ক্যাপ্টেন মাহমুদউল্লাহর বিদায় আসন্ন

#
news image

মাহেন্দ্র সিং ধোনি চাইলে আরও কিছুদিন জাতীয় দলে খেলতে পারতেন। এউইন মরগানের এখনই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে দাঁড়ি টেনে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল কি? ভক্তরা এভাবে ভেবে থাকলেও ধোনি বা মরগানের চিন্তা ছিল উল্টো দিক থেকে। দুই ক্রিকেট পরাশক্তির দুই সাবেক অধিনায়ক হয়তো দলের জন্য বোঝা হতে চাননি। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এই বোধ একেবারেই অনুপস্থিত। 
বরং এদেশে অনেক ক্রিকেটারকেই দেখা যায় অতীত পারফরম্যান্সের জোরে জায়গা আঁকড়ে ধরে থাকার চেষ্টা করেন। ২২ বছরে টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে না উঠলেও জাতীয় দলে আধিপত্য বিস্তারের সংস্কৃতি ঠিকই তৈরি হয়েছে। যে কারণে কথিত পঞ্চপাণ্ডবের কেউ কেউ ধারাবাহিক ভালো না খেললেও জাতীয় দলে সুযোগ দিতে হয় বিসিবিকে। ২০২১ সালের টি২০ বিশ্বকাপে ভরাডুবির পরও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যেমন আছেন বহাল তবিয়তে।
বিশ্বকাপে খারাপ খেলায় বাদ পড়ার পরের সিরিজেই তাই ফিরে আসেন মুশফিকুর রহিম। টি২০ ছেড়ে দেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করার পরও নাকি বিসিবি থেকে ওপেনিং ব্যাটারকে অনুরোধ করা হয় ফেরার জন্য। অভিযোগ আছে বাংলাদেশ দলে ব্যক্তির পূজা হয়। সত্যিই এমন কিছু হলে টি২০ ক্রিকেটে দল হিসেবে পারফরম্যান্স করা কঠিন।
হয়তো এ কারণেই ২০২১ সালের টি২০ বিশ্বকাপ থেকেই ছন্দহীন দল বাংলাদেশ। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সমালোচনা হচ্ছে ম্যাচের পর ম্যাচে খারাপ ব্যাটিং করেও নেতৃত্বে টিকে যাওয়ায়। ক্রিকেটপাড়ায় ফিসফিসানি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় জাতীয় দল নির্বাচকরাও তাঁর নামের ওপর কলম চালানোর সাহস দেখাতে পারছেন না।
টি২০-তে মাহমুদউল্লাহর সেরা সময় গেছে ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। এরপর থেকে ব্যর্থতার সোপান বেয়ে নেমে গেছেন অনেকটাই। ২০২১ সালের পারফরম্যান্স দেখলে যে কারও মনে হতে পারে অধিনায়কের ব্যাটিং ‘ক্ষয়রোগে’ আক্রান্ত! অনেকদিন ধরেই তো ফিল্ডার মাহমুদউল্লাহকে লুকানোর জায়গা নেই। একদিন আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচে অধিনায়কের পাশ দিয়ে বল বাউন্ডারিতে যেতে দেখেছেন দর্শক।
জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটারদের আড্ডায় মাহমুদউল্লাহ থাকেন সমালোচনার ছুরির ফলায়। অথচ সম্পর্কের দড়িতে টান পড়ার ভয়ে কেউই প্রকাশ্যে সমালোচনা করতে রাজি হন না। নাম গোপন রাখার শর্তে সোমবার জাতীয় দলের সাবেক এক অধিনায়ক বললেন, 'মাহমুদউল্লাহ খেলছেন অধিনায়ক কোটায়। অধিনায়ক না হলে একাদশে জায়গা হতো না তাঁর। আমার মনে হয় ব্যক্তি পূজা এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। কে কবে কত ভালো খেলেছে, তা দিয়ে জাতীয় দলে বিবেচনা করা উচিত নয়।’
মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং পজিশন পাঁচ-ছয়। টি২০ ক্রিকেটে এই পজিশনের ব্যাটারদের হতে হয় খুনে মেজাজের। যাঁদের ব্যাটিংয়ের ধর্মই হবে ১০ বলে ২০ রান করা। দলের জয় নিশ্চিত করতে ফিনিশারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া। যেখানে আদর্শ স্ট্রাইক রেট ১৭০ থেকে ১৮০। অথচ শেষ ৩০ ইনিংসে অধিনায়কের স্ট্রাইক রেট কাঙ্ক্ষিত মানের ধারার কাছে ছিল কি? তবে টি২০ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ওমান ও পিএনজির সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর স্ট্রাইক রেট ভালো ছিল (১৭০.০০ ও ১৭৮.৫৭)! 
অধিনায়কের নিম্নমুখী পারফরম্যান্স নিয়ে সোমবার জাতীয় দল নির্বাচকদের কাছে জানতে চাওয়া হলে কেউই প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি হননি। কেবল আফসোস করে একজন বললেন, ‘সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না অধিনায়ক। লম্বা সময় ব্যাটিং ভালো করছে না।’ ১০ ইনিংসে রান করতে না পারায় নেতৃত্ব হারাতে হয়েছে মুমিনুল হককে। উইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের দল থেকেও বাদ পড়তে হয়। তবে কি ক্ষত সারাতে টেস্টের মতো টি২০ দলেও সংস্কারের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে?

প্রভাতী খবর ডেস্ক

০৬ জুলাই, ২০২২,  12:55 AM

news image

মাহেন্দ্র সিং ধোনি চাইলে আরও কিছুদিন জাতীয় দলে খেলতে পারতেন। এউইন মরগানের এখনই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে দাঁড়ি টেনে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল কি? ভক্তরা এভাবে ভেবে থাকলেও ধোনি বা মরগানের চিন্তা ছিল উল্টো দিক থেকে। দুই ক্রিকেট পরাশক্তির দুই সাবেক অধিনায়ক হয়তো দলের জন্য বোঝা হতে চাননি। বাংলাদেশের ক্রিকেটে এই বোধ একেবারেই অনুপস্থিত। 
বরং এদেশে অনেক ক্রিকেটারকেই দেখা যায় অতীত পারফরম্যান্সের জোরে জায়গা আঁকড়ে ধরে থাকার চেষ্টা করেন। ২২ বছরে টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে না উঠলেও জাতীয় দলে আধিপত্য বিস্তারের সংস্কৃতি ঠিকই তৈরি হয়েছে। যে কারণে কথিত পঞ্চপাণ্ডবের কেউ কেউ ধারাবাহিক ভালো না খেললেও জাতীয় দলে সুযোগ দিতে হয় বিসিবিকে। ২০২১ সালের টি২০ বিশ্বকাপে ভরাডুবির পরও অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যেমন আছেন বহাল তবিয়তে।
বিশ্বকাপে খারাপ খেলায় বাদ পড়ার পরের সিরিজেই তাই ফিরে আসেন মুশফিকুর রহিম। টি২০ ছেড়ে দেওয়ার অভিপ্রায় ব্যক্ত করার পরও নাকি বিসিবি থেকে ওপেনিং ব্যাটারকে অনুরোধ করা হয় ফেরার জন্য। অভিযোগ আছে বাংলাদেশ দলে ব্যক্তির পূজা হয়। সত্যিই এমন কিছু হলে টি২০ ক্রিকেটে দল হিসেবে পারফরম্যান্স করা কঠিন।
হয়তো এ কারণেই ২০২১ সালের টি২০ বিশ্বকাপ থেকেই ছন্দহীন দল বাংলাদেশ। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর সমালোচনা হচ্ছে ম্যাচের পর ম্যাচে খারাপ ব্যাটিং করেও নেতৃত্বে টিকে যাওয়ায়। ক্রিকেটপাড়ায় ফিসফিসানি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় জাতীয় দল নির্বাচকরাও তাঁর নামের ওপর কলম চালানোর সাহস দেখাতে পারছেন না।
টি২০-তে মাহমুদউল্লাহর সেরা সময় গেছে ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। এরপর থেকে ব্যর্থতার সোপান বেয়ে নেমে গেছেন অনেকটাই। ২০২১ সালের পারফরম্যান্স দেখলে যে কারও মনে হতে পারে অধিনায়কের ব্যাটিং ‘ক্ষয়রোগে’ আক্রান্ত! অনেকদিন ধরেই তো ফিল্ডার মাহমুদউল্লাহকে লুকানোর জায়গা নেই। একদিন আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচে অধিনায়কের পাশ দিয়ে বল বাউন্ডারিতে যেতে দেখেছেন দর্শক।
জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটারদের আড্ডায় মাহমুদউল্লাহ থাকেন সমালোচনার ছুরির ফলায়। অথচ সম্পর্কের দড়িতে টান পড়ার ভয়ে কেউই প্রকাশ্যে সমালোচনা করতে রাজি হন না। নাম গোপন রাখার শর্তে সোমবার জাতীয় দলের সাবেক এক অধিনায়ক বললেন, 'মাহমুদউল্লাহ খেলছেন অধিনায়ক কোটায়। অধিনায়ক না হলে একাদশে জায়গা হতো না তাঁর। আমার মনে হয় ব্যক্তি পূজা এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। কে কবে কত ভালো খেলেছে, তা দিয়ে জাতীয় দলে বিবেচনা করা উচিত নয়।’
মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং পজিশন পাঁচ-ছয়। টি২০ ক্রিকেটে এই পজিশনের ব্যাটারদের হতে হয় খুনে মেজাজের। যাঁদের ব্যাটিংয়ের ধর্মই হবে ১০ বলে ২০ রান করা। দলের জয় নিশ্চিত করতে ফিনিশারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া। যেখানে আদর্শ স্ট্রাইক রেট ১৭০ থেকে ১৮০। অথচ শেষ ৩০ ইনিংসে অধিনায়কের স্ট্রাইক রেট কাঙ্ক্ষিত মানের ধারার কাছে ছিল কি? তবে টি২০ বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে ওমান ও পিএনজির সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর স্ট্রাইক রেট ভালো ছিল (১৭০.০০ ও ১৭৮.৫৭)! 
অধিনায়কের নিম্নমুখী পারফরম্যান্স নিয়ে সোমবার জাতীয় দল নির্বাচকদের কাছে জানতে চাওয়া হলে কেউই প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে রাজি হননি। কেবল আফসোস করে একজন বললেন, ‘সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না অধিনায়ক। লম্বা সময় ব্যাটিং ভালো করছে না।’ ১০ ইনিংসে রান করতে না পারায় নেতৃত্ব হারাতে হয়েছে মুমিনুল হককে। উইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের দল থেকেও বাদ পড়তে হয়। তবে কি ক্ষত সারাতে টেস্টের মতো টি২০ দলেও সংস্কারের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে?