বাংলা বানান ভুল, মাতৃভাষা শুদ্ধভাবে লেখা নিশ্চিত হোক

#
news image

বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন অফিসগুলোতেও নথির নোটশিট ও চিঠিপত্র ভুল বাংলা বানানে লেখা হচ্ছে। এমনকি দেখা যাচ্ছে-সরকারের উপদেষ্টা, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সচিবদের কাছে উপস্থাপন করা নোটেও প্রচুর ভুল থাকে, যা মোটেই কাম্য নয়।

আশ্চর্যজনক হলো, গণমাধ্যমে পাঠানো দায়িত্বশীল সচিবের চিঠিতেও অসংখ্য বানান ভুলের প্রমাণ মিলেছে। বুকের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করা শহিদদের আত্মতাগে অর্জিত মাতৃভাষার এমন দুর্দশা আমাদের ব্যথিত করে বৈকি। অবস্থার পরিবর্তনে দাপ্তরিক কাজে প্রমিত বাংলা ব্যবহারের যে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে, তার পুরোপুরি বাস্তবায়ন জরুরি। তবে এজন্য দেশপ্রেম জাগ্রত করার পাশাপাশি সবাইকে মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখার শপথও নিতে হবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন কোষ (বাবাকো) রয়েছে এবং তারা ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৩৭৩টি আইন, বিধি ও নীতিমালা প্রমিতীকরণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ২০১৫ সালে সম্পন্ন হওয়া প্রশাসনিক পরিভাষা এবং সরকারি কাজে ব্যবহারিক বাংলা, ২০১৭ সালে সরকারি কাজে প্রমিত বাংলা ব্যবহারের নিয়ম এবং ২০১৯ সালে পদবির পরিভাষা প্রণয়ন। উল্লেখ্য, দাপ্তরিক কাজে প্রমিত বাংলা ব্যবহার নিশ্চিত করতে ২০১২ সালে সংস্কার ও গবেষণা অনুবিভাগ সৃষ্টি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, যেখানে যুক্ত করা হয়েছে বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন কোষ।

তবে সরকারি নির্দেশনা না মানার পাশাপাশি এ বিষয়ে চরম উদাসীনতা ও সঠিক চর্চা না থাকার কারণেই ‘ভুলের’ অবসান হচ্ছে না। জবাবদিহি ও তদারকির অভাবও রয়েছে। জানা গেছে, অর্থাভাবে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজই করতে পারছে না বাবাকো। দেশে অনেক যোগ্য ভাষা বিশেষজ্ঞ কর্মহীন অবসর জীবন কাটাচ্ছেন।

বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে তাদের মেধা ও মনন কাজে লাগানো যেতে পারে। বস্তুত বাংলা বানানের ভুল সংশোধনের জন্য লাগাতার প্রশিক্ষণ ও প্রমিত বাংলা অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক করা উচিত। এ লক্ষ্যে প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে এবং অধীনস্থ দপ্তর-সংস্থায় একটি করে ভাষা বিশেষজ্ঞের পদ সৃষ্টি করে নিয়মিত অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে উদাসীনতা পরিহার করে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকেও এ ক্ষেত্রে আন্তরিক হতে হবে।

প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগ, শিক্ষা বোর্ড, অধিদপ্তর, দপ্তর ও পরিদপ্তরে একটি করে ‘বাংলা ভাষা মুখপাত্রের’ পদ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। অপ্রিয় হলেও সত্য, বাংলা ভাষার প্রতি অবহেলা দিয়েই আমাদের শিক্ষাজীবনের শুরু ও শেষ হয়, যার প্রভাব পড়ে কর্মজীবনেও। এ অবস্থায় বাংলা ভাষা দুর্দশায় নিপতিত হওয়াই স্বাভাবিক।

এ থেকে উত্তরণের জন্য মাতৃভাষা শুদ্ধভাবে লেখা ও পড়াসহ সব ক্ষেত্রে প্রমিত বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

নাগরিক ডেস্ক

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩,  10:06 AM

news image

বেসরকারি বিভিন্ন পর্যায়ের পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন অফিসগুলোতেও নথির নোটশিট ও চিঠিপত্র ভুল বাংলা বানানে লেখা হচ্ছে। এমনকি দেখা যাচ্ছে-সরকারের উপদেষ্টা, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সচিবদের কাছে উপস্থাপন করা নোটেও প্রচুর ভুল থাকে, যা মোটেই কাম্য নয়।

আশ্চর্যজনক হলো, গণমাধ্যমে পাঠানো দায়িত্বশীল সচিবের চিঠিতেও অসংখ্য বানান ভুলের প্রমাণ মিলেছে। বুকের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত করা শহিদদের আত্মতাগে অর্জিত মাতৃভাষার এমন দুর্দশা আমাদের ব্যথিত করে বৈকি। অবস্থার পরিবর্তনে দাপ্তরিক কাজে প্রমিত বাংলা ব্যবহারের যে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে, তার পুরোপুরি বাস্তবায়ন জরুরি। তবে এজন্য দেশপ্রেম জাগ্রত করার পাশাপাশি সবাইকে মাতৃভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখার শপথও নিতে হবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন কোষ (বাবাকো) রয়েছে এবং তারা ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৩৭৩টি আইন, বিধি ও নীতিমালা প্রমিতীকরণ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, ২০১৫ সালে সম্পন্ন হওয়া প্রশাসনিক পরিভাষা এবং সরকারি কাজে ব্যবহারিক বাংলা, ২০১৭ সালে সরকারি কাজে প্রমিত বাংলা ব্যবহারের নিয়ম এবং ২০১৯ সালে পদবির পরিভাষা প্রণয়ন। উল্লেখ্য, দাপ্তরিক কাজে প্রমিত বাংলা ব্যবহার নিশ্চিত করতে ২০১২ সালে সংস্কার ও গবেষণা অনুবিভাগ সৃষ্টি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, যেখানে যুক্ত করা হয়েছে বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন কোষ।

তবে সরকারি নির্দেশনা না মানার পাশাপাশি এ বিষয়ে চরম উদাসীনতা ও সঠিক চর্চা না থাকার কারণেই ‘ভুলের’ অবসান হচ্ছে না। জবাবদিহি ও তদারকির অভাবও রয়েছে। জানা গেছে, অর্থাভাবে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজই করতে পারছে না বাবাকো। দেশে অনেক যোগ্য ভাষা বিশেষজ্ঞ কর্মহীন অবসর জীবন কাটাচ্ছেন।

বিশেষ বরাদ্দ প্রদান করে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে তাদের মেধা ও মনন কাজে লাগানো যেতে পারে। বস্তুত বাংলা বানানের ভুল সংশোধনের জন্য লাগাতার প্রশিক্ষণ ও প্রমিত বাংলা অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক করা উচিত। এ লক্ষ্যে প্রতিটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে এবং অধীনস্থ দপ্তর-সংস্থায় একটি করে ভাষা বিশেষজ্ঞের পদ সৃষ্টি করে নিয়মিত অভ্যন্তরীণ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে উদাসীনতা পরিহার করে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকেও এ ক্ষেত্রে আন্তরিক হতে হবে।

প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগ, শিক্ষা বোর্ড, অধিদপ্তর, দপ্তর ও পরিদপ্তরে একটি করে ‘বাংলা ভাষা মুখপাত্রের’ পদ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। অপ্রিয় হলেও সত্য, বাংলা ভাষার প্রতি অবহেলা দিয়েই আমাদের শিক্ষাজীবনের শুরু ও শেষ হয়, যার প্রভাব পড়ে কর্মজীবনেও। এ অবস্থায় বাংলা ভাষা দুর্দশায় নিপতিত হওয়াই স্বাভাবিক।

এ থেকে উত্তরণের জন্য মাতৃভাষা শুদ্ধভাবে লেখা ও পড়াসহ সব ক্ষেত্রে প্রমিত বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।