একের পর এক বিস্ফোরণ, আর পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে
নাগরিক ডেস্ক
০৯ মার্চ, ২০২৩, 6:28 PM
একের পর এক বিস্ফোরণ, আর পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি বেসরকারি অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের রেশ কাটতে না কাটতেই রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় একটি তিনতলা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার একদিন পরেই গুলিস্তানের পাশে সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ফের একটি ভবনধসের ঘটনা ঘটে, যা আরও ভয়াবহ ও মর্মান্তিক।
এখন পর্যন্ত এসব ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসাবেই দেখা হচ্ছে, যদিও পরপর তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি রাখে। সায়েন্সল্যাব ও সিদ্দিকবাজার-দুটি ঘটনায়ই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা গ্যাস এসব বিস্ফোরণের কারণ। সেক্ষেত্রে এরকম আরও কত ভবনে গ্যাস জমে আছে এবং সেগুলো কতটা ঝুঁকি বহন করছে, এ প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। ফলে মানুষের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৭ জুন রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস এলাকার একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় ১২ ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
ওই বিস্ফোরণের কারণও জমে থাকা গ্যাস বলে ধারণা। গ্যাস থেকে দুর্ঘটনার ঘটনা দেশে নতুন নয়। কয়েক বছর আগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি মসজিদে গ্যাসজনিত বিস্ফোরণে ৩০ জনেরও বেশি মুসল্লির মৃত্যু হয়। জানা যায়, ওই মসজিদ এলাকায় তিতাস গ্যাসের লিকেজ ছিল এবং এ সম্পর্কে একাধিকবার তিতাস কর্তৃপক্ষকে জানানোও হয়েছিল। তারপরও কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা মনে করি, যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ, এর ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট সবারই সতর্ক হওয়া উচিত। রাজধানীর মাটির নিচ দিয়ে নেওয়া হয়েছে অসংখ্য গ্যাসলাইন।
এসব লাইনের কোথাও লিক রয়েছে কি না, কোনো ভবনের কোনো কক্ষে গ্যাস জমা হচ্ছে কি না-এসবের নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থার পাশাপাশি ভবনের বাসিন্দা বা কর্মচারীদেরও দায়িত্ব রয়েছে। পরপর কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনা দেখিয়ে দিল আমাদের চারপাশে কীভাবে ওঁৎ পেতে আছে মৃত্যু। উদ্বেগের বিষয় হলো, রাজধানীসহ সারা দেশে এরকম বহু ভবনই রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে।
বিভিন্ন ভবনে অগ্নিকাণ্ড, পুরান ঢাকায় রাসায়নিক বিস্ফোরণ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিস্ফোরণ প্রভৃতি ঘটনা এর প্রমাণ। কিন্তু এত সমস্যার পরও এর সমাধানের উদ্যোগ না নেওয়া এবং দেখেশুনে চোখ বুজে থাকা যেন আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে এবং সবাই যেন দুর্ঘটনাকে নিয়তি হিসাবে মেনে নিয়েছি। অন্যথায় নিমতলি ও চুড়িহাট্টার বিস্ফোরণের এত বছর পেরিয়ে গেলেও পুরান ঢাকা থেকে কেন রাসায়নিকের গুদাম ও ব্যবসা সরানো হয়নি? বড় ভবনগুলোয় অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার বিষয়ে এখনো বেশির ভাগ মানুষ উদাসীন; এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও চুপচাপ।
এ নির্লিপ্ততার অবসান ঘটানোর সময় এসেছে। একের পর এক এরকম ঘটনায় প্রাণহানি মোটেও কাম্য নয়। আমরা আশা করি, ঘটনাগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তীতে যেন আর এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নাগরিক ডেস্ক
০৯ মার্চ, ২০২৩, 6:28 PM
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে একটি বেসরকারি অক্সিজেন প্ল্যান্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের রেশ কাটতে না কাটতেই রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় একটি তিনতলা ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার একদিন পরেই গুলিস্তানের পাশে সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ফের একটি ভবনধসের ঘটনা ঘটে, যা আরও ভয়াবহ ও মর্মান্তিক।
এখন পর্যন্ত এসব ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসাবেই দেখা হচ্ছে, যদিও পরপর তিনটি বিস্ফোরণের ঘটনায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের দাবি রাখে। সায়েন্সল্যাব ও সিদ্দিকবাজার-দুটি ঘটনায়ই প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা গ্যাস এসব বিস্ফোরণের কারণ। সেক্ষেত্রে এরকম আরও কত ভবনে গ্যাস জমে আছে এবং সেগুলো কতটা ঝুঁকি বহন করছে, এ প্রশ্ন জাগা স্বাভাবিক। ফলে মানুষের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ২৭ জুন রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস এলাকার একটি ভবনে বিস্ফোরণের ঘটনায় ১২ ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
ওই বিস্ফোরণের কারণও জমে থাকা গ্যাস বলে ধারণা। গ্যাস থেকে দুর্ঘটনার ঘটনা দেশে নতুন নয়। কয়েক বছর আগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় একটি মসজিদে গ্যাসজনিত বিস্ফোরণে ৩০ জনেরও বেশি মুসল্লির মৃত্যু হয়। জানা যায়, ওই মসজিদ এলাকায় তিতাস গ্যাসের লিকেজ ছিল এবং এ সম্পর্কে একাধিকবার তিতাস কর্তৃপক্ষকে জানানোও হয়েছিল। তারপরও কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা মনে করি, যে কোনো স্থাপনা নির্মাণ, এর ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট সবারই সতর্ক হওয়া উচিত। রাজধানীর মাটির নিচ দিয়ে নেওয়া হয়েছে অসংখ্য গ্যাসলাইন।
এসব লাইনের কোথাও লিক রয়েছে কি না, কোনো ভবনের কোনো কক্ষে গ্যাস জমা হচ্ছে কি না-এসবের নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষা হওয়া উচিত। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সেবা সংস্থার পাশাপাশি ভবনের বাসিন্দা বা কর্মচারীদেরও দায়িত্ব রয়েছে। পরপর কয়েকটি বিস্ফোরণের ঘটনা দেখিয়ে দিল আমাদের চারপাশে কীভাবে ওঁৎ পেতে আছে মৃত্যু। উদ্বেগের বিষয় হলো, রাজধানীসহ সারা দেশে এরকম বহু ভবনই রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে।
বিভিন্ন ভবনে অগ্নিকাণ্ড, পুরান ঢাকায় রাসায়নিক বিস্ফোরণ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিস্ফোরণ প্রভৃতি ঘটনা এর প্রমাণ। কিন্তু এত সমস্যার পরও এর সমাধানের উদ্যোগ না নেওয়া এবং দেখেশুনে চোখ বুজে থাকা যেন আমাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে এবং সবাই যেন দুর্ঘটনাকে নিয়তি হিসাবে মেনে নিয়েছি। অন্যথায় নিমতলি ও চুড়িহাট্টার বিস্ফোরণের এত বছর পেরিয়ে গেলেও পুরান ঢাকা থেকে কেন রাসায়নিকের গুদাম ও ব্যবসা সরানো হয়নি? বড় ভবনগুলোয় অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার বিষয়ে এখনো বেশির ভাগ মানুষ উদাসীন; এমনকি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও চুপচাপ।
এ নির্লিপ্ততার অবসান ঘটানোর সময় এসেছে। একের পর এক এরকম ঘটনায় প্রাণহানি মোটেও কাম্য নয়। আমরা আশা করি, ঘটনাগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তীতে যেন আর এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।