সন্তান প্রসবে বাড়ছে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার
নাগরিক ডেস্ক
১৭ জুন, ২০২৩, 3:32 PM
সন্তান প্রসবে বাড়ছে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার
বর্তমানে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর উদ্দেশ্য ব্যবসা। যেখানে স্বাভাবিক প্রসবে খরচ নামমাত্র, সেখানে অস্ত্রোপচারে সন্তান জন্ম দিতে খরচ কখনো কখনো লাখ টাকার ওপরে। অনেক সময় হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর লোভের শিকার হতে হচ্ছে প্রসূতি ও নবজাতকদের।
২০২২ সালে প্রসবকালে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারে কমপক্ষে খরচ হয়েছে ২ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ বাড়তি খরচের তথ্য পাওয়া যায়। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট) সবশেষ যে জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে দেশে ৪৫ শতাংশ প্রসব হচ্ছে অস্ত্রোপচারে। এ অস্ত্রোপচারের ৩০ শতাংশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুয়ায়ী অপ্রয়োজনীয়।
অনেক নামসর্বস্ব হাসপাতাল ও ক্লিনিক খুলে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে মা ও শিশুর জীবন গেছে, এমন উদাহরণ কম নয়। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে অজপাড়াগাঁয়ে বহু হাসপাতাল ও ক্লিনিক টিকেই আছে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের ওপর। এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কাজ হলো হবু মা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মনে ভয় ঢুকিয়ে স্বাভাবিক প্রসবে নিরুৎসাহিত করা। মা ও শিশুর জীবন রক্ষার প্রয়োজনে যে অস্ত্রোপচার, তার বাইরে ঢালাও ভাবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের পেছনের মূল কারণটি বাণিজ্যিক।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে অস্ত্রোপচারের হার এই অপ্রিয় সত্যকেই নিশ্চিত করছে। এখন বাংলাদেশে সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার হচ্ছে প্রতি ১০০ জনে ৪৫ জনের। এর মধ্যে ৮৪ ভাগ অস্ত্রোপচার আবার হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালে। অথচ ২০০৪ সালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম হতো মাত্র ৪ শতাংশ শিশু।
সরকারের উচিত মাতৃস্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ, মধ্যবিত্তের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো ও অস্ত্রোপচারে কেউ উদ্বুদ্ধ করলে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, এ ছাড়া শুধু বাণিজ্যিক বিবেচনায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের যে ‘সুনামি’ ঘটে চলেছে, তা দেশের স্বাস্থ্য খাতের চরম অব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহিহীন পরিস্থিতিকে তুলে ধরা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে কোন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অস্ত্রোপচার হচ্ছে, তা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত নজরদারি করা। তাই হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাইতে হবে।
যথাযথ ব্যাখ্যা না পাওয়া গেলে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের লাইসেন্স বাতিল করার মতো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলে হয়তো সন্তান জন্মদানে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। তাই যতদ্রুত সম্ভব স্বাস্থ্য ও অর্থ রক্ষায় এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করা।
নাগরিক ডেস্ক
১৭ জুন, ২০২৩, 3:32 PM
বর্তমানে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর উদ্দেশ্য ব্যবসা। যেখানে স্বাভাবিক প্রসবে খরচ নামমাত্র, সেখানে অস্ত্রোপচারে সন্তান জন্ম দিতে খরচ কখনো কখনো লাখ টাকার ওপরে। অনেক সময় হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর লোভের শিকার হতে হচ্ছে প্রসূতি ও নবজাতকদের।
২০২২ সালে প্রসবকালে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারে কমপক্ষে খরচ হয়েছে ২ হাজার ৩৬৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপের তথ্য বিশ্লেষণ করে এ বাড়তি খরচের তথ্য পাওয়া যায়। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (নিপোর্ট) সবশেষ যে জনমিতি ও স্বাস্থ্য জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে দেশে ৪৫ শতাংশ প্রসব হচ্ছে অস্ত্রোপচারে। এ অস্ত্রোপচারের ৩০ শতাংশ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদণ্ড অনুয়ায়ী অপ্রয়োজনীয়।
অনেক নামসর্বস্ব হাসপাতাল ও ক্লিনিক খুলে অস্ত্রোপচার করতে গিয়ে মা ও শিশুর জীবন গেছে, এমন উদাহরণ কম নয়। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে অজপাড়াগাঁয়ে বহু হাসপাতাল ও ক্লিনিক টিকেই আছে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের ওপর। এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কাজ হলো হবু মা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মনে ভয় ঢুকিয়ে স্বাভাবিক প্রসবে নিরুৎসাহিত করা। মা ও শিশুর জীবন রক্ষার প্রয়োজনে যে অস্ত্রোপচার, তার বাইরে ঢালাও ভাবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের পেছনের মূল কারণটি বাণিজ্যিক।
বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে অস্ত্রোপচারের হার এই অপ্রিয় সত্যকেই নিশ্চিত করছে। এখন বাংলাদেশে সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার হচ্ছে প্রতি ১০০ জনে ৪৫ জনের। এর মধ্যে ৮৪ ভাগ অস্ত্রোপচার আবার হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতালে। অথচ ২০০৪ সালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম হতো মাত্র ৪ শতাংশ শিশু।
সরকারের উচিত মাতৃস্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ, মধ্যবিত্তের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো ও অস্ত্রোপচারে কেউ উদ্বুদ্ধ করলে শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, এ ছাড়া শুধু বাণিজ্যিক বিবেচনায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানের যে ‘সুনামি’ ঘটে চলেছে, তা দেশের স্বাস্থ্য খাতের চরম অব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহিহীন পরিস্থিতিকে তুলে ধরা এবং জবাবদিহি নিশ্চিত করতে কোন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অস্ত্রোপচার হচ্ছে, তা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত নজরদারি করা। তাই হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাইতে হবে।
যথাযথ ব্যাখ্যা না পাওয়া গেলে হাসপাতাল ও ক্লিনিকের লাইসেন্স বাতিল করার মতো কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তাহলে হয়তো সন্তান জন্মদানে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। তাই যতদ্রুত সম্ভব স্বাস্থ্য ও অর্থ রক্ষায় এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করা।