দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আবারও বন্ধের শঙ্কায়

#
news image

বিদ্যুৎ রাষ্ট্রীয় সম্পদের মধ্যে অন্যতম একটি সম্পদ। বিদ্যুতের ওপর দেশের অর্থনীতি অনেকাংশে নির্ভর করে। কিন্তু বর্তমানে যে হারে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা যাচ্ছে, এর ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আবারও বন্ধের শঙ্কায় রয়েছে। কয়লার অভাবে দুই সপ্তাহ ধরে বন্ধ হয়ে আছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। ডলার না পেলে উৎপাদন বন্ধ হতে পারে দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্র রামপাল ও পায়রাও। আর এতে বাড়তে পারে লোডশেডিং। এ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১ হাজার ৮৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

মূলত ডলার-সংকটে ঋণপত্র খুলতে না পারায় কয়লা আমদানি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। এরপর কয়লার অভাবে দুই সপ্তাহ ধরে বন্ধ হয়ে আছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। ডলার না পেলে উৎপাদন বন্ধ হতে পারে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রাও। গত ডিসেম্বরে একটি ইউনিট উৎপাদনে আসার পর এ পর্যন্ত কয়েক দফায় বন্ধ হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ মালিকানায় নির্মিত বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। গত ১৫ এপ্রিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর চার দিন পর এটি আবার চালু হয়। কিন্তু কয়লার অভাবে ২৪ এপ্রিল থেকে এটি আবার বন্ধ হয়ে যায়।

নতুন করে আমদানি করা কয়লার জাহাজ ৯ মে চট্টগ্রামে পৌঁছার কথা এবং (বিআইএফপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের থেকে জানা গেছে, ডলার-সংকটের কারণে কয়লা আমদানি নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখন খুব তাড়াতারিই কয়লার জাহাজ চলে আসবে। এরপর দুই দিনের মধ্যে উৎপাদন শুরু হবে। হঠাৎ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়।

এখন দেশের অনেক এলাকায় প্রতিদিন গড়ে এক ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তবে জানা গেছে কয়েক দিনের মধ্যেই নাকি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হবে। তবে কবে থেকে এ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয় নি। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র বলছে,রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট চালু হলে দিনে ১০ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হবে।

বর্তমানে তাদের ৬ লাখ টন কয়লার ক্রয়াদেশ দেওয়া আছে। নতুন করে ডাকা দরপত্রে অংশ নিয়ে আরও ৬০ লাখ টন কয়লার ক্রয়াদেশ পেয়েছে দেশের একটি শীর্ষ ব্যবসায়ী গ্রুপ। শুরু থেকে তারাই কয়লা সরবরাহ করছে এই কেন্দ্রে। ৬০ লাখ টন কয়লা দিয়ে আগামী তিন বছর রামপাল কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। আর এসব কয়লা আনা হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া থেকে।

ডলার-সংকটের কারণে কয়লা আমদানি নিয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো একই সমস্যায় পড়েছে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে অতিরিক্ত উৎপাদন বা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র সরকারের জন্য 'বোঝা' হয়ে উঠেছে। অথচ একটু সচেতন হলে এবং নিজেদের স্বদিচ্ছা থাকলে আমরা প্রতিদিন খুব সহজেই অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারি।

তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত গৃহস্থালি থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতন হওয়া। সাধারণ কিছু উপায় মেনে চললেই আমরা প্রতিদিন অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারি। বিদ্যুৎ সাশ্রয় করলে একদিকে যেমন মাসে শেষে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে তেমনি নিশ্চিত হবে বিদ্যুতের সঠিক ব্যবহার। এজন্য আমাদের প্রত্যেকেরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বেশি যত্নবান হতে হবে।

নাগরিক ডেস্ক

১৬ মে, ২০২৩,  11:26 PM

news image

বিদ্যুৎ রাষ্ট্রীয় সম্পদের মধ্যে অন্যতম একটি সম্পদ। বিদ্যুতের ওপর দেশের অর্থনীতি অনেকাংশে নির্ভর করে। কিন্তু বর্তমানে যে হারে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা যাচ্ছে, এর ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো আবারও বন্ধের শঙ্কায় রয়েছে। কয়লার অভাবে দুই সপ্তাহ ধরে বন্ধ হয়ে আছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। ডলার না পেলে উৎপাদন বন্ধ হতে পারে দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্র রামপাল ও পায়রাও। আর এতে বাড়তে পারে লোডশেডিং। এ দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ১ হাজার ৮৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।

মূলত ডলার-সংকটে ঋণপত্র খুলতে না পারায় কয়লা আমদানি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। এরপর কয়লার অভাবে দুই সপ্তাহ ধরে বন্ধ হয়ে আছে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন। ডলার না পেলে উৎপাদন বন্ধ হতে পারে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র পায়রাও। গত ডিসেম্বরে একটি ইউনিট উৎপাদনে আসার পর এ পর্যন্ত কয়েক দফায় বন্ধ হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ মালিকানায় নির্মিত বাগেরহাটের রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। গত ১৫ এপ্রিল বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর চার দিন পর এটি আবার চালু হয়। কিন্তু কয়লার অভাবে ২৪ এপ্রিল থেকে এটি আবার বন্ধ হয়ে যায়।

নতুন করে আমদানি করা কয়লার জাহাজ ৯ মে চট্টগ্রামে পৌঁছার কথা এবং (বিআইএফপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের থেকে জানা গেছে, ডলার-সংকটের কারণে কয়লা আমদানি নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এখন খুব তাড়াতারিই কয়লার জাহাজ চলে আসবে। এরপর দুই দিনের মধ্যে উৎপাদন শুরু হবে। হঠাৎ রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়।

এখন দেশের অনেক এলাকায় প্রতিদিন গড়ে এক ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তবে জানা গেছে কয়েক দিনের মধ্যেই নাকি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হবে। তবে কবে থেকে এ বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয় নি। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র বলছে,রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে এবং বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুটি ইউনিট চালু হলে দিনে ১০ হাজার টন কয়লা প্রয়োজন হবে।

বর্তমানে তাদের ৬ লাখ টন কয়লার ক্রয়াদেশ দেওয়া আছে। নতুন করে ডাকা দরপত্রে অংশ নিয়ে আরও ৬০ লাখ টন কয়লার ক্রয়াদেশ পেয়েছে দেশের একটি শীর্ষ ব্যবসায়ী গ্রুপ। শুরু থেকে তারাই কয়লা সরবরাহ করছে এই কেন্দ্রে। ৬০ লাখ টন কয়লা দিয়ে আগামী তিন বছর রামপাল কেন্দ্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে। আর এসব কয়লা আনা হচ্ছে ইন্দোনেশিয়া থেকে।

ডলার-সংকটের কারণে কয়লা আমদানি নিয়ে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো একই সমস্যায় পড়েছে পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। তবে অতিরিক্ত উৎপাদন বা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র সরকারের জন্য 'বোঝা' হয়ে উঠেছে। অথচ একটু সচেতন হলে এবং নিজেদের স্বদিচ্ছা থাকলে আমরা প্রতিদিন খুব সহজেই অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারি।

তাই আমাদের প্রত্যেকের উচিত গৃহস্থালি থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সচেতন হওয়া। সাধারণ কিছু উপায় মেনে চললেই আমরা প্রতিদিন অনেক বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারি। বিদ্যুৎ সাশ্রয় করলে একদিকে যেমন মাসে শেষে বিদ্যুৎ বিল কম আসবে তেমনি নিশ্চিত হবে বিদ্যুতের সঠিক ব্যবহার। এজন্য আমাদের প্রত্যেকেরই নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বেশি যত্নবান হতে হবে।