অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ই ভাড়া বাড়িতে কার্যক্রম চালাচ্ছে
নিজস্ব সংবাদদাতা
০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, 4:09 PM
অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ই ভাড়া বাড়িতে কার্যক্রম চালাচ্ছে
দেশের অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ভাড়া বাড়িতেই কার্যক্রম চালাচ্ছে। যদিও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১২ বছরের মধ্যে নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে সব কার্যক্রম স্থানান্তরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর প্রায় দুই যুগ হতে চললেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রহস্যজনক কারণে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দফায় দফায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে চিঠি দেয়া হলেও তাতে কর্ণপাত করা হচ্ছে না। বরং নানা অজুহাত দেখিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বছরের পর বছর অস্থায়ী ভবন বা বাসা-বাড়িতেই ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে। বর্তমানে দেশে ১০৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৩৩টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাকি ৭৬ বিশ্ববিদ্যালয়ই ভাড়া বাড়ি বা অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পরিচালিত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়া ও ক্যাম্পাস নির্মাণে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দেশের চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাছাড়া স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তরে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৬ বিশ্ববিদ্যালয়কে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সব কার্যক্রম চালু করতে ব্যর্থ হলে ১ এপ্রিল থেকে ওসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে।
আর আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি এবং দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটিকে আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। লিখিত অঙ্গীকার বিবেচনায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তরে ওই সময় দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারলে ১ জুলাই থেকে ওসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার আলটিমেটাম দিয়েছে ইউজিসি।
সূত্র জানায়, ইউজিসি স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়ার কারণে দীর্ঘ বছর পরে ব্যবস্থা নিয়েছে। ইতোমধ্যে ইউজিসি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ৬ বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন শিক্ষার্থী বন্ধ করতে বলেছে। আর সময় বেঁধে দিয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে আরো ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার্থী বন্ধের আলটিমেটাম দিয়েছে।
অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে অস্থায়ী ঠিকানায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলেও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাঁচার করার অভিযোগ রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, অনেক আগ থেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ১০৯টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। অথচ মানের দিক দিয়ে চিন্তা করলে ২০ থেকে ২৫টির বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থাকা উচিত নয়।
রাজনৈতিক কারণেও অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়মের মধ্যে রাখতে ইউজিসি প্রাণপণ চেষ্টা করছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সময়মতো সহযোগিতা না পাওয়ায় তা সব সময় সম্ভব হয় নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য ইউজিসির ক্ষমতায়ন বা শিক্ষাবিদদের নেতৃত্বে একটি উচ্চশিক্ষা কমিশন করা প্রয়োজন।
এদিকে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান জানান, প্রতিষ্ঠার ২০-২২ বছর পেরিয়ে গেলেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেনি। অনেক প্রতিষ্ঠানেই যাওয়ার মতো সক্ষমতা রয়েছে কিন্তু যাচ্ছে না। তাই তাদের নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ফের সময় দিলে আর কখনোই তারা স্থায়ী অবকাঠামোতে যাবে না। উচ্চশিক্ষায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতেই এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
নিজস্ব সংবাদদাতা
০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, 4:09 PM
দেশের অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ভাড়া বাড়িতেই কার্যক্রম চালাচ্ছে। যদিও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১২ বছরের মধ্যে নিজস্ব স্থায়ী ক্যাম্পাসে সব কার্যক্রম স্থানান্তরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কিন্তু শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর প্রায় দুই যুগ হতে চললেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় রহস্যজনক কারণে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে দফায় দফায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে চিঠি দেয়া হলেও তাতে কর্ণপাত করা হচ্ছে না। বরং নানা অজুহাত দেখিয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বছরের পর বছর অস্থায়ী ভবন বা বাসা-বাড়িতেই ক্যাম্পাস পরিচালনা করছে। বর্তমানে দেশে ১০৯টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তার মধ্যে মাত্র ৩৩টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাকি ৭৬ বিশ্ববিদ্যালয়ই ভাড়া বাড়ি বা অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পরিচালিত হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়া ও ক্যাম্পাস নির্মাণে দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দেশের চারটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাছাড়া স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তরে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৬ বিশ্ববিদ্যালয়কে আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সব কার্যক্রম চালু করতে ব্যর্থ হলে ১ এপ্রিল থেকে ওসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে।
আর আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ, গ্রিন ইউনিভার্সিটি, উত্তরা ইউনিভার্সিটি, প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি এবং দ্য পিপলস ইউনিভার্সিটিকে আলটিমেটাম দেয়া হয়েছে। লিখিত অঙ্গীকার বিবেচনায় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রমসহ সম্পূর্ণ কার্যক্রম স্থানান্তরে ওই সময় দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাসে যেতে না পারলে ১ জুলাই থেকে ওসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার আলটিমেটাম দিয়েছে ইউজিসি।
সূত্র জানায়, ইউজিসি স্থায়ী ক্যাম্পাসে না যাওয়ার কারণে দীর্ঘ বছর পরে ব্যবস্থা নিয়েছে। ইতোমধ্যে ইউজিসি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় ৬ বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন শিক্ষার্থী বন্ধ করতে বলেছে। আর সময় বেঁধে দিয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলে আরো ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষার্থী বন্ধের আলটিমেটাম দিয়েছে।
অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে অস্থায়ী ঠিকানায় শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। স্থায়ী ক্যাম্পাসে না গেলেও কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাঁচার করার অভিযোগ রয়েছে। সূত্র আরো জানায়, অনেক আগ থেকেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ১০৯টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। অথচ মানের দিক দিয়ে চিন্তা করলে ২০ থেকে ২৫টির বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থাকা উচিত নয়।
রাজনৈতিক কারণেও অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিয়মের মধ্যে রাখতে ইউজিসি প্রাণপণ চেষ্টা করছে। কিন্তু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সময়মতো সহযোগিতা না পাওয়ায় তা সব সময় সম্ভব হয় নয়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য ইউজিসির ক্ষমতায়ন বা শিক্ষাবিদদের নেতৃত্বে একটি উচ্চশিক্ষা কমিশন করা প্রয়োজন।
এদিকে এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান জানান, প্রতিষ্ঠার ২০-২২ বছর পেরিয়ে গেলেও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাসে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করেনি। অনেক প্রতিষ্ঠানেই যাওয়ার মতো সক্ষমতা রয়েছে কিন্তু যাচ্ছে না। তাই তাদের নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না। ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ফের সময় দিলে আর কখনোই তারা স্থায়ী অবকাঠামোতে যাবে না। উচ্চশিক্ষায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতেই এমন কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।