বিশ্বে ঘটে যাওয়া কিছু ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্প
নাগরিক অনলাইন ডেস্ক
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৩, 12:22 AM
বিশ্বে ঘটে যাওয়া কিছু ধ্বংসাত্মক ভূমিকম্প
বিশ্বে ঘন ঘন ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটছে। মৃদু মাত্রার ভূমিকম্পে তেমন কোনো ক্ষতি না হলেও শক্তিশালী ভূমিকম্পে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ভূমিকম্প মৃদু থেকে মাঝারি বা তীব্রও হতে পারে। উৎসের গভীরতাও তিন ধরনের হতে পারে, অগভীর, গভীর ও মধ্যবর্তী। ভূমিকম্পের উৎপত্তি সাধারণত ভূ-পৃষ্ঠের হঠাৎ পরিবর্তন, আগ্নেয়গিরি সংঘটিত হওয়ার কারণে বা শিলাচ্যুতিজনিত কারণে হয়। সাধারণত কয়েক সেকে- থেকে কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। ২০২৩ সালে কয়েকটি মারাত্বক ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে। এতে বহু মানুষ মারা গেছে এবং বাড়ি-ঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণিত হয়েছে।
সারা বিশ্বে ঘটা কিছু ভয়াবহ ভূমিকম্প একনজরে দেখে নেওয়া যাক:
► ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে আফগানিস্তানে এক হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল জিনদাজান জেলা, হেরাত শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে ইরান সীমান্তের কাছে।
► ২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প মরক্কোর মারাকেশের সাফি অঞ্চলে আঘাত হানে।
মরক্কোর ভূমিকম্পের ইতিহাসে গত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটি ছিল এটি। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মারাকেশ থেকে ৭১.৮ কিলোমিটার (৪৪.৬ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে আটলাস পর্বতমালার ইঘিল শহরের কাছে। এ ঘটনায় ২৯৪৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ মানুষ মারা গেছে মারাকেশের বাইরে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয় তখন।
► ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে স্থানীয় সময় রাত ৪টা ১৭ মিনিটে আঘাত হানে। যার ফলে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে যে ভূমিকম্প হয় তার মাত্রা ছিল সাত দশমিক সাত ও সিরিয়ায় সাত দশমিক ছয়।
► ২২ জুন ২০২২ সালে পূর্ব আফগানিস্তানে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১০০০ মানুষ নিহত এবং এক হাজার ৫০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছিল।
► ১৯ আগস্ট ২০২১ সালে হাইতিতে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে ২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং ১২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল। এই ঘটনার পর হাইতিতির কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ৬ লাখ মানুষের জরুরি সহায়তার প্রয়োজন।
► ২৬ নভেম্বর ২০১৯ সালে আলবেনিয়ায় ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৪১ জন নিহত হয়েছিল এবং তিন হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়।
► ৫ আগস্ট ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার লম্বক দ্বীপে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে ৪৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ভূমিকম্পে বাড়িঘর, মসজিদ এবং দোকান সব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ফলে ৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ফলে ১.৫ মিটার সুনামি হয় এবং ৪ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
► ১২ নভেম্বর ২০১৭ সালে ৭.৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প ২০১৭ সালে ইরান-ইরাক সীমান্তে আঘাত হানে। ইসরায়েল এবং উপসাগরজুড়ে ভূমিকম্পে ৪৪০ জন নিহত এবং আরো ১০ হাজার আহত হয়েছিল।
► ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সালে ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৩৬৯ জন মারা যায় মেক্সিকো সিটি এবং এর আশপাশে অঞ্চলে। সেপ্টেম্বরের ভূমিকম্পটি ছিল ৮.১ মাত্রার। যা এক শতাব্দীর মধ্যে দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প।
► ২৪ আগস্ট ২০১৬ সালে মধ্য ইতালিতে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ২৯৮ জন নিহত হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি আঘাত হানে অ্যামাট্রিসে। যেখানে শহরের অনেক ঐতিহাসিক ভবন ধসে পড়ে। ভূমিকম্পের পর গৃহহীনদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল ইতালির সরকার।
► ১৬ এপ্রিল ২০১৬ সালে ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প ইকুয়েডরের উপকূলে আঘাত হানে। এতে ৬৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায় এবং ১৬ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়। এ ছাড়া প্রায় ৭ হাজার ভবন ধ্বংস হয়েছিল।
► ২৬ অক্টোবর ২০১৫ সালে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৪০০ জন নিহত হয়। নিহতদের বেশিরভাগই পাকিস্তানের। তবে ভূমিকম্পটি উত্তর ভারত এবং তাজিকিস্তানেও অনুভূত হয়।
► ২৫ এপ্রিল ২০১৫ সালে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প নেপালে আঘাত হানে। এতে আট হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। ১৯৩৪ সালের পর থেকে নেপালে আঘাত হানার সবচেয়ে খারাপ প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছিল। দেশের কিছু অংশে ভূমিকম্পের আঘাতে পাহাড়ি গ্রামের সমস্ত বাড়ি ৯৮ শতাংশ সমতল হয়ে যায়।
► ৩ আগস্ট ২০১৪ সালে চীনের ইউনান প্রদেশে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৬০০ জন নিহত হয়েছিল। হাজার হাজার ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে যায়। এবং ভূমিধসের ঘটনাও ঘটে। এ ছাড়া ২ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।
► ১৫ অক্টোবর ২০১৩ সালে ফিলিপাইনের বোহোল এবং সেবুতে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়। এ ছাড়া ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩-তে পাকিস্তানের প্রত্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের আওয়ারান জেলায় ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ৩০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল। একই বছর ২০ এপ্রিল চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশে শক্তিশালী ৬.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১৬০ জন নিহত এবং কমপক্ষে পাঁচ হাজার ৭০০ জন আহত হয়েছিল।
► ১১ আগস্ট ২০১২ সালে উত্তর-পশ্চিম ইরানে তাবরিজ এবং আহার শহরের কাছে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে ২৫০ জন নিহত এবং ২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।
► ২৩ অক্টোবর ২০১১ সালে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে আঘাত হানা শক্তিশালী ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ১০০০ মানুষ আহত হয়েছিল। বেশ কয়েকটি ভবনও ধসে পড়েছিল।
► ১১ মার্চ ২০১১ সালে বিধ্বংসী ৮.৯ মাত্রার ভূমিকম্প জাপানে আঘাত হানে। এতে ২০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল বা নিখোঁজ ছিল। কম্পনটি জাপানের উপকূলে বিশাল সুনামির সৃষ্টি করে। ১৯৮৬ সালে চেরনোবিলের পর থেকে বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিপর্যয় হয় সেই ভূমিকম্পে জাপানে। এ ছাড়া একই বছর ২২ ফেব্রুয়ারি ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরকে লন্ডভন্ড করে দিয়ে যায়। এতে ১৬০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায় এবং প্রায় এক লাখ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
► ১৪ এপ্রিল ২০১০ সালে চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় কিংহাই প্রদেশে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। একই বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি উত্তর-পূর্ব মধ্য চিলির কনসেপসিওনেতে ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। এ ছাড়া ১২ জানুয়ারি হাইতির রাজধানী এবং এর আশপাশে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ মারা যায়।
► ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ সালে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে ভূমিকম্পে এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।
► ২০০৮ সালের ১২ মে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশের ভূমিকম্পে ৮৭ হাজার মানুষ নিহত বা নিখোঁজ হয়েছিল। এ ছাড়া ৩ লাখ ৭০ হাজার আহত হয়েছিল। ৭.৮ মাত্রার কম্পনটি প্রাদেশিক রাজধানী চেংডু থেকে ৫৭ মাইল (৯২ কিলোমিটার) দূরে বিকেলে আঘাত হেনেছিল।
► এ ছাড়া ১৫ আগস্ট ২০০৭ সালে দক্ষিণ-পূর্বে পেরুর উপকূলীয় প্রদেশ ইকাতে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৫১৯ জন নিহত হয়েছিল। ১৭ জুলাই ২০০৬ সালে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপে ৬৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
► ৮ অক্টোবর ২০০৫ সালে ৭.৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প উত্তর পাকিস্তান এবং বিতর্কিত কাশ্মীর অঞ্চলে আঘাত হানে। যাতে ৭৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায় এবং লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। ২৮ মার্চ সুমাত্রার পশ্চিমে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ নিয়াসের উপকূলে ৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় এক হাজার ৩০০ জন নিহত হয়েছিল। ২২ ফেব্রুয়ারি ইরানের কেরমান প্রদেশের জারন্দের কাছে একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে শতাধিক মানুষ মারা গিয়েছিল।
► ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সালে মরক্কোর ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের শহরগুলোতে ভূমিকম্পে অন্তত ৫০০ মানুষ মারা গিয়েছিল। ২৬ ডিসেম্বর ২০০৩ সালে ভূমিকম্পে দক্ষিণ ইরানের ঐতিহাসিক বাম শহর ধ্বংস হয়ে যায় এবং ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।
► ২১ মে ২০০৩ সালে স্পেনে সমুদ্রজুড়ে অনুভূত ভূমিকম্পে ২ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায় এবং ৮ হাজারের বেশি আহত হয়।
► ২৬ জানুয়ারী ২০০১ সালে ৭.৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে উত্তর-পশ্চিম ভারতের গুজরাট রাজ্যের বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস হয়ে যায়। প্রায় ২০ হাজার মানুষ মারা যায় তখন। এ ছাড়া এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।
সূত্র: বিবিসি
নাগরিক অনলাইন ডেস্ক
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৩, 12:22 AM
বিশ্বে ঘন ঘন ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটছে। মৃদু মাত্রার ভূমিকম্পে তেমন কোনো ক্ষতি না হলেও শক্তিশালী ভূমিকম্পে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ভূমিকম্প মৃদু থেকে মাঝারি বা তীব্রও হতে পারে। উৎসের গভীরতাও তিন ধরনের হতে পারে, অগভীর, গভীর ও মধ্যবর্তী। ভূমিকম্পের উৎপত্তি সাধারণত ভূ-পৃষ্ঠের হঠাৎ পরিবর্তন, আগ্নেয়গিরি সংঘটিত হওয়ার কারণে বা শিলাচ্যুতিজনিত কারণে হয়। সাধারণত কয়েক সেকে- থেকে কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। ২০২৩ সালে কয়েকটি মারাত্বক ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে। এতে বহু মানুষ মারা গেছে এবং বাড়ি-ঘর ধ্বংসস্তূপে পরিণিত হয়েছে।
সারা বিশ্বে ঘটা কিছু ভয়াবহ ভূমিকম্প একনজরে দেখে নেওয়া যাক:
► ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে আফগানিস্তানে এক হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল জিনদাজান জেলা, হেরাত শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে ইরান সীমান্তের কাছে।
► ২০২৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প মরক্কোর মারাকেশের সাফি অঞ্চলে আঘাত হানে।
মরক্কোর ভূমিকম্পের ইতিহাসে গত ১০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটি ছিল এটি। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল মারাকেশ থেকে ৭১.৮ কিলোমিটার (৪৪.৬ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে আটলাস পর্বতমালার ইঘিল শহরের কাছে। এ ঘটনায় ২৯৪৬ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ মানুষ মারা গেছে মারাকেশের বাইরে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিও হয় তখন।
► ২০২৩ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলে স্থানীয় সময় রাত ৪টা ১৭ মিনিটে আঘাত হানে। যার ফলে তুরস্ক ও সিরিয়ায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৫০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্কে যে ভূমিকম্প হয় তার মাত্রা ছিল সাত দশমিক সাত ও সিরিয়ায় সাত দশমিক ছয়।
► ২২ জুন ২০২২ সালে পূর্ব আফগানিস্তানে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১০০০ মানুষ নিহত এবং এক হাজার ৫০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছিল।
► ১৯ আগস্ট ২০২১ সালে হাইতিতে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে ২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং ১২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল। এই ঘটনার পর হাইতিতির কর্মকর্তারা বলেছিলেন, ৬ লাখ মানুষের জরুরি সহায়তার প্রয়োজন।
► ২৬ নভেম্বর ২০১৯ সালে আলবেনিয়ায় ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৪১ জন নিহত হয়েছিল এবং তিন হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়।
► ৫ আগস্ট ২০১৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার লম্বক দ্বীপে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে ৪৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ভূমিকম্পে বাড়িঘর, মসজিদ এবং দোকান সব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। ফলে ৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। এ ছাড়া ২০১৮ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি দ্বীপে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। ফলে ১.৫ মিটার সুনামি হয় এবং ৪ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
► ১২ নভেম্বর ২০১৭ সালে ৭.৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্প ২০১৭ সালে ইরান-ইরাক সীমান্তে আঘাত হানে। ইসরায়েল এবং উপসাগরজুড়ে ভূমিকম্পে ৪৪০ জন নিহত এবং আরো ১০ হাজার আহত হয়েছিল।
► ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ সালে ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৩৬৯ জন মারা যায় মেক্সিকো সিটি এবং এর আশপাশে অঞ্চলে। সেপ্টেম্বরের ভূমিকম্পটি ছিল ৮.১ মাত্রার। যা এক শতাব্দীর মধ্যে দেশটিতে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্প।
► ২৪ আগস্ট ২০১৬ সালে মধ্য ইতালিতে ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ২৯৮ জন নিহত হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি আঘাত হানে অ্যামাট্রিসে। যেখানে শহরের অনেক ঐতিহাসিক ভবন ধসে পড়ে। ভূমিকম্পের পর গৃহহীনদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছিল ইতালির সরকার।
► ১৬ এপ্রিল ২০১৬ সালে ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প ইকুয়েডরের উপকূলে আঘাত হানে। এতে ৬৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায় এবং ১৬ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়। এ ছাড়া প্রায় ৭ হাজার ভবন ধ্বংস হয়েছিল।
► ২৬ অক্টোবর ২০১৫ সালে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৪০০ জন নিহত হয়। নিহতদের বেশিরভাগই পাকিস্তানের। তবে ভূমিকম্পটি উত্তর ভারত এবং তাজিকিস্তানেও অনুভূত হয়।
► ২৫ এপ্রিল ২০১৫ সালে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প নেপালে আঘাত হানে। এতে আট হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়। ১৯৩৪ সালের পর থেকে নেপালে আঘাত হানার সবচেয়ে খারাপ প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে লক্ষাধিক মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছিল। দেশের কিছু অংশে ভূমিকম্পের আঘাতে পাহাড়ি গ্রামের সমস্ত বাড়ি ৯৮ শতাংশ সমতল হয়ে যায়।
► ৩ আগস্ট ২০১৪ সালে চীনের ইউনান প্রদেশে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৬০০ জন নিহত হয়েছিল। হাজার হাজার ঘরবাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে যায়। এবং ভূমিধসের ঘটনাও ঘটে। এ ছাড়া ২ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।
► ১৫ অক্টোবর ২০১৩ সালে ফিলিপাইনের বোহোল এবং সেবুতে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়। এ ছাড়া ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩-তে পাকিস্তানের প্রত্যন্ত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের আওয়ারান জেলায় ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ৩০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল। একই বছর ২০ এপ্রিল চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশে শক্তিশালী ৬.৬ মাত্রার ভূমিকম্পে কমপক্ষে ১৬০ জন নিহত এবং কমপক্ষে পাঁচ হাজার ৭০০ জন আহত হয়েছিল।
► ১১ আগস্ট ২০১২ সালে উত্তর-পশ্চিম ইরানে তাবরিজ এবং আহার শহরের কাছে কয়েক মিনিটের ব্যবধানে দুটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে কমপক্ষে ২৫০ জন নিহত এবং ২ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।
► ২৩ অক্টোবর ২০১১ সালে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কে আঘাত হানা শক্তিশালী ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পে ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত এবং ১০০০ মানুষ আহত হয়েছিল। বেশ কয়েকটি ভবনও ধসে পড়েছিল।
► ১১ মার্চ ২০১১ সালে বিধ্বংসী ৮.৯ মাত্রার ভূমিকম্প জাপানে আঘাত হানে। এতে ২০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল বা নিখোঁজ ছিল। কম্পনটি জাপানের উপকূলে বিশাল সুনামির সৃষ্টি করে। ১৯৮৬ সালে চেরনোবিলের পর থেকে বিশ্বের বৃহত্তম পারমাণবিক বিপর্যয় হয় সেই ভূমিকম্পে জাপানে। এ ছাড়া একই বছর ২২ ফেব্রুয়ারি ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্প নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরকে লন্ডভন্ড করে দিয়ে যায়। এতে ১৬০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায় এবং প্রায় এক লাখ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
► ১৪ এপ্রিল ২০১০ সালে চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় কিংহাই প্রদেশে ৬.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। একই বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি উত্তর-পূর্ব মধ্য চিলির কনসেপসিওনেতে ৮.৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। এ ছাড়া ১২ জানুয়ারি হাইতির রাজধানী এবং এর আশপাশে ৭ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার মানুষ মারা যায়।
► ৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ সালে ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপে ভূমিকম্পে এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।
► ২০০৮ সালের ১২ মে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশের ভূমিকম্পে ৮৭ হাজার মানুষ নিহত বা নিখোঁজ হয়েছিল। এ ছাড়া ৩ লাখ ৭০ হাজার আহত হয়েছিল। ৭.৮ মাত্রার কম্পনটি প্রাদেশিক রাজধানী চেংডু থেকে ৫৭ মাইল (৯২ কিলোমিটার) দূরে বিকেলে আঘাত হেনেছিল।
► এ ছাড়া ১৫ আগস্ট ২০০৭ সালে দক্ষিণ-পূর্বে পেরুর উপকূলীয় প্রদেশ ইকাতে ৭.৯ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৫১৯ জন নিহত হয়েছিল। ১৭ জুলাই ২০০৬ সালে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ইন্দোনেশিয়ান দ্বীপে ৬৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
► ৮ অক্টোবর ২০০৫ সালে ৭.৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প উত্তর পাকিস্তান এবং বিতর্কিত কাশ্মীর অঞ্চলে আঘাত হানে। যাতে ৭৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায় এবং লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে। ২৮ মার্চ সুমাত্রার পশ্চিমে ইন্দোনেশিয়ার দ্বীপ নিয়াসের উপকূলে ৮.৭ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় এক হাজার ৩০০ জন নিহত হয়েছিল। ২২ ফেব্রুয়ারি ইরানের কেরমান প্রদেশের জারন্দের কাছে একটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৬.৪ মাত্রার ভূমিকম্পে শতাধিক মানুষ মারা গিয়েছিল।
► ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০০৪ সালে মরক্কোর ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের শহরগুলোতে ভূমিকম্পে অন্তত ৫০০ মানুষ মারা গিয়েছিল। ২৬ ডিসেম্বর ২০০৩ সালে ভূমিকম্পে দক্ষিণ ইরানের ঐতিহাসিক বাম শহর ধ্বংস হয়ে যায় এবং ২৬ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়।
► ২১ মে ২০০৩ সালে স্পেনে সমুদ্রজুড়ে অনুভূত ভূমিকম্পে ২ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায় এবং ৮ হাজারের বেশি আহত হয়।
► ২৬ জানুয়ারী ২০০১ সালে ৭.৯ মাত্রার একটি ভূমিকম্পে উত্তর-পশ্চিম ভারতের গুজরাট রাজ্যের বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস হয়ে যায়। প্রায় ২০ হাজার মানুষ মারা যায় তখন। এ ছাড়া এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ে।
সূত্র: বিবিসি