গোপালগঞ্জে আমনের বাম্পার ফলন

#
news image

গোপালগঞ্জে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। জেলায় হাইব্রিড, উফশী, স্থানীয় ও বোনা আমনের ভালো ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার ২৫ ভাগ আমন কাটা শেষ হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আমন কাটা শেষ হবে। প্রতি হেক্টরে এ জেলায় ২.১৪ টন আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কিন্তু প্রতি হেক্টরে প্রায় ২. ২৫ টন আমন ধান ফলেছে বলে নমুনা ফসল কর্তণ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে। এখন আমন ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। ধানকাটা শেষে কৃষক মেতে উঠবে নবান্ন উৎসবে। কৃষকের প্রতিটি ঘরে ঘরে নতুন চালের পিঠা তৈরি হবে। উৎসব মুখর হয়ে উঠবে গ্রামীণ জনপদ।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলায় আমন মৌসুমে মোট ২৪ হাজার ৮৮১ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়। এরমধ্যে ৯৬৯ হেক্টরে হাইব্রিড আমন, ৯ হাজার ৪২৩ হেক্টরে উফশী আমন, ২ হাজার ৯৮৯ হেক্টরে স্থানীয় আমন ও ১১ হাজার ৫০০ হেক্টরে বোনা আমনের আবাদ হয়। আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫৩ হাজার ৩৮৩ মেট্রিক টন। হাইব্রিডে হেক্টর প্রতি ৩.৯ টন, উফশীতে ৩.০৮ টন, স্থানীয় জাতে ১.৫ টন ও বোনা আমনে ১.৪ টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। গড় উৎপাদন ২.১৪ টন নির্ধারিত হয়। নমুনা আমন ফসল কেটে দেখাগেছে প্রত্যেক জাতে  আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।  ধারনা করছি প্রতিহেক্টরে গড় ফলন ২.২৫ টন হবে। এতে চলতি আমন মৌসুমে গোপালগঞ্জ জেলায় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। ধানে পোকার আক্রমণ হয়নি। তাই আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া ধান উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা কৃষি প্রণোদনার সার, বীজ কৃষকের হাতে পৌঁছে দিয়েছি। তাদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়েছি। ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা কৃষকের সাথে আন্তরিকভাবে কাজ করেছি। তাই ফলন ভালো হয়েছে। ধানের বেশি ফলন পেয়ে কৃষক খুশি। তারা আমন ধান চাষাবাদ করে লাভবান হয়েছেন। আগামী বছর এ উপজেলায় আমনের আবাদ আরো বৃদ্ধিপাবে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের কৃষক শামীম চৌধূরী বলেন, আমরা আগে শুধু বোরো ফসল করতাম। আমন করতাম না। কৃষি সম্প্রসারণের উৎসাহে এ বছর প্রথম হাইব্রিড আমন ধান করেছি। হেক্টরে এ আমন ৪ টন বরাদ্দে ফলেছে। আমন চাষ করে অধিক ফলন পেয়েছি। এতে আমি লাভবান হয়েছি। এখন থেকে প্রতি বছর আমন ধান চাষাবাদ করব।

কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি গ্রামের কৃষক মানিক্য অধিকারী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের উপজেলা থেকে নির্বাচিত হন। তার আহবানে সাড়া দিয়ে আমরা আমন আবাদ করেছি। আমন আবাদে করে আমি বাম্পার ফলন পেয়েছি। আমন আমার মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এখন ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। ঘরে ধান তোলা শেষ হলে  এ ধান দিয়ে নবান্ন উৎসব করব। নতুন চালের পিঠা, পায়েসে ঘর মুখরিত হয়ে উঠবে। কলাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড.বিজন বিশ্বাস বলেন, কৃষকরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সার,বীজ থেকে শুরু করে ধান চাষাবাদের জন্য প্রশিক্ষণ ও পারমর্শ পেয়েছেন। এছাড়া  কৃষি  সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষক খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য যারপরনাই চেষ্টা করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষকের ঘাম এবং শ্রমে আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে। সামনে বোরা মৌসুম শুরু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মৌসুমেও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। আমরা কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সব ধরণের সহযোগিতা করব। আশাকরি আগামী মৌসুমেও ধানের বাম্পার ফলন পাব। 

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৩ নভেম্বর, ২০২২,  11:26 PM

news image

গোপালগঞ্জে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। জেলায় হাইব্রিড, উফশী, স্থানীয় ও বোনা আমনের ভালো ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে জেলার ২৫ ভাগ আমন কাটা শেষ হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আমন কাটা শেষ হবে। প্রতি হেক্টরে এ জেলায় ২.১৪ টন আমন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কিন্তু প্রতি হেক্টরে প্রায় ২. ২৫ টন আমন ধান ফলেছে বলে নমুনা ফসল কর্তণ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে। এখন আমন ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। ধানকাটা শেষে কৃষক মেতে উঠবে নবান্ন উৎসবে। কৃষকের প্রতিটি ঘরে ঘরে নতুন চালের পিঠা তৈরি হবে। উৎসব মুখর হয়ে উঠবে গ্রামীণ জনপদ।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় বলেন, গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলায় আমন মৌসুমে মোট ২৪ হাজার ৮৮১ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়। এরমধ্যে ৯৬৯ হেক্টরে হাইব্রিড আমন, ৯ হাজার ৪২৩ হেক্টরে উফশী আমন, ২ হাজার ৯৮৯ হেক্টরে স্থানীয় আমন ও ১১ হাজার ৫০০ হেক্টরে বোনা আমনের আবাদ হয়। আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৫৩ হাজার ৩৮৩ মেট্রিক টন। হাইব্রিডে হেক্টর প্রতি ৩.৯ টন, উফশীতে ৩.০৮ টন, স্থানীয় জাতে ১.৫ টন ও বোনা আমনে ১.৪ টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। গড় উৎপাদন ২.১৪ টন নির্ধারিত হয়। নমুনা আমন ফসল কেটে দেখাগেছে প্রত্যেক জাতে  আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।  ধারনা করছি প্রতিহেক্টরে গড় ফলন ২.২৫ টন হবে। এতে চলতি আমন মৌসুমে গোপালগঞ্জ জেলায় খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

কোটালীপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিটুল রায় বলেন, আমন মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে ছিল। ধানে পোকার আক্রমণ হয়নি। তাই আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া ধান উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা কৃষি প্রণোদনার সার, বীজ কৃষকের হাতে পৌঁছে দিয়েছি। তাদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়েছি। ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা কৃষকের সাথে আন্তরিকভাবে কাজ করেছি। তাই ফলন ভালো হয়েছে। ধানের বেশি ফলন পেয়ে কৃষক খুশি। তারা আমন ধান চাষাবাদ করে লাভবান হয়েছেন। আগামী বছর এ উপজেলায় আমনের আবাদ আরো বৃদ্ধিপাবে। গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা গ্রামের কৃষক শামীম চৌধূরী বলেন, আমরা আগে শুধু বোরো ফসল করতাম। আমন করতাম না। কৃষি সম্প্রসারণের উৎসাহে এ বছর প্রথম হাইব্রিড আমন ধান করেছি। হেক্টরে এ আমন ৪ টন বরাদ্দে ফলেছে। আমন চাষ করে অধিক ফলন পেয়েছি। এতে আমি লাভবান হয়েছি। এখন থেকে প্রতি বছর আমন ধান চাষাবাদ করব।

কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ি গ্রামের কৃষক মানিক্য অধিকারী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের উপজেলা থেকে নির্বাচিত হন। তার আহবানে সাড়া দিয়ে আমরা আমন আবাদ করেছি। আমন আবাদে করে আমি বাম্পার ফলন পেয়েছি। আমন আমার মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এখন ধান কাটা ও মাড়াই নিয়ে ব্যস্ত রয়েছি। ঘরে ধান তোলা শেষ হলে  এ ধান দিয়ে নবান্ন উৎসব করব। নতুন চালের পিঠা, পায়েসে ঘর মুখরিত হয়ে উঠবে। কলাবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড.বিজন বিশ্বাস বলেন, কৃষকরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সার,বীজ থেকে শুরু করে ধান চাষাবাদের জন্য প্রশিক্ষণ ও পারমর্শ পেয়েছেন। এছাড়া  কৃষি  সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষক খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য যারপরনাই চেষ্টা করেছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষকের ঘাম এবং শ্রমে আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে। সামনে বোরা মৌসুম শুরু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ মৌসুমেও খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। আমরা কৃষক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাথে কাধে কাধ মিলিয়ে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সব ধরণের সহযোগিতা করব। আশাকরি আগামী মৌসুমেও ধানের বাম্পার ফলন পাব।