শিক্ষা অফিস ঘুষ দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত ॥ অতিষ্ঠ শিক্ষকরা
নাজিবুল বাশার, মধুপুর, টাঙ্গাইল
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, 4:05 PM
শিক্ষা অফিস ঘুষ দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত ॥ অতিষ্ঠ শিক্ষকরা
মধুপুর উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক নেতৃবৃন্দ সম্প্রতি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশীদের বিরুদ্ধে সভা করেন। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ঘুষ-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। পদে পদে টাকা নেওয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চাহিদা পুরণে ব্যর্থ শিক্ষকদের লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। এমন অবস্থায় মধুপুরের অতিষ্ঠ শিক্ষকরা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।মধুপুরের শিক্ষকদের জিম্মি করা ওই কর্মকর্তার নাম মো. আব্দুর রশিদ। তিনি ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি মধুপুরে যোগদান করেন। বহুবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও উর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে ম্যানেজ করে অর্ধযুগ ধরে একই কর্মস্থলে থেকে বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কেউ প্রশ্ন তুললেই তাঁর কপালে দুর্ভোগ নেমে আসে।
জানা যায়, উপজেলা ৩৭টি বিদ্যালয়, ১৬টি মাদরাসা ও ৯ টি কারিগারি (মাধ্যমিক পর্যায়ের) প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাতশত পঞ্চাশের অধিক শিক্ষক-কর্মচারির ৯৫ ভাগ শিক্ষকই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। তম্মধ্যে মাদরাসার শিক্ষকরা অসহায় অবস্থায় সময় পার করছেন। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ক্ষুব্ধ প্রধান শিক্ষকরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কার্যালয় ও মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই দফা বৈঠক হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৮জন প্রধান শিক্ষক জানান, মাধ্যমিক শিক্ষক কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ যোগদানের কিছুদিন যেতেই শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন শুরু করেন। বর্তমানে তা তীব্র আকার ধারণ করেছে। ঘুষ গ্রহণেও হয়ে পড়েছেন লাগামহীন। বর্তমানে আব্দুর রশিদকে সরেজমিন তদন্তের জন্য ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা, নিয়োগ সংক্রান্ত কাজে ২০ হাজার টাকা দেওয়া বাধ্যতামূলক। এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তদের নিকট থেকে পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন।
উচ্চতর স্কেল পাওয়া শিক্ষকদেরকে দফাদফায় টাকা নিয়েও যাচাই বাছাই ছাড়াই কাগজ অগ্রগতি করা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অগ্রগামি কাগজগুলো ফেরৎ এলেই নতুন বাণিজ্যের দুয়ার খুলে তার। এক শিক্ষিকা জানান, আমার এমপিওর কাজ সমাধান করতে চার দফায় টাকা দিতে হয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর বিদ্যালয়গুলোতে বিনামূল্যের বই পৌঁছানোর টাকা, আন্তঃস্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তিনজন প্রধান শিক্ষক জানান, শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেলের ফাইল গ্রহণ আর বাতিল নির্ভর করে টাকার ওপর। দফায় দফায় টাকা দিয়েও স্কুল মাদরাসার অনেক শিক্ষক উচ্চতর স্কেলে বেতন ধরাতে না পেরে প্রতিমাসেই ক্ষতির মুখে পড়ছেন। ২০২২ সালে অষ্টম গ্রেড পাওয়া অনেক শিক্ষক এখনো নবম গ্রেডেই বেতন ভাতা ভোগ করছেন।
ভুক্তভোগি এক শিক্ষক বলেন, ২০২২ সালে নবম গ্রেড থেকে অষ্টম গ্রেড পাই আমি। উচ্চতর স্কেলের কাগজপত্র অগ্রগতির জন্য আলোচনা সাপেক্ষে পাঁচহাজার টাকা দিয়েছিলাম শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদকে। কদিন পরেই আমার আবেদন বাতিল হয়ে ময়মনসিংহ থেকে ফেরৎ আসে। পরবর্তীতে তিনি আরো বেশি টাকা দাবি করলেন। অপারগতা প্রকাশ করায় দুর্ব্যবহার করলেন। রাগ করে দেড়বছর হলো নিম্নতম স্কেলেই বেতন নিচ্ছি। স্কুল-মাদরাসার বেশ কিছু শিক্ষকের এমন অবস্থা। এনটিআরসি’র মাধ্যমে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে মধুপুরের বিভিন্ন বিদ্যালয় ও মাদরাসায় যোগদান করেছেন ৫৭ জন শিক্ষক। তাদের প্রত্যেককেই পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। টাকা গ্রহণ ও দরকষাকষি কাজটি করেন অফিসের দরজা বন্ধ করে। সেখানে ঘুষদাতা আর গ্রহীতা ছাড়া কাউকেই তিনি রাখেননা বলে জানান শিক্ষক ও ওই অফিসের কর্মচারিরা।
কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারিদের ফাইল অগ্রগতি করতে ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা নেন শিক্ষা কর্মকর্তা। চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারিদের কাগজ অগ্রগতি করার ক্ষেত্রে টাকা না নেওয়ার অনুরোধ করায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা তাঁর র্দুর্ব্যবহারের শিকার হন। এমনকি অনেককে অফিসে যেতেও বারণ করেছেন।
গত ২৯ জানুয়ারি মধুপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি মো. ইয়াকুব আলী, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান, আবুল কালাম আজাদ, নূরুন্নবী শিহাব, সাইফুল ইসলাম স্বপন, সালমা আফরোজসহ অন্তত ২৩জন প্রধান শিক্ষক অনির্ধারিত সভায় মিলিত হন। সভায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাওয়ার ব্যাপারে প্রাথমিক আলোচনা হয়। তাঁদের ভাষায়, ‘শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ও প্রধান শিক্ষকদের সাথে দূর্বব্যবহারকারি দূর্নীতিবাজ শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ স্বেচ্ছায় বদলী হয়ে না গেলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য একমত হন।’ দুই দিন পরেই মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বৈঠকে শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ উপস্থিত হয়ে সকলের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এবং সাতদিনের মধ্যে অন্যত্র বদলি হয়ে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক নূরুন্নবী শিহাব এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি হননি। তবে বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন।
এতিকে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ আগামী সাত দিনের মধ্যে স্বেচ্ছায় অন্যত্র বদলি হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন একাধিক প্রধান শিক্ষক।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিক্ষকদে সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় দুরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ থাকাকালে ওই অফিসে শিক্ষকরা যাবেননা বলে একমত হয়েছিলেন। পরে তিনি বদলী হয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষকবৃন্দকে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, আমার সাথে শিক্ষকদের ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। আমার বদলীর সময় হয়েছে। খুব শীঘ্রই বদলী হয়ে যাবো। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা বলেন, আমার কাছে লিখিত বা মৌখিক কোন অভিযোগ আসেনি। তারপরও বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
নাজিবুল বাশার, মধুপুর, টাঙ্গাইল
২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, 4:05 PM
মধুপুর উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষক নেতৃবৃন্দ সম্প্রতি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশীদের বিরুদ্ধে সভা করেন। টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ঘুষ-দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। পদে পদে টাকা নেওয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চাহিদা পুরণে ব্যর্থ শিক্ষকদের লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে অহরহ। এমন অবস্থায় মধুপুরের অতিষ্ঠ শিক্ষকরা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।মধুপুরের শিক্ষকদের জিম্মি করা ওই কর্মকর্তার নাম মো. আব্দুর রশিদ। তিনি ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি মধুপুরে যোগদান করেন। বহুবার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও উর্ধ্বতন কর্তপক্ষকে ম্যানেজ করে অর্ধযুগ ধরে একই কর্মস্থলে থেকে বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। কেউ প্রশ্ন তুললেই তাঁর কপালে দুর্ভোগ নেমে আসে।
জানা যায়, উপজেলা ৩৭টি বিদ্যালয়, ১৬টি মাদরাসা ও ৯ টি কারিগারি (মাধ্যমিক পর্যায়ের) প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে সাতশত পঞ্চাশের অধিক শিক্ষক-কর্মচারির ৯৫ ভাগ শিক্ষকই মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। তম্মধ্যে মাদরাসার শিক্ষকরা অসহায় অবস্থায় সময় পার করছেন। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ক্ষুব্ধ প্রধান শিক্ষকরা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কার্যালয় ও মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দুই দফা বৈঠক হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ৮জন প্রধান শিক্ষক জানান, মাধ্যমিক শিক্ষক কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদ যোগদানের কিছুদিন যেতেই শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন শুরু করেন। বর্তমানে তা তীব্র আকার ধারণ করেছে। ঘুষ গ্রহণেও হয়ে পড়েছেন লাগামহীন। বর্তমানে আব্দুর রশিদকে সরেজমিন তদন্তের জন্য ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা, নিয়োগ সংক্রান্ত কাজে ২০ হাজার টাকা দেওয়া বাধ্যতামূলক। এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্তদের নিকট থেকে পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা নিয়েছেন।
উচ্চতর স্কেল পাওয়া শিক্ষকদেরকে দফাদফায় টাকা নিয়েও যাচাই বাছাই ছাড়াই কাগজ অগ্রগতি করা তার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। অগ্রগামি কাগজগুলো ফেরৎ এলেই নতুন বাণিজ্যের দুয়ার খুলে তার। এক শিক্ষিকা জানান, আমার এমপিওর কাজ সমাধান করতে চার দফায় টাকা দিতে হয়েছে। এছাড়া প্রতিবছর বিদ্যালয়গুলোতে বিনামূল্যের বই পৌঁছানোর টাকা, আন্তঃস্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য প্রত্যেক প্রতিষ্ঠান থেকে দুই হাজার টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। তিনজন প্রধান শিক্ষক জানান, শিক্ষকদের উচ্চতর স্কেলের ফাইল গ্রহণ আর বাতিল নির্ভর করে টাকার ওপর। দফায় দফায় টাকা দিয়েও স্কুল মাদরাসার অনেক শিক্ষক উচ্চতর স্কেলে বেতন ধরাতে না পেরে প্রতিমাসেই ক্ষতির মুখে পড়ছেন। ২০২২ সালে অষ্টম গ্রেড পাওয়া অনেক শিক্ষক এখনো নবম গ্রেডেই বেতন ভাতা ভোগ করছেন।
ভুক্তভোগি এক শিক্ষক বলেন, ২০২২ সালে নবম গ্রেড থেকে অষ্টম গ্রেড পাই আমি। উচ্চতর স্কেলের কাগজপত্র অগ্রগতির জন্য আলোচনা সাপেক্ষে পাঁচহাজার টাকা দিয়েছিলাম শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদকে। কদিন পরেই আমার আবেদন বাতিল হয়ে ময়মনসিংহ থেকে ফেরৎ আসে। পরবর্তীতে তিনি আরো বেশি টাকা দাবি করলেন। অপারগতা প্রকাশ করায় দুর্ব্যবহার করলেন। রাগ করে দেড়বছর হলো নিম্নতম স্কেলেই বেতন নিচ্ছি। স্কুল-মাদরাসার বেশ কিছু শিক্ষকের এমন অবস্থা। এনটিআরসি’র মাধ্যমে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে মধুপুরের বিভিন্ন বিদ্যালয় ও মাদরাসায় যোগদান করেছেন ৫৭ জন শিক্ষক। তাদের প্রত্যেককেই পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। টাকা গ্রহণ ও দরকষাকষি কাজটি করেন অফিসের দরজা বন্ধ করে। সেখানে ঘুষদাতা আর গ্রহীতা ছাড়া কাউকেই তিনি রাখেননা বলে জানান শিক্ষক ও ওই অফিসের কর্মচারিরা।
কমিটির মাধ্যমে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারিদের ফাইল অগ্রগতি করতে ২০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা নেন শিক্ষা কর্মকর্তা। চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারিদের কাগজ অগ্রগতি করার ক্ষেত্রে টাকা না নেওয়ার অনুরোধ করায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতারা তাঁর র্দুর্ব্যবহারের শিকার হন। এমনকি অনেককে অফিসে যেতেও বারণ করেছেন।
গত ২৯ জানুয়ারি মধুপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি কার্যালয়ে সংগঠনের সভাপতি মো. ইয়াকুব আলী, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, প্রধান শিক্ষক লুৎফর রহমান, আবুল কালাম আজাদ, নূরুন্নবী শিহাব, সাইফুল ইসলাম স্বপন, সালমা আফরোজসহ অন্তত ২৩জন প্রধান শিক্ষক অনির্ধারিত সভায় মিলিত হন। সভায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাওয়ার ব্যাপারে প্রাথমিক আলোচনা হয়। তাঁদের ভাষায়, ‘শিক্ষক নেতৃবৃন্দ ও প্রধান শিক্ষকদের সাথে দূর্বব্যবহারকারি দূর্নীতিবাজ শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ স্বেচ্ছায় বদলী হয়ে না গেলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলনসহ নানা কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য একমত হন।’ দুই দিন পরেই মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বৈঠকে শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ উপস্থিত হয়ে সকলের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এবং সাতদিনের মধ্যে অন্যত্র বদলি হয়ে যাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। মধুপুর শহীদ স্মৃতি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক নূরুন্নবী শিহাব এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে রাজি হননি। তবে বৈঠকের কথা স্বীকার করেছেন।
এতিকে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ আগামী সাত দিনের মধ্যে স্বেচ্ছায় অন্যত্র বদলি হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন একাধিক প্রধান শিক্ষক।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, শিক্ষকদে সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় দুরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ থাকাকালে ওই অফিসে শিক্ষকরা যাবেননা বলে একমত হয়েছিলেন। পরে তিনি বদলী হয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন শিক্ষকবৃন্দকে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ বলেন, আমার সাথে শিক্ষকদের ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিল। আমার বদলীর সময় হয়েছে। খুব শীঘ্রই বদলী হয়ে যাবো। এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা বলেন, আমার কাছে লিখিত বা মৌখিক কোন অভিযোগ আসেনি। তারপরও বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।