সুন্দরবনে বেপরোয়া হয়ে উঠছে দস্যুরা
নাগরিক অনলাইন ডেস্ক
২৯ নভেম্বর, ২০২৪, 11:01 PM
সুন্দরবনে বেপরোয়া হয়ে উঠছে দস্যুরা
সুন্দরবনে বেপরোয়া হয়ে উঠছে দস্যুরা। মূলত নজরদারির অভাবেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে বনজীবীদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তারা ধারালো অস্ত্র ও বন্দুক নিয়ে বনজীবীদের সব কেড়ে নিচ্ছে। বনের বিভিন্ন এলাকায় নতুন নতুন ডাকাত দল ঘোরাফেরা করছে। খুলনার কয়রা, দাকোপ ও সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলাজুড়ে বিস্তৃত পশ্চিম সুন্দরবনে বনদস্যুদের নতুন কয়েকটি দল তৎপরতা শুরু করেছে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জেল ভেঙে পালিয়ে আসা কয়েদি ও চিহ্নিত আসামিরাও সুন্দরবনে দস্যুতা শুরু করেছেন। দস্যুরা সুন্দরবনে মৎস্য আহরণে যাওয়া জেলেদের কাছ থেকে মাছ, টাকা, মুঠোফোনসহ সবকিছু কেড়ে নিচ্ছে। এমনকি বনে ঢুকলে জেলেদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের চাঁদাও দাবি করছে। আর অপহরণের ঘটনা ঘটলেও জেলেরা পরবর্তী ঝামেলা এড়াতে প্রকাশ করতে চান না। বন বিভাগ, পুলিশ ও বনজীবীদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সুন্দরবন অঞ্চলের ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন দস্যু ৪৬২টি অস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪টি গোলাবারুদসহ বিগত ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ধাপে ধাপে আত্মসমর্পণ করেছিলো। পরে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রাণবৈচিত্র্যে ভরা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু গত ৮ নভেম্বর সুন্দরবনের মালঞ্চ নদের সাতনলা দুনে এলাকায় মাছ ধরার সময় অস্ত্রধারী বনদস্যু বাহিনীর হাতে জিম্মি হন কয়রা উপজেলার আটজন জেলে। মুক্তিপণের দাবিতে দুই জেলেকে আটকে রেখে অন্যদের ছেড়ে দেন দস্যুরা। ওই জেলেদের জন্য চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। আর দস্যুদের মুক্তিপণের টাকা দিয়ে জেলেরা বাড়িতে ফিরে আসেন। মূলত বিগত কয়েক বছর পর সুন্দরবনে আবার ডাকাত নেমেছে।
এ নিয়ে ওই এলাকার বনজীবী ও জেলেরা খুবই চিন্তিত। তারা দস্যুতা দমনে প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেন। সূত্র জানায়, আবদুল্লাহ বাহিনী নামে ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল সুন্দরবনের দারগাং, আঠারোবেকী, কাচিকাটা, রায়মঙ্গল, কচুখালী, মাওন্দো নদীতে অবস্থান করছে। তারা জেলেদের ধরে নৌকায় যা পাচ্ছে তা তুলে নিচ্ছে। আবার বনে প্রবেশ করলে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে প্রবেশ করতে বলছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কালিঞ্চি গ্রামের আবদুল্লাহ তরফদার (৪২) নারী পাচার মামলায় কারাগারে ছিল।
৫ আগস্ট রাতে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার ভাঙচুর করা হলে সেখান থেকে পালিয়ে যায় আবদুল্লাহ। পরে সুন্দরবনে প্রবেশ করে বনদস্যুতায় নামে। আবদুল্লাহর সঙ্গে যারা রয়েছে তাদের অধিকাংশ কারাগার থেকে পালিয়েছে বলে জানা গেছে। তাছাড়া সম্প্রতি বনদস্যুদের হাত থেকে উদ্ধার হওয়া সুন্দরবনসংলগ্ন ভেটখালী গ্রামের এক জেলে জানান, ৩১ অক্টোবর সকালে সুন্দরবনের ধানুখালী এলাকা থেকে মঞ্জুর বাহিনী পরিচয়ে ডাকাতেরা তাকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা দিতে আপত্তি করায় আটকে রেখে বেদম মারপিট করা হয়। ৩ নভেম্বর সকালে বন বিভাগ অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
সূত্র জানায়, অতিসম্প্রতি সুন্দরবনের ঠাকুরবাড়ি ঘাট এলাকা থেকে আসাবুর বাহিনীর প্রধান আসাবুর সানাসহ (৪২) দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের সদস্যরা। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ২টি একনলা বন্দুক ও ৪টি গুলি উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে দাকোপ থানায় একটি অবৈধ অস্ত্র মামলা ও দুটি ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বিগত তিন মাস ধরে সুন্দরবনের পশ্চিমাংশে দস্যু আসাবুর বাহিনী তৎপর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যানুযায়ী, ২০০৩ সালে সুন্দরবনে মৃত্যুঞ্জয় বাহিনীর প্রধান আকাশ বাবুর সঙ্গে আসাবুর ডাকাতি শুরু করে। পরে সে বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে মিলে দস্যুতা করতো।
একপর্যায়ে অস্ত্রসহ কোস্টগার্ডের কাছে আটক হয়। ওই অস্ত্র মামলায় তিন বছর কারাভোগ করে ২০১৫ সালে জামিনে মুক্তি পায়। এদিকে সুন্দরবন সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি শেখ হারুন অর রশীদের মতে, নজরদারি ও তদারকির অভাবে সুন্দরবনে দস্যুদের উৎপাত বেড়েছে। এ ধরনের অপরাধ চলতে থাকলে একদিকে যেমন বনজীবীদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে, অন্যদিকে সুন্দরবন থেকে রাজস্ব আদায়ও কম হবে।
সুন্দরবনে পর্যটকের সংখ্যাও কমে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। বিপন্ন হবে বেঙ্গল টাইগার, বন্য প্রাণী আর প্রাণবৈচিত্র্য। এখনই দস্যুদের দমন না করলে কিছুদিনের মধ্যে অস্ত্র বাড়াবে তারা। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবশ্যই সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে হবে।
অন্যদিকে দস্যু বিরোধী অভিযানের বিষয়ে বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক এ জেড এম হাসানুর রহমান জানান, সুন্দরবনের তক্কাখালী এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালাতে গেলে দস্যুরা বন বিভাগের সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে বনকর্মীরাও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় প্রতিরোধের মুখে বনদস্যুরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে অপহৃত ১০ জেলে, ৩টি নৌকা, একটি সোলার প্যানেল ও একটি গুলি উদ্ধার করা হয়।
এ প্রসঙ্গে সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এম এ হাসান জানান, দস্যুমুক্ত সুন্দরবনে আবারো কিছু দুষ্কৃতকারী নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাইছে। তবে তারা বড় কোনো ডাকাত দল না। তাদের অতটা অস্ত্রও নেই।
মূলত তারা জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতিটি টহল ফাঁড়িকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত আরো জোরালো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
নাগরিক অনলাইন ডেস্ক
২৯ নভেম্বর, ২০২৪, 11:01 PM
সুন্দরবনে বেপরোয়া হয়ে উঠছে দস্যুরা। মূলত নজরদারির অভাবেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে বনজীবীদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে। তারা ধারালো অস্ত্র ও বন্দুক নিয়ে বনজীবীদের সব কেড়ে নিচ্ছে। বনের বিভিন্ন এলাকায় নতুন নতুন ডাকাত দল ঘোরাফেরা করছে। খুলনার কয়রা, দাকোপ ও সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলাজুড়ে বিস্তৃত পশ্চিম সুন্দরবনে বনদস্যুদের নতুন কয়েকটি দল তৎপরতা শুরু করেছে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জেল ভেঙে পালিয়ে আসা কয়েদি ও চিহ্নিত আসামিরাও সুন্দরবনে দস্যুতা শুরু করেছেন। দস্যুরা সুন্দরবনে মৎস্য আহরণে যাওয়া জেলেদের কাছ থেকে মাছ, টাকা, মুঠোফোনসহ সবকিছু কেড়ে নিচ্ছে। এমনকি বনে ঢুকলে জেলেদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের চাঁদাও দাবি করছে। আর অপহরণের ঘটনা ঘটলেও জেলেরা পরবর্তী ঝামেলা এড়াতে প্রকাশ করতে চান না। বন বিভাগ, পুলিশ ও বনজীবীদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সুন্দরবন অঞ্চলের ৩২টি দস্যু বাহিনীর ৩২৮ জন দস্যু ৪৬২টি অস্ত্র ও ২২ হাজার ৫০৪টি গোলাবারুদসহ বিগত ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ধাপে ধাপে আত্মসমর্পণ করেছিলো। পরে ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রাণবৈচিত্র্যে ভরা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু গত ৮ নভেম্বর সুন্দরবনের মালঞ্চ নদের সাতনলা দুনে এলাকায় মাছ ধরার সময় অস্ত্রধারী বনদস্যু বাহিনীর হাতে জিম্মি হন কয়রা উপজেলার আটজন জেলে। মুক্তিপণের দাবিতে দুই জেলেকে আটকে রেখে অন্যদের ছেড়ে দেন দস্যুরা। ওই জেলেদের জন্য চার লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। আর দস্যুদের মুক্তিপণের টাকা দিয়ে জেলেরা বাড়িতে ফিরে আসেন। মূলত বিগত কয়েক বছর পর সুন্দরবনে আবার ডাকাত নেমেছে।
এ নিয়ে ওই এলাকার বনজীবী ও জেলেরা খুবই চিন্তিত। তারা দস্যুতা দমনে প্রশাসনকে দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেন। সূত্র জানায়, আবদুল্লাহ বাহিনী নামে ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল সুন্দরবনের দারগাং, আঠারোবেকী, কাচিকাটা, রায়মঙ্গল, কচুখালী, মাওন্দো নদীতে অবস্থান করছে। তারা জেলেদের ধরে নৌকায় যা পাচ্ছে তা তুলে নিচ্ছে। আবার বনে প্রবেশ করলে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে প্রবেশ করতে বলছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কালিঞ্চি গ্রামের আবদুল্লাহ তরফদার (৪২) নারী পাচার মামলায় কারাগারে ছিল।
৫ আগস্ট রাতে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার ভাঙচুর করা হলে সেখান থেকে পালিয়ে যায় আবদুল্লাহ। পরে সুন্দরবনে প্রবেশ করে বনদস্যুতায় নামে। আবদুল্লাহর সঙ্গে যারা রয়েছে তাদের অধিকাংশ কারাগার থেকে পালিয়েছে বলে জানা গেছে। তাছাড়া সম্প্রতি বনদস্যুদের হাত থেকে উদ্ধার হওয়া সুন্দরবনসংলগ্ন ভেটখালী গ্রামের এক জেলে জানান, ৩১ অক্টোবর সকালে সুন্দরবনের ধানুখালী এলাকা থেকে মঞ্জুর বাহিনী পরিচয়ে ডাকাতেরা তাকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা দিতে আপত্তি করায় আটকে রেখে বেদম মারপিট করা হয়। ৩ নভেম্বর সকালে বন বিভাগ অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
সূত্র জানায়, অতিসম্প্রতি সুন্দরবনের ঠাকুরবাড়ি ঘাট এলাকা থেকে আসাবুর বাহিনীর প্রধান আসাবুর সানাসহ (৪২) দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের সদস্যরা। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে ২টি একনলা বন্দুক ও ৪টি গুলি উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে দাকোপ থানায় একটি অবৈধ অস্ত্র মামলা ও দুটি ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বিগত তিন মাস ধরে সুন্দরবনের পশ্চিমাংশে দস্যু আসাবুর বাহিনী তৎপর। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যানুযায়ী, ২০০৩ সালে সুন্দরবনে মৃত্যুঞ্জয় বাহিনীর প্রধান আকাশ বাবুর সঙ্গে আসাবুর ডাকাতি শুরু করে। পরে সে বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে মিলে দস্যুতা করতো।
একপর্যায়ে অস্ত্রসহ কোস্টগার্ডের কাছে আটক হয়। ওই অস্ত্র মামলায় তিন বছর কারাভোগ করে ২০১৫ সালে জামিনে মুক্তি পায়। এদিকে সুন্দরবন সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি শেখ হারুন অর রশীদের মতে, নজরদারি ও তদারকির অভাবে সুন্দরবনে দস্যুদের উৎপাত বেড়েছে। এ ধরনের অপরাধ চলতে থাকলে একদিকে যেমন বনজীবীদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে, অন্যদিকে সুন্দরবন থেকে রাজস্ব আদায়ও কম হবে।
সুন্দরবনে পর্যটকের সংখ্যাও কমে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। বিপন্ন হবে বেঙ্গল টাইগার, বন্য প্রাণী আর প্রাণবৈচিত্র্য। এখনই দস্যুদের দমন না করলে কিছুদিনের মধ্যে অস্ত্র বাড়াবে তারা। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবশ্যই সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে হবে।
অন্যদিকে দস্যু বিরোধী অভিযানের বিষয়ে বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক এ জেড এম হাসানুর রহমান জানান, সুন্দরবনের তক্কাখালী এলাকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালাতে গেলে দস্যুরা বন বিভাগের সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে বনকর্মীরাও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় প্রতিরোধের মুখে বনদস্যুরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে অপহৃত ১০ জেলে, ৩টি নৌকা, একটি সোলার প্যানেল ও একটি গুলি উদ্ধার করা হয়।
এ প্রসঙ্গে সুন্দরবন খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এম এ হাসান জানান, দস্যুমুক্ত সুন্দরবনে আবারো কিছু দুষ্কৃতকারী নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাইছে। তবে তারা বড় কোনো ডাকাত দল না। তাদের অতটা অস্ত্রও নেই।
মূলত তারা জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতিটি টহল ফাঁড়িকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। দ্রুত আরো জোরালো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।