ফুলপরীদের গণমাধ্যম!

#
news image

ফুলপরীরা হঠাৎ হাওয়ার মতো। নাড়িয়ে দিয়েই হারিয়ে যায়। তারা রাজনৈতিক জটিলতা, কূটিলতা বোঝে না; শুধু চায় সমাজের দুর্বোধ্য দেয়াল টপকাতে। তারা পড়তে চায়, লড়তে চায়, চাকরি চায়। নিজস্ব স্বপ্নেই গড়তে চায় নতুন সমাজ। ফুলপরীরা ক্ষমতা কাঠামোর বাইরে ব্রাত্যজন। তাদের কোনো গণমাধ্যম নেই। তারা যখনই ঝলসে উঠে, গর্জে ওঠে, গণমাধ্যম তাদের ধাওয়া করে, শিকার করে, ইস্যু বানায়।

কারণ, গণমাধ্যমে বিনিয়োগ করা বড় বড় পুঁজির অপ্রকাশ্য লক্ষ্য থাকে সরকার আর রাষ্ট্র পরিচালনা পদ্ধতির দিকে আঙ্গুল তুলে প্রভাব জাহির করা। সেই প্রভাবের মাপকাঠিতেই সফলতা, ব্যর্থতা বিচার করা। তাই সিংহভাগ গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ পাতা ভরপুর থাকে সরকার, প্রশাসন আর রাজনীতিকে ফোকাস করা মুখস্থ খবরের আগ্রাসনে। আমলা আর নেতাদের বিরক্তিকর বয়ানে। ভ্যান-রিকশাচালক, সবজি-মাছ বিক্রেতা, ফেরিওয়ালা, মুটে-মজুরের নীরব বিপ্লবের গল্পের তাড়া থাকে না।

ভ্যানচালকের মেয়ে ফুলপরীদের ঘটনার তথ্যনির্ভর খবর দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেন গণমাধ্যমের কর্তারা। কখনও কখনও বিস্ময়-উচ্ছ্বাস-বাহাবা সমৃদ্ধ ঢাউস লেখাও প্রকাশ হয়। তারপর চলে দ্বিতীয় কোনো ফুলপরীর অদম্য গল্পের জন্য নীরব অপেক্ষা। তথ্যের মহামারিতে আক্রান্ত গণমাধ্যম ফুলপরীদের জীবন-সংগ্রামের গল্প বড় ক্যানভাসে ফোকাস করে না, বিশ্লেষণে যায় না।

অবশ্য, কেউ কেউ মুখস্থ গল্পের বাইরে ফুলপরীদের অদম্য হয়ে ওঠার দারুণ বিশ্লেষণে অনবরত লিখে যায়। পাশে থাকে, পথে থাকে, শেষ অবধি থাকে। তারাই হয়ে ওঠে ফুলপরীদের কণ্ঠস্বর। রাজকবির পদ ছেড়ে তারা হয়ে ওঠেন চারণকবি। গদিসাংবাদিকতার বদলে করতে চায় গণসাংবাদিকতা। যেখানে ফুলপরীরা জেগে থাকে নতুন ভোরের জন্য।

(গণসাংবাদিকতা, ৫ মার্চ, ২০২৩। ঢাকা) লেখক : Neon Motiul

নাগরিক অনলাইন ডেস্ক

০৫ মার্চ, ২০২৩,  10:13 AM

news image

ফুলপরীরা হঠাৎ হাওয়ার মতো। নাড়িয়ে দিয়েই হারিয়ে যায়। তারা রাজনৈতিক জটিলতা, কূটিলতা বোঝে না; শুধু চায় সমাজের দুর্বোধ্য দেয়াল টপকাতে। তারা পড়তে চায়, লড়তে চায়, চাকরি চায়। নিজস্ব স্বপ্নেই গড়তে চায় নতুন সমাজ। ফুলপরীরা ক্ষমতা কাঠামোর বাইরে ব্রাত্যজন। তাদের কোনো গণমাধ্যম নেই। তারা যখনই ঝলসে উঠে, গর্জে ওঠে, গণমাধ্যম তাদের ধাওয়া করে, শিকার করে, ইস্যু বানায়।

কারণ, গণমাধ্যমে বিনিয়োগ করা বড় বড় পুঁজির অপ্রকাশ্য লক্ষ্য থাকে সরকার আর রাষ্ট্র পরিচালনা পদ্ধতির দিকে আঙ্গুল তুলে প্রভাব জাহির করা। সেই প্রভাবের মাপকাঠিতেই সফলতা, ব্যর্থতা বিচার করা। তাই সিংহভাগ গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ পাতা ভরপুর থাকে সরকার, প্রশাসন আর রাজনীতিকে ফোকাস করা মুখস্থ খবরের আগ্রাসনে। আমলা আর নেতাদের বিরক্তিকর বয়ানে। ভ্যান-রিকশাচালক, সবজি-মাছ বিক্রেতা, ফেরিওয়ালা, মুটে-মজুরের নীরব বিপ্লবের গল্পের তাড়া থাকে না।

ভ্যানচালকের মেয়ে ফুলপরীদের ঘটনার তথ্যনির্ভর খবর দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেন গণমাধ্যমের কর্তারা। কখনও কখনও বিস্ময়-উচ্ছ্বাস-বাহাবা সমৃদ্ধ ঢাউস লেখাও প্রকাশ হয়। তারপর চলে দ্বিতীয় কোনো ফুলপরীর অদম্য গল্পের জন্য নীরব অপেক্ষা। তথ্যের মহামারিতে আক্রান্ত গণমাধ্যম ফুলপরীদের জীবন-সংগ্রামের গল্প বড় ক্যানভাসে ফোকাস করে না, বিশ্লেষণে যায় না।

অবশ্য, কেউ কেউ মুখস্থ গল্পের বাইরে ফুলপরীদের অদম্য হয়ে ওঠার দারুণ বিশ্লেষণে অনবরত লিখে যায়। পাশে থাকে, পথে থাকে, শেষ অবধি থাকে। তারাই হয়ে ওঠে ফুলপরীদের কণ্ঠস্বর। রাজকবির পদ ছেড়ে তারা হয়ে ওঠেন চারণকবি। গদিসাংবাদিকতার বদলে করতে চায় গণসাংবাদিকতা। যেখানে ফুলপরীরা জেগে থাকে নতুন ভোরের জন্য।

(গণসাংবাদিকতা, ৫ মার্চ, ২০২৩। ঢাকা) লেখক : Neon Motiul