ফুলবাড়ীতে শিবের মহা স্নানযাত্রায় ভক্তদের মিলন মেলা

#
news image

ঘড়ির কাটায় তখন ভোর ৪টা বেজে ১০ মিনিট। শিব মন্দির থেকে দলে দলে লোকজন এগিয়ে চলছে। সকলেই সমস্বরে বলছে ‘ভোলে বোম, বোম বোমথ। সবার হাতে একটি করে পানির পাত্র আর তার ভেতর রয়েছে ফুল ও বেল পাতা। আবার কেউ কেউ বাসের বাঙ্কুয়া ঘাড়ে নিয়ে সাথে দুটি কলস ঝুলিয়ে নিয়ে ‘ভোলে বোম, বোম বোমথ বলে হেটে চলছে। সোমবার (১৯ আগষ্ট) সকালে এই দৃশ্য দেখা যায়। পূঁজা, অর্চনার মধ্য দিয়ে প্রতি বছরের মত এবছরও দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতি শিবের মহা স্নানযাত্রা। পৌর শহরের কেন্দ্রীয় শিব মন্দিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক ভক্ত ও পূণ্যার্থীরা অংশ নেন।

মনোস্কামনা পূরণে চলে আরাধনা। এ মহা স্নানযাত্রাকে কেন্দ্র করে শিবমন্দির প্রাঙ্গণ কানায় কানায় ভরে উঠে। পরিণত হয় মিলন মেলায়।প্রথা অনুযায়ী শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার বা কোন কোন মতে শ্রাবণের যে কোন সোমবার অনুষ্ঠিত হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতি শিবের মহা স্নানযাত্রা। ফুলবাড়ী পৌর শহর থেকে উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী ঘাট পর্যন্ত। প্রতিবছরের মতো হয় মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহাস্নান যাত্রাকে কেন্দ্র করে ভক্তের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠে শহরের কেন্দ্রীয় শিব মন্দির প্রাঙ্গণে। সোমবার প্রত্যুষে খালি পায়ে হেঁটে ছোট যমুনা ও তিলাই নদীর মিলনস্থল উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী ঘাটে গিয়ে নদীতে স্নান শেষে সেই জল নিয়ে আবার পায়ে হেটে পৌর শহরের শিব মন্দিরে আসেন ভক্তরা। এরপর শিব মন্দিরের চারপাশে সাত পাক ঘুরে সেই পবিত্র জল দিয়ে স্নান করানো হয় কৈলাশপতি শিব মূর্তিকে। পূজা শেষে চলে প্রসাদ বিতরণ। এই মহা স্নানযাত্রাকে কেন্দ্র করে শিবমন্দির প্রাঙ্গণ কানায় কানায় ভরে যায়। 

নারী পূণ্যার্থীরা জানান, মনের বাসনা পূরণ করতে এবং সবার মঙ্গল কামনায় মহাস্নান যাত্রায় অংশ নিতে প্রতিবছর তারা এখানে আসেন। পূণ্যার্থী এই পথে যাওয়া একটি দলের মধ্যে হাঁটছিলেন অলক সরকার, পিন্টু পাল ও স্বপন দাশ। তারা বলেন, প্রতি বছরেই বাংলা শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবারে আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই পূজা হয়ে থাকে। এই পূজা হচ্ছে ‘মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহাস্নান যাত্রাথ। এই দিনের আগে রাতে আমরা শিব মন্দিরে আসি। এরপর খালি পায়ে হেঁটে উত্তর দিকে প্রবাহিত নদীর পানি নেয়ার জন্য উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী ঘাট ছোট যমুনা নদীতে যাই। সেখানে স্নান শেষে প্রবাহিত পানি নিয়ে ওই পানি আবার শিবের মাথায় ঢেলে এই পূঁজা করি আমরা।

ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় শিব মন্দিরের সভাপতি মনোজ কুমার মল্লিক ও সাধারণ সম্পাদক মনোজ কুমার সাহা জানান, প্রায় ৩০ বছরের অধিক সময় থেকে পালিত হয়ে আসছে মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহাস্নান যাত্রা। এই দিনে শুধু এই মন্দির থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী ঘাট যেখানে ছোট যমুনা ও তিলাই নদীর মিলনস্থলে গিয়ে নদীতে স্নান শেষে সেখান থেকে জল নিতে যায় তারা। তারা আরও জানান, দীর্ঘদিন থেকে ফুলবাড়ীতে এই মহা স্নানযাত্রা উৎসব হয়ে আসছে। মনোবাসনা পূরণ হয় এবং বিশ্বে যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় এই লক্ষ্যে মন্দির প্রাঙ্গণে বিতরণ করা হয় প্রসাদ। 

 

‌মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর

১৯ আগস্ট, ২০২৪,  7:29 PM

news image

ঘড়ির কাটায় তখন ভোর ৪টা বেজে ১০ মিনিট। শিব মন্দির থেকে দলে দলে লোকজন এগিয়ে চলছে। সকলেই সমস্বরে বলছে ‘ভোলে বোম, বোম বোমথ। সবার হাতে একটি করে পানির পাত্র আর তার ভেতর রয়েছে ফুল ও বেল পাতা। আবার কেউ কেউ বাসের বাঙ্কুয়া ঘাড়ে নিয়ে সাথে দুটি কলস ঝুলিয়ে নিয়ে ‘ভোলে বোম, বোম বোমথ বলে হেটে চলছে। সোমবার (১৯ আগষ্ট) সকালে এই দৃশ্য দেখা যায়। পূঁজা, অর্চনার মধ্য দিয়ে প্রতি বছরের মত এবছরও দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতি শিবের মহা স্নানযাত্রা। পৌর শহরের কেন্দ্রীয় শিব মন্দিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক ভক্ত ও পূণ্যার্থীরা অংশ নেন।

মনোস্কামনা পূরণে চলে আরাধনা। এ মহা স্নানযাত্রাকে কেন্দ্র করে শিবমন্দির প্রাঙ্গণ কানায় কানায় ভরে উঠে। পরিণত হয় মিলন মেলায়।প্রথা অনুযায়ী শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবার বা কোন কোন মতে শ্রাবণের যে কোন সোমবার অনুষ্ঠিত হয় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতি শিবের মহা স্নানযাত্রা। ফুলবাড়ী পৌর শহর থেকে উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী ঘাট পর্যন্ত। প্রতিবছরের মতো হয় মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহাস্নান যাত্রাকে কেন্দ্র করে ভক্তের আগমনে মুখরিত হয়ে উঠে শহরের কেন্দ্রীয় শিব মন্দির প্রাঙ্গণে। সোমবার প্রত্যুষে খালি পায়ে হেঁটে ছোট যমুনা ও তিলাই নদীর মিলনস্থল উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী ঘাটে গিয়ে নদীতে স্নান শেষে সেই জল নিয়ে আবার পায়ে হেটে পৌর শহরের শিব মন্দিরে আসেন ভক্তরা। এরপর শিব মন্দিরের চারপাশে সাত পাক ঘুরে সেই পবিত্র জল দিয়ে স্নান করানো হয় কৈলাশপতি শিব মূর্তিকে। পূজা শেষে চলে প্রসাদ বিতরণ। এই মহা স্নানযাত্রাকে কেন্দ্র করে শিবমন্দির প্রাঙ্গণ কানায় কানায় ভরে যায়। 

নারী পূণ্যার্থীরা জানান, মনের বাসনা পূরণ করতে এবং সবার মঙ্গল কামনায় মহাস্নান যাত্রায় অংশ নিতে প্রতিবছর তারা এখানে আসেন। পূণ্যার্থী এই পথে যাওয়া একটি দলের মধ্যে হাঁটছিলেন অলক সরকার, পিন্টু পাল ও স্বপন দাশ। তারা বলেন, প্রতি বছরেই বাংলা শ্রাবণ মাসের শেষ সোমবারে আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এই পূজা হয়ে থাকে। এই পূজা হচ্ছে ‘মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহাস্নান যাত্রাথ। এই দিনের আগে রাতে আমরা শিব মন্দিরে আসি। এরপর খালি পায়ে হেঁটে উত্তর দিকে প্রবাহিত নদীর পানি নেয়ার জন্য উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী ঘাট ছোট যমুনা নদীতে যাই। সেখানে স্নান শেষে প্রবাহিত পানি নিয়ে ওই পানি আবার শিবের মাথায় ঢেলে এই পূঁজা করি আমরা।

ফুলবাড়ী কেন্দ্রীয় শিব মন্দিরের সভাপতি মনোজ কুমার মল্লিক ও সাধারণ সম্পাদক মনোজ কুমার সাহা জানান, প্রায় ৩০ বছরের অধিক সময় থেকে পালিত হয়ে আসছে মহাত্রিপুরারী কৈলাশপতির মহাস্নান যাত্রা। এই দিনে শুধু এই মন্দির থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে উপজেলার শিবনগর ইউনিয়নের ত্রিমোহনী ঘাট যেখানে ছোট যমুনা ও তিলাই নদীর মিলনস্থলে গিয়ে নদীতে স্নান শেষে সেখান থেকে জল নিতে যায় তারা। তারা আরও জানান, দীর্ঘদিন থেকে ফুলবাড়ীতে এই মহা স্নানযাত্রা উৎসব হয়ে আসছে। মনোবাসনা পূরণ হয় এবং বিশ্বে যাতে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয় এই লক্ষ্যে মন্দির প্রাঙ্গণে বিতরণ করা হয় প্রসাদ।