মসজিদের ফান্ডের টাকা ব্যয়ের সঠিক নিয়ম কি?

#
news image

দান-সদকা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলোর মধ্যে অন্যতম। কোরআন ও হাদিসে একাধিকবার দান-সদকার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিপদ থেকে উদ্ধারের মাধ্যম হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়েছে দানকে। রাসুল (সা.) যেসব আমল সব থেকে বেশি করতেন তার একটি হলো দান। তিনি নিজে দান করতেন এবং সাহাবিদেরকেও দান করতে উৎসাহিত করতেন। দান-সদকার প্রতি উৎসাহিত করে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা নিজের সম্পদ দিনে বা রাতে প্রকাশ্যে অথবা গোপনে আল্লাহর পথে খরচ করে তাদের পুরস্কার তাদের প্রতিপালকের কাছে আছে। তাদের কোনো ভয় নেই। তাদের কোনো চিন্তাও নেই।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৭৪)

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, ‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো ভালো। আর যদি গোপনে দান করো এবং অভাবগ্রস্তকে দাও তা তোমাদের জন্য অধিক ভালো। (সুরা আল বাকারা, আয়াত : ২৭১)

আমাদের সমাজের মানুষ যেসব কাজে দান করে তার অন্যতম একটি খাত হলো মসজিদ। মসজিদের যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজে দান করেন সাধারণ মুসলিমরা। মসজিদের জন্য দান করা এসব টাকা কোন কোন খাতে ব্যয় করা হবে তা নিয়ে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেছেন, মসজিদের জন্য দান করা টাকা শুধু মসজিদের সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করতে হবে। অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করা যাবে না।

মসজিদের সংস্কারমূলক কাজ ছাড়াও মসজিদের দান করা টাকার আরও উল্লেখযোগ্য বৈধ খাতগুলো হলো- ইমাম, মুয়াজ্জিন, খতিব, মসজিদের খাদেম ও হিসাবরক্ষকের বেতন-ভাতা প্রভৃতি। এর বাইরে সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ বা গরিব দুঃখীর সহায়তার জন্য মসজিদের জন্য দান করা টাকা ব্যয় করা যাবে না। কারণ, দানের ক্ষেত্রে শরিয়তের নির্দেশনা হলো, যে কোনো দান দাতার ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যয় করতে হয়। তাই যে টাকা মানুষ মসজিদের জন্য দিয়েছে তা মসজিদের কাজেই খরচ করতে হবে।

মসজিদের জন্য দানকৃত অর্থ মসজিদ ছাড়া দরিদ্র্য ও অসহায় মানুষদের দান করাসহ অন্য জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা যাবে না। কারণ এ রকম নির্দিষ্ট ফান্ডে কৃত দান ফান্ড কর্তৃপক্ষের কাছে দাতার আমানত।

দাতার ইচ্ছার বাইরে তা খরচ করলে আমানতের দাবি যথাযথভাবে পালিত হয় না। যে সব মসজিদের দানবক্সে প্রচুর টাকা জমা হয়, মসজিদের প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত হয়ে যায়, ওই সব মসজিদ কর্তৃপক্ষ চাইলে মসজিদের দানবক্সের পাশাপাশি বন্যার্ত বা দরিদ্র্য মানুষের সাহায্যের জন্যও একটি দানবক্স রাখতে পারেন যাতে স্পষ্টভাবে লেখা থাকবে যে এই অর্থ অসহায়-দরিদ্রদের জন্য খরচ করা হবে।

মসজিদ নির্মাণ, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন, নামাজী ও ইতেকাফকারীদের সুযোগ-সুবিধার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন-ভাতা ও আবাসনের ব্যবস্থা, মসজিদে মুসল্লিদের দীনি ইলম চর্চার জন্য পাঠাগার, দীন শেখার ব্যবস্থাপনা, শিশুদের শিক্ষাদানের ব্যবস্থাপনাসহ মসজিদের সব কাজে ব্যয় করার পরও যদি কোনো মসজিদের অর্থ উদ্বৃত্ত থাকে, তা ভবিষ্যতে মসজিদের সম্ভাব্য নির্মাণ-সম্প্রসারণ ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।

নাগরিক সংবাদ অনলাইন

২১ নভেম্বর, ২০২৫,  12:04 AM

news image

দান-সদকা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ আমলগুলোর মধ্যে অন্যতম। কোরআন ও হাদিসে একাধিকবার দান-সদকার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বিপদ থেকে উদ্ধারের মাধ্যম হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়েছে দানকে। রাসুল (সা.) যেসব আমল সব থেকে বেশি করতেন তার একটি হলো দান। তিনি নিজে দান করতেন এবং সাহাবিদেরকেও দান করতে উৎসাহিত করতেন। দান-সদকার প্রতি উৎসাহিত করে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যারা নিজের সম্পদ দিনে বা রাতে প্রকাশ্যে অথবা গোপনে আল্লাহর পথে খরচ করে তাদের পুরস্কার তাদের প্রতিপালকের কাছে আছে। তাদের কোনো ভয় নেই। তাদের কোনো চিন্তাও নেই।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২৭৪)

আল্লাহ তায়ালা আরও বলেন, ‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান করো ভালো। আর যদি গোপনে দান করো এবং অভাবগ্রস্তকে দাও তা তোমাদের জন্য অধিক ভালো। (সুরা আল বাকারা, আয়াত : ২৭১)

আমাদের সমাজের মানুষ যেসব কাজে দান করে তার অন্যতম একটি খাত হলো মসজিদ। মসজিদের যেকোনো উন্নয়নমূলক কাজে দান করেন সাধারণ মুসলিমরা। মসজিদের জন্য দান করা এসব টাকা কোন কোন খাতে ব্যয় করা হবে তা নিয়ে ইসলামী আইন ও ফেকাহশাস্ত্রবিদেরা বলেছেন, মসজিদের জন্য দান করা টাকা শুধু মসজিদের সংস্কার ও উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করতে হবে। অন্য কোনো খাতে ব্যবহার করা যাবে না।

মসজিদের সংস্কারমূলক কাজ ছাড়াও মসজিদের দান করা টাকার আরও উল্লেখযোগ্য বৈধ খাতগুলো হলো- ইমাম, মুয়াজ্জিন, খতিব, মসজিদের খাদেম ও হিসাবরক্ষকের বেতন-ভাতা প্রভৃতি। এর বাইরে সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ বা গরিব দুঃখীর সহায়তার জন্য মসজিদের জন্য দান করা টাকা ব্যয় করা যাবে না। কারণ, দানের ক্ষেত্রে শরিয়তের নির্দেশনা হলো, যে কোনো দান দাতার ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যয় করতে হয়। তাই যে টাকা মানুষ মসজিদের জন্য দিয়েছে তা মসজিদের কাজেই খরচ করতে হবে।

মসজিদের জন্য দানকৃত অর্থ মসজিদ ছাড়া দরিদ্র্য ও অসহায় মানুষদের দান করাসহ অন্য জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা যাবে না। কারণ এ রকম নির্দিষ্ট ফান্ডে কৃত দান ফান্ড কর্তৃপক্ষের কাছে দাতার আমানত।

দাতার ইচ্ছার বাইরে তা খরচ করলে আমানতের দাবি যথাযথভাবে পালিত হয় না। যে সব মসজিদের দানবক্সে প্রচুর টাকা জমা হয়, মসজিদের প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত হয়ে যায়, ওই সব মসজিদ কর্তৃপক্ষ চাইলে মসজিদের দানবক্সের পাশাপাশি বন্যার্ত বা দরিদ্র্য মানুষের সাহায্যের জন্যও একটি দানবক্স রাখতে পারেন যাতে স্পষ্টভাবে লেখা থাকবে যে এই অর্থ অসহায়-দরিদ্রদের জন্য খরচ করা হবে।

মসজিদ নির্মাণ, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন, নামাজী ও ইতেকাফকারীদের সুযোগ-সুবিধার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, ইমাম-মুয়াজ্জিনদের বেতন-ভাতা ও আবাসনের ব্যবস্থা, মসজিদে মুসল্লিদের দীনি ইলম চর্চার জন্য পাঠাগার, দীন শেখার ব্যবস্থাপনা, শিশুদের শিক্ষাদানের ব্যবস্থাপনাসহ মসজিদের সব কাজে ব্যয় করার পরও যদি কোনো মসজিদের অর্থ উদ্বৃত্ত থাকে, তা ভবিষ্যতে মসজিদের সম্ভাব্য নির্মাণ-সম্প্রসারণ ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সংরক্ষণ করে রাখতে হবে।