জাবিতে ৫ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

#
news image

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক নেতাকে রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটানোর অভিযোগে পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাঁচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

পাশাপাশি শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তিন নেতাকর্মীর পদ স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বহিষ্কৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের উপণ্ডআইন বিষয়ক সম্পাদক ইমরুল হাসান অমি, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আহমেদ গালিব, দর্শন বিভাগের বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক কাইয়ূম হাসান, দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের কর্মী তানভিরুল ইসলাম।

তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং মীর মোশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। বহিষ্কৃতরা হলে অবস্থান করতে পারবে না বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন। জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলামকে রড দিয়ে পেটানো হয়। সাইফুলের মাথা ফেটে গেলে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে সাইফুলের মাথায় তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে জানা যায়।

সাইফুল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। এই ঘটনার পর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে মীর মোশাররফ হোসেন হল অভিমুখে যেতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম বাধা দেয়। পরে আহত শিক্ষার্থী বহিষ্কৃত পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিলে রাতে শৃঙ্খলা কমিটির জরুরি সভা বসে। শৃঙ্খলা কমিটির সভায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি গত রোববার সাভারের রেস্টুরেন্টে বসাকে কেন্দ্র করে মীর মোশাররফ হোসেন হল ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার মারধরের ঘটনা, বুধবার সংগঠিত মীর মোশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল শিক্ষার্থী কর্তৃক মারধর, মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীদের অস্ত্রের মহড়ার ঘটনা, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ, প্রক্টরকে উদ্দেশ্য করে নেতিবাচক কথাবার্তা, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা এবং বৃহস্পতিবারে মাথা ফাটানোর ঘটনার তদন্ত করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ নং হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেককে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আলবেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মোহাম্মদ জুলকারনাইন, শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহেদ রানা, জাহানারা ইমাম হলের প্রাধ্যক্ষ মোরশেদা বেগম। এ ছাড়া কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার মাহতাব উজ জাহিদ।

শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের মারধরের ঘটনায় পাঁচজনকে চিহ্নিত করে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কারাদেশ আজ থেকেই কার্যকর হবে। তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’ এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত পাঁচ শিক্ষার্থীকে শাখা ছাত্রলীগ থেকেও বহিষ্কার করা হবে বলে এক মুঠোফোন কলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। তিনি বলেন, ‘যারা এ ধরনের কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করার জন্য বলা হয়েছে। বহিষ্কারের বিষয়টি তারা জানাবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণার পর শুক্রবার শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল এবং সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিন নেতাকর্মীর পদ স্থগিত করা হয়। পদ স্থগিতকৃতরা হলেন- উপ আইন বিষয়ক সম্পাদক ইমরুল হাসান অমি, সহ-সম্পাদক আহমেদ গালিব এবং সদস্য আহসানুল হাবীব রেজা।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র ১৭(খ) ধারা অনুযায়ী তাদের পদ সমূহ স্থগিত করা হলো। ভবিষ্যতে তাদের যেকোনও অসামাজিক, অনৈতিক এবং সংগঠন পরিপন্থী কর্মকান্ডের দায়ভার জাবি শাখা ছাত্রলীগ বহন করবে না।

নাগরিক প্রতিবেদক

২৫ মার্চ, ২০২৩,  10:28 AM

news image

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের এক নেতাকে রড দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটানোর অভিযোগে পাঁচ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাঁচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে এ সিদ্ধান্ত হয়।

পাশাপাশি শাখা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে তিন নেতাকর্মীর পদ স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বহিষ্কৃতরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের উপণ্ডআইন বিষয়ক সম্পাদক ইমরুল হাসান অমি, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক আহমেদ গালিব, দর্শন বিভাগের বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক কাইয়ূম হাসান, দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম এবং প্রাণিবিদ্যা বিভাগের বিভাগের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের কর্মী তানভিরুল ইসলাম।

তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং মীর মোশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। বহিষ্কৃতরা হলে অবস্থান করতে পারবে না বলেও সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন। জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভা শেষে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলামকে রড দিয়ে পেটানো হয়। সাইফুলের মাথা ফেটে গেলে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে সাইফুলের মাথায় তিনটি সেলাই দেওয়া হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ থেকে জানা যায়।

সাইফুল বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। এই ঘটনার পর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে মীর মোশাররফ হোসেন হল অভিমুখে যেতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম বাধা দেয়। পরে আহত শিক্ষার্থী বহিষ্কৃত পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিলে রাতে শৃঙ্খলা কমিটির জরুরি সভা বসে। শৃঙ্খলা কমিটির সভায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি গত রোববার সাভারের রেস্টুরেন্টে বসাকে কেন্দ্র করে মীর মোশাররফ হোসেন হল ও বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের শিক্ষার্থীদের মধ্যকার মারধরের ঘটনা, বুধবার সংগঠিত মীর মোশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল শিক্ষার্থী কর্তৃক মারধর, মীর মশাররফ হোসেন হলের শিক্ষার্থীদের অস্ত্রের মহড়ার ঘটনা, প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ, প্রক্টরকে উদ্দেশ্য করে নেতিবাচক কথাবার্তা, সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা এবং বৃহস্পতিবারে মাথা ফাটানোর ঘটনার তদন্ত করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ নং হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শফি মুহাম্মদ তারেককে প্রধান করে এই কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- আলবেরুনী হলের প্রাধ্যক্ষ সিকদার মোহাম্মদ জুলকারনাইন, শহীদ রফিক-জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহেদ রানা, জাহানারা ইমাম হলের প্রাধ্যক্ষ মোরশেদা বেগম। এ ছাড়া কমিটিতে সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন ডেপুটি রেজিস্ট্রার মাহতাব উজ জাহিদ।

শৃঙ্খলা কমিটির সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজকের মারধরের ঘটনায় পাঁচজনকে চিহ্নিত করে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কারাদেশ আজ থেকেই কার্যকর হবে। তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’ এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত পাঁচ শিক্ষার্থীকে শাখা ছাত্রলীগ থেকেও বহিষ্কার করা হবে বলে এক মুঠোফোন কলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান। তিনি বলেন, ‘যারা এ ধরনের কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শাখা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করার জন্য বলা হয়েছে। বহিষ্কারের বিষয়টি তারা জানাবে।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণার পর শুক্রবার শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান সোহেল এবং সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান লিটন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিন নেতাকর্মীর পদ স্থগিত করা হয়। পদ স্থগিতকৃতরা হলেন- উপ আইন বিষয়ক সম্পাদক ইমরুল হাসান অমি, সহ-সম্পাদক আহমেদ গালিব এবং সদস্য আহসানুল হাবীব রেজা।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র ১৭(খ) ধারা অনুযায়ী তাদের পদ সমূহ স্থগিত করা হলো। ভবিষ্যতে তাদের যেকোনও অসামাজিক, অনৈতিক এবং সংগঠন পরিপন্থী কর্মকান্ডের দায়ভার জাবি শাখা ছাত্রলীগ বহন করবে না।