প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার: নিজের ক্ষতির কথা নিজেদেরই ভাবতে হবে
নাগরিক নিউজ ডেস্ক
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, 11:25 PM
প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার: নিজের ক্ষতির কথা নিজেদেরই ভাবতে হবে
পৃথিবীব্যাপী প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গড়ে উঠলেও আমাদের দেশে তার চিত্র বিপরীত। আইন করেও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করা যাচ্ছে না।
জানা যায়, ২০০৫ সালে দেশের শহরাঞ্চলে বছরে মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার ছিল তিন কেজি, ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ কেজিতে। বর্তমানে রাজধানীতে গড়ে একজন মানুষ বছরে ২৪ কেজি প্লাস্টিক ব্যবহার করে। পৃথিবীতে বাংলাদেশেই প্রথম (২০০২ সালে) পাতলা বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু সেটি ছিল কেবলই কাগজে-কলমে। তাই বাংলাদেশ এখনো প্লাস্টিক দূষণে শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর একটি। পরিবেশদূষণ রোধে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। এনভায়রনমেন্টাল পারফরম্যান্স ইনডেক্স (ইপিআই) সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৭তম।
বৈশ্বিক প্লাস্টিক-পলিথিন দূষণের প্রায় আড়াই শতাংশ সৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশে। এখানে প্লাস্টিক দূষণে শুধু সাগর দূষিত হচ্ছে না, অনেক নদীও মরতে বসেছে। বুড়িগঙ্গার তলদেশে ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু প্লাস্টিকের স্তর পাওয়া গিয়েছিল। তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা, কর্ণফুলী ও সুরমা নদীর অবস্থাও শোচনীয়। খনন করাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক কর্মসূচি (ইউএনইপি) তাদের বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক উৎপাদন ও ব্যবহার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশের পদ্মা, যমুনা ও মেঘনা নদী দিয়ে প্রতিদিন ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য সাগরে মিশছে।
এ ছাড়া ভারত, নেপাল ও চীনের বর্জ্য গঙ্গা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের মাধ্যমে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাস্টিক ও পলিথিনের অবাধ ব্যবহার নানা মাত্রায় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে প্লাস্টিক-পলিথিন দূষণ থেকে মুক্ত করার জন্য জোরদার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পৃথিবীব্যাপী প্রধানত দুইভাবে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। এক. উৎপাদন ও ব্যবহার কমিয়ে। দুই. ব্যবহৃত প্লাস্টিক সংগ্রহ ও রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে। বাংলাদেশে বর্তমানে উৎপাদন ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। কিন্তু রিসাইক্লিং এখনো খুবই দুর্বল অবস্থায় আছে। বাংলাদেশে ব্যবহৃত প্লাস্টিক-পলিথিনের মাত্র ৩৭ শতাংশ রিসাইক্লিং করা সম্ভব হচ্ছে।
অনেক দেশেই এর পরিমাণ ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বা আরো বেশি। আমাদেরও রিসাইক্লিং বা পুর্নব্যবহার বাড়াতে হবে। অন্যদিকে প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
বাজার করতে যাওয়ার সময় সঙ্গে একটি বা দুটি ব্যাগ নিয়ে গেলে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের প্রয়োজন থাকে না বললেই চলে। এই কাজে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বেঁচে থাকার স্বার্থেই আমাদের সুস্থ পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে।
নাগরিক নিউজ ডেস্ক
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, 11:25 PM
পৃথিবীব্যাপী প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে ব্যাপক জনমত গড়ে উঠলেও আমাদের দেশে তার চিত্র বিপরীত। আইন করেও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করা যাচ্ছে না।
জানা যায়, ২০০৫ সালে দেশের শহরাঞ্চলে বছরে মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার ছিল তিন কেজি, ২০২০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৯ কেজিতে। বর্তমানে রাজধানীতে গড়ে একজন মানুষ বছরে ২৪ কেজি প্লাস্টিক ব্যবহার করে। পৃথিবীতে বাংলাদেশেই প্রথম (২০০২ সালে) পাতলা বা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু সেটি ছিল কেবলই কাগজে-কলমে। তাই বাংলাদেশ এখনো প্লাস্টিক দূষণে শীর্ষস্থানীয় দেশগুলোর একটি। পরিবেশদূষণ রোধে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। এনভায়রনমেন্টাল পারফরম্যান্স ইনডেক্স (ইপিআই) সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৭তম।
বৈশ্বিক প্লাস্টিক-পলিথিন দূষণের প্রায় আড়াই শতাংশ সৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশে। এখানে প্লাস্টিক দূষণে শুধু সাগর দূষিত হচ্ছে না, অনেক নদীও মরতে বসেছে। বুড়িগঙ্গার তলদেশে ১০ থেকে ১৫ ফুট উঁচু প্লাস্টিকের স্তর পাওয়া গিয়েছিল। তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা, কর্ণফুলী ও সুরমা নদীর অবস্থাও শোচনীয়। খনন করাও কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।
জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক কর্মসূচি (ইউএনইপি) তাদের বিশ্বব্যাপী প্লাস্টিক উৎপাদন ও ব্যবহার বিষয়ে প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশের পদ্মা, যমুনা ও মেঘনা নদী দিয়ে প্রতিদিন ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য সাগরে মিশছে।
এ ছাড়া ভারত, নেপাল ও চীনের বর্জ্য গঙ্গা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের মাধ্যমে প্রবাহিত হচ্ছে। প্লাস্টিক ও পলিথিনের অবাধ ব্যবহার নানা মাত্রায় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাংলাদেশকে প্লাস্টিক-পলিথিন দূষণ থেকে মুক্ত করার জন্য জোরদার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পৃথিবীব্যাপী প্রধানত দুইভাবে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। এক. উৎপাদন ও ব্যবহার কমিয়ে। দুই. ব্যবহৃত প্লাস্টিক সংগ্রহ ও রিসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে। বাংলাদেশে বর্তমানে উৎপাদন ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। কিন্তু রিসাইক্লিং এখনো খুবই দুর্বল অবস্থায় আছে। বাংলাদেশে ব্যবহৃত প্লাস্টিক-পলিথিনের মাত্র ৩৭ শতাংশ রিসাইক্লিং করা সম্ভব হচ্ছে।
অনেক দেশেই এর পরিমাণ ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বা আরো বেশি। আমাদেরও রিসাইক্লিং বা পুর্নব্যবহার বাড়াতে হবে। অন্যদিকে প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।
বাজার করতে যাওয়ার সময় সঙ্গে একটি বা দুটি ব্যাগ নিয়ে গেলে পলিথিন ব্যাগ ব্যবহারের প্রয়োজন থাকে না বললেই চলে। এই কাজে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। বেঁচে থাকার স্বার্থেই আমাদের সুস্থ পরিবেশ রক্ষায় উদ্যোগী হতে হবে।