অবৈধ পলিথিন উৎপাদন বন্ধ করতে হবে
নাগরিক ডেস্ক
০৬ মার্চ, ২০২৩, 11:06 AM
অবৈধ পলিথিন উৎপাদন বন্ধ করতে হবে
দেড় যুগ আগে পরিবেশের জন্য চরম ক্ষতিকর উপাদান হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় পলিথিন ব্যাগ। সেই সঙ্গে আইন প্রণয়ন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এর উৎপাদন, বিপণন এবং পরিবহন। কিন্তু পরিবেশের জন্য চরম ক্ষতিকর হিসেবে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে আইন প্রয়োগসহ নানান কার্যক্রম বিদ্যমান থাকলেও মিলছে না কার্যকরী কোনো সমাধান।
২০০২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে রাজধানীতে এবং পরে ১ মার্চ থেকে সারা দেশে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এজন্য পরিবেশ আইন ১৯৯৫ সংসদে সংশোধনও করা হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ সংশোধন করে, পলিথিন উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুদ, বিতরণ ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিবহন বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগের উৎপাদন, ব্যবহার, বিপণন ও বাজারজাতকরণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এই ব্যাগের অবাধ ব্যবহার বন্ধ হয়নি। এমন এলাকা পাওয়া দুষ্কর, যেখানে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার নেই। সহজলভ্য ও ব্যবহারে সুবিধা, বিধায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই এটি ব্যবহার করতে অভ্যস্ত। অভিজাত রেস্টুরেন্ট, মুদির দোকান, কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে ফুটপাতের প্রায় সব দোকানের পণ্য বহনে ব্যবহৃত হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ।
সর্বত্রই নিষিদ্ধ পলিথিনের ছোট-বড় ব্যাগের ছড়াছড়ি। এই নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদনও হচ্ছে আমাদের দেশে। এক প্রতিবেদন থেকে দেখা যায় দেশের ৩০টি জেলা শহরে উৎপাদন হচ্ছে এই নিষিদ্ধ পলিথিন। একটু সচেতন হলেই আমরা কমাতে পারি পলিথিনের ব্যবহার। পলিথিনে খাবার গ্রহণের ফলে মানবশরীরে বাসা বাঁধছে ক্যানসারের মতো মরণঘাতী রোগের। পলিথিনে গরম খাবার ঢালার সঙ্গে সঙ্গে বিসফেনল- এ নামে একধরনের বিষাক্ত কেমিকেলের সৃষ্টি হয়।
বিসফেনল- এ হরমোনকে বাধা দেয়,এর কারণে বিকল হতে পারে লিভার ও কিডনি। পলিথিন ব্যাগ বহন করা খাবার যদি কোনো গর্ভবতী গ্রহণ করেন, তা হলে বিসফেনল-এ গর্ভবতীর রক্তের মাধ্যমে ভ্রণ যায়। ফলে ভরুন নষ্ট হতে পারে, দেখা দিতে পারে বন্ধ্যত্ব এবং সদ্যোজাত শিশুও বিকলাঙ্গ হতে পারে। ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্যও পলিথিন ব্যবহার করা হয়।
মাটিতে এটি আটকে পানি ও প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান চলাচলে বাধা দেয়। মাটিতে থাকা অণুজীবগুলোর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে না, জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পায় এবং শস্যের ফলন কম হয়। ডাস্টবিনে ফেলা পলিথিন বৃষ্টির পানির সঙ্গে নালায় ঢুকে পড়ে, যে কারণে হালকা বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পলিথিন পোড়ালে কার্বন মনো-অক্সাইড উৎপন্ন হয়ে বাতাস দূষিত করে। পলিথিন বর্জনের প্রথম পদক্ষেপই হচ্ছে পাটের ব্যবহার নিশ্চিত করা। দেশে পলিথিন বা প্লাস্টিক ব্যাগের বিকল্প হিসেবে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
যেহেতু এতদিন নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন হয়ে আসছে, সেহেতু হঠাৎ করে এটি বন্ধ করতে কিছুটা বেগ পেতে হবে। তাই সাধারণ পলিথিনের পরির্বতে বায়োডিগ্রেবল পলিথিনের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এ ছাড়া পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করতে সারাদেশে ক্যাম্পেইন, মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট বিতরণ করতে হবে।
পরিবেশ ক্ষতির সম্মুখীন হলে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। তাই নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।
নাগরিক ডেস্ক
০৬ মার্চ, ২০২৩, 11:06 AM
দেড় যুগ আগে পরিবেশের জন্য চরম ক্ষতিকর উপাদান হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় পলিথিন ব্যাগ। সেই সঙ্গে আইন প্রণয়ন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এর উৎপাদন, বিপণন এবং পরিবহন। কিন্তু পরিবেশের জন্য চরম ক্ষতিকর হিসেবে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার বন্ধে আইন প্রয়োগসহ নানান কার্যক্রম বিদ্যমান থাকলেও মিলছে না কার্যকরী কোনো সমাধান।
২০০২ সালের ১ জানুয়ারি থেকে রাজধানীতে এবং পরে ১ মার্চ থেকে সারা দেশে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। এজন্য পরিবেশ আইন ১৯৯৫ সংসদে সংশোধনও করা হয়। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ সংশোধন করে, পলিথিন উৎপাদন, আমদানি, বাজারজাতকরণ, বিক্রয়, বিক্রয়ের জন্য প্রদর্শন, মজুদ, বিতরণ ও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে পরিবহন বা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পলিথিন ব্যাগের উৎপাদন, ব্যবহার, বিপণন ও বাজারজাতকরণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এই ব্যাগের অবাধ ব্যবহার বন্ধ হয়নি। এমন এলাকা পাওয়া দুষ্কর, যেখানে পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার নেই। সহজলভ্য ও ব্যবহারে সুবিধা, বিধায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই এটি ব্যবহার করতে অভ্যস্ত। অভিজাত রেস্টুরেন্ট, মুদির দোকান, কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে ফুটপাতের প্রায় সব দোকানের পণ্য বহনে ব্যবহৃত হচ্ছে পলিথিন ব্যাগ।
সর্বত্রই নিষিদ্ধ পলিথিনের ছোট-বড় ব্যাগের ছড়াছড়ি। এই নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদনও হচ্ছে আমাদের দেশে। এক প্রতিবেদন থেকে দেখা যায় দেশের ৩০টি জেলা শহরে উৎপাদন হচ্ছে এই নিষিদ্ধ পলিথিন। একটু সচেতন হলেই আমরা কমাতে পারি পলিথিনের ব্যবহার। পলিথিনে খাবার গ্রহণের ফলে মানবশরীরে বাসা বাঁধছে ক্যানসারের মতো মরণঘাতী রোগের। পলিথিনে গরম খাবার ঢালার সঙ্গে সঙ্গে বিসফেনল- এ নামে একধরনের বিষাক্ত কেমিকেলের সৃষ্টি হয়।
বিসফেনল- এ হরমোনকে বাধা দেয়,এর কারণে বিকল হতে পারে লিভার ও কিডনি। পলিথিন ব্যাগ বহন করা খাবার যদি কোনো গর্ভবতী গ্রহণ করেন, তা হলে বিসফেনল-এ গর্ভবতীর রক্তের মাধ্যমে ভ্রণ যায়। ফলে ভরুন নষ্ট হতে পারে, দেখা দিতে পারে বন্ধ্যত্ব এবং সদ্যোজাত শিশুও বিকলাঙ্গ হতে পারে। ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্যও পলিথিন ব্যবহার করা হয়।
মাটিতে এটি আটকে পানি ও প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদান চলাচলে বাধা দেয়। মাটিতে থাকা অণুজীবগুলোর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে না, জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পায় এবং শস্যের ফলন কম হয়। ডাস্টবিনে ফেলা পলিথিন বৃষ্টির পানির সঙ্গে নালায় ঢুকে পড়ে, যে কারণে হালকা বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পলিথিন পোড়ালে কার্বন মনো-অক্সাইড উৎপন্ন হয়ে বাতাস দূষিত করে। পলিথিন বর্জনের প্রথম পদক্ষেপই হচ্ছে পাটের ব্যবহার নিশ্চিত করা। দেশে পলিথিন বা প্লাস্টিক ব্যাগের বিকল্প হিসেবে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে।
যেহেতু এতদিন নিষিদ্ধ পলিথিনের উৎপাদন হয়ে আসছে, সেহেতু হঠাৎ করে এটি বন্ধ করতে কিছুটা বেগ পেতে হবে। তাই সাধারণ পলিথিনের পরির্বতে বায়োডিগ্রেবল পলিথিনের ব্যবহার বাড়াতে হবে। এ ছাড়া পলিথিন ব্যবহার বন্ধ করতে সারাদেশে ক্যাম্পেইন, মাইকিং, পোস্টার, লিফলেট বিতরণ করতে হবে।
পরিবেশ ক্ষতির সম্মুখীন হলে আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে। তাই নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন ও ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।