টিকটক : তরুণ প্রজন্মকে ঠেলে দিচ্ছে ধ্বংসের মুখে

#
news image

মানুষের জীবনযাত্রা বদলে দিয়ে পুরো পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে ইন্টারনেট। কিন্তু সব ভালো জিনিসের কিছু খারাপ দিক থাকে তেমনি ইন্টারনেটেরও বেশ কিছু খারাপ দিক আছে যার ভিতর অন্যতম হলো এই টিকটক। টিকটক তরুণ থেকে বৃদ্ধ যেকোনো প্রজন্মের মানুষের কাছে জনপ্রিয় একটি অ্যাপ।

টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করে আমাদের তরুণ সমাজ আবার রাতারাতি হয়ে যাচ্ছে তারকা বা টিকটক স্টার। তারা নিজেদেরকে দাবি করছে সেলেব্রিটি বলেও। এই অ্যাপে ১০ বছরের বাচ্চা থেকে শুরু করে মধ্য বয়সী পর্যন্ত মানুষদের নানারকম ভিডিও পোস্ট করতে দেখা যায়। এটি বিনোদনের পরিবর্তে সামাজিক অবক্ষয়ের কারণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ভিডিওতে নিজের ব্যঙ্গাত্মক মুখভঙ্গি কিংবা রম্য সংলাপের ঠোঁট মেলানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে তরুণ প্রজন্ম। সমাজের একটি বৃহৎ অংশ টিকটকের অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। অ্যাকাউন্ট খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্ষতিকর কনট্যান্ট দেখাতে শুরু করে চীনভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টিকটক। মাত্র ৩৯ সেকেন্ডে এমন সব কনট্যান্ট দেখানো শুরু হয়, যা কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এক গবেষণায় দেখা যায় এসব কনট্যান্টে মানুষের আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ানোর মতো ছয়টি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলে। এগুলো হলো আহার ব্যাধি, আত্মহত্যামূলক প্রবণতা বৃদ্ধি, নিজের ক্ষতি করা, মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাব, যৌন হয়রানি এবং ‘ফ্যাট-শেমিং’ বা কাউকে মোটা বলে উপহাস করার প্রবণতা। আবার দেখা যায় খ্যাতির নেশায় টিকটকে অ্যাপ ব্যবহার করে কিশোর ও তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপরাধে। যার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণ-পাঁচার-ডাকাতির মতো ঘৃণ্য অপরাধ। টিকটক ব্যবহারে নূন্যতম বয়সসীমা ১৩ বছর এতে দেখা যায় শিশুরাও এসব অপরাধের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে পড়ে।

টিকটকের কনটেন্ট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এর বেশির ভাগ মানহীন, ভীতিকর, সম্মানহানিকর, অশ্লীলতায় ভরপুর। এসব ভিডিওতে প্রাধান্য পাঁচ্ছে যৌনতা, অশ্লীলতা। এ ছাড়া ট্রল, সহিংসতাসহ নানা রকম কুরুচিপূর্ণ কন্টেন্ট। মনোযোগ আকর্ষণ করার উদ্দেশ্য অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ ভিডিও তৈরি করতেও পিছুপা হয় না এসব তরুণ-তরুণীরা। বিভিন্ন সময় দেখা যায় তরুণরা রাস্তা আটকে, হাটবাজারে, জনসমাগমের ভেতরে টিকটক তৈরি করেন। ফলে সেখানে দুর্ঘটনা, মারামারি, বিরক্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এইসব টিকটকের তথা কথিত শুটিং চলে রাজধানীর প্রায় সব বিনোদন কেন্দ্রে। বিনোদন কেন্দ্রগুলো এখন হয়ে উঠছে টিকটকারদের আস্থানা। বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরতে আসা মানুষগুলোকেও তটস্থ থাকতে হয় এসব টিকটকারদের ভয়ে।

এক প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, এই ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করে আমাদের তরুণ সমাজের কোনো উপকার তো হচ্ছেই না, উল্টো তারা অদ্ভুত এক ধরনের ব্যঙ্গাত্মক আচরণ আয়ত্ত্ব করছে। যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই আর যাতে এগুলোর বিস্তার না ঘটে তার জন্য সরকারের এখনি এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। ভারতসহ কয়েকটি দেশ এসব আয়ত্ত ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে তাই সরকারকেও তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করতে এবং সামাজিক অবক্ষয় রোধে নিষিদ্ধ করতে হবে টিকটক নামের এই অভিশাপ।

পাশাপাশি বাবা মাকেও তাদের সন্তানদের ব্যাপারে আরো সচেতন হতে হবে। সর্বোপরি নিজেদের এ ধরনের অসুস্থ বিনোদনের মাধ্যমে থেকে বিরত থাকতে হবে।   

নাগরিক ডেস্ক

১১ মার্চ, ২০২৩,  10:13 AM

news image

মানুষের জীবনযাত্রা বদলে দিয়ে পুরো পৃথিবীকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে ইন্টারনেট। কিন্তু সব ভালো জিনিসের কিছু খারাপ দিক থাকে তেমনি ইন্টারনেটেরও বেশ কিছু খারাপ দিক আছে যার ভিতর অন্যতম হলো এই টিকটক। টিকটক তরুণ থেকে বৃদ্ধ যেকোনো প্রজন্মের মানুষের কাছে জনপ্রিয় একটি অ্যাপ।

টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করে আমাদের তরুণ সমাজ আবার রাতারাতি হয়ে যাচ্ছে তারকা বা টিকটক স্টার। তারা নিজেদেরকে দাবি করছে সেলেব্রিটি বলেও। এই অ্যাপে ১০ বছরের বাচ্চা থেকে শুরু করে মধ্য বয়সী পর্যন্ত মানুষদের নানারকম ভিডিও পোস্ট করতে দেখা যায়। এটি বিনোদনের পরিবর্তে সামাজিক অবক্ষয়ের কারণ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ভিডিওতে নিজের ব্যঙ্গাত্মক মুখভঙ্গি কিংবা রম্য সংলাপের ঠোঁট মেলানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছে তরুণ প্রজন্ম। সমাজের একটি বৃহৎ অংশ টিকটকের অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। অ্যাকাউন্ট খোলার কিছুক্ষণের মধ্যেই ক্ষতিকর কনট্যান্ট দেখাতে শুরু করে চীনভিত্তিক সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টিকটক। মাত্র ৩৯ সেকেন্ডে এমন সব কনট্যান্ট দেখানো শুরু হয়, যা কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

এক গবেষণায় দেখা যায় এসব কনট্যান্টে মানুষের আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ানোর মতো ছয়টি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ফেলে। এগুলো হলো আহার ব্যাধি, আত্মহত্যামূলক প্রবণতা বৃদ্ধি, নিজের ক্ষতি করা, মানসিক স্বাস্থ্য প্রভাব, যৌন হয়রানি এবং ‘ফ্যাট-শেমিং’ বা কাউকে মোটা বলে উপহাস করার প্রবণতা। আবার দেখা যায় খ্যাতির নেশায় টিকটকে অ্যাপ ব্যবহার করে কিশোর ও তরুণরা জড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন অপরাধে। যার মধ্যে রয়েছে ধর্ষণ-পাঁচার-ডাকাতির মতো ঘৃণ্য অপরাধ। টিকটক ব্যবহারে নূন্যতম বয়সসীমা ১৩ বছর এতে দেখা যায় শিশুরাও এসব অপরাধের সাথে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে পড়ে।

টিকটকের কনটেন্ট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এর বেশির ভাগ মানহীন, ভীতিকর, সম্মানহানিকর, অশ্লীলতায় ভরপুর। এসব ভিডিওতে প্রাধান্য পাঁচ্ছে যৌনতা, অশ্লীলতা। এ ছাড়া ট্রল, সহিংসতাসহ নানা রকম কুরুচিপূর্ণ কন্টেন্ট। মনোযোগ আকর্ষণ করার উদ্দেশ্য অশ্লীল, কুরুচিপূর্ণ ভিডিও তৈরি করতেও পিছুপা হয় না এসব তরুণ-তরুণীরা। বিভিন্ন সময় দেখা যায় তরুণরা রাস্তা আটকে, হাটবাজারে, জনসমাগমের ভেতরে টিকটক তৈরি করেন। ফলে সেখানে দুর্ঘটনা, মারামারি, বিরক্তিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এইসব টিকটকের তথা কথিত শুটিং চলে রাজধানীর প্রায় সব বিনোদন কেন্দ্রে। বিনোদন কেন্দ্রগুলো এখন হয়ে উঠছে টিকটকারদের আস্থানা। বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরতে আসা মানুষগুলোকেও তটস্থ থাকতে হয় এসব টিকটকারদের ভয়ে।

এক প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, এই ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করে আমাদের তরুণ সমাজের কোনো উপকার তো হচ্ছেই না, উল্টো তারা অদ্ভুত এক ধরনের ব্যঙ্গাত্মক আচরণ আয়ত্ত্ব করছে। যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই আর যাতে এগুলোর বিস্তার না ঘটে তার জন্য সরকারের এখনি এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। ভারতসহ কয়েকটি দেশ এসব আয়ত্ত ক্ষতিকর দিক বিবেচনা করে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে তাই সরকারকেও তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করতে এবং সামাজিক অবক্ষয় রোধে নিষিদ্ধ করতে হবে টিকটক নামের এই অভিশাপ।

পাশাপাশি বাবা মাকেও তাদের সন্তানদের ব্যাপারে আরো সচেতন হতে হবে। সর্বোপরি নিজেদের এ ধরনের অসুস্থ বিনোদনের মাধ্যমে থেকে বিরত থাকতে হবে।