গল টেস্ট ড্র, শান্তর জোড়া সেঞ্চুরিতে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ

#
news image

দীর্ঘ ১২ বছর পর গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফের দেখা গেল ড্র। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টটি শেষ হলো নিষ্প্রাণ সমতায়। ম্যাচে একদিকে যেমন দেখা মিলেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত ব্যাটিং পারফরম্যান্সে গড়া ইতিহাস, অন্যদিকে তেমনই প্রশ্ন উঠেছে টিম ম্যানেজমেন্টের কৌশল এবং ঘোষণার সময় নিয়ে।

শনিবার (২১ জুন) গলে টেস্টের পঞ্চম দিনে বৃষ্টির বাধা, ধীরগতির ব্যাটিং এবং সময়ক্ষেপণের কৌশলে শেষ পর্যন্ত জয় পেল না কেউ। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৬ উইকেটে ২৮৫ রানে। জবাবে শ্রীলঙ্কা ৩২ ওভার ব্যাট করে ৪ উইকেটে ৭২ রান তোলার পর ড্র মেনে নেয় দুই দল।

দ্বিতীয় ইনিংসে শান্ত ১৯০ বলে পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি। এরপর মাত্র ৯ বলে করেন অতিরিক্ত ২৫ রান, যার মধ্যে ছিল তিনটি ছক্কা। প্রথম ইনিংসেও করেছিলেন ১৪৮ রান। দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করে গড়েছেন একাধিক রেকর্ড—

১. বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন ব্যাটার এক টেস্টে দুই সেঞ্চুরি করলেন একাধিকবার।

২. অধিনায়ক হিসেবে এক টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন বিশ্ব ক্রিকেটের মাত্র ১৬তম খেলোয়াড় হিসেবে।

তবে এই ধীরগতির ব্যাটিং—বিশেষ করে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে শান্তর জুটি—উঠিয়েছে প্রশ্ন। শনিবার দিনের শুরুতেই ৩ উইকেটে ১৭৭ রানে খেলতে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু বৃষ্টির আগ পর্যন্ত ১৯ ওভারে আসে মাত্র ৬০ রান, যার মধ্যে ছিল মাত্র পাঁচটি বাউন্ডারি।

দুপুরে বৃষ্টির পর যখন ৫০ ওভার খেলা বাকি, তখনও আবার ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। এমন সিদ্ধান্তে বিস্মিত অনেকেই। দ্রুত উইকেট হারিয়ে পড়ে যায় চাপ। তবুও শান্ত সেঞ্চুরি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত ঘোষণা না আসা, জয় পাওয়ার বাস্তব সুযোগ নষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

লক্ষ্য ছিল ২৯৬ রান। শুরুতে বাউন্ডারির জোয়ার থাকলেও শ্রীলঙ্কা দ্রুত পড়ে যায় স্পিনের ফাঁদে। তাইজুল ইসলাম ১৬ ওভারে ২৩ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। অফ স্পিনার নাঈম হাসান নেন ১ উইকেট।

ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসে মাত্র ৮ রান করে বিদায় নেন অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। চমৎকার রিফ্লেক্সে সিলি পয়েন্টে ক্যাচ নেন মুমিনুল হক। অভিষিক্ত লাহিরু উদারা আউট হন ৯ রানে, আর দিনেশ চান্ডিমাল করেন মাত্র ৬।

শেষদিকে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস ব্যাট হাতে দলের হার এড়ান।

গল স্টেডিয়ামে ২০১৩ সালের পর এই প্রথম ড্র হলো কোনো টেস্ট। মাঝখানের ২৬টি ম্যাচেই ফল নির্ধারিত হয়েছিল। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র (২০২৫-২৭)-এ এ ম্যাচ ড্র হওয়ায় উভয় দল পেয়েছে সমান ৪ পয়েন্ট।

সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে বুধবার (২৫ জুন) কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৯৫

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৪৮৫

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৮৭ ওভারে ২৮৫/৬ ডিক্লেয়ারে (শান্ত ১২৫*, মুশফিক ৪৯)

শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস (লক্ষ্য ২৯৬): ৩২ ওভারে ৭২/৪ (তাইজুল ৩ উইকেট, নাঈম ১ উইকেট)

ফল: ম্যাচ ড্র

সিরিজ: দুই ম্যাচ সিরিজে ০–০ সমতা

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাজমুল হোসেন শান্ত

স্পোর্টস ডেস্ক

২১ জুন, ২০২৫,  8:06 PM

news image

দীর্ঘ ১২ বছর পর গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফের দেখা গেল ড্র। বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টটি শেষ হলো নিষ্প্রাণ সমতায়। ম্যাচে একদিকে যেমন দেখা মিলেছে নাজমুল হোসেন শান্তর দুর্দান্ত ব্যাটিং পারফরম্যান্সে গড়া ইতিহাস, অন্যদিকে তেমনই প্রশ্ন উঠেছে টিম ম্যানেজমেন্টের কৌশল এবং ঘোষণার সময় নিয়ে।

শনিবার (২১ জুন) গলে টেস্টের পঞ্চম দিনে বৃষ্টির বাধা, ধীরগতির ব্যাটিং এবং সময়ক্ষেপণের কৌশলে শেষ পর্যন্ত জয় পেল না কেউ। বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ৬ উইকেটে ২৮৫ রানে। জবাবে শ্রীলঙ্কা ৩২ ওভার ব্যাট করে ৪ উইকেটে ৭২ রান তোলার পর ড্র মেনে নেয় দুই দল।

দ্বিতীয় ইনিংসে শান্ত ১৯০ বলে পূর্ণ করেন সেঞ্চুরি। এরপর মাত্র ৯ বলে করেন অতিরিক্ত ২৫ রান, যার মধ্যে ছিল তিনটি ছক্কা। প্রথম ইনিংসেও করেছিলেন ১৪৮ রান। দুই ইনিংসে সেঞ্চুরি করে গড়েছেন একাধিক রেকর্ড—

১. বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন ব্যাটার এক টেস্টে দুই সেঞ্চুরি করলেন একাধিকবার।

২. অধিনায়ক হিসেবে এক টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন বিশ্ব ক্রিকেটের মাত্র ১৬তম খেলোয়াড় হিসেবে।

তবে এই ধীরগতির ব্যাটিং—বিশেষ করে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে শান্তর জুটি—উঠিয়েছে প্রশ্ন। শনিবার দিনের শুরুতেই ৩ উইকেটে ১৭৭ রানে খেলতে নামে বাংলাদেশ। কিন্তু বৃষ্টির আগ পর্যন্ত ১৯ ওভারে আসে মাত্র ৬০ রান, যার মধ্যে ছিল মাত্র পাঁচটি বাউন্ডারি।

দুপুরে বৃষ্টির পর যখন ৫০ ওভার খেলা বাকি, তখনও আবার ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। এমন সিদ্ধান্তে বিস্মিত অনেকেই। দ্রুত উইকেট হারিয়ে পড়ে যায় চাপ। তবুও শান্ত সেঞ্চুরি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত ঘোষণা না আসা, জয় পাওয়ার বাস্তব সুযোগ নষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

লক্ষ্য ছিল ২৯৬ রান। শুরুতে বাউন্ডারির জোয়ার থাকলেও শ্রীলঙ্কা দ্রুত পড়ে যায় স্পিনের ফাঁদে। তাইজুল ইসলাম ১৬ ওভারে ২৩ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। অফ স্পিনার নাঈম হাসান নেন ১ উইকেট।

ক্যারিয়ারের শেষ ইনিংসে মাত্র ৮ রান করে বিদায় নেন অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। চমৎকার রিফ্লেক্সে সিলি পয়েন্টে ক্যাচ নেন মুমিনুল হক। অভিষিক্ত লাহিরু উদারা আউট হন ৯ রানে, আর দিনেশ চান্ডিমাল করেন মাত্র ৬।

শেষদিকে ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা ও কামিন্দু মেন্ডিস ব্যাট হাতে দলের হার এড়ান।

গল স্টেডিয়ামে ২০১৩ সালের পর এই প্রথম ড্র হলো কোনো টেস্ট। মাঝখানের ২৬টি ম্যাচেই ফল নির্ধারিত হয়েছিল। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র (২০২৫-২৭)-এ এ ম্যাচ ড্র হওয়ায় উভয় দল পেয়েছে সমান ৪ পয়েন্ট।

সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট শুরু হবে বুধবার (২৫ জুন) কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব মাঠে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৪৯৫

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৪৮৫

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৮৭ ওভারে ২৮৫/৬ ডিক্লেয়ারে (শান্ত ১২৫*, মুশফিক ৪৯)

শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস (লক্ষ্য ২৯৬): ৩২ ওভারে ৭২/৪ (তাইজুল ৩ উইকেট, নাঈম ১ উইকেট)

ফল: ম্যাচ ড্র

সিরিজ: দুই ম্যাচ সিরিজে ০–০ সমতা

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নাজমুল হোসেন শান্ত