পোশাক শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি কার্যকর করা হোক

#
news image

শ্রমিকরা চলমান মূল্যস্ফীতিতে নিদারুণ কষ্ট ভোগ করছে। নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্ভোগের মধ্যে আছে। এমন সময় বেতন-ভাতা বাড়ানোর নামে পোশাক খাতের শ্রমিকদের মাসের পর মাস ঘুরানো চরম অমানবিক। করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, তারপর এখন শুরু হয়েছে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ।

সব কিছু বিবেচনায় করে,  বৈশিক অর্থনীতির অবস্থা ও শিল্প-উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট সামনে রেখে পোশাক শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ২০-২৫ হাজার  টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছেন শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধিরা। এ প্রস্তাবের বিপরীতে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি ও তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি মজুরি ২ হাজার ৪০০ টাকা বাড়িয়ে ১০ হাজার ৪০০ টাকার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে পোশাক শ্রমিকরা জানান, এবার মজুরি নিয়ে তালবাহানা চলবে না। তাদের বেতনের ৬৫ শতাংশ বেসিক, বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ১০ শতাংশ এবং পাঁচটি গ্রেডের মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করতে হবে এবং ৬৫টি সংগঠনের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়েছে। দুপক্ষের প্রস্তাবনায় বেশ ফাঁরাক রয়েছে।

প্রায় ১ বছর ধরে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন গার্মেন্টস শ্রমিকদের নূন্যতম জুরি ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকার দাবি জানিয়ে এলেও তাদের সে প্রস্তাব আমলে নেওয়া হচ্ছে না। শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি, দেশে খাদ্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে অস্বাভাবিক, ঘরভাড়া বেড়েছে। এভাবে সব ক্ষেত্রেই যে হারে ব্যয় বেড়েছে তাতে ২৩ হাজার টাকার নিচে মজুরি হলে সংসার চলবে না শ্রমিক পরিবারগুলোর। তাই শ্রমিক সংগঠনগুলো এবং শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা দবি করা হয়েছে, সেখানে মালিকরা ১১ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছে। তবে বর্তমান উচ্চমূল্যের বাজারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ মজুরি কাঠামো ঘোষণা না দেওয়া হলে শ্রমিকরা মেনে নেবেন না। যদি চাহিদামাফিক মজুরি দেওয়া না হয়, তা হলে কিন্তু শ্রমিকরা ঘরে বসে থাকবে না, রাস্তায় নামবে, আন্দোলন করবে। আশা করব গ্রহণযোগ্য মজুরি দেয়া হবে।

দেশকে এগোতে হলে শ্রমিক-কর্মচারীর স্বার্থরক্ষার প্রশ্নে মালিকদের মানসিকতাও পরিবর্তন করতে হবে। পণ্যের উৎপাদন তখনই বাড়বে যখন শ্রমিকরা সন্তুষ্ট মনে কাজ করতে পারবে। শ্রমিক-মালিক পরস্পর শত্রু নয় বরং একে অপরের পরিপূরক। পোশাক শিল্পের আজকের এই উন্নতির পেছনে রয়েছে শ্রমিকদের অক্লান্ত পরিশ্রম। শ্রমিকরা সব সময় মুখ খুলতে পারে না। পেটের দায়ে সব নীরবে সহ্য করে যায়। কিন্তু আজ তাদের পেট দেয়ালে ঠেকে গেছে। ফলে নামকাওয়াস্তে বেতন বৃদ্ধিতে শ্রমিকরা সন্তুষ্ট হবে না।

এতে শ্রমিকদের দীর্ঘ দিনের জমে থাকা ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটবে। শ্রমিকরা ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য রাজপথে নেমে আসবে। যা সরকার ও মালিকপক্ষের জন্য সুখকর হবে না। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার মধ্যে মালিক ও সরকারের কল্যাণ নিহিত রয়েছে। আসন্ন নির্বাচনের আগে পোশাক শিল্পে কোনো অস্থিরতা সৃষ্টি হোক এটা আমরা চাই না। তাই পোশাক খাতের শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি কার্যকরের আহ্বান জানাচ্ছি।

নাগরিক ডেস্ক

২৪ অক্টোবর, ২০২৩,  10:46 PM

news image

শ্রমিকরা চলমান মূল্যস্ফীতিতে নিদারুণ কষ্ট ভোগ করছে। নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে পরিবার-পরিজন নিয়ে দুর্ভোগের মধ্যে আছে। এমন সময় বেতন-ভাতা বাড়ানোর নামে পোশাক খাতের শ্রমিকদের মাসের পর মাস ঘুরানো চরম অমানবিক। করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, তারপর এখন শুরু হয়েছে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ।

সব কিছু বিবেচনায় করে,  বৈশিক অর্থনীতির অবস্থা ও শিল্প-উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট সামনে রেখে পোশাক শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি ২০-২৫ হাজার  টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছেন শ্রমিক পক্ষের প্রতিনিধিরা। এ প্রস্তাবের বিপরীতে মালিকপক্ষের প্রতিনিধি ও তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি মজুরি ২ হাজার ৪০০ টাকা বাড়িয়ে ১০ হাজার ৪০০ টাকার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে পোশাক শ্রমিকরা জানান, এবার মজুরি নিয়ে তালবাহানা চলবে না। তাদের বেতনের ৬৫ শতাংশ বেসিক, বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ১০ শতাংশ এবং পাঁচটি গ্রেডের মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করতে হবে এবং ৬৫টি সংগঠনের পক্ষ থেকে এই দাবি জানানো হয়েছে। দুপক্ষের প্রস্তাবনায় বেশ ফাঁরাক রয়েছে।

প্রায় ১ বছর ধরে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন গার্মেন্টস শ্রমিকদের নূন্যতম জুরি ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকার দাবি জানিয়ে এলেও তাদের সে প্রস্তাব আমলে নেওয়া হচ্ছে না। শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি, দেশে খাদ্যপণ্যের মূল্য বেড়েছে অস্বাভাবিক, ঘরভাড়া বেড়েছে। এভাবে সব ক্ষেত্রেই যে হারে ব্যয় বেড়েছে তাতে ২৩ হাজার টাকার নিচে মজুরি হলে সংসার চলবে না শ্রমিক পরিবারগুলোর। তাই শ্রমিক সংগঠনগুলো এবং শ্রমিকদের পক্ষ থেকে ২৩ থেকে ২৫ হাজার টাকা দবি করা হয়েছে, সেখানে মালিকরা ১১ হাজার টাকা করার প্রস্তাব করেছে। তবে বর্তমান উচ্চমূল্যের বাজারের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ মজুরি কাঠামো ঘোষণা না দেওয়া হলে শ্রমিকরা মেনে নেবেন না। যদি চাহিদামাফিক মজুরি দেওয়া না হয়, তা হলে কিন্তু শ্রমিকরা ঘরে বসে থাকবে না, রাস্তায় নামবে, আন্দোলন করবে। আশা করব গ্রহণযোগ্য মজুরি দেয়া হবে।

দেশকে এগোতে হলে শ্রমিক-কর্মচারীর স্বার্থরক্ষার প্রশ্নে মালিকদের মানসিকতাও পরিবর্তন করতে হবে। পণ্যের উৎপাদন তখনই বাড়বে যখন শ্রমিকরা সন্তুষ্ট মনে কাজ করতে পারবে। শ্রমিক-মালিক পরস্পর শত্রু নয় বরং একে অপরের পরিপূরক। পোশাক শিল্পের আজকের এই উন্নতির পেছনে রয়েছে শ্রমিকদের অক্লান্ত পরিশ্রম। শ্রমিকরা সব সময় মুখ খুলতে পারে না। পেটের দায়ে সব নীরবে সহ্য করে যায়। কিন্তু আজ তাদের পেট দেয়ালে ঠেকে গেছে। ফলে নামকাওয়াস্তে বেতন বৃদ্ধিতে শ্রমিকরা সন্তুষ্ট হবে না।

এতে শ্রমিকদের দীর্ঘ দিনের জমে থাকা ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটবে। শ্রমিকরা ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্য রাজপথে নেমে আসবে। যা সরকার ও মালিকপক্ষের জন্য সুখকর হবে না। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার মধ্যে মালিক ও সরকারের কল্যাণ নিহিত রয়েছে। আসন্ন নির্বাচনের আগে পোশাক শিল্পে কোনো অস্থিরতা সৃষ্টি হোক এটা আমরা চাই না। তাই পোশাক খাতের শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি কার্যকরের আহ্বান জানাচ্ছি।