দিকে যাই শুধু তোমার স্মৃতি, তোমার হাতের স্পর্শ, তোমার পদচিহ্ন,তোমার কীর্তিগাঁথা গৌরব। বাড়ির আঙ্গিনার প্রতিটি ধূলিকনা বৃক্ষ ,লতা পাতায় ,পত্র পল্লব যেন শুধুই তোমার কথাই বলছে । এসব কিছুর বেড়ে উঠায় তোমার হাতের স্পর্শ ছিলো ।
বাড়িতে যখন যাই তোমার কত বিচিত্র বই, তোমার নিজের হাতের লেখা দেখে মন কেঁদে ওঠে । এমন সুন্দর হাতের লেখা আর কোথায় পাবো । কোন কিছুই ফেলতে ইচ্ছে করে না। তোমার প্রিয় ডোনা তোমার প্রিয় সবকিছুই ঠিক রেখেছে এখনও, শুধু প্রিয় মানুষটি তুমিই নেই । তুমি ছায়া হয়ে আমাদের পাশেই আছো। তোমার অস্তিত্ব অনুভব করি প্রতিটি কাজে।
কতো দু:খ সুখের স্মৃতি তোমাকে ঘিরে। আমি যখন ঢাকা চলে এলাম তুমি আমার পথ চেয়ে থাকতে প্রতিদিন। তোমার সন্তান নিরাপদে বাড়িতে আসছে কিনা- সে ব্যাকুল প্রতীক্ষা ছিলো তোমার। ৩০ বছর আগের সেই দিন গুলোতে যখন আমি ফিরে যাই-নীরবে অশ্রু ঝরে দুচোখ বেয়ে। কোন অহমিকা চাওয়া পাওয়া ছিলো না তোমার,খুব সাধারণ জীবন যাপন করতে। তোমার কোন আবদার ছিলো না শুধু বই ছাড়া। আজ আমার কাছে সবকিছূ আছে -শুধু তুমি নেই। অনেক দেশ ভ্রমন করেছা (ইউরোপ সহ), অনেক তীর্থস্থান,অনেক জাযগা দেখার সুযোগ তোমার হয়েছে । এ নিয়ে তোমার পরিতৃপ্তি ও ছিলো ।
ঝিনাইদহের মাটি ,মানুষ খুব ভালোবাসতে তুমি। সেই মটির মায়ার বন্ধন তুমি ছিন্ন করতে পারলে না, পারোনি । তোমার অন্তিম যাত্রায় সব মানুষের ভালোবাসাই প্রমাণ করে তুমি সকলের কত প্রিয় ছিলে। হাসপাতালে আমার ডোনা যখন জম্ম নিলো তুমি তখন কলকাতা। তোমার বলা কথাটা আমিতো এখনও ভুলি নি । ওকে দেখে বলেছিল ‘লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করো’। আমিতো তোমার স্বপ্নের পথে হাঁটার চেষ্টা করছি। আর কতো বলবো? তোমার স্মৃতিতো শেষ হয় না। অমি আবাক হয়ে ভাবি আর মনের নিভৃতে কাঁদি। আমার এ লেখনী লিখতে অনেক বার বসতে হয়েছে, প্রতিবারই চোখের জলে ভেসে গেছে আমার দু,চোখ। আমার এ কষ্টের দহন জ্বালা তুমি ছাড়া তো আর কেউ বুঝবে না ।
এখন তো আর কেউ আমাকে অমন ভালোবাসায় ‘বাবু’ নামে ডাকে না (ইলোরার মেয়ে শ্রেয়সী ছাড়া)। তোমার নামের আগে মৃত শব্দটি লিখতে আমার বুকের পাঁজর ভেঙ্গে যাচ্ছে । তুমিতো আমার কাছে মৃত হতে পারো না। তুমি আমার কাছে চিরদিন হৃদয়ের গভীরে বেঁচে থাকা এক আদর্শ মানুষ। মনে পড়ছে, মুঘল সাম্রাজ্যরের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে আছেন। তোমার ভালোবাসা আমাকে সম্রাট বাবরের স্মৃতিকে স্মরণ করিয়ে দেয় I তোমাকে ছাড়া তোমার অদৃশ্য ঠিকানায় একথাগুলো লিখতে হবে কখনওতো ভাবি নি।
জাহিদ হোসেন বিপ্লব
১৪ এপ্রিল, ২০২৫, 1:18 PM

তোমাকে নিয়ে আজ আবার লিখতে বসেছি... তোমাকে নিয়ে কিছু বলতে বা লিখতে বসলে আমার হাত কাঁপে... ....। আজ থেকে ঠিক ১০ বছর আগে এই দিনে তোমার চলে যাওয়া...। ‘যেখানে এখন থাকো জায়গাটা কেমন? ওখানে কি খুব ঠান্ডা পড়ে? বৃষ্টি পড়ে কি খুব? এক নাগাড়ে অবিরাম... রোদ ওঠে... নাকি স্যাঁতস্যাঁতে...? ঝড় ওঠে ওদিকে? নাকি কেবল ঠান্ডা হাওয়া? কী ভাবে কাটছে তোমার সময়গুলো? এখন তো তোমার কোনও তাড়া নেই।
তোমাকে নিয়ে লিখতে বসলে আমার লেখার হাত তো সচল হতে চাই না। আমার লেখার প্রতিটি ক্ষণে তোমার উপস্থিতি ছিলো; তুমি এখনও আমার অনুপ্রেরণার এক মহান আদর্শ। তোমার অনুপস্থিতি আমার ভাবনা চিন্তাকে হঠাৎ এলোমেলো করে দিয়েছে। তোমার ভালোবাসার কথাতো লিখে শেষ করা যায় না । কোনটা ফেলে কোনটা লিখি। তোমার জীবনইতো ভালোবাসার ইতিহাস, তোমার মৃত্যু আমাকে এত আলোড়িত করেছে আমার জীবনের সব ভাবনা, আনন্দ, হাসি যেন নিমিষেই মিলিয়ে গেলো। পরিবার পরিজন নিয়ে তোমার কত সংগ্রাম আমি আমার নিজের চোখে দেখেছি। কিভাবে তিল তিল করে তুমি গড়ে উঠেছো, আমাদের গড়ে তুলেছো, আমার সকল অপারগতা তুমি ক্ষমা করো।
তুমিই তো ছিলে আমার উৎসাহদাতা ,অনুপ্রেরণা। তোমার মৃত্যুর পর আরও পরিণত ও খ্যাতি পেয়েছি (পেশা-লেখাপড়াই) কিন্তু তারপরও এক ধরণের শূন্যতা - হাহাকার। তোমার জীবনের দু:খের অনুভূতিগুলোর কথা মনে হলে আমি নিজেকে নিজে সংবরন করেতে পারি না। তোমার জম্মওতো সোনার চামচ মুখে দিয়ে হয়নি। বড় অভাব অনটনের মধ্যে বেড়ে উঠা মানুষ ছিলে তুমি। তারপর আবার সেই ২ বছর বয়সে মাতৃহারা। তিলে তিলে বেড়ে উঠে তুমি নিজেই হয়ে উঠেছিলো আপনগুণে এ সমাজের একজন শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তিত্বে।
তোমার ছায়া তলে তো আমাদের ঠিকানা ছিলো। এ পৃথিবীর বুকে আমি ঠিকানা হারা হয়ে গেলাম ,আর তুমি আকাশের ঠিকানায় মিলিয়ে গেলে। েতুমি বলতে আদর্শবান মানুষ হয়ে জীবন ধারণ করতে। তোমার আদর্শে আমি একজন খুব সাধারণ মানুষ হয়ে বেচেঁ থাকতে চাই। অনেক পরিচিতজন যখন তোমার কথা বলে কি এক মায়ায় আমার চোখে জল এসে যায়। আমি স্থির থাকতে পারি না। তোমার বলা কথাগুলো আমার মনে পড়ে প্রতিনিয়ত। যে দিকে যাই শুধু তোমার স্মৃতি, তোমার হাতের স্পর্শ, তোমার পদচিহ্ন,তোমার কীর্তিগাঁথা গৌরব। বাড়ির আঙ্গিনার প্রতিটি ধূলিকনা বৃক্ষ ,লতা পাতায় ,পত্র পল্লব যেন শুধুই তোমার কথাই বলছে । এসব কিছুর বেড়ে উঠায় তোমার হাতের স্পর্শ ছিলো ।
বাড়িতে যখন যাই তোমার কত বিচিত্র বই, তোমার নিজের হাতের লেখা দেখে মন কেঁদে ওঠে । এমন সুন্দর হাতের লেখা আর কোথায় পাবো । কোন কিছুই ফেলতে ইচ্ছে করে না। তোমার প্রিয় ডোনা তোমার প্রিয় সবকিছুই ঠিক রেখেছে এখনও, শুধু প্রিয় মানুষটি তুমিই নেই । তুমি ছায়া হয়ে আমাদের পাশেই আছো। তোমার অস্তিত্ব অনুভব করি প্রতিটি কাজে।
কতো দু:খ সুখের স্মৃতি তোমাকে ঘিরে। আমি যখন ঢাকা চলে এলাম তুমি আমার পথ চেয়ে থাকতে প্রতিদিন। তোমার সন্তান নিরাপদে বাড়িতে আসছে কিনা- সে ব্যাকুল প্রতীক্ষা ছিলো তোমার। ৩০ বছর আগের সেই দিন গুলোতে যখন আমি ফিরে যাই-নীরবে অশ্রু ঝরে দুচোখ বেয়ে। কোন অহমিকা চাওয়া পাওয়া ছিলো না তোমার,খুব সাধারণ জীবন যাপন করতে। তোমার কোন আবদার ছিলো না শুধু বই ছাড়া। আজ আমার কাছে সবকিছূ আছে -শুধু তুমি নেই। অনেক দেশ ভ্রমন করেছা (ইউরোপ সহ), অনেক তীর্থস্থান,অনেক জাযগা দেখার সুযোগ তোমার হয়েছে । এ নিয়ে তোমার পরিতৃপ্তি ও ছিলো ।
ঝিনাইদহের মাটি ,মানুষ খুব ভালোবাসতে তুমি। সেই মটির মায়ার বন্ধন তুমি ছিন্ন করতে পারলে না, পারোনি । তোমার অন্তিম যাত্রায় সব মানুষের ভালোবাসাই প্রমাণ করে তুমি সকলের কত প্রিয় ছিলে। হাসপাতালে আমার ডোনা যখন জম্ম নিলো তুমি তখন কলকাতা। তোমার বলা কথাটা আমিতো এখনও ভুলি নি । ওকে দেখে বলেছিল ‘লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করো’। আমিতো তোমার স্বপ্নের পথে হাঁটার চেষ্টা করছি। আর কতো বলবো? তোমার স্মৃতিতো শেষ হয় না। অমি আবাক হয়ে ভাবি আর মনের নিভৃতে কাঁদি। আমার এ লেখনী লিখতে অনেক বার বসতে হয়েছে, প্রতিবারই চোখের জলে ভেসে গেছে আমার দু,চোখ। আমার এ কষ্টের দহন জ্বালা তুমি ছাড়া তো আর কেউ বুঝবে না ।
এখন তো আর কেউ আমাকে অমন ভালোবাসায় ‘বাবু’ নামে ডাকে না (ইলোরার মেয়ে শ্রেয়সী ছাড়া)। তোমার নামের আগে মৃত শব্দটি লিখতে আমার বুকের পাঁজর ভেঙ্গে যাচ্ছে । তুমিতো আমার কাছে মৃত হতে পারো না। তুমি আমার কাছে চিরদিন হৃদয়ের গভীরে বেঁচে থাকা এক আদর্শ মানুষ। মনে পড়ছে, মুঘল সাম্রাজ্যরের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে আছেন। তোমার ভালোবাসা আমাকে সম্রাট বাবরের স্মৃতিকে স্মরণ করিয়ে দেয় I তোমাকে ছাড়া তোমার অদৃশ্য ঠিকানায় একথাগুলো লিখতে হবে কখনওতো ভাবি নি।