সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করতে হবে র্যাগিং
নাগরিক ডেস্ক
১২ মার্চ, ২০২৩, 5:02 PM
সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করতে হবে র্যাগিং
র্যাগিং শব্দের প্রচলিত অর্থ পরিচয়পর্ব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুরনো শিক্ষার্থীদের সখ্য গড়ে তোলার জন্য যে আনুষ্ঠানিক পরিচিতি প্রথা সেটাকেই র্যাগিং বলে অভিহিত করা হয়। ১৮২৮ থেকে ১৮৪৫ সালের দিকে র্যাগ সপ্তাহের প্রচলন ঘটে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।
ইউরোপণ্ডআমেরিকায় এর যাত্রা হলেও বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশেই এর ব্যবহার সর্বাধিক। এ উপমহাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে র্যাগিং শুরু হয় ষাটের দশকে। এরপর আশির দশকের শেষ দিকে তা ভারতে ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই র্যাগিং একটি পরিচিত শব্দ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুরনো শিক্ষার্থীদের সখ্য গড়ে তোলার জন্য যে পরিচিতি প্রথা, এ দেশে সেটাকে র্যাগিং বলে অভিহিত করা হয়।
কিন্তু বাস্তবে তাদের ওপর চালানো হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। শারীরিক নির্যাতনের মধ্যে আছে কান ধরে ওঠবস করানো, রড দিয়ে পেটানো, পানিতে চুবানো, উঁচু ভবন থেকে লাফ দেওয়ানো, সিগারেটের আগুনে ছ্যাঁকা দেওয়া, গাছে ওঠানো, ভবনের কার্নিশ দিয়ে হাঁটানো এমনকি তাদের পিতা-মাতা ও নিজ জেলা নিয়েও নানাভাবে হয়রানি করা হয় এই প্রক্রিয়ায়। সম্প্রতি উচ্চ আদালত র্যাগিংকে ফৌজদারি অপরাধ বলে ঘোষণা দিয়েছে ফলে এখন থেকে যে কেউ মামলা করতে র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে।
র্যাগিংয়ের শিকার ছেলেটি বা মেয়েটির মধ্যে একপ্রকার প্রতিশোধপরায়ণ ভাব জন্ম নেয়। ফলে তারাও সিনিয়র হওয়ার পরে তাদের জুনিয়রদের সঙ্গে একই আচরণ করে। ফলে দিনেদিনে এই সংস্কৃতি ক্রমেই বেড়ে চলছে।
এমনিতেই দেশে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগেরই বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ। র্যাগিংয়ের নামে অত্যাচার কমবেশি সব বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রচলিত আছে। র্যাগিংয়ের শাস্তির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান নেই। সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে একটি অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি গঠন করার নিয়ম করা হয়েছে, যার প্রধান হিসেবে ছাত্র উপদেষ্টা সদস্য সচিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রভোস্টদের সদস্য রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিকার খুব কমই দেখা যায়।
মূলত প্রশাসনের দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। র্যাগিংয়ের কুফল সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ মাঝেমধ্যে শ্রেণীকক্ষে আলোচনা করতে হবে তাতে ছাত্ররা র্যাগিং করতে নিরুৎসাহিত হবে। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন ছাত্র সমাজ র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে ও বাইরে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। র্যাগিং বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও তার যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। র্যাগিং প্রদানকারী শিক্ষার্থীদের আইনের অওতায় আনতে হবে।
নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নিয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে। ভবিষ্যতে যেন আর কেউ এমন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ার সাহস না পায় তারজন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে সে রাস্তা বন্ধ করে দিতে হবে। র্যাগিং অবশ্যই বন্ধ করতে হবে শিক্ষার সব স্তর থেকে।
নাগরিক ডেস্ক
১২ মার্চ, ২০২৩, 5:02 PM
র্যাগিং শব্দের প্রচলিত অর্থ পরিচয়পর্ব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুরনো শিক্ষার্থীদের সখ্য গড়ে তোলার জন্য যে আনুষ্ঠানিক পরিচিতি প্রথা সেটাকেই র্যাগিং বলে অভিহিত করা হয়। ১৮২৮ থেকে ১৮৪৫ সালের দিকে র্যাগ সপ্তাহের প্রচলন ঘটে আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।
ইউরোপণ্ডআমেরিকায় এর যাত্রা হলেও বর্তমানে ভারতীয় উপমহাদেশেই এর ব্যবহার সর্বাধিক। এ উপমহাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে র্যাগিং শুরু হয় ষাটের দশকে। এরপর আশির দশকের শেষ দিকে তা ভারতে ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই র্যাগিং একটি পরিচিত শব্দ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুরনো শিক্ষার্থীদের সখ্য গড়ে তোলার জন্য যে পরিচিতি প্রথা, এ দেশে সেটাকে র্যাগিং বলে অভিহিত করা হয়।
কিন্তু বাস্তবে তাদের ওপর চালানো হয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। শারীরিক নির্যাতনের মধ্যে আছে কান ধরে ওঠবস করানো, রড দিয়ে পেটানো, পানিতে চুবানো, উঁচু ভবন থেকে লাফ দেওয়ানো, সিগারেটের আগুনে ছ্যাঁকা দেওয়া, গাছে ওঠানো, ভবনের কার্নিশ দিয়ে হাঁটানো এমনকি তাদের পিতা-মাতা ও নিজ জেলা নিয়েও নানাভাবে হয়রানি করা হয় এই প্রক্রিয়ায়। সম্প্রতি উচ্চ আদালত র্যাগিংকে ফৌজদারি অপরাধ বলে ঘোষণা দিয়েছে ফলে এখন থেকে যে কেউ মামলা করতে র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবে।
র্যাগিংয়ের শিকার ছেলেটি বা মেয়েটির মধ্যে একপ্রকার প্রতিশোধপরায়ণ ভাব জন্ম নেয়। ফলে তারাও সিনিয়র হওয়ার পরে তাদের জুনিয়রদের সঙ্গে একই আচরণ করে। ফলে দিনেদিনে এই সংস্কৃতি ক্রমেই বেড়ে চলছে।
এমনিতেই দেশে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠা উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগেরই বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার অভিযোগ। র্যাগিংয়ের নামে অত্যাচার কমবেশি সব বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রচলিত আছে। র্যাগিংয়ের শাস্তির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো বিধান নেই। সম্প্রতি হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে একটি অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি গঠন করার নিয়ম করা হয়েছে, যার প্রধান হিসেবে ছাত্র উপদেষ্টা সদস্য সচিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হল প্রভোস্টদের সদস্য রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে তার প্রতিকার খুব কমই দেখা যায়।
মূলত প্রশাসনের দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে কিছু কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। র্যাগিংয়ের কুফল সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ মাঝেমধ্যে শ্রেণীকক্ষে আলোচনা করতে হবে তাতে ছাত্ররা র্যাগিং করতে নিরুৎসাহিত হবে। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন ছাত্র সমাজ র্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ভিতরে ও বাইরে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। র্যাগিং বন্ধে কঠোর আইন প্রণয়ন ও তার যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। র্যাগিং প্রদানকারী শিক্ষার্থীদের আইনের অওতায় আনতে হবে।
নির্যাতন-নিপীড়নের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নিয়ে নজরদারি বাড়াতে হবে। ভবিষ্যতে যেন আর কেউ এমন ঘৃণ্য কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ার সাহস না পায় তারজন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়ে সে রাস্তা বন্ধ করে দিতে হবে। র্যাগিং অবশ্যই বন্ধ করতে হবে শিক্ষার সব স্তর থেকে।