বৈশ্বিক সংকট মোকাবেলায় উন্নয়নের বাজেট 

#
news image

করোনাভাইরাস অভিঘাত থেকে মুক্ত হয়ে এবং রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপি সংকট মোকাবিলা করে উন্নয়নের ধারায় ফিরে আসার লক্ষ্য নিয়ে গতকাল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাজেট। 
অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন, যা বিদায়ী অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। 
এর আগে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে এক বিশেষ বৈঠকে মন্ত্রিসভা নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেন। এটি দেশের ৫১তম, আওয়ামী লীগ সরকারের ২৩তম ও বর্তমান অর্থমন্ত্রীর চতুর্থ বাজেট। 
'কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামের এই বাজেটে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে। পাশাপাশি করোনাভাইরাস অভিঘাত থেকে মুক্ত হয়ে উন্নয়নের ধারায় ফিরে আসার জন্য কৃষি, খাদ্য, নতুন কর্মসংস্থান সৃজন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলা করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং ভর্তুকির চাপ সামাল দেওয়াসহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নতুন এই বাজেটে।
প্রস্তাবিত বাজেটে মন্ত্রাণালয়-ভিত্তিক সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ এক লাখ ৯০ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা পাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ ৪১ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ৪০ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা।
আসন্ন অর্থবছরে (২০২২-২৩) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষাখাতে টাকার অংকে মোট বরাদ্দ বাড়ছে। চলতি অর্থ বছরের তুলনায় আসন্ন অর্থ বছরে মোট ৯ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই দুই মন্ত্রণালয়ের জন্য আসন্ন অর্থ বছরে মোট ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা চলতি বছরে ছিল ৭১ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য সরকারের বরাদ্দ বেড়েছে ৪ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। যা এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকায়।
প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে বরাদ্দ কমেছে ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা।
সর্বশেষ গত এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬.২৯ শতাংশ, যা গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হল গতকাল যাতে ভর্তুকির জন্য ব্যাপক বরাদ্দ থাকছে।
নতুন বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭.৫ শতাংশ। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতির হার ৫.৫ শতাংশ। মোট বিনিয়োগ ধরা হয়েছে জিডিপির ৩১.৫ শতাংশ, যার মধ্যে রয়েছে সরকারি ৬.৬ শতাংশ এবং বেসরকারি ২৪.৯ শতাংশ।
মোট রাজস্ব আয় ধরা হচ্ছে জিডিপির ৯.৮ শতাংশ, মোট ব্যয় জিডিপির ১৫.৪ শতাংশ, মোট ঘাটতি জিডিপির ৫.৫ শতাংশ এবং প্রাথমিক ঘাটতি জিপিডির ৩.৭ শতাংশ। আর বাজেটে জিডিপির আকার ধরা হয়েছে ৪৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে করহার বাড়ছে না। তবে আওতা বাড়াতে থাকবে বেশকিছু নির্দেশনা। এ ছাড়া রাজস্ব ও রপ্তানি বাড়াতে কিছু কিছু খাতে করছাড় দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একটা চমক হলো পোশাক খাতের মতো সব রপ্তানি খাতে করপোরেট কর ১২ শতাংশ করা হচ্ছে। বর্তমানে এই হার ২২.৫ শতাংশ থেকে শুরু করে ৩০ শতাংশ।
আর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে কালোটাকা সাদা করার যে সুযোগ আছে, তা আগামী অর্থবছরে বহাল রাখা হচ্ছে না।
ভ্যাট বাড়ছে
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। ২০১০ সাল থেকে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এটি বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে বাজারে ফ্রিজের দাম বাড়তে পারে। পাশাপাশি মোবাইল সেট বিক্রয় পর্যায়ে ভ্যাট নেই। ব্যবসা পর্যায়ে মোবাইল সেটের ওপর বাড়িয়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট বসানো হচ্ছে। এতে মোবাইলের দাম বাড়বে।
ভ্যাট কমছে 
কয়েকটি খাতে ভ্যাট হার কমানো হচ্ছে। এর মধ্যে হোটেল-রেস্টুরেন্টের ভ্যাট কমানো হচ্ছে। বর্তমানে এসি রেস্টুরেন্টে খেতে ১০ শতাংশ এবং নন-এসি রেস্টুরেন্টে খেতে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। আসন্ন বাজেটে উভয় ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। অপরদিকে, জুয়েলারি শিল্পের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হচ্ছে। ভ্যাট রিটার্ন দাখিলে (দাখিলপত্র) ব্যর্থতার জরিমানা ১০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। আর ভ্যাট ফাঁকি, ব্যর্থতা ও অনিয়মের ক্ষেত্রে জরিমানার পরিমাণ কমিয়ে অর্ধেক করা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হচ্ছে না। সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছিল।
এদিকে, প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের আয়ের খাতগুলো থেকে কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। 
নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।

জাহিদ হোসেন বিপ্লব 

১০ জুন, ২০২২,  1:17 AM

news image

করোনাভাইরাস অভিঘাত থেকে মুক্ত হয়ে এবং রাশিয়া- ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপি সংকট মোকাবিলা করে উন্নয়নের ধারায় ফিরে আসার লক্ষ্য নিয়ে গতকাল জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাজেট। 
অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল বিকেল ৩টায় জাতীয় সংসদে ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন, যা বিদায়ী অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় ৭৪ হাজার ৩৮৩ কোটি টাকা বেশি। 
এর আগে দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে এক বিশেষ বৈঠকে মন্ত্রিসভা নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেন। এটি দেশের ৫১তম, আওয়ামী লীগ সরকারের ২৩তম ও বর্তমান অর্থমন্ত্রীর চতুর্থ বাজেট। 
'কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ শিরোনামের এই বাজেটে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে। পাশাপাশি করোনাভাইরাস অভিঘাত থেকে মুক্ত হয়ে উন্নয়নের ধারায় ফিরে আসার জন্য কৃষি, খাদ্য, নতুন কর্মসংস্থান সৃজন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সংকট মোকাবিলা করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং ভর্তুকির চাপ সামাল দেওয়াসহ শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নতুন এই বাজেটে।
প্রস্তাবিত বাজেটে মন্ত্রাণালয়-ভিত্তিক সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ এক লাখ ৯০ হাজার ৭১৩ কোটি টাকা পাচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ ৪১ হাজার ৭০৭ কোটি টাকা এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ৪০ হাজার ৩৬০ কোটি টাকা।
আসন্ন অর্থবছরে (২০২২-২৩) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন শিক্ষাখাতে টাকার অংকে মোট বরাদ্দ বাড়ছে। চলতি অর্থ বছরের তুলনায় আসন্ন অর্থ বছরে মোট ৯ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই দুই মন্ত্রণালয়ের জন্য আসন্ন অর্থ বছরে মোট ৮১ হাজার ৪৪৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা চলতি বছরে ছিল ৭১ হাজার ৯৫৪ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য সরকারের বরাদ্দ বেড়েছে ৪ হাজার ১৩২ কোটি টাকা। গত অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৩২ হাজার ৭৩১ কোটি টাকা। যা এবার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকায়।
প্রস্তাবিত বাজেটে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জন্য ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ বিদ্যুৎ বিভাগ এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগে বরাদ্দ কমেছে ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা।
সর্বশেষ গত এপ্রিল মাসে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৬.২৯ শতাংশ, যা গত দেড় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা হল গতকাল যাতে ভর্তুকির জন্য ব্যাপক বরাদ্দ থাকছে।
নতুন বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৭.৫ শতাংশ। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতির হার ৫.৫ শতাংশ। মোট বিনিয়োগ ধরা হয়েছে জিডিপির ৩১.৫ শতাংশ, যার মধ্যে রয়েছে সরকারি ৬.৬ শতাংশ এবং বেসরকারি ২৪.৯ শতাংশ।
মোট রাজস্ব আয় ধরা হচ্ছে জিডিপির ৯.৮ শতাংশ, মোট ব্যয় জিডিপির ১৫.৪ শতাংশ, মোট ঘাটতি জিডিপির ৫.৫ শতাংশ এবং প্রাথমিক ঘাটতি জিপিডির ৩.৭ শতাংশ। আর বাজেটে জিডিপির আকার ধরা হয়েছে ৪৪ লাখ ৪৯ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে করহার বাড়ছে না। তবে আওতা বাড়াতে থাকবে বেশকিছু নির্দেশনা। এ ছাড়া রাজস্ব ও রপ্তানি বাড়াতে কিছু কিছু খাতে করছাড় দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে একটা চমক হলো পোশাক খাতের মতো সব রপ্তানি খাতে করপোরেট কর ১২ শতাংশ করা হচ্ছে। বর্তমানে এই হার ২২.৫ শতাংশ থেকে শুরু করে ৩০ শতাংশ।
আর পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে কালোটাকা সাদা করার যে সুযোগ আছে, তা আগামী অর্থবছরে বহাল রাখা হচ্ছে না।
ভ্যাট বাড়ছে
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হচ্ছে। ২০১০ সাল থেকে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত রেফ্রিজারেটর বা ফ্রিজ উৎপাদনে ভ্যাট অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এটি বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। এতে বাজারে ফ্রিজের দাম বাড়তে পারে। পাশাপাশি মোবাইল সেট বিক্রয় পর্যায়ে ভ্যাট নেই। ব্যবসা পর্যায়ে মোবাইল সেটের ওপর বাড়িয়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট বসানো হচ্ছে। এতে মোবাইলের দাম বাড়বে।
ভ্যাট কমছে 
কয়েকটি খাতে ভ্যাট হার কমানো হচ্ছে। এর মধ্যে হোটেল-রেস্টুরেন্টের ভ্যাট কমানো হচ্ছে। বর্তমানে এসি রেস্টুরেন্টে খেতে ১০ শতাংশ এবং নন-এসি রেস্টুরেন্টে খেতে ৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। আসন্ন বাজেটে উভয় ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ করা হচ্ছে। অপরদিকে, জুয়েলারি শিল্পের ভ্যাট ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হচ্ছে। ভ্যাট রিটার্ন দাখিলে (দাখিলপত্র) ব্যর্থতার জরিমানা ১০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে ৫ হাজার টাকা করা হচ্ছে। আর ভ্যাট ফাঁকি, ব্যর্থতা ও অনিয়মের ক্ষেত্রে জরিমানার পরিমাণ কমিয়ে অর্ধেক করা হচ্ছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানো হচ্ছে না। সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছিল।
এদিকে, প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারের আয়ের খাতগুলো থেকে কর বাবদ ৩ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা আয় করার পরিকল্পনা করছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) মাধ্যমে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা। 
নতুন অর্থবছরে এনবিআরকে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে এনবিআর বহির্ভূত কর থেকে আয় করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কর ছাড়া আয় ধরা হয়েছে ৪৫ হাজার কোটি। আর বৈদেশিক অনুদান থেকে আয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২৭১ কোটি টাকা।