‘২০২৪ সালে ডামি নির্বাচন হয়েছে’, আদালতে স্বীকারোক্তি হাবিবুল আউয়ালের

অনলাইন ডেস্ক
২৭ জুন, ২০২৫, 12:19 AM

‘২০২৪ সালে ডামি নির্বাচন হয়েছে’, আদালতে স্বীকারোক্তি হাবিবুল আউয়ালের
২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বহুল আলোচিত বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের আদালতে দেওয়া এক বিস্ফোরক স্বীকারোক্তিতে। তিনি বলেছেন, ওই বছরের নির্বাচন ছিল ‘ডামি’ ও ‘প্রহসনের’ নির্বাচন। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন।
আদালতে শুনানির সময় বিচারক তাঁকে প্রশ্ন করেন, যেহেতু নির্বাচন প্রহসনের ছিল, তবে তিনি পদত্যাগ করেননি কেন। উত্তরে হাবিবুল আউয়াল জানান, অতীতে বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করেননি। তিনি উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা না থাকাই এই নির্বাচনের ব্যর্থতার মূল কারণ। তাঁর ভাষায়, যদি দেশের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন না হয়, তবে হাজার বছরেও বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
শুনানির শুরুতে পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানিতে বলা হয়, কাজী হাবিবুল আউয়াল তাঁর সাংবিধানিক পদে থেকে ২০২৪ সালের ভোটকে প্রভাবিত করেছেন এবং আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় আনতে সহযোগিতা করেছেন। এতে করে জনগণের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অভিযোগ করেন, এই নির্বাচন ছিল শুধু একটি নাটক, যেখানে বিরোধী দলগুলোর কোনো অংশগ্রহণ ছিল না, এবং হাবিবুল আউয়াল ছিলেন সেই নাটকের অন্যতম প্রধান কুশীলব।
জবাবে হাবিবুল আউয়ালের আইনজীবী এমিল হাসান রুমেল রিমান্ড বাতিল ও জামিন আবেদন করেন। তবে বিচারক তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ মামলায় আরও অভিযোগ রয়েছে, তিনি শপথ ভঙ্গ করে সংবিধানের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন এবং ভোটের নামে কোটি কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ব্যয় ঘটিয়েছেন। উল্লেখ্য, হাবিবুল আউয়ালকে পুলিশ রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে বুধবার (২৫ জুন)।
এই মামলার সূত্রপাত বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খানের করা এক মামলায়। সেখানে তিনজন সাবেক সিইসি— কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ (২০১৪), কে এম নূরুল হুদা (২০১৮) ও হাবিবুল আউয়াল (২০২৪) —সহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়ের হয় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায়। পরে আদালতের আদেশে মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহের ধারা সংযুক্ত করা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ আরও অনেকে।
আদালতের সামনে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি নির্বাচনের পরই বিতর্ক হয়। ১৯৯৬ সালের নির্বাচন কিংবা স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলেও নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। সেসব সময়েও কেউ পদত্যাগ করেননি। তিনিও তাই ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত অনুসরণ করেছেন।
হাবিবুল আউয়ালের এই স্বীকারোক্তি ও রিমান্ড মঞ্জুরের ঘটনায় নির্বাচন কমিশন ও রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
অনলাইন ডেস্ক
২৭ জুন, ২০২৫, 12:19 AM

২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বহুল আলোচিত বিতর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের আদালতে দেওয়া এক বিস্ফোরক স্বীকারোক্তিতে। তিনি বলেছেন, ওই বছরের নির্বাচন ছিল ‘ডামি’ ও ‘প্রহসনের’ নির্বাচন। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের আদালতে রিমান্ড শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন।
আদালতে শুনানির সময় বিচারক তাঁকে প্রশ্ন করেন, যেহেতু নির্বাচন প্রহসনের ছিল, তবে তিনি পদত্যাগ করেননি কেন। উত্তরে হাবিবুল আউয়াল জানান, অতীতে বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদত্যাগ করেননি। তিনি উল্লেখ করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা না থাকাই এই নির্বাচনের ব্যর্থতার মূল কারণ। তাঁর ভাষায়, যদি দেশের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন না হয়, তবে হাজার বছরেও বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
শুনানির শুরুতে পুলিশের পক্ষ থেকে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানিতে বলা হয়, কাজী হাবিবুল আউয়াল তাঁর সাংবিধানিক পদে থেকে ২০২৪ সালের ভোটকে প্রভাবিত করেছেন এবং আওয়ামী লীগকে পুনরায় ক্ষমতায় আনতে সহযোগিতা করেছেন। এতে করে জনগণের ভোটাধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অভিযোগ করেন, এই নির্বাচন ছিল শুধু একটি নাটক, যেখানে বিরোধী দলগুলোর কোনো অংশগ্রহণ ছিল না, এবং হাবিবুল আউয়াল ছিলেন সেই নাটকের অন্যতম প্রধান কুশীলব।
জবাবে হাবিবুল আউয়ালের আইনজীবী এমিল হাসান রুমেল রিমান্ড বাতিল ও জামিন আবেদন করেন। তবে বিচারক তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এ মামলায় আরও অভিযোগ রয়েছে, তিনি শপথ ভঙ্গ করে সংবিধানের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন এবং ভোটের নামে কোটি কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় ব্যয় ঘটিয়েছেন। উল্লেখ্য, হাবিবুল আউয়ালকে পুলিশ রাজধানীর মগবাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে বুধবার (২৫ জুন)।
এই মামলার সূত্রপাত বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন খানের করা এক মামলায়। সেখানে তিনজন সাবেক সিইসি— কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ (২০১৪), কে এম নূরুল হুদা (২০১৮) ও হাবিবুল আউয়াল (২০২৪) —সহ ২৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়ের হয় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায়। পরে আদালতের আদেশে মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহের ধারা সংযুক্ত করা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ আরও অনেকে।
আদালতের সামনে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি নির্বাচনের পরই বিতর্ক হয়। ১৯৯৬ সালের নির্বাচন কিংবা স্বাধীনতার পর শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলেও নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। সেসব সময়েও কেউ পদত্যাগ করেননি। তিনিও তাই ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত অনুসরণ করেছেন।
হাবিবুল আউয়ালের এই স্বীকারোক্তি ও রিমান্ড মঞ্জুরের ঘটনায় নির্বাচন কমিশন ও রাষ্ট্রীয় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।