ঝড়ে তছনছ হয়ে যেতে পারে জনজীবন

#
news image

ঝড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বন্যা, খরা ও ভূমিকম্পের মতো বাংলাদেশের একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ও কালবৈশাখী। তবে প্রচণ্ড ঝড়ে তছনছ হয়ে যেতে পারে জনজীবন। কালবৈশাখী আসলেই নানা জায়গা থেকে খবর পাওয়া যায় নানা দুর্ঘটনার। কালবৈশাখী সাধারণ ঝড় হলেও এতে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়।

পৃথিবীর অন্যান্য দেশে বরফঝড়, তুষারঝড়, ধুলোঝড় ইত্যাদি দেখা গেলেও বাংলাদেশে সাধারণত ঘূর্ণিঝড় ও কালবৈশাখী দেখা যায়। গ্রীষ্ম ঋতুর সঙ্গে হাত ধরাধরি করে এ ঝড়ের আগমন ঘটে। বাংলাদেশে বৈশাখ মাসে কালবৈশাখীর মাত্রা ব্যাপক আকার ধারণ করে। সাধারণত কালবৈশাখীর বায়ুর গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশিও হতে পারে। বাংলাদেশের কালবৈশাখী সাধারণ বৈশাখ মাসে বেশি হয়। সাধারণ এ ঝড়ের অনেক আগাম পূর্বাভাস বলা খুব কঠিন। খুব অল্প সময়েই সংঘটিত হয়ে থাকে।

আগাম পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয় না বলে এ ঝড়ের ক্ষতির মাত্রা বেশি থাকে। কালবৈশাখীর কারণে সব পেশার মানুষই কমবেশি ক্ষতির সম্মুখীন হন। সব থেকে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হন কর্মজীবী, কৃষক ও জেলে শ্রেণির মানুষ। কালবৈশাখীর বেগ প্রবল থাকে বলে ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। এসব দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে মানুষকে অনেক মূল্য দিতে হয়।

দুর্যোগ কখনও হঠাৎ সংঘটিত হয় আবার কখনওবা এক বা একাধিক ঘটনা ধীরে ধীরে দুর্যোগ সৃষ্টি করতে পারে। আবার অনেক সময় একটি দুর্যোগ একাধিক দুর্যোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যেমন-ভূমিকম্প থেকে সুনামি হতে পারে। আবার সুনামি থেকে জলোচ্ছ্বাস এবং জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা হতে পারে। কালবৈশাখীর কারণে মানুষের জানমালেরও ক্ষতি হয়। গাছ ভেঙে ঘরের ওপর পড়ে। তখন ঘরের মধ্যে থাকা মানুষজনও হতাহত হয়।

গবাদিপশুও মারা যায়। মাঝেমধ্যে কালবৈশাখীর সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে। এতে ফসলের বেশি ক্ষতি হয়। কালবৈশাখীর সময় বজ্রপাতের ঘটনাও ঘটে। বজ্রপাতের কারণে প্রতিবছর অনেক মানুষ মারা যান। তবে কিছু পদক্ষেপ নিলে ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। যেমন, যতটা সম্ভব ধৈর্য ধারণ করা এবং আতঙ্কিত না হওয়া। বিদ্যুৎ থাকা অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ যেসব বৈদ্যুতিক যন্ত্র আছে সেগুলো চার্জ করে রাখা, বাসগৃহে বিদ্যুৎ না থাকলে মোমবাতি অথবা কেরোসিন তেল আগে থেকে এনে রাখা, আবহাওয়ার খবর শুনে চলাচল বা আবহাওয়া বার্তা যদি কোনো সতর্কতা মেনে চলতে বলে তাহলে তাদের নিয়ম-কানুন অনুসরণ করা।

পরীক্ষার সার্টিফিকেট, নম্বরপত্র, গুরুত্বপূর্ণ বই, দলিলপত্র প্রভৃতি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং তাই সেগুলো পলিব্যাগে মুড়িয়ে রাখা, নিরাপত্তার জন্য ফাস্টএইড বক্স ঠিক আছে কি না দেখে রাখা, অনিরাপদ বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা। ধারালো ভাঙা জিনিসপত্র সরিয়ে রাখা, পানি ফুটিয়ে ও শুকনো খাবার সংরক্ষণ করে রাখা।

গবাদি পশু ও হাঁস মুরগি নিরাপদ স্থানে রাখা যাতে ঝড়ে তাদের কোনো ক্ষতি না হয় এবং বসতঘরের ওপরে যদি কোনো গাছ থাকে যেগুলো দেখলে মনে হয় ভেঙে পড়তে পারে সেগুলো আগে থেকেই কেটে ফেলা। ঝড়ের মধ্যে বা বজ্রপাতের সময় ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। কারন প্রাকৃতিক দুর্যোগকে আমরা চিরতরে বন্ধ করতে পারব না। তবে আমরা সচেতন হলে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতিকে অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মনে করি।

নাগরিক ডেস্ক

১২ মে, ২০২৩,  10:03 AM

news image

ঝড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বন্যা, খরা ও ভূমিকম্পের মতো বাংলাদেশের একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ও কালবৈশাখী। তবে প্রচণ্ড ঝড়ে তছনছ হয়ে যেতে পারে জনজীবন। কালবৈশাখী আসলেই নানা জায়গা থেকে খবর পাওয়া যায় নানা দুর্ঘটনার। কালবৈশাখী সাধারণ ঝড় হলেও এতে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হয়।

পৃথিবীর অন্যান্য দেশে বরফঝড়, তুষারঝড়, ধুলোঝড় ইত্যাদি দেখা গেলেও বাংলাদেশে সাধারণত ঘূর্ণিঝড় ও কালবৈশাখী দেখা যায়। গ্রীষ্ম ঋতুর সঙ্গে হাত ধরাধরি করে এ ঝড়ের আগমন ঘটে। বাংলাদেশে বৈশাখ মাসে কালবৈশাখীর মাত্রা ব্যাপক আকার ধারণ করে। সাধারণত কালবৈশাখীর বায়ুর গড় গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশিও হতে পারে। বাংলাদেশের কালবৈশাখী সাধারণ বৈশাখ মাসে বেশি হয়। সাধারণ এ ঝড়ের অনেক আগাম পূর্বাভাস বলা খুব কঠিন। খুব অল্প সময়েই সংঘটিত হয়ে থাকে।

আগাম পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব হয় না বলে এ ঝড়ের ক্ষতির মাত্রা বেশি থাকে। কালবৈশাখীর কারণে সব পেশার মানুষই কমবেশি ক্ষতির সম্মুখীন হন। সব থেকে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হন কর্মজীবী, কৃষক ও জেলে শ্রেণির মানুষ। কালবৈশাখীর বেগ প্রবল থাকে বলে ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়। এসব দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে মানুষকে অনেক মূল্য দিতে হয়।

দুর্যোগ কখনও হঠাৎ সংঘটিত হয় আবার কখনওবা এক বা একাধিক ঘটনা ধীরে ধীরে দুর্যোগ সৃষ্টি করতে পারে। আবার অনেক সময় একটি দুর্যোগ একাধিক দুর্যোগের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। যেমন-ভূমিকম্প থেকে সুনামি হতে পারে। আবার সুনামি থেকে জলোচ্ছ্বাস এবং জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলীয় এলাকায় লবণাক্ততা হতে পারে। কালবৈশাখীর কারণে মানুষের জানমালেরও ক্ষতি হয়। গাছ ভেঙে ঘরের ওপর পড়ে। তখন ঘরের মধ্যে থাকা মানুষজনও হতাহত হয়।

গবাদিপশুও মারা যায়। মাঝেমধ্যে কালবৈশাখীর সঙ্গে শিলাবৃষ্টি হয়ে থাকে। এতে ফসলের বেশি ক্ষতি হয়। কালবৈশাখীর সময় বজ্রপাতের ঘটনাও ঘটে। বজ্রপাতের কারণে প্রতিবছর অনেক মানুষ মারা যান। তবে কিছু পদক্ষেপ নিলে ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব। যেমন, যতটা সম্ভব ধৈর্য ধারণ করা এবং আতঙ্কিত না হওয়া। বিদ্যুৎ থাকা অবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ যেসব বৈদ্যুতিক যন্ত্র আছে সেগুলো চার্জ করে রাখা, বাসগৃহে বিদ্যুৎ না থাকলে মোমবাতি অথবা কেরোসিন তেল আগে থেকে এনে রাখা, আবহাওয়ার খবর শুনে চলাচল বা আবহাওয়া বার্তা যদি কোনো সতর্কতা মেনে চলতে বলে তাহলে তাদের নিয়ম-কানুন অনুসরণ করা।

পরীক্ষার সার্টিফিকেট, নম্বরপত্র, গুরুত্বপূর্ণ বই, দলিলপত্র প্রভৃতি ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং তাই সেগুলো পলিব্যাগে মুড়িয়ে রাখা, নিরাপত্তার জন্য ফাস্টএইড বক্স ঠিক আছে কি না দেখে রাখা, অনিরাপদ বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখা। ধারালো ভাঙা জিনিসপত্র সরিয়ে রাখা, পানি ফুটিয়ে ও শুকনো খাবার সংরক্ষণ করে রাখা।

গবাদি পশু ও হাঁস মুরগি নিরাপদ স্থানে রাখা যাতে ঝড়ে তাদের কোনো ক্ষতি না হয় এবং বসতঘরের ওপরে যদি কোনো গাছ থাকে যেগুলো দেখলে মনে হয় ভেঙে পড়তে পারে সেগুলো আগে থেকেই কেটে ফেলা। ঝড়ের মধ্যে বা বজ্রপাতের সময় ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না। কারন প্রাকৃতিক দুর্যোগকে আমরা চিরতরে বন্ধ করতে পারব না। তবে আমরা সচেতন হলে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতিকে অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে বলে মনে করি।