সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা  বন্ধ, ভোগান্তি রোগীদের

#
news image

 দীর্ঘ প্রায় ১১মাস ধরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ থাকায় মাসে গড়ে শতাধিক রোগী সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। সেই সাথে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি সচল ও একটি অচল  অ্যাম্বুলেন্স এক বছর ধরে ড্রাইভার না থাকায় রোগী সরবরাহ বন্ধ রয়েছে দাবি কর্তৃপক্ষের। জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২২ জুলাই অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার মো. আব্দুস সালেক মিয়ার বদলী হয়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত  ড্রাইভার না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সেবাবন্ধ রয়েছে। তখন থেকে অধিক ভাড়া দিয়ে বেসরকারি মালিকানা অ্যাম্বুলেন্স ও মাইক্রোবাসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রংপুর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাচ্ছেন সেবা বঞ্চিতরা। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে সুন্দরগঞ্জ থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভাড়া দিতে হত ১ হাজার ১২০ টাকা। অথচ বেসরকারি ও মালিকানা অ্যাম্বুলেন্সে  ভাড়া দিতে হয় ২ হতে ৩ হাজার টাকা।
 
 স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা জাহাঙ্গীর আলম জানান, দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স দু’টি পড়ে রয়েছে, দেখার কেউ নেই। প্রতিদিন কমপক্ষে ২ হতে ৫ রোগী এখান থেকে রংপুরে হস্তান্তর করে। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় অধিক ভাড়া দিয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ও মাইক্রোবাসে রোগী রংপুরে নিয়ে যায় রোগীর স্বজনরা। এই যদি হয় একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবস্থা, তাহলে মানুষ কোথায় যাবে। ৬ মাস পর পর বদলী হচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। ১৭ জন মেডিকেল অফিসারের মধ্যে রয়েছেন মাত্র ৭ জন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নিজেই অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। নিজ গতিতে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাযক্রম।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রোগী মো.মোনারুল ইসলাম, এখানকার ল্যাট্রিনগুলো ব্যবহার করা যায় না। পানিও জলের অভাব, নলকুপগুলো নষ্ট, খাবার মান একবারেই খারাপ। প্রায় সব ওষুধ বাহির থেকে কিনতে হয়। তিনি আরও বলেন দুইদিন চিকিৎসা করার পর সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না থাকায়  অধিক ভাড়া দিয়ে মালিকানা অ্যাম্বুলেন্সে করে তার ভাইকে রংপুরে পাঠিয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রোদওয়ানুর রহমানের বলেন, ড্রাইভার সংকটের কারণে দীর্ঘ প্রায় ১১ মাস হতে অ্যাম্বুলেন্স সেবা সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। ড্রাইভারের জন্য বহুবার চাহিদা পাঠানো হয়েছে । কিন্তু ড্রাইভার না থাকায় এখানকার অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। দু’টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে, অপরটি ড্রাইভার না থাকায় বন্ধ রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সায়্যিদ মুহাম্মদ আমরুল্লাহ  জানান, তিনি ৩ মাস হল এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেছেন। তখন থেকে অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার এবং পদ অনুযায়ী অর্ধেকের বেশি মেডিকেল অফিসার না থাকায় চিকিৎসা সেবা মারাত্বকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিকল্প উপায়ে অ্যাম্বুলেন্সটি চালুর ব্যাবস্থা করা হবে। গাইবান্ধা সিভিল সার্জন ডাক্তার কার্নিজ সাবিহার জানান, সারাদেশে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার সংকট। এখানে সিভিল সার্জনের কিছু করার কিছু নেই। তারপরও বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সাংসদ মহোদয়ের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগার জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশের মাধ্যমে মহান জাতীয় সংসদে কথা বলেছেন। তারপরও তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সাথে সরাসরি দেখা করে আশু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।          

 

মোঃ হযরত বেল্লাল, সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা

০৯ মে, ২০২৪,  7:28 PM

news image

 দীর্ঘ প্রায় ১১মাস ধরে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ থাকায় মাসে গড়ে শতাধিক রোগী সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। সেই সাথে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি সচল ও একটি অচল  অ্যাম্বুলেন্স এক বছর ধরে ড্রাইভার না থাকায় রোগী সরবরাহ বন্ধ রয়েছে দাবি কর্তৃপক্ষের। জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২২ জুলাই অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার মো. আব্দুস সালেক মিয়ার বদলী হয়। সেই থেকে আজ পর্যন্ত  ড্রাইভার না থাকায় অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস সেবাবন্ধ রয়েছে। তখন থেকে অধিক ভাড়া দিয়ে বেসরকারি মালিকানা অ্যাম্বুলেন্স ও মাইক্রোবাসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রংপুর হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাচ্ছেন সেবা বঞ্চিতরা। সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে সুন্দরগঞ্জ থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভাড়া দিতে হত ১ হাজার ১২০ টাকা। অথচ বেসরকারি ও মালিকানা অ্যাম্বুলেন্সে  ভাড়া দিতে হয় ২ হতে ৩ হাজার টাকা।
 
 স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা জাহাঙ্গীর আলম জানান, দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্স দু’টি পড়ে রয়েছে, দেখার কেউ নেই। প্রতিদিন কমপক্ষে ২ হতে ৫ রোগী এখান থেকে রংপুরে হস্তান্তর করে। সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় অধিক ভাড়া দিয়ে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ও মাইক্রোবাসে রোগী রংপুরে নিয়ে যায় রোগীর স্বজনরা। এই যদি হয় একটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অবস্থা, তাহলে মানুষ কোথায় যাবে। ৬ মাস পর পর বদলী হচ্ছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। ১৭ জন মেডিকেল অফিসারের মধ্যে রয়েছেন মাত্র ৭ জন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নিজেই অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। নিজ গতিতে চলছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাযক্রম।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রোগী মো.মোনারুল ইসলাম, এখানকার ল্যাট্রিনগুলো ব্যবহার করা যায় না। পানিও জলের অভাব, নলকুপগুলো নষ্ট, খাবার মান একবারেই খারাপ। প্রায় সব ওষুধ বাহির থেকে কিনতে হয়। তিনি আরও বলেন দুইদিন চিকিৎসা করার পর সরকারি অ্যাম্বুলেন্স না থাকায়  অধিক ভাড়া দিয়ে মালিকানা অ্যাম্বুলেন্সে করে তার ভাইকে রংপুরে পাঠিয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার রোদওয়ানুর রহমানের বলেন, ড্রাইভার সংকটের কারণে দীর্ঘ প্রায় ১১ মাস হতে অ্যাম্বুলেন্স সেবা সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। ড্রাইভারের জন্য বহুবার চাহিদা পাঠানো হয়েছে । কিন্তু ড্রাইভার না থাকায় এখানকার অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস বন্ধ রয়েছে। দু’টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে, অপরটি ড্রাইভার না থাকায় বন্ধ রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার সায়্যিদ মুহাম্মদ আমরুল্লাহ  জানান, তিনি ৩ মাস হল এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদান করেছেন। তখন থেকে অ্যাম্বুলেন্সের ড্রাইভার এবং পদ অনুযায়ী অর্ধেকের বেশি মেডিকেল অফিসার না থাকায় চিকিৎসা সেবা মারাত্বকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিকল্প উপায়ে অ্যাম্বুলেন্সটি চালুর ব্যাবস্থা করা হবে। গাইবান্ধা সিভিল সার্জন ডাক্তার কার্নিজ সাবিহার জানান, সারাদেশে অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার সংকট। এখানে সিভিল সার্জনের কিছু করার কিছু নেই। তারপরও বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সাংসদ মহোদয়ের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ নাহিদ নিগার জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি জনগুরুত্বপূর্ণ নোটিশের মাধ্যমে মহান জাতীয় সংসদে কথা বলেছেন। তারপরও তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সাথে সরাসরি দেখা করে আশু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।