খালেদা জিয়ার দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে: ফখরুল

#
news image

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে বলে আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, ‘আল্লাহ না করুক আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার যদি কোনো অঘটন ঘটে তাহলে এই দেশের মানুষ আপনাদের (আওয়ামী লীগ) ক্ষমা করবে না।

রোববার (১২জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়ার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি যৌথভাবে এই সমাবেশের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী কয়েকবার আমাদের চিকিৎসকদের চেষ্টায় মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছেন। গত পরশু রাতেও তিনি যখন হৃদরোগে আক্রান্ত হন, তখন তার অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। চিকিৎসকদের ধন্যবাদ দেই যে তাদের অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপে রিং লাগিয়ে তার লাইফ সেভ করেছেন। কিন্তু এটাই শেষ না, তার অনেকগুলো অসুখ আছে, লিভার সিরোসিস, আর্থারাইটিস, হার্ট ডিজিস আছে। এগুলোর জন্য দরকার উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্র। সেটা আমাদের দেশে নেই। আমাদের ডাক্তাররা তাই বলেছেন, হায়ার ট্রিটমেন্টের জন্য হায়ার মেডিক্যাল সেন্টারে তাকে নিয়ে যাওয়া দরকার। যেটা বিদেশে আছে। আজকে সেজন্যই এ প্রতিবাদ সভা। আমরা বারবার অনুরোধ করেছি, আন্দোলন করেছি, কর্মসূচি দিয়েছি, আমরা সোজা কথা বলতে চাই, কালকে ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন ‘সরকার কোনো দায় নেবে না’। আল্লাহ না করুক আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার যদি কোনো অঘটন ঘটে, তাহলে সরকারকেই এর দায় নিতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক রাখা হয়েছে। কত টাকার মামলা? ২কোটি ৩৩লাখ টাকার মামলা। সেই মামলায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। একই সঙ্গে সেই টাকা কোথাও যায়নি। কেউ তসরুফও করেনি। পুরো টাকা ব্যাংকে আছে। যা এখন প্রায় ৮কোটি হয়েছে। মূল কারণটা ছিল খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। তাকে রাজনীতি করতে না দেওয়া। সেই কারণে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগ, প্রশাসন, দুদককে নিয়ন্ত্রণ করে দেশনেত্রীকে সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছেন।

তিনি বলেন, কেন খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে। কেন তাকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না? যখন তাদের কলিম উদ্দিন-সলিম উদ্দিন সব বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করে। সাজাপ্রাপ্তরা গিয়ে বিদেশে চিকিৎসা করে। কেউ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যায়। তখন বাংলাদেশের মানুষের জনপ্রিয় নেতা, যিনি গণতন্ত্রের জন্য সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাকে চিকিৎসা করতে দেওয়া হয় না কেন? কারণ তিনি হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ভয়। ভয়ের কারণ দেশনেত্রী যদি বেরিয়ে আসেন, তিনি যদি রাস্তায় নামেন, মানুষকে ডাক দেন সেই ডাকে হ্যামিলিনের বংশীবাদকের মতো সব মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসবে। সেজন্যই তাকে আটকে রেখেছে।

সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের শেষ কথা অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠান। অন্যথায় তার সব দায়-দায়িত্ব আপনাদেরকে নিতে হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক-ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান মীর নাসির, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী, জলবায়ু বিষয়ক সহ-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী,  যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, বর্তমান সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, যুগ্ম-সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, মহানগর বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, নবি উল্লাহ নবী, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, তানভীর আহমেদ রবিন, আরিফা সুলতানা রূমা প্রমুখ।

এর আগে সকাল ৯টা থেকে মহানগরের বিভিন্ন থানা থেকে খণ্ডখণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসেন কয়েক হাজার দলীয় নেতা-কর্মী। সমাবেশে অংশ নিয়ে তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়ে নানা রকমের শ্লোগান দেন।

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ জুন, ২০২২,  9:43 PM

news image

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কিছু হলে তার দায়-দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে বলে আবারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বলেছেন, ‘আল্লাহ না করুক আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার যদি কোনো অঘটন ঘটে তাহলে এই দেশের মানুষ আপনাদের (আওয়ামী লীগ) ক্ষমা করবে না।

রোববার (১২জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দেওয়ার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি যৌথভাবে এই সমাবেশের আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী কয়েকবার আমাদের চিকিৎসকদের চেষ্টায় মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে এসেছেন। গত পরশু রাতেও তিনি যখন হৃদরোগে আক্রান্ত হন, তখন তার অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয় ছিল। চিকিৎসকদের ধন্যবাদ দেই যে তাদের অত্যন্ত সময়োপযোগী পদক্ষেপে রিং লাগিয়ে তার লাইফ সেভ করেছেন। কিন্তু এটাই শেষ না, তার অনেকগুলো অসুখ আছে, লিভার সিরোসিস, আর্থারাইটিস, হার্ট ডিজিস আছে। এগুলোর জন্য দরকার উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্র। সেটা আমাদের দেশে নেই। আমাদের ডাক্তাররা তাই বলেছেন, হায়ার ট্রিটমেন্টের জন্য হায়ার মেডিক্যাল সেন্টারে তাকে নিয়ে যাওয়া দরকার। যেটা বিদেশে আছে। আজকে সেজন্যই এ প্রতিবাদ সভা। আমরা বারবার অনুরোধ করেছি, আন্দোলন করেছি, কর্মসূচি দিয়েছি, আমরা সোজা কথা বলতে চাই, কালকে ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন ‘সরকার কোনো দায় নেবে না’। আল্লাহ না করুক আজকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার যদি কোনো অঘটন ঘটে, তাহলে সরকারকেই এর দায় নিতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক রাখা হয়েছে। কত টাকার মামলা? ২কোটি ৩৩লাখ টাকার মামলা। সেই মামলায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। একই সঙ্গে সেই টাকা কোথাও যায়নি। কেউ তসরুফও করেনি। পুরো টাকা ব্যাংকে আছে। যা এখন প্রায় ৮কোটি হয়েছে। মূল কারণটা ছিল খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়া। তাকে রাজনীতি করতে না দেওয়া। সেই কারণে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগ, প্রশাসন, দুদককে নিয়ন্ত্রণ করে দেশনেত্রীকে সাজা দিয়ে আটক করে রেখেছেন।

তিনি বলেন, কেন খালেদা জিয়াকে আটক রাখা হয়েছে। কেন তাকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না? যখন তাদের কলিম উদ্দিন-সলিম উদ্দিন সব বিদেশে গিয়ে চিকিৎসা করে। সাজাপ্রাপ্তরা গিয়ে বিদেশে চিকিৎসা করে। কেউ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যায়। তখন বাংলাদেশের মানুষের জনপ্রিয় নেতা, যিনি গণতন্ত্রের জন্য সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাকে চিকিৎসা করতে দেওয়া হয় না কেন? কারণ তিনি হচ্ছেন আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় ভয়। ভয়ের কারণ দেশনেত্রী যদি বেরিয়ে আসেন, তিনি যদি রাস্তায় নামেন, মানুষকে ডাক দেন সেই ডাকে হ্যামিলিনের বংশীবাদকের মতো সব মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসবে। সেজন্যই তাকে আটকে রেখেছে।

সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের শেষ কথা অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠান। অন্যথায় তার সব দায়-দায়িত্ব আপনাদেরকে নিতে হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক-ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান মীর নাসির, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম-মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী, জলবায়ু বিষয়ক সহ-সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, সহ-যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী,  যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, বর্তমান সভাপতি সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, যুগ্ম-সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, মৎস্যজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেইন, মহানগর বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, নবি উল্লাহ নবী, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, তানভীর আহমেদ রবিন, আরিফা সুলতানা রূমা প্রমুখ।

এর আগে সকাল ৯টা থেকে মহানগরের বিভিন্ন থানা থেকে খণ্ডখণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশ স্থলে আসেন কয়েক হাজার দলীয় নেতা-কর্মী। সমাবেশে অংশ নিয়ে তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়ে নানা রকমের শ্লোগান দেন।