আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি, অর্থনীতির পুনরুদ্ধার জরুরি
নাগরিক ডেস্ক
১১ মে, ২০২৩, 9:24 AM
আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি, অর্থনীতির পুনরুদ্ধার জরুরি
দেশের সব পর্যায়ের মানুষের মধ্যে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে অব্যাহত মূল্যস্ফীতি। সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে নিম্ন-আয়ের মানুষ। জানা যায়, দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষের উপার্জন কমে গেছে। আয় কমলেও লাগামহীনভাবে বেড়েছে পণ্য ও সেবার মূল্য।
এ অবস্থায় স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষের হাতে উদ্বৃত্ত অর্থ থাকছে কম, যে কারণে অনেকেই সঞ্চয় করতে পারছেন না। করোনা মহামারির আঘাতের পর সারা দেশের মানুষ যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল, সেসময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজারে প্রায় সব ধরনের পণ্য ও সেবার মূল্য বেড়ে যায়। এরপর ডলারের বিপরীতে টাকার মান অব্যাহতভাবে কমে যাওয়ায় নতুন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বহু মানুষ আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। গরিব মানুষ বাধ্য হয়ে পুষ্টিকর খাবার কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। খাবারে পুষ্টিকর উপাদান কম থাকলে মানুষের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় সংকট সৃষ্টি হবে। দীর্ঘমেয়াদে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করলে জনশক্তির ওপর এর পভাব পড়বে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক মন্দায় বাংলাদেশের কমপক্ষে ৩৭ শতাংশ মানুষের আয় কমে গেছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশে গত এক বছরে মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে। জ্বালানি সংকটে দেশে শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসে। ডলার সংকটের কারণে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতেও সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।
এ অবস্থায় দেশে শিল্প ও বাণিজ্যের প্রসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ডলার সংকট নিরসনে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বহু প্রবাসী বাংলাদেশি হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। তাদের ব্যাংক চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। যেহেতু কাক্সিক্ষত মাত্রায় রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ানো যাচ্ছে না, সেহেতু রপ্তানি আয় বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নিতে হবে। বিভিন্ন পণ্যে আমদানিনির্ভরতা কাটানোর পদক্ষেপও নিতে হবে।
আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় অনেকে ঋণ করে সংসার চালাচ্ছেন। এতে একদিকে মানুষ ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন; অন্যদিকে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সঞ্চয় কমে যাওয়ার কারণে। সঞ্চয় কমে যাওয়ায় বিনিয়োগ কমছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নতুন করে যারা শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে, তারা যাতে যোগ্যতা ও প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, দীর্ঘ সময় এমন অবস্থা চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে। এ অবস্থায় মানুষের আয়বর্ধক কর্মসূচিগুলো টেকসই করার পদক্ষেপ নিতে হবে। অর্থনীতিকে দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে দেশে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা জরুরি। মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। দরিদ্র মানুষকে সহায়তার জন্য সরকার যে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, তা ইতিবাচক। এ খাতের পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি সহায়তার পরিমাণও বাড়াতে হবে।
এ খাতের দুর্নীতির বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসে। তাই দুর্নীতি রোধে আরও কঠোর হতে হবে সরকারকে।
নাগরিক ডেস্ক
১১ মে, ২০২৩, 9:24 AM
দেশের সব পর্যায়ের মানুষের মধ্যে অস্বস্তি বাড়াচ্ছে অব্যাহত মূল্যস্ফীতি। সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে নিম্ন-আয়ের মানুষ। জানা যায়, দেশের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষের উপার্জন কমে গেছে। আয় কমলেও লাগামহীনভাবে বেড়েছে পণ্য ও সেবার মূল্য।
এ অবস্থায় স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষের হাতে উদ্বৃত্ত অর্থ থাকছে কম, যে কারণে অনেকেই সঞ্চয় করতে পারছেন না। করোনা মহামারির আঘাতের পর সারা দেশের মানুষ যখন ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল, সেসময় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজারে প্রায় সব ধরনের পণ্য ও সেবার মূল্য বেড়ে যায়। এরপর ডলারের বিপরীতে টাকার মান অব্যাহতভাবে কমে যাওয়ায় নতুন সংকট সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বহু মানুষ আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে গিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। গরিব মানুষ বাধ্য হয়ে পুষ্টিকর খাবার কেনা কমিয়ে দিয়েছেন। খাবারে পুষ্টিকর উপাদান কম থাকলে মানুষের সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় সংকট সৃষ্টি হবে। দীর্ঘমেয়াদে এমন পরিস্থিতি বিরাজ করলে জনশক্তির ওপর এর পভাব পড়বে।
বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৈশ্বিক মন্দায় বাংলাদেশের কমপক্ষে ৩৭ শতাংশ মানুষের আয় কমে গেছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ তৈরির পদক্ষেপ নিতে হবে। দেশে গত এক বছরে মূলধনি যন্ত্রপাতির আমদানি কমেছে। জ্বালানি সংকটে দেশে শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসে। ডলার সংকটের কারণে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিতেও সংকট সৃষ্টি হচ্ছে।
এ অবস্থায় দেশে শিল্প ও বাণিজ্যের প্রসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ডলার সংকট নিরসনে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বহু প্রবাসী বাংলাদেশি হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। তাদের ব্যাংক চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। যেহেতু কাক্সিক্ষত মাত্রায় রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়ানো যাচ্ছে না, সেহেতু রপ্তানি আয় বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণের উদ্যোগ নিতে হবে। বিভিন্ন পণ্যে আমদানিনির্ভরতা কাটানোর পদক্ষেপও নিতে হবে।
আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় অনেকে ঋণ করে সংসার চালাচ্ছেন। এতে একদিকে মানুষ ব্যক্তিগতভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন; অন্যদিকে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সঞ্চয় কমে যাওয়ার কারণে। সঞ্চয় কমে যাওয়ায় বিনিয়োগ কমছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। নতুন করে যারা শ্রমবাজারে প্রবেশ করছে, তারা যাতে যোগ্যতা ও প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ পায়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, দীর্ঘ সময় এমন অবস্থা চলতে থাকলে দেশের অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে। এ অবস্থায় মানুষের আয়বর্ধক কর্মসূচিগুলো টেকসই করার পদক্ষেপ নিতে হবে। অর্থনীতিকে দ্রুত পুনরুদ্ধার করতে দেশে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা জরুরি। মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে। দরিদ্র মানুষকে সহায়তার জন্য সরকার যে সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, তা ইতিবাচক। এ খাতের পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি সহায়তার পরিমাণও বাড়াতে হবে।
এ খাতের দুর্নীতির বিষয়টি বারবার আলোচনায় আসে। তাই দুর্নীতি রোধে আরও কঠোর হতে হবে সরকারকে।