সাধ্যের মধ্যে থাকুক চিকিৎসা ব্যবস্থা

#
news image

wqqwwqwqewqwqeলোকবল সংকট, অব্যবস্থাপনাসহ নানা সমস্যা ও সীমাবদ্ধতায় ভুগছে দেশের সরকারি হাসপাতালগুলো। ক্ষেত্রবিশেষে অবকাঠামো বাড়লেও চিকিৎসাসেবার সক্ষমতা রয়ে গেছে প্রায় আগের মতোই। চিকিৎসা নেয়ার অধিকার সবার থাকলেও আজকাল চিকিৎসা ব্যবসায় পরিণত হচ্ছে। বাংলাদেশে এখন অর্থনৈতিক অবস্থায় কম মূল্যে বিশেষায়িত সেবা পাওয়া কঠিন। এছাড়াও বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতাল গুলোতে এমআরআই মেশিন নষ্ট থাকায় সেবা মিলছে না; অন্যদিকে অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে যে ফি চাইছে, তা সরকারি হাসপাতালের তিনগুণ।

এমনকি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল, মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালসহ দেশের অনেক সরকারি হাসপাতালে মেশিন থাকলেও মিলছে না ব্যয়বহুল এমআরআই সেবা। যার ফলে রোগীরা, বিশেষ করে দরিদ্র রোগীরা দীর্ঘদিন ধরে সেবা পেতে দারুণ সমস্যা পোহাচ্ছেন।

নিম্নমানের সেবা আর কাক্সিক্ষত চিকিৎসা যথাযথ না পাওয়ায় বেশিরভাগ রোগীই সুস্থতার আশায় ভেড়েন বেসরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসকদের চেম্বারে। আর তখনই বাঁধে বিপত্তি। একই রোগে একেক হাসপাতালে একেকজন চিকিৎসক নেন ভিন্ন রকমের চিকিৎসা ফি। ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে চিকিৎসা ফি গিয়ে পৌঁছেছে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে করে নিম্নআয়ের মানুষদের চিকিৎসা পেতে খরচ হয়ে যাচ্ছে আয়ের একটা বড় অংশ।

বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসদের চেম্বারে রোগীদের কাছ থেকে ফি আদায়ে বার বার একটি নীতিমালা তৈরির পদক্ষেপ নেয়া হলেও অদৃশ্য কারণে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ফলে সাধারণ রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতেই হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ফি বিভিন্ন রকমের। এই ফি কিভাবে নির্ধারণ হয় কে জানে। সরকারি হাসপাতালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও ডাক্তার দেখানো যায় না। আমাদের চিকিৎসকদের অনেকেই সরকারি হাসপাতালে রোগী দেখার সময় এতটা মনোযোগী হন না যতটা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হন। তাই রোগীরা সরকারি হাসপাতালে এসে একই চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার চেয়ে বেসরকারি হাসপাতালের চেম্বারে গিয়ে চিকিৎসা নিতে স্বচ্ছন্দ অনুভব করেন।

স্বাস্থ্যসেবার প্রায় ৬৫ শতাংশ চিকিৎসা বেসরকারি স্বাস্থ্য খাত প্রদান করছে। চাহিদার তুলনায় সরকারি হাসপাতালে শয্যাসংকট, জনবলের অপ্রতুলতার কারণে মানুষ বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা। একদিকে যেমন বিলাসবহুল হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে, তেমনই রয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ নিম্নমানের ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার। চিকিৎসার নামে মনোপলি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

একইভাবে দেখা যায় ঢাকার বাইরে অনেক হাসপাতাল ও ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিজস্ব ভবন নেই, বিরাজ করছে নোংরা ও চরম অব্যবস্থাপনা। হচ্ছে ভুল অপারেশন। সিজারিয়ানের প্রয়োজন নেই, তারপরও সিজারিয়ান করাচ্ছে। আইসিইউ নেই, কিন্তু আইসিইউয়ের নল মুখে লাগিয়ে রোগীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এর জন্য কারা দায়ী, সেটাও চিহ্নিত করা প্রয়োজন। সরকারের উচিত অতিদ্রুত সমন্বিত ও টেকসই পদক্ষেপ নেওয়া। এই অবস্থা থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই। তাহলে রোগীরা উপকৃত হবে। জনগণের সাধ্যের মধ্যে চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকুক এই আমাদের প্রত্যাশা।

নাগরিক ডেস্ক

০৪ মে, ২০২৩,  8:59 AM

news image

wqqwwqwqewqwqeলোকবল সংকট, অব্যবস্থাপনাসহ নানা সমস্যা ও সীমাবদ্ধতায় ভুগছে দেশের সরকারি হাসপাতালগুলো। ক্ষেত্রবিশেষে অবকাঠামো বাড়লেও চিকিৎসাসেবার সক্ষমতা রয়ে গেছে প্রায় আগের মতোই। চিকিৎসা নেয়ার অধিকার সবার থাকলেও আজকাল চিকিৎসা ব্যবসায় পরিণত হচ্ছে। বাংলাদেশে এখন অর্থনৈতিক অবস্থায় কম মূল্যে বিশেষায়িত সেবা পাওয়া কঠিন। এছাড়াও বেশিরভাগ সরকারি হাসপাতাল গুলোতে এমআরআই মেশিন নষ্ট থাকায় সেবা মিলছে না; অন্যদিকে অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে যে ফি চাইছে, তা সরকারি হাসপাতালের তিনগুণ।

এমনকি ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল, মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালসহ দেশের অনেক সরকারি হাসপাতালে মেশিন থাকলেও মিলছে না ব্যয়বহুল এমআরআই সেবা। যার ফলে রোগীরা, বিশেষ করে দরিদ্র রোগীরা দীর্ঘদিন ধরে সেবা পেতে দারুণ সমস্যা পোহাচ্ছেন।

নিম্নমানের সেবা আর কাক্সিক্ষত চিকিৎসা যথাযথ না পাওয়ায় বেশিরভাগ রোগীই সুস্থতার আশায় ভেড়েন বেসরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসকদের চেম্বারে। আর তখনই বাঁধে বিপত্তি। একই রোগে একেক হাসপাতালে একেকজন চিকিৎসক নেন ভিন্ন রকমের চিকিৎসা ফি। ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে চিকিৎসা ফি গিয়ে পৌঁছেছে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। এতে করে নিম্নআয়ের মানুষদের চিকিৎসা পেতে খরচ হয়ে যাচ্ছে আয়ের একটা বড় অংশ।

বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসদের চেম্বারে রোগীদের কাছ থেকে ফি আদায়ে বার বার একটি নীতিমালা তৈরির পদক্ষেপ নেয়া হলেও অদৃশ্য কারণে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ফলে সাধারণ রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতেই হচ্ছে। রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ফি বিভিন্ন রকমের। এই ফি কিভাবে নির্ধারণ হয় কে জানে। সরকারি হাসপাতালে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়েও ডাক্তার দেখানো যায় না। আমাদের চিকিৎসকদের অনেকেই সরকারি হাসপাতালে রোগী দেখার সময় এতটা মনোযোগী হন না যতটা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে হন। তাই রোগীরা সরকারি হাসপাতালে এসে একই চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেওয়ার চেয়ে বেসরকারি হাসপাতালের চেম্বারে গিয়ে চিকিৎসা নিতে স্বচ্ছন্দ অনুভব করেন।

স্বাস্থ্যসেবার প্রায় ৬৫ শতাংশ চিকিৎসা বেসরকারি স্বাস্থ্য খাত প্রদান করছে। চাহিদার তুলনায় সরকারি হাসপাতালে শয্যাসংকট, জনবলের অপ্রতুলতার কারণে মানুষ বেসরকারি হাসপাতালে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা। একদিকে যেমন বিলাসবহুল হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে, তেমনই রয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ নিম্নমানের ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার। চিকিৎসার নামে মনোপলি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।

একইভাবে দেখা যায় ঢাকার বাইরে অনেক হাসপাতাল ও ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিজস্ব ভবন নেই, বিরাজ করছে নোংরা ও চরম অব্যবস্থাপনা। হচ্ছে ভুল অপারেশন। সিজারিয়ানের প্রয়োজন নেই, তারপরও সিজারিয়ান করাচ্ছে। আইসিইউ নেই, কিন্তু আইসিইউয়ের নল মুখে লাগিয়ে রোগীর কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এর জন্য কারা দায়ী, সেটাও চিহ্নিত করা প্রয়োজন। সরকারের উচিত অতিদ্রুত সমন্বিত ও টেকসই পদক্ষেপ নেওয়া। এই অবস্থা থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই। তাহলে রোগীরা উপকৃত হবে। জনগণের সাধ্যের মধ্যে চিকিৎসা ব্যবস্থা থাকুক এই আমাদের প্রত্যাশা।