শিরোনামঃ
২০২৪ বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস  আনিসুল হক ও সালমানকে রক্ষার চেষ্টা: অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সানজিদাকে সাময়িক বরখাস্ত দেশের সর্ববৃহৎ রেলসেতুটি চালুর অপেক্ষায় উত্তরবঙ্গবাসী সচিবালয়ে প্রবেশে ‘অস্থায়ী পাস’ সংক্রান্ত বিশেষ সেল গঠন বরগুনায় ঘর পোড়ানো মামলার আসামিকে গ্রেপ্তারের দাবি উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগবিধি সংস্কার খুবই গুরুত্বপূর্ণ : আইন উপদেষ্টা পুলিশ ক্রান্তিকাল অতিবাহিত করছে: আইজিপি আগামী ৩০ বছরে মানুষের বিলুপ্তি ঘটাতে পারে এআই : এআই গডফাদার হিন্টন সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষ, পাকিস্তানের ১৯ সেনা নিহত ১ বছরের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে প্রধান অভিযুক্তদের বিচার হবে

যশোরের ভবদহে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে কৃষক

#
news image

ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাওয়ায় যশোরের কেশবপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বোরো আবাদকারী কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। জলাবদ্ধতা বাড়ায় এবার উপজেলার সুফলাকাটী, পাঁজিয়া, গৌরীঘোনা, মঙ্গলকোট ও কেশবপুর সদর ইউনিয়নে ২ হাজার ২৫৩ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন কৃষকরা। এলাকার বিলগুলোতে পানি থৈ থৈ করছে। ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি ও ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নদ-নদী খননসহ টিআরএম চালু করা না হলে এ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা আরও বেড়ে যাবে। এতে একটা সময়ে এলাকার মানুষ ফসল হারা হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হবেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সুফলাকাটী ইউনিয়নে ১ হাজার ২৭৪ হেক্টর, পাঁজিয়া ইউনিয়নে ৬৫০ হেক্টর, গৌরীঘোনা ইউনিয়নে ৫১ হেক্টর, মঙ্গলকোট ইউনিয়নে ১৮১ হেক্টর, কেশবপুর সদর ইউনিয়নে ৯৪ হেক্টর ও পৌরসভায় ৩ হেক্টর জমি জলাবদ্ধ রয়েছে। এ বছর কেশবপুর উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে। গত বছর এ উপজেলায় বোরো আবাদ হয়েছিল ১৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শ্রীহরি নদীর ২৩ কিলোমিটার, আপার ভদ্রার ১৮ কিলোমিটার, বুড়িভদ্রার ৬ কিলোমিটার, হরিহরের ৫ কিলোমিটার পলিতে ভরাট হওয়ায় পানি নিষ্কাশনে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বিলগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নদ-নদী খনন না হওয়া পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিরসনের সম্ভাবনা খুবই কম।

সুফলাকাটী ইউনিয়ন এলাকায় কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিল খুকশিয়া এলাকায় এবার খুবই কম বোরো আবাদ হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দীন জানান, অপরিকল্পিত মাছের ঘের ও নদ-নদীর তলদেশ পলিতে ভরাট হওয়ায় আমার ইউনিয়নে কৃষকের শত শত বিঘা জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার জানান, শ্রীহরি নদীর ২৩ কিলোমিটার, আপার ভদ্রার ১৮ কিলোমিটার, বুড়িভদ্রার ৬ কিলোমিটার, হরিহরের ৫ কিলোমিটার পলিতে ভরাট হওয়ায় পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হয়ে বিলগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। শ্রীহরি নদীর ভবদহ থেকে খর্ণিয়া ব্রিজ পর্যন্ত নদী খনন করা না হলে বিলগুলো থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনের সম্ভাবনা খুবই কম। নদ-নদী খনন করার জন্য জরিপ কাজ চলছে। শিগগির জরিপ কাজ শেষ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নদ-নদী খনন করতে পারলে জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব হবে। জরুরি ভিত্তিতে বিল খুকশিয়া এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে ১ কিলোমিটার খাল খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

উপজেলার বিল গড়ালিয়া, পাঁজিয়া, বাগডাঙ্গা, নারায়ণপুর ও বিল খুকশিয়া ঘুরে দেখা গেছে, এই বিলগুলোতে এখন পানিতে থৈ থৈ করছে। পাঁজিয়া ইউনিয়নের বাগডাঙ্গা এলাকার ইউপি সদস্য বৈদ্যনাথ সরকার জানান, জলাবদ্ধতার কারণে বাগডাঙ্গা-মনোহরনগর বিলে বোরো আবাদ হচ্ছে না। এলাকার কৃষকরা বোরো আবাদ করতে না পারায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক বাবর আলী গোলদার জানান, নদ-নদী পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এলাকায় জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়ছে। নদ-নদী খননের পাশাপাশি ভবদহ অঞ্চলের যেকোনো একটি বিলে টিআরএম চালু না করা হলে বছরের পর বছর ধরে জলাবদ্ধতা আরও বৃদ্ধি পাবে। কৃষক এভাবে বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হতে থাকলে তাদের অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে হবে।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির কেশবপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিকী জানান, ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার কেশবপুর উপজেলার সুফলাকাটী, পাঁজিয়া, গৌরীঘোনা, মঙ্গলকোট ও কেশবপুর সদর ইউনিয়নে বোরো আবাদযোগ্য অনেক জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এলাকার কৃষক বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এভাবে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পেতে থাকলে একসময় জলাবদ্ধ অঞ্চলের মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হবেন।

জেমস আব্দুর রহিম রানা, যশোর

২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪,  9:55 PM

news image

ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাওয়ায় যশোরের কেশবপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের বোরো আবাদকারী কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। জলাবদ্ধতা বাড়ায় এবার উপজেলার সুফলাকাটী, পাঁজিয়া, গৌরীঘোনা, মঙ্গলকোট ও কেশবপুর সদর ইউনিয়নে ২ হাজার ২৫৩ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন কৃষকরা। এলাকার বিলগুলোতে পানি থৈ থৈ করছে। ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটি ও ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, নদ-নদী খননসহ টিআরএম চালু করা না হলে এ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা আরও বেড়ে যাবে। এতে একটা সময়ে এলাকার মানুষ ফসল হারা হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হবেন।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সুফলাকাটী ইউনিয়নে ১ হাজার ২৭৪ হেক্টর, পাঁজিয়া ইউনিয়নে ৬৫০ হেক্টর, গৌরীঘোনা ইউনিয়নে ৫১ হেক্টর, মঙ্গলকোট ইউনিয়নে ১৮১ হেক্টর, কেশবপুর সদর ইউনিয়নে ৯৪ হেক্টর ও পৌরসভায় ৩ হেক্টর জমি জলাবদ্ধ রয়েছে। এ বছর কেশবপুর উপজেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ৮৮০ হেক্টর জমিতে। গত বছর এ উপজেলায় বোরো আবাদ হয়েছিল ১৪ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, শ্রীহরি নদীর ২৩ কিলোমিটার, আপার ভদ্রার ১৮ কিলোমিটার, বুড়িভদ্রার ৬ কিলোমিটার, হরিহরের ৫ কিলোমিটার পলিতে ভরাট হওয়ায় পানি নিষ্কাশনে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে বিলগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। নদ-নদী খনন না হওয়া পর্যন্ত জলাবদ্ধতা নিরসনের সম্ভাবনা খুবই কম।

সুফলাকাটী ইউনিয়ন এলাকায় কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিএম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বিল খুকশিয়া এলাকায় এবার খুবই কম বোরো আবাদ হয়েছে। জলাবদ্ধতার কারণে কৃষকরা বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কেশবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দীন জানান, অপরিকল্পিত মাছের ঘের ও নদ-নদীর তলদেশ পলিতে ভরাট হওয়ায় আমার ইউনিয়নে কৃষকের শত শত বিঘা জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার জানান, শ্রীহরি নদীর ২৩ কিলোমিটার, আপার ভদ্রার ১৮ কিলোমিটার, বুড়িভদ্রার ৬ কিলোমিটার, হরিহরের ৫ কিলোমিটার পলিতে ভরাট হওয়ায় পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হয়ে বিলগুলোতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। শ্রীহরি নদীর ভবদহ থেকে খর্ণিয়া ব্রিজ পর্যন্ত নদী খনন করা না হলে বিলগুলো থেকে জলাবদ্ধতা নিরসনের সম্ভাবনা খুবই কম। নদ-নদী খনন করার জন্য জরিপ কাজ চলছে। শিগগির জরিপ কাজ শেষ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নদ-নদী খনন করতে পারলে জলাবদ্ধতা নিরসন করা সম্ভব হবে। জরুরি ভিত্তিতে বিল খুকশিয়া এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে ১ কিলোমিটার খাল খননের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

উপজেলার বিল গড়ালিয়া, পাঁজিয়া, বাগডাঙ্গা, নারায়ণপুর ও বিল খুকশিয়া ঘুরে দেখা গেছে, এই বিলগুলোতে এখন পানিতে থৈ থৈ করছে। পাঁজিয়া ইউনিয়নের বাগডাঙ্গা এলাকার ইউপি সদস্য বৈদ্যনাথ সরকার জানান, জলাবদ্ধতার কারণে বাগডাঙ্গা-মনোহরনগর বিলে বোরো আবাদ হচ্ছে না। এলাকার কৃষকরা বোরো আবাদ করতে না পারায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন। ২৭ বিল বাঁচাও আন্দোলন কমিটির আহ্বায়ক বাবর আলী গোলদার জানান, নদ-নদী পলিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এলাকায় জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে পড়ছে। নদ-নদী খননের পাশাপাশি ভবদহ অঞ্চলের যেকোনো একটি বিলে টিআরএম চালু না করা হলে বছরের পর বছর ধরে জলাবদ্ধতা আরও বৃদ্ধি পাবে। কৃষক এভাবে বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হতে থাকলে তাদের অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে হবে।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির কেশবপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিকী জানান, ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার কেশবপুর উপজেলার সুফলাকাটী, পাঁজিয়া, গৌরীঘোনা, মঙ্গলকোট ও কেশবপুর সদর ইউনিয়নে বোরো আবাদযোগ্য অনেক জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এলাকার কৃষক বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এভাবে জলাবদ্ধতা বৃদ্ধি পেতে থাকলে একসময় জলাবদ্ধ অঞ্চলের মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হবেন।