দক্ষিণাঞ্চলে প্রকট হচ্ছে শ্রবণ সমস্যা, হাসপাতালে বাড়ছে রোগী

#
news image

নিম্নমানের মোবাইল ফোনের সাথে বিভিন্ন ডিভাইসের ব্যাবহারে বরিশালে শ্রবণ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। গত এক বছরে শ্রবণ সমস্যার রোগী বেড়েছে প্রায় ৮ হাজার। হাসপাতালে বাড়ছে শ্রবণ বিভ্রাট রোগীর সংখ্যা। বিশেষজ্ঞরা এটিকে নতুন প্রজন্মের বড় সমস্যা হিসেবে দেখছেন। এই সমস্যা ক্রমশ স্থায়ী প্রতিবন্ধিতায় রুপ নিচ্ছে। বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগের কান ইউনিটের বহি:বিভাগে প্রতিদিনের ভিড় বলে দিচ্ছে এখানকার শ্রবণ সমস্যাধারীদের হালচিত্র। হাসপাতালের হিসেব মতে ২০২২ সালেও এখানকার তিনটি আউটডোরে ২১,৭৯১ জন রোগী এসেছে এবং হাসপাতালে ভর্তি ছিলো ৫৭৬০ জন। গতবছর বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহি:বিভাগে এসেছে ২৭,৪৫৩ জন রোগী এবং ভর্তি ছিলো ৬৮৪০ জন। শিশু থেকে বৃদ্ধ সমানে এখানে আসছেন শ্রবণ সমস্যা নিয়ে। তবে এদের মধ্যে তারুণ্যের সংখ্যা বেশি।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক রোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের বেশিরভাগ রোগীই কানে হেডফোন দিয়ে গান শোনা, কথা বলার এক পর্যায়ে কানে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে অনেকেই এখন কানে কম শুনতে পান। চিকিৎসকদের মতে, অধিকতর মোবাইল ব্যবহারে এ রোগে আক্রান্তদের চাপ হাসপাতালে ক্রমশঃই বাড়ছে। এটি এখন বরিশাল অঞ্চলের জন্য শ্রবণ রোগের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ৩ বছরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শ্রবণ সমস্যায় চিকিৎসা নিতে এসেছে ৮৭ হাজার ৪৬ জন রোগী। এর মধ্যে বহি:বিভাহে চিকিৎসা নিয়েছে ৭০ হাজার ১৮৬ জন এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়ে অস্ত্রপচার করেছে ১৬ হাজার ৮৬০ জন। সমস্যা ক্রমেই প্রকোট হচ্ছে বলে জানান চিকিৎসকরা।

এবিষয়ে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. হাফিজুর রহমান শাকিল বলেন, উচ্চ শব্দে ক্রমাগত মোবাইল ব্যবহারে শ্রবণ সমস্যায় আক্রান্ত রোগী বেশি আসছে। মোবাইলের ডিভাইসগুলো ব্যবহারে সতর্ক হবার পরামর্শ দিয়েও কাজ হচ্ছে না। তরুণরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এদের বেশির ভাগেরই কানে শোনার ক্ষমতা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শ্রবণ সমস্যার রোগী বাড়তে দেখে আমরা এর কারণ অনুসন্ধান করি। এসময় রোগীদের কাছ থেকে স্টোরি নিতে গিয়ে দেখা যায় এদের বিভিন্ন ব্লু টুথ ও ইয়ারবাড ব্যবহারে আসক্তি রয়েছে। এ বিষয়ে
গণসচেতনতাসহ প্রাচারধর্মী কর্মসূচী দরকার।

এবিষয়ে হাসপাতালের নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ও সাবেক অধ্যক্ষ ডা. প্রফেসর এস এম সরোয়ার বলেন, বাজারে বিক্রিত নিম্নমানের কমদামী মোবাইল সেট এবং একই মানের হেডফোন ও ইয়ারবাড এর নিয়ন্ত্রণহীন শব্দ এর জন্য দায়ী। কারণ এসব মোবাইল ও ডিভাইসের শব্দ অনিয়ন্ত্রিত। এগুলো প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা ব্যবহার করলে এবং তা আবার টানা ৭ দিন ব্যাবহার অব্যাহত হলে কানের শ্রবণ সমস্যা স্থায়ী হতে বাধ্য।

আগামী প্রজন্মকে এবিষয়ে সতর্ক করতে গণসচেতনতা বৃদ্ধিকরা ও নিন্ম মানের পণ্য ব্যবহার থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

নাগরিক প্রতিবেদক, বরিশাল

১৬ মে, ২০২৪,  1:14 PM

news image

নিম্নমানের মোবাইল ফোনের সাথে বিভিন্ন ডিভাইসের ব্যাবহারে বরিশালে শ্রবণ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। গত এক বছরে শ্রবণ সমস্যার রোগী বেড়েছে প্রায় ৮ হাজার। হাসপাতালে বাড়ছে শ্রবণ বিভ্রাট রোগীর সংখ্যা। বিশেষজ্ঞরা এটিকে নতুন প্রজন্মের বড় সমস্যা হিসেবে দেখছেন। এই সমস্যা ক্রমশ স্থায়ী প্রতিবন্ধিতায় রুপ নিচ্ছে। বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক কান গলা বিভাগের কান ইউনিটের বহি:বিভাগে প্রতিদিনের ভিড় বলে দিচ্ছে এখানকার শ্রবণ সমস্যাধারীদের হালচিত্র। হাসপাতালের হিসেব মতে ২০২২ সালেও এখানকার তিনটি আউটডোরে ২১,৭৯১ জন রোগী এসেছে এবং হাসপাতালে ভর্তি ছিলো ৫৭৬০ জন। গতবছর বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহি:বিভাগে এসেছে ২৭,৪৫৩ জন রোগী এবং ভর্তি ছিলো ৬৮৪০ জন। শিশু থেকে বৃদ্ধ সমানে এখানে আসছেন শ্রবণ সমস্যা নিয়ে। তবে এদের মধ্যে তারুণ্যের সংখ্যা বেশি।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক রোগীর সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের বেশিরভাগ রোগীই কানে হেডফোন দিয়ে গান শোনা, কথা বলার এক পর্যায়ে কানে সমস্যা দেখা দিয়েছে। ফলে অনেকেই এখন কানে কম শুনতে পান। চিকিৎসকদের মতে, অধিকতর মোবাইল ব্যবহারে এ রোগে আক্রান্তদের চাপ হাসপাতালে ক্রমশঃই বাড়ছে। এটি এখন বরিশাল অঞ্চলের জন্য শ্রবণ রোগের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত ৩ বছরে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শ্রবণ সমস্যায় চিকিৎসা নিতে এসেছে ৮৭ হাজার ৪৬ জন রোগী। এর মধ্যে বহি:বিভাহে চিকিৎসা নিয়েছে ৭০ হাজার ১৮৬ জন এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়ে অস্ত্রপচার করেছে ১৬ হাজার ৮৬০ জন। সমস্যা ক্রমেই প্রকোট হচ্ছে বলে জানান চিকিৎসকরা।

এবিষয়ে বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. মো. হাফিজুর রহমান শাকিল বলেন, উচ্চ শব্দে ক্রমাগত মোবাইল ব্যবহারে শ্রবণ সমস্যায় আক্রান্ত রোগী বেশি আসছে। মোবাইলের ডিভাইসগুলো ব্যবহারে সতর্ক হবার পরামর্শ দিয়েও কাজ হচ্ছে না। তরুণরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এদের বেশির ভাগেরই কানে শোনার ক্ষমতা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে। বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শ্রবণ সমস্যার রোগী বাড়তে দেখে আমরা এর কারণ অনুসন্ধান করি। এসময় রোগীদের কাছ থেকে স্টোরি নিতে গিয়ে দেখা যায় এদের বিভিন্ন ব্লু টুথ ও ইয়ারবাড ব্যবহারে আসক্তি রয়েছে। এ বিষয়ে
গণসচেতনতাসহ প্রাচারধর্মী কর্মসূচী দরকার।

এবিষয়ে হাসপাতালের নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ও সাবেক অধ্যক্ষ ডা. প্রফেসর এস এম সরোয়ার বলেন, বাজারে বিক্রিত নিম্নমানের কমদামী মোবাইল সেট এবং একই মানের হেডফোন ও ইয়ারবাড এর নিয়ন্ত্রণহীন শব্দ এর জন্য দায়ী। কারণ এসব মোবাইল ও ডিভাইসের শব্দ অনিয়ন্ত্রিত। এগুলো প্রতিদিন ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা ব্যবহার করলে এবং তা আবার টানা ৭ দিন ব্যাবহার অব্যাহত হলে কানের শ্রবণ সমস্যা স্থায়ী হতে বাধ্য।

আগামী প্রজন্মকে এবিষয়ে সতর্ক করতে গণসচেতনতা বৃদ্ধিকরা ও নিন্ম মানের পণ্য ব্যবহার থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।