শুধু উন্নয়ন নয়, পাশাপাশি বেকারত্ব থেকে মুক্তি চাই
নাগরিক ডেস্ক
০২ জুন, ২০২৩, 7:55 AM
শুধু উন্নয়ন নয়, পাশাপাশি বেকারত্ব থেকে মুক্তি চাই
আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে বেকারত্ব এখন এক গভীর ও জাতীয় অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে; যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল একটি দেশের অর্থনীতির জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
বাংলাদেশে বেকার যুব সমাজের অর্ধেকের বেশি শিক্ষিত বেকার। আর এ শিক্ষিত বেকারত্বের অন্যতম কারণ হলো সর্বক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি ও চাকরির বয়সসীমা। অবশ্য বয়সসীমার বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্তে অনড়, তারা কোনোভাবেই চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়াবে না। গত কয়েক বছরে সরকারের পক্ষ থেকে কয়েক দফায় তা সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ফলে বয়স বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত চাকরি প্রত্যাশী অনেকে হাল ছেড়ে দিয়ে যে যার পথ বেছে নিয়েছেন। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চাকরির বয়স ৩০ বছর থেকে বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে। তারপরও বাংলাদেশের বেকারত্বের পরিস্থিতির বিশেষ কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। বর্তমানে বেশিরভাগ কর্মহীন তরুণ-তরুণীরা বিনোদন প্রিয় ও অনলাইন আসক্তিতে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে, আর এ অনলাইন ফেসবুক লাইভে এসে গত (২৩ মে) চাকরির বয়স না থাকায় সনদ কোনো লাগছে না, এমন অভিযোগ তুলে নিজের সব অ্যাকাডেমিক সনদ পুড়িয়েছেন ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মুক্তা সুলতানা।
ওই শিক্ষার্থীর দাবি, সরকারি-বেসরকারি চাকরি করতে এসব সনদ কোনো কাজে লাগছে না। অনেক বছর ধরে সরকারের কাছে চাকরির বয়স বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়ে আসছেন। এটি সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল। কিন্তু নির্বাচনী ইশতেহারে থাকার পরেও সেটি বৃদ্ধি করা হয়নি। তাই ২৭ বছরের অর্জিত সনদ পুড়িয়ে ফেললেন। পরবর্তীতে এ বিষয়টি একটি টেলিভিশনের মাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে মুক্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রতিমন্ত্রী এবং তার দপ্তরে আসার জন্য অনুরোধ জানান।
এরপর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব সিকিউরড ই-মেইল ফর গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার’ প্রজেক্টে ‘কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ পদে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। তার বেতন ৩৫ হাজার টাকা। এমন লাখ লাখ বেকার শিক্ষার্থী বাংলাদেশে বসবাস করছে, তাদের কি হবে? যদিও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে চাকরির বয়স বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।
‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ কিন্তু ক্ষমতাসীন সরকার এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নিল না। এ রকম তাদের নানা আশার বানী শুনতে শুনতেই যুবশক্তির সর্বনাশ হয়ে যায়। আর সেই সর্বনাশটা তাঁরা টের পান, যখন বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ বছরেই বেঁধে রাখার বিষয়টি তাঁরা জানতে পারেন। তবে সরকারি চাকরিতে বয়স না বাড়লেও সরকার অন্তত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিতে পারে, তাদের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা যেন না থাকে।
সে ক্ষেত্রে হয়তো বেকার যুবসমাজের বড় একটি অংশ হতাশা থেকে মুক্তি পাবে। কেননা সবার উদ্যোক্তা হওয়ার সক্ষমতা থাকে না। তাই আমরা সরকারের কাছে শুধু উন্নয়ন চাই না, উন্নয়নের পাশাপাশি বেকারত্বের নাগপাশ থেকে মুক্তি চাই।
নাগরিক ডেস্ক
০২ জুন, ২০২৩, 7:55 AM
আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশে বেকারত্ব এখন এক গভীর ও জাতীয় অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে; যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল একটি দেশের অর্থনীতির জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
বাংলাদেশে বেকার যুব সমাজের অর্ধেকের বেশি শিক্ষিত বেকার। আর এ শিক্ষিত বেকারত্বের অন্যতম কারণ হলো সর্বক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি ও চাকরির বয়সসীমা। অবশ্য বয়সসীমার বিষয়ে সরকার সিদ্ধান্তে অনড়, তারা কোনোভাবেই চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়াবে না। গত কয়েক বছরে সরকারের পক্ষ থেকে কয়েক দফায় তা সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
ফলে বয়স বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত চাকরি প্রত্যাশী অনেকে হাল ছেড়ে দিয়ে যে যার পথ বেছে নিয়েছেন। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চাকরির বয়স ৩০ বছর থেকে বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন হচ্ছে। তারপরও বাংলাদেশের বেকারত্বের পরিস্থিতির বিশেষ কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। বর্তমানে বেশিরভাগ কর্মহীন তরুণ-তরুণীরা বিনোদন প্রিয় ও অনলাইন আসক্তিতে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে, আর এ অনলাইন ফেসবুক লাইভে এসে গত (২৩ মে) চাকরির বয়স না থাকায় সনদ কোনো লাগছে না, এমন অভিযোগ তুলে নিজের সব অ্যাকাডেমিক সনদ পুড়িয়েছেন ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী মুক্তা সুলতানা।
ওই শিক্ষার্থীর দাবি, সরকারি-বেসরকারি চাকরি করতে এসব সনদ কোনো কাজে লাগছে না। অনেক বছর ধরে সরকারের কাছে চাকরির বয়স বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়ে আসছেন। এটি সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল। কিন্তু নির্বাচনী ইশতেহারে থাকার পরেও সেটি বৃদ্ধি করা হয়নি। তাই ২৭ বছরের অর্জিত সনদ পুড়িয়ে ফেললেন। পরবর্তীতে এ বিষয়টি একটি টেলিভিশনের মাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের দৃষ্টিগোচর হয়। পরে মুক্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন প্রতিমন্ত্রী এবং তার দপ্তরে আসার জন্য অনুরোধ জানান।
এরপর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীন ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব সিকিউরড ই-মেইল ফর গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার’ প্রজেক্টে ‘কনটেন্ট ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন অফিসার’ পদে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন। তার বেতন ৩৫ হাজার টাকা। এমন লাখ লাখ বেকার শিক্ষার্থী বাংলাদেশে বসবাস করছে, তাদের কি হবে? যদিও ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের ইশতেহারে চাকরির বয়স বাড়ানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।
‘সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়ে মেধা ও দক্ষতা বিবেচনায় রেখে বাস্তবতার নিরিখে যুক্তিসংগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ কিন্তু ক্ষমতাসীন সরকার এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নিল না। এ রকম তাদের নানা আশার বানী শুনতে শুনতেই যুবশক্তির সর্বনাশ হয়ে যায়। আর সেই সর্বনাশটা তাঁরা টের পান, যখন বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেও চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩০ বছরেই বেঁধে রাখার বিষয়টি তাঁরা জানতে পারেন। তবে সরকারি চাকরিতে বয়স না বাড়লেও সরকার অন্তত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিতে পারে, তাদের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা যেন না থাকে।
সে ক্ষেত্রে হয়তো বেকার যুবসমাজের বড় একটি অংশ হতাশা থেকে মুক্তি পাবে। কেননা সবার উদ্যোক্তা হওয়ার সক্ষমতা থাকে না। তাই আমরা সরকারের কাছে শুধু উন্নয়ন চাই না, উন্নয়নের পাশাপাশি বেকারত্বের নাগপাশ থেকে মুক্তি চাই।