সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি: সাবেক এমডিসহ ১১ জনের কারাদণ্ড

অনলাইন ডেস্ক
০৮ এপ্রিল, ২০২৫, 12:31 AM

সোনালী ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি: সাবেক এমডিসহ ১১ জনের কারাদণ্ড
ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের এক কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাৎ মামলায় ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৭ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবির, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল হক, জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) ননী গোপাল নাথ ও মীর মহিদুর রহমান, অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) সাইফুল হাসান ও কামরুল হোসেন খান, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) সফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং খান জাহান আলী সোয়েটার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল জলিল শেখ, পরিচালক রফিকুল ইসলাম ও মীর মোহাম্মদ শওকত আলী।
মামলার রায়ে সোনালী ব্যাংকের সাত সাবেক কর্মকর্তাকে বিশ্বাসভঙ্গ ও অর্থ আত্মসাতের দায়ে তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে তাদের।
অপরদিকে, খান জাহান আলী সোয়েটার্স লিমিটেডের চার কর্মকর্তা—তাজুল ইসলাম, আব্দুল জলিল শেখ, রফিকুল ইসলাম ও মীর মোহাম্মদ শওকত আলী—কে একই অপরাধে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগও প্রমাণিত হওয়ায় সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে অতিরিক্ত অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
দুই ধারার সাজা ধারাবাহিকভাবে কার্যকর হবে, ফলে শেষোক্ত চার আসামিকে মোট ১০ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মে পর্যন্ত সময়ে খান জাহান আলী সোয়েটার্স লিমিটেডের পক্ষ থেকে হোটেল শেরাটন শাখার সোনালী ব্যাংকে ১০টি এলসি/কনট্রাক্ট উপস্থাপন করে ১৪টি প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিটের (PSC) মাধ্যমে মোট এক কোটি ৩৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৩ টাকা ঋণ গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে মাত্র ২৪ লাখ ১৩ হাজার ৪১৫ টাকা পরিশোধ করা হয়, বাকি এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করা হয়।
ব্যাংকের ওই সময়কার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জালিয়াতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন বলে তদন্তে উঠে আসে। তাদের সহযোগিতা ছাড়া এই ধরনের প্রতারণা সম্ভব ছিল না বলে মন্তব্য করেন মামলার আইনজীবীরা।
ঘটনার প্রায় এক বছর পর, ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন উপ-পরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঞা রমনা মডেল থানায় এ সংক্রান্ত মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২২ মে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত।
২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বিচার চলাকালে মামলায় সাক্ষ্য দেন ৪১ জন।
রায়ের সময় কেবল চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানার পাশাপাশি গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছেন।
এর আগেও ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সোনালী ব্যাংকের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও সাজা হয়েছে। তবে দুঃখজনকভাবে অনেক দণ্ডিত এখনো আইনের আওতার বাইরে রয়ে গেছেন।
অনলাইন ডেস্ক
০৮ এপ্রিল, ২০২৫, 12:31 AM

ঋণ জালিয়াতির মাধ্যমে সোনালী ব্যাংকের এক কোটি টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাৎ মামলায় ব্যাংকটির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সোমবার (৭ এপ্রিল) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মো. জাকারিয়া হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।
সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবির, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল হক, জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) ননী গোপাল নাথ ও মীর মহিদুর রহমান, অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) সাইফুল হাসান ও কামরুল হোসেন খান, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) সফিজ উদ্দিন আহমেদ এবং খান জাহান আলী সোয়েটার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল জলিল শেখ, পরিচালক রফিকুল ইসলাম ও মীর মোহাম্মদ শওকত আলী।
মামলার রায়ে সোনালী ব্যাংকের সাত সাবেক কর্মকর্তাকে বিশ্বাসভঙ্গ ও অর্থ আত্মসাতের দায়ে তিন বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে তাদের।
অপরদিকে, খান জাহান আলী সোয়েটার্স লিমিটেডের চার কর্মকর্তা—তাজুল ইসলাম, আব্দুল জলিল শেখ, রফিকুল ইসলাম ও মীর মোহাম্মদ শওকত আলী—কে একই অপরাধে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের পাশাপাশি এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ অর্থ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগও প্রমাণিত হওয়ায় সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে অতিরিক্ত অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে তাদের আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
দুই ধারার সাজা ধারাবাহিকভাবে কার্যকর হবে, ফলে শেষোক্ত চার আসামিকে মোট ১০ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০১২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৭ মে পর্যন্ত সময়ে খান জাহান আলী সোয়েটার্স লিমিটেডের পক্ষ থেকে হোটেল শেরাটন শাখার সোনালী ব্যাংকে ১০টি এলসি/কনট্রাক্ট উপস্থাপন করে ১৪টি প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিটের (PSC) মাধ্যমে মোট এক কোটি ৩৮ লাখ ৮৯ হাজার ৮৩ টাকা ঋণ গ্রহণ করা হয়। এর মধ্যে মাত্র ২৪ লাখ ১৩ হাজার ৪১৫ টাকা পরিশোধ করা হয়, বাকি এক কোটি ১৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৬৮ টাকা পরিশোধ না করে আত্মসাৎ করা হয়।
ব্যাংকের ওই সময়কার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জালিয়াতির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন বলে তদন্তে উঠে আসে। তাদের সহযোগিতা ছাড়া এই ধরনের প্রতারণা সম্ভব ছিল না বলে মন্তব্য করেন মামলার আইনজীবীরা।
ঘটনার প্রায় এক বছর পর, ২০১৩ সালের ১ জানুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তৎকালীন উপ-পরিচালক এস এম এম আখতার হামিদ ভূঞা রমনা মডেল থানায় এ সংক্রান্ত মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ২২ মে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত।
২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বিচার চলাকালে মামলায় সাক্ষ্য দেন ৪১ জন।
রায়ের সময় কেবল চার আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক রয়েছেন। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানার পাশাপাশি গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেছেন।
এর আগেও ঋণ জালিয়াতির অভিযোগে সোনালী ব্যাংকের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও সাজা হয়েছে। তবে দুঃখজনকভাবে অনেক দণ্ডিত এখনো আইনের আওতার বাইরে রয়ে গেছেন।