বসন্ত রাঙালো প্রাণের মেলা
নাগরিক প্রতিবেদন
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, 12:48 PM
বসন্ত রাঙালো প্রাণের মেলা
অন্যান্য দিনের চেয়ে রাজধানী গতকালের (১৪ ফেব্রুয়ারি)সকালটা ছিল ভিন্ন। ভোরের ধোঁয়াশা আলো ফোটার সাথে সাথে জেগে উঠেছিল রাজধানীর সংস্কৃতিপাড়া। বসন্ত আর ভালোবাসার আলিঙ্গনে রঙিন পোশাক নিয়েই ছিল সকালের বাড়তি ব্যস্ততা। ভালোবাসার হাত ধরে ফাল্গুনের আগমনে মানুষের সাথে বইমেলার রঙ বদলেছিল। লাল আর হলুদের সমারোহে প্রকৃতির সাজে সেজেছিল প্রাণের মেলা।
এর আগে হালকা কুয়াশায় ভোরের সূর্য উঁকি দেয়ার সাথে সাথে নানান বয়সের নারী-পুরুষ লাল আর হলুদ পোশাক গায়ে জড়িয়ে বেরিয়ে পড়েন চারুকলার উদ্দেশে। প্রকৃতিপ্রেমীরা লাল, হলুদ, বাসন্তী রঙের শাড়ি, পাঞ্জাবি পরে হাজির হন চারুকলার মুক্তমঞ্চে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে গোলাপ, গাদা,পলাশ, শিমুলসহ বর্ণিল ফুলে রঙিন হয়ে ওঠে টিএসসি এলাকা। এরপর সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে সূচনা হয় উৎসবের। সেখানে বরেণ্য শিল্পীদের নানান পরিবেশনার পর সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি চারুকলা থেকে বের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরে আবার চারুকলায় এসে শেষ হয়। এরপরই টিএসসি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে মানুষ। সেলফি আড্ডায় দুপুর গড়িয়ে যায়। বিকেল ৩টায় বইমেলার গেট খুলে দিলে শুরু হয় মেলামুখী মানুষের স্রোত।
মেলার প্রতিটি গেটে হলুদ আর লাল পোশাকে জাড়ানো মানুষের দীর্ঘ সারি লক্ষ করা যায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মানুষে একাকার হয়ে যায়। এ সময় মেলার রূপ পাল্টে যায়। যেদিকে চোখ যায় শুধু হলুদ আর লাল রঙের বাহারি সাজ চোখে পড়ে। মনে হয় প্রাণের মেলা যেন প্রকৃতির সাজে রূপ নিয়েছে। সূর্য ডোবার আগেই সর্বত্র মানুষের চাপে মেলায় চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে। এ সময় অনেকে বিরক্তিও প্রকাশ করেন। অন্য দিকে বাংলা একডেমি প্রাঙ্গণে ছিল উল্টো চিত্র। তেমন ভিড় বা কোলাহল ছিল না।
শীত শেষে বসন্ত আসে দক্ষিণ দিক থেকে আসা উষ্ণ বাতাসের স্পর্শে, যাকে 'বসন্ত সমীরণ' নামে মন-প্রাণ জুড়ানো বাতাসের আবহে গানে, কবিতায় বলা হয়েছে। সংস্কৃতি ও জীবনচর্চায় ঋতুরাজ বসন্তের উদ্ভাস উতল হাওয়ায়। আলো ঝলমলে রঙের বাহারে। সৌরভ স্নাত ধরিত্রীর প্রাণপ্রবাহে।
বসন্তের নতুন বাতাস, সুবাস আর উজ্জ্বল আলোর স্পর্শে শীতঘুম শেষে জাগে রঙিন প্রকৃতি। মুকুলে মুকুলে ভরে যায় আমের কুঞ্জ। পলাশের ও শিমুলের ডালে ডালে রক্তলাল ফুলের সমাহারে যেন আগুন লাগে গাছে গাছে। কোকিল ডেকে যায় কুহুরবে। ফুল আর প্রজাপতির মেলায় বসন্ত ডাক দেয় উৎসবের, আনন্দের। আবাহন জানায় ভালোবাসা দিবসের অনিন্দ্য মাহেন্দ্রক্ষণে। হৃদয় জাগানো উল্লাসে চিরায়ত মানব-মানবীকে ডেকে যায় শাশ্বত বসন্ত।
মেলার ১৪তম দিনে গতকাল মেলায় অনেক লেখক এসেছেন। ফলে একাধিক প্যাভিলিয়নের সামনে নিজের প্রিয় লেখকের অটোগ্রাফ নিতে আসা পাঠকের দীর্ঘ লাইন ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে আগত দর্শনার্থীর তুলনায় পাঠক কম বলে জানালেন বিক্রেতারা। তাদের ভাষ্য, মানুষ এখন আর বই পড়তে চায় না। তাই এত মানুষ তারপরও ক্রেতা নেই।
নাগরিক প্রতিবেদন
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, 12:48 PM
অন্যান্য দিনের চেয়ে রাজধানী গতকালের (১৪ ফেব্রুয়ারি)সকালটা ছিল ভিন্ন। ভোরের ধোঁয়াশা আলো ফোটার সাথে সাথে জেগে উঠেছিল রাজধানীর সংস্কৃতিপাড়া। বসন্ত আর ভালোবাসার আলিঙ্গনে রঙিন পোশাক নিয়েই ছিল সকালের বাড়তি ব্যস্ততা। ভালোবাসার হাত ধরে ফাল্গুনের আগমনে মানুষের সাথে বইমেলার রঙ বদলেছিল। লাল আর হলুদের সমারোহে প্রকৃতির সাজে সেজেছিল প্রাণের মেলা।
এর আগে হালকা কুয়াশায় ভোরের সূর্য উঁকি দেয়ার সাথে সাথে নানান বয়সের নারী-পুরুষ লাল আর হলুদ পোশাক গায়ে জড়িয়ে বেরিয়ে পড়েন চারুকলার উদ্দেশে। প্রকৃতিপ্রেমীরা লাল, হলুদ, বাসন্তী রঙের শাড়ি, পাঞ্জাবি পরে হাজির হন চারুকলার মুক্তমঞ্চে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে গোলাপ, গাদা,পলাশ, শিমুলসহ বর্ণিল ফুলে রঙিন হয়ে ওঠে টিএসসি এলাকা। এরপর সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে সূচনা হয় উৎসবের। সেখানে বরেণ্য শিল্পীদের নানান পরিবেশনার পর সকাল সাড়ে ১০টায় শুরু হয় আনন্দ শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি চারুকলা থেকে বের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ঘুরে আবার চারুকলায় এসে শেষ হয়। এরপরই টিএসসি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে মানুষ। সেলফি আড্ডায় দুপুর গড়িয়ে যায়। বিকেল ৩টায় বইমেলার গেট খুলে দিলে শুরু হয় মেলামুখী মানুষের স্রোত।
মেলার প্রতিটি গেটে হলুদ আর লাল পোশাকে জাড়ানো মানুষের দীর্ঘ সারি লক্ষ করা যায়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মানুষে একাকার হয়ে যায়। এ সময় মেলার রূপ পাল্টে যায়। যেদিকে চোখ যায় শুধু হলুদ আর লাল রঙের বাহারি সাজ চোখে পড়ে। মনে হয় প্রাণের মেলা যেন প্রকৃতির সাজে রূপ নিয়েছে। সূর্য ডোবার আগেই সর্বত্র মানুষের চাপে মেলায় চলাচল কঠিন হয়ে পড়ে। এ সময় অনেকে বিরক্তিও প্রকাশ করেন। অন্য দিকে বাংলা একডেমি প্রাঙ্গণে ছিল উল্টো চিত্র। তেমন ভিড় বা কোলাহল ছিল না।
শীত শেষে বসন্ত আসে দক্ষিণ দিক থেকে আসা উষ্ণ বাতাসের স্পর্শে, যাকে 'বসন্ত সমীরণ' নামে মন-প্রাণ জুড়ানো বাতাসের আবহে গানে, কবিতায় বলা হয়েছে। সংস্কৃতি ও জীবনচর্চায় ঋতুরাজ বসন্তের উদ্ভাস উতল হাওয়ায়। আলো ঝলমলে রঙের বাহারে। সৌরভ স্নাত ধরিত্রীর প্রাণপ্রবাহে।
বসন্তের নতুন বাতাস, সুবাস আর উজ্জ্বল আলোর স্পর্শে শীতঘুম শেষে জাগে রঙিন প্রকৃতি। মুকুলে মুকুলে ভরে যায় আমের কুঞ্জ। পলাশের ও শিমুলের ডালে ডালে রক্তলাল ফুলের সমাহারে যেন আগুন লাগে গাছে গাছে। কোকিল ডেকে যায় কুহুরবে। ফুল আর প্রজাপতির মেলায় বসন্ত ডাক দেয় উৎসবের, আনন্দের। আবাহন জানায় ভালোবাসা দিবসের অনিন্দ্য মাহেন্দ্রক্ষণে। হৃদয় জাগানো উল্লাসে চিরায়ত মানব-মানবীকে ডেকে যায় শাশ্বত বসন্ত।
মেলার ১৪তম দিনে গতকাল মেলায় অনেক লেখক এসেছেন। ফলে একাধিক প্যাভিলিয়নের সামনে নিজের প্রিয় লেখকের অটোগ্রাফ নিতে আসা পাঠকের দীর্ঘ লাইন ছিল চোখে পড়ার মতো। তবে আগত দর্শনার্থীর তুলনায় পাঠক কম বলে জানালেন বিক্রেতারা। তাদের ভাষ্য, মানুষ এখন আর বই পড়তে চায় না। তাই এত মানুষ তারপরও ক্রেতা নেই।