আফিম উৎপাদনে শীর্ষে মিয়ানমার: জাতিসংঘ
নাগরিক অনলাইন ডেস্ক
১২ ডিসেম্বর, ২০২৩, 10:17 PM
আফিম উৎপাদনে শীর্ষে মিয়ানমার: জাতিসংঘ
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলে মিয়ানমার এখন বিশ্বের বৃহত্তম আফিম উৎপাদনকারী দেশ। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান সরকারের বাণিজ্যের ওপর দমন-পীড়নের পর আফগানিস্তানকে ছাড়িয়ে মিয়ানমার ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আফিম উৎপাদনকারী দেশ।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধরণা করা হচ্ছে, এ বছর মিয়ানমার আফিমের উৎপাদন ৩৬ শতাংশ বাড়িয়ে ১০৮০ টন করবে। যেটি হেরোইনের মূল উপাদান। আফগানিস্তানে আফিম উৎপাদন কমে যাওয়ার প্রধান কারণ অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা এবং গত বছর ক্ষমতাসীন তালেবান কর্তৃক মাদক নিষেধাজ্ঞা। এর পরেই সেখানে পপি চাষ ৯৫ শতাংশ হ্রাস পায়। আফগানিস্তান এ বছর ৩৩০ টন আফিম উৎপাদন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম অফিসের (ইউএনওডিসি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারের অর্থনীতি সংঘাত ও অস্থিতিশীলতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরো বলা হয়েছে, ‘বৈধ অর্থনৈতিক সুযোগের সীমিত প্রাপ্যতা, বাজার, রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোতে প্রবেশের সুযোগ না পাওয়া, মুদ্রাস্ফীতি এবং আর্থিক অবচয়ের কারণে সৃষ্ট খারাপ অর্থনৈতিক অবস্থা আফিম, সেই সঙ্গে অন্যান্য অবৈধ পণ্য উৎপাদন জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি আকর্ষণীয় বিকল্প তৈরি করতে পারে।’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমারে ২০২২ সালের শেষের দিকে কৃষকদের নেওয়া আরো পপি চাষের সিদ্ধান্ত এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
মিয়ানমারের অর্থনীতির মোট আনুমানিক মূল্য এক বিলিয়ন ডলার থেকে ২.৫ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে বেড়েছে, যা দেশটির ২০২২ সালের জিডিপির ১.৭ থেকে ৪.১ শতাংশের সমতুল্য বলে ইউওডিসি বলেছে। গত বছর মিয়ানমারে আনুমানিক ৭৯০ মেট্রিক টন আফিম উৎপাদিত হয়েছিল বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।
২০২১ সালে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমার অর্থনীতি ও অস্থিতিশীলতার সঙ্গে মোকাবেলা করছে। তখন অনেক কৃষক পপি চাষ শুরু করে। ২০২২-২৩ সালে আনুমানিক আফিম উৎপাদন ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল বলে ইউএন ওডিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে, মিয়ানমারে পপি চাষ আগের থেকে আরো বেড়েছে। বর্ধিত বিনিয়োগ, উন্নত সেচ এবং সারের সম্ভাব্য ব্যবহার ফসলের ফলন বাড়াচ্ছে।
তাজা ও শুকনো আফিমের ফসল কাটার সময় গড় দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৭ ডলার এবং প্রতি কেজি ৩৫৬ ডলার। বর্তমানে মিয়ানমারে পপি চাষের আওতাধীন এলাকা ৪৭ হাজার হেক্টর (এক লাখ ১৬ হাজার ১৪ একর), যা গত বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং লাওসের সীমানা মিলিত হয়েছে তথাকথিত গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গলে।
ঐতিহাসিকভাবে এই অঞ্চলগুলো আফিম ও হেরোইন উৎপাদনের একটি প্রধান উৎস। মিয়ানমার ও আফগানিস্তান বিশ্বজুড়ে বিক্রি হওয়া বেশির ভাগ হেরোইনের উৎস। সূত্র : বিবিসি, এনডিটিভি
নাগরিক অনলাইন ডেস্ক
১২ ডিসেম্বর, ২০২৩, 10:17 PM
জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানকে পেছনে ফেলে মিয়ানমার এখন বিশ্বের বৃহত্তম আফিম উৎপাদনকারী দেশ। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবান সরকারের বাণিজ্যের ওপর দমন-পীড়নের পর আফগানিস্তানকে ছাড়িয়ে মিয়ানমার ২০২৩ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আফিম উৎপাদনকারী দেশ।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ধরণা করা হচ্ছে, এ বছর মিয়ানমার আফিমের উৎপাদন ৩৬ শতাংশ বাড়িয়ে ১০৮০ টন করবে। যেটি হেরোইনের মূল উপাদান। আফগানিস্তানে আফিম উৎপাদন কমে যাওয়ার প্রধান কারণ অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা এবং গত বছর ক্ষমতাসীন তালেবান কর্তৃক মাদক নিষেধাজ্ঞা। এর পরেই সেখানে পপি চাষ ৯৫ শতাংশ হ্রাস পায়। আফগানিস্তান এ বছর ৩৩০ টন আফিম উৎপাদন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জাতিসংঘের ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম অফিসের (ইউএনওডিসি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারের অর্থনীতি সংঘাত ও অস্থিতিশীলতার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আরো বলা হয়েছে, ‘বৈধ অর্থনৈতিক সুযোগের সীমিত প্রাপ্যতা, বাজার, রাষ্ট্রীয় অবকাঠামোতে প্রবেশের সুযোগ না পাওয়া, মুদ্রাস্ফীতি এবং আর্থিক অবচয়ের কারণে সৃষ্ট খারাপ অর্থনৈতিক অবস্থা আফিম, সেই সঙ্গে অন্যান্য অবৈধ পণ্য উৎপাদন জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি আকর্ষণীয় বিকল্প তৈরি করতে পারে।’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমারে ২০২২ সালের শেষের দিকে কৃষকদের নেওয়া আরো পপি চাষের সিদ্ধান্ত এ ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
মিয়ানমারের অর্থনীতির মোট আনুমানিক মূল্য এক বিলিয়ন ডলার থেকে ২.৫ বিলিয়ন ডলারের মধ্যে বেড়েছে, যা দেশটির ২০২২ সালের জিডিপির ১.৭ থেকে ৪.১ শতাংশের সমতুল্য বলে ইউওডিসি বলেছে। গত বছর মিয়ানমারে আনুমানিক ৭৯০ মেট্রিক টন আফিম উৎপাদিত হয়েছিল বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়।
২০২১ সালে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমার অর্থনীতি ও অস্থিতিশীলতার সঙ্গে মোকাবেলা করছে। তখন অনেক কৃষক পপি চাষ শুরু করে। ২০২২-২৩ সালে আনুমানিক আফিম উৎপাদন ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ছিল বলে ইউএন ওডিসি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে, মিয়ানমারে পপি চাষ আগের থেকে আরো বেড়েছে। বর্ধিত বিনিয়োগ, উন্নত সেচ এবং সারের সম্ভাব্য ব্যবহার ফসলের ফলন বাড়াচ্ছে।
তাজা ও শুকনো আফিমের ফসল কাটার সময় গড় দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৭ ডলার এবং প্রতি কেজি ৩৫৬ ডলার। বর্তমানে মিয়ানমারে পপি চাষের আওতাধীন এলাকা ৪৭ হাজার হেক্টর (এক লাখ ১৬ হাজার ১৪ একর), যা গত বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মিয়ানমার, থাইল্যান্ড এবং লাওসের সীমানা মিলিত হয়েছে তথাকথিত গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গলে।
ঐতিহাসিকভাবে এই অঞ্চলগুলো আফিম ও হেরোইন উৎপাদনের একটি প্রধান উৎস। মিয়ানমার ও আফগানিস্তান বিশ্বজুড়ে বিক্রি হওয়া বেশির ভাগ হেরোইনের উৎস। সূত্র : বিবিসি, এনডিটিভি