ভাষার মাসে অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে

#
news image

এসেছে ভাষার মাস। দুয়ারে কড়া নাড়ছে ২১ শে ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মায়ের ভাষা বাংলাকে প্রতিষ্ঠার জন্য বাঙালির মহান আত্মত্যাগের স্মৃতি বিজড়িত মাস ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখ শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসেই নয়, বিশ্ব ইতিহাসেরও এক গৌরবময় দিন। অমর একুশে তাই বাঙালির জাগরণের ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামী ঐতিহ্যের পথরেখায় এক অনির্বাণ প্রেরণার নাম।

বাঙ্গালী একমাত্র জাতি, যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে, সংগ্রাম করে মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার অর্জন করেছে। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে দেশের বাড়ছে অপসংস্কৃতির চর্চা। কোনো সংস্কৃতি যখন ওই দেশের কার্যকলাপে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে এবং নৈতিকতা বিবর্জিত হয় তখন তাকে অপসংস্কৃতি বলা হয়। বর্তমানে রাস্তায় দেখা যায় অধিকাংশ সাইনবোর্ড ইংরেজিতে লেখা। গোটা গোটা ইংরেজি শব্দ। বাংলা শব্দ কোথাও নেই। অথচ নির্দেশ আছে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু থাকতে হবে।

পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে আমাদের তরুণ সমাজ অপসংস্কৃতির মায়াজালে পড়ে দেশীয় সংস্কৃতি ক্রমেই বিসর্জন দিয়ে চলছে। যেকোনো জাঁতি ও দেশের সামগ্রিক বিকাশলাভের শ্রেষ্ঠতম প্রকাশক হল তার সংস্কৃতি। মানুষের শিক্ষাদীক্ষা, আচার-আচরণের বিবর্তনের মাধ্যমেই প্রতিটি জাঁতি নিজের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটিয়েছে। সংস্কৃতির মূল কথা হল নিজেকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে গড়ে তোলা এবং অপরের নিকট নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা। অন্য ভাবে বলা যায় শিক্ষা ও সভ্যতার অবনতি ঘটিয়ে যে সংস্কৃতি মানুষকে সুন্দর থেকে দূরে সরিয়ে দেয় তাই অপসংস্কৃতি।

অপসংস্কৃতি মানুষকে কলুষিত করে এবং জীবনের সৌন্দর্য বিকাশকে স্তব্ধ করে দিয়ে শ্রীহীনতার দিকে ঠেলে দেয়। ধর্ষণ, অশ্লীলতা, ঘুষ, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, নোংরামি, খুন, ছিনতাই, প্রতারণা এইগুলো সবই অপসংস্কৃতির ভিন্ন ভিন্ন নাম। এক গবেষণায় দেখা যায় দেশের টিভি মিডিয়ায় দেশীয় বিনোদনের অপ্রতুলতার কারণে যথেষ্ট মাত্রায় দর্শকদের চাহিদার শূন্য জায়গাটাকে দখল করে নিয়েছে বিদেশী সংস্কৃতি। এই প্রযুক্তির বদৌলতে শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতীদের মনন-মানসিকতা ওই অসুস্থ ধারার সংস্কৃতির ছোঁয়ায় বিভ্রান্তির পথে ঝুঁকে পড়ছে।

তাদের একটা বিরাট অংশ আমাদের সংস্কৃতির প্রতি অনীহা পোষণ করে বিদেশী সংস্কৃতিকে বরণ করে নিয়েছে। যার কারণে নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতির চেয়ে এখনকার তরুণদের মধ্যে বেশি প্রাধান্য পাঁচ্ছে বিদেশী নানান সংস্কৃতি। এই ভাষার মাসই হলো অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শ্রেষ্ঠ সময়। আজকের তরুণ সমাজই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, সমাজ ও রাষ্ট্রের মূল চালিকাশক্তি, আগামীর বিশ্ব তথা দেশ গড়ার কারিগর।

তরুণদের এই অপসংস্কৃতির মতো বিভীষিকাময় মরীচিকা থেকে ফিরিয়ে আনা আমাদের একান্ত কর্তবও। তাই এই অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হলে অপসংস্কৃতির ক্ষতিকর দিকটি জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে। অপসংস্কৃতি যাতে সমাজকে কলুষিত করতে না পারে সে জন্যে রাষ্ট্রপরিচালকদের সচেতন হতে হবে তেমনি সচেতন হতে হবে সর্বশ্রেণীর নাগরিকদের, তাহলেই একটি সুস্থ ও সুন্দর আগামী আমারা পরবর্তী প্রজন্মকে উপহার দিতে পারবো।

নাগরিক ডেস্ক

০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪,  3:04 AM

news image

এসেছে ভাষার মাস। দুয়ারে কড়া নাড়ছে ২১ শে ফেব্রুয়ারি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। মায়ের ভাষা বাংলাকে প্রতিষ্ঠার জন্য বাঙালির মহান আত্মত্যাগের স্মৃতি বিজড়িত মাস ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখ শুধু বাংলাদেশের ইতিহাসেই নয়, বিশ্ব ইতিহাসেরও এক গৌরবময় দিন। অমর একুশে তাই বাঙালির জাগরণের ও অধিকার আদায়ের সংগ্রামী ঐতিহ্যের পথরেখায় এক অনির্বাণ প্রেরণার নাম।

বাঙ্গালী একমাত্র জাতি, যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে, সংগ্রাম করে মায়ের ভাষায় কথা বলার অধিকার অর্জন করেছে। কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে দেশের বাড়ছে অপসংস্কৃতির চর্চা। কোনো সংস্কৃতি যখন ওই দেশের কার্যকলাপে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে এবং নৈতিকতা বিবর্জিত হয় তখন তাকে অপসংস্কৃতি বলা হয়। বর্তমানে রাস্তায় দেখা যায় অধিকাংশ সাইনবোর্ড ইংরেজিতে লেখা। গোটা গোটা ইংরেজি শব্দ। বাংলা শব্দ কোথাও নেই। অথচ নির্দেশ আছে সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু থাকতে হবে।

পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে আমাদের তরুণ সমাজ অপসংস্কৃতির মায়াজালে পড়ে দেশীয় সংস্কৃতি ক্রমেই বিসর্জন দিয়ে চলছে। যেকোনো জাঁতি ও দেশের সামগ্রিক বিকাশলাভের শ্রেষ্ঠতম প্রকাশক হল তার সংস্কৃতি। মানুষের শিক্ষাদীক্ষা, আচার-আচরণের বিবর্তনের মাধ্যমেই প্রতিটি জাঁতি নিজের সংস্কৃতির বিকাশ ঘটিয়েছে। সংস্কৃতির মূল কথা হল নিজেকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে গড়ে তোলা এবং অপরের নিকট নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা। অন্য ভাবে বলা যায় শিক্ষা ও সভ্যতার অবনতি ঘটিয়ে যে সংস্কৃতি মানুষকে সুন্দর থেকে দূরে সরিয়ে দেয় তাই অপসংস্কৃতি।

অপসংস্কৃতি মানুষকে কলুষিত করে এবং জীবনের সৌন্দর্য বিকাশকে স্তব্ধ করে দিয়ে শ্রীহীনতার দিকে ঠেলে দেয়। ধর্ষণ, অশ্লীলতা, ঘুষ, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি, নোংরামি, খুন, ছিনতাই, প্রতারণা এইগুলো সবই অপসংস্কৃতির ভিন্ন ভিন্ন নাম। এক গবেষণায় দেখা যায় দেশের টিভি মিডিয়ায় দেশীয় বিনোদনের অপ্রতুলতার কারণে যথেষ্ট মাত্রায় দর্শকদের চাহিদার শূন্য জায়গাটাকে দখল করে নিয়েছে বিদেশী সংস্কৃতি। এই প্রযুক্তির বদৌলতে শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতীদের মনন-মানসিকতা ওই অসুস্থ ধারার সংস্কৃতির ছোঁয়ায় বিভ্রান্তির পথে ঝুঁকে পড়ছে।

তাদের একটা বিরাট অংশ আমাদের সংস্কৃতির প্রতি অনীহা পোষণ করে বিদেশী সংস্কৃতিকে বরণ করে নিয়েছে। যার কারণে নিজস্ব ভাষা, সংস্কৃতির চেয়ে এখনকার তরুণদের মধ্যে বেশি প্রাধান্য পাঁচ্ছে বিদেশী নানান সংস্কৃতি। এই ভাষার মাসই হলো অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শ্রেষ্ঠ সময়। আজকের তরুণ সমাজই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, সমাজ ও রাষ্ট্রের মূল চালিকাশক্তি, আগামীর বিশ্ব তথা দেশ গড়ার কারিগর।

তরুণদের এই অপসংস্কৃতির মতো বিভীষিকাময় মরীচিকা থেকে ফিরিয়ে আনা আমাদের একান্ত কর্তবও। তাই এই অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হলে অপসংস্কৃতির ক্ষতিকর দিকটি জনসমক্ষে তুলে ধরতে হবে। অপসংস্কৃতি যাতে সমাজকে কলুষিত করতে না পারে সে জন্যে রাষ্ট্রপরিচালকদের সচেতন হতে হবে তেমনি সচেতন হতে হবে সর্বশ্রেণীর নাগরিকদের, তাহলেই একটি সুস্থ ও সুন্দর আগামী আমারা পরবর্তী প্রজন্মকে উপহার দিতে পারবো।