সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে: মির্জা ফখরুল

#
news image

সবার আগে সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সামনে পথ একটাই, সেটা হলো আমরা এই সরকারকে সরিয়ে দেব। কারণ এই সরকার প্রমাণ করেছে তারা বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। তারা নির্বাচন করতে চায়। সেদিন বলেছেন (প্রধানমন্ত্রী) আসেন নির্বাচন করেন। সেই ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন করবেন! এই দেশে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। সবার আগে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্যে দিয়ে নতুন করে সংসদ গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, আজকের আলোচনা সভা ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুতের কারণে। এটাই সরকারের আসল চেহারা। বিদ্যুতের কথা বলে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রজেক্ট করে পাওয়ার প্লান্ট দিয়ে অসংখ্য টাকা চুরি করেছে এবং বিদেশে পাচার করেছে। কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট তৈরি করে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে যে পরিমাণ টাকা তারা লুট করেছে, বিদেশে পাচার করেছে এটা দিয়ে একটা বছরের বাজেট হয়ে যেত।

তিনি আরও বলেন, আমরা আজকে এমন একটা সময়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছি যখন দেশে গণতন্ত্র নেই। যখন দেশের মানুষের কথা বলার কোনো স্বাধীনতা নেই। যখন দেশের মানুষের সংগঠন করার কোনো স্বাধীনতা নেই। স্বাভাবিক চলাচল করার স্বাধীনতা নেই। মানুষের নিরাপত্তা নেই। মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। যখন কোনো প্রতিবাদকারী মহিলাকে ফেসবুকে পোস্টের কারণে রাত দুটার সময় তার দুই বাচ্চাকে রেখে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ভয়াবহ অবস্থা বাংলাদেশের মানুষ ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে ফেলেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের কারণে বহু আলেম ওলামাকে কারাগারে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বিশিষ্ট আলেম, সর্বজন শ্রদ্ধেয় মানুষদেরকেও কারাগারে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা সেগুলো ভুলিনি, ভোলা যায় না। আজকে সেরকম একটা অবস্থার মধ্যে আমরা বাস করছি।

তিনি বলেন, আজকে দেশের ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে দুর্নীতির কোনো খবর যাতে প্রকাশ না হয়। এমনিতেই চ্যানেল ও পত্রিকাগুলোতে বলে দেওয়া হয় কোন খবর যাবে, কোনটা যাবে না। খবর পর্যন্ত তারা নিয়ন্ত্রণ করে। আর প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। আসলে সরকার গোটা দেশে বর্গীদের মতো লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে।

তিনি আরও বলেন, আজকে চলমান কঠিন সময়ে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী সরকারকে মোকাবেলা শুধু একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে সম্ভব নয়। আমাদের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এসবের দায় শেখ হাসিনা ও সরকারের। কারণ তারা বেআইনি হুকুম দিয়ে কাজ করাচ্ছে। দেশের প্রত্যেকটি থানায় যারা বিএনপি করে এমন ৮ জন, অর্থদাতা ৫ জনের নামের তালিকা করতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা। এটা কী গণতন্ত্র?

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে মসজিদ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ইমাম সাহেব কী খুতবা পাঠ করবেন সেটাও নির্ধারণ করা হয়। মসজিদে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এটা কি ধর্মীয় স্বাধীনতা? প্রকৃতপক্ষে আমরা ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করি। সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। কিন্তু সরকার পরিকল্পিতভাবে বিভেদ সৃষ্টি করছে।

ওলামা দলের আহবায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম তালুকদারের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর নাসির, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন,  স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, ওলামা দলের মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজা, মাওলানা আলমগীর হোসেন, আবু বকর চাখারী, ইখলাস উদ্দীন বাবুল, এনামুল হক মাজেদী, মাওলানা কাজী মোশারেফ হোসেন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, কারী সিরাজুল ইসলাম, কাজী মোস্তফা জামাল খোকন মাওলানা আলমগীর হোসেন খলিলী, হাফেজ মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।  

অনলাইন ডেস্ক

০৮ অক্টোবর, ২০২২,  9:24 PM

news image

সবার আগে সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শনিবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সামনে পথ একটাই, সেটা হলো আমরা এই সরকারকে সরিয়ে দেব। কারণ এই সরকার প্রমাণ করেছে তারা বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে। তারা নির্বাচন করতে চায়। সেদিন বলেছেন (প্রধানমন্ত্রী) আসেন নির্বাচন করেন। সেই ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন করবেন! এই দেশে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না। সবার আগে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্যে দিয়ে নতুন করে সংসদ গঠন করা হবে।

তিনি বলেন, আজকের আলোচনা সভা ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুতের কারণে। এটাই সরকারের আসল চেহারা। বিদ্যুতের কথা বলে হাজার হাজার কোটি টাকা প্রজেক্ট করে পাওয়ার প্লান্ট দিয়ে অসংখ্য টাকা চুরি করেছে এবং বিদেশে পাচার করেছে। কুইক রেন্টাল পাওয়ার প্লান্ট তৈরি করে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে যে পরিমাণ টাকা তারা লুট করেছে, বিদেশে পাচার করেছে এটা দিয়ে একটা বছরের বাজেট হয়ে যেত।

তিনি আরও বলেন, আমরা আজকে এমন একটা সময়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছি যখন দেশে গণতন্ত্র নেই। যখন দেশের মানুষের কথা বলার কোনো স্বাধীনতা নেই। যখন দেশের মানুষের সংগঠন করার কোনো স্বাধীনতা নেই। স্বাভাবিক চলাচল করার স্বাধীনতা নেই। মানুষের নিরাপত্তা নেই। মানুষকে পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। যখন কোনো প্রতিবাদকারী মহিলাকে ফেসবুকে পোস্টের কারণে রাত দুটার সময় তার দুই বাচ্চাকে রেখে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ভয়াবহ অবস্থা বাংলাদেশের মানুষ ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে ফেলেছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে ইসলাম ধর্ম প্রচারের কারণে বহু আলেম ওলামাকে কারাগারে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে বিশিষ্ট আলেম, সর্বজন শ্রদ্ধেয় মানুষদেরকেও কারাগারে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। আমরা সেগুলো ভুলিনি, ভোলা যায় না। আজকে সেরকম একটা অবস্থার মধ্যে আমরা বাস করছি।

তিনি বলেন, আজকে দেশের ২৯টি প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে দুর্নীতির কোনো খবর যাতে প্রকাশ না হয়। এমনিতেই চ্যানেল ও পত্রিকাগুলোতে বলে দেওয়া হয় কোন খবর যাবে, কোনটা যাবে না। খবর পর্যন্ত তারা নিয়ন্ত্রণ করে। আর প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে গণতন্ত্র নিয়ে মিথ্যাচার করেছেন। আসলে সরকার গোটা দেশে বর্গীদের মতো লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে।

তিনি আরও বলেন, আজকে চলমান কঠিন সময়ে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। ভয়ংকর ফ্যাসিবাদী সরকারকে মোকাবেলা শুধু একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষে সম্ভব নয়। আমাদের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এসবের দায় শেখ হাসিনা ও সরকারের। কারণ তারা বেআইনি হুকুম দিয়ে কাজ করাচ্ছে। দেশের প্রত্যেকটি থানায় যারা বিএনপি করে এমন ৮ জন, অর্থদাতা ৫ জনের নামের তালিকা করতে নির্দেশ দিয়েছে পুলিশের বিশেষ শাখা। এটা কী গণতন্ত্র?

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে মসজিদ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ইমাম সাহেব কী খুতবা পাঠ করবেন সেটাও নির্ধারণ করা হয়। মসজিদে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এটা কি ধর্মীয় স্বাধীনতা? প্রকৃতপক্ষে আমরা ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাস করি। সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। কিন্তু সরকার পরিকল্পিতভাবে বিভেদ সৃষ্টি করছে।

ওলামা দলের আহবায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হকের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব নজরুল ইসলাম তালুকদারের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর নাসির, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন,  স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, তাঁতী দলের আবুল কালাম আজাদ, ওলামা দলের মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজা, মাওলানা আলমগীর হোসেন, আবু বকর চাখারী, ইখলাস উদ্দীন বাবুল, এনামুল হক মাজেদী, মাওলানা কাজী মোশারেফ হোসেন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন, কারী সিরাজুল ইসলাম, কাজী মোস্তফা জামাল খোকন মাওলানা আলমগীর হোসেন খলিলী, হাফেজ মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।