শৈলকুপার মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ৫ বছরেও নিয়োগ পাননি কেউ

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
১৩ জুন, ২০২৩, 2:51 PM
শৈলকুপার মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে ৫ বছরেও নিয়োগ পাননি কেউ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার জন্য শিক্ষা, বিশেষ করে কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্বারোপ করে সেটিকে দেশের যুব সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবার অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সবার জন্য কর্মসংস্থানের নির্দেশণা দিয়েছেন, ঠিক সে মুহুর্তে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে শতাধিক কর্মপ্রত্যাশি মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। তবে বাংলাদেশ টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড বা টিইবি কর্মকর্তা বললেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ বা একই জাতীয় নামে শিক্ষাপ ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও মূলত: এসবের কোন বৈধতা নেই। এ ধরণের প্রতিষ্ঠান খোলার আগে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে।
দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় অবৈধভাবে নির্মিত শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নামক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করলেও তাদের কেউ পাননি নিয়োগপত্র বা বৈধ কোন কাগজপত্র। একের পর এক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি পরিবর্তণ করা হলেও জানেন না অধিকাংশ সদস্য। সভাপতি নিজেই এসব করেন আর বাধ সাধলে যাকে তাকে যখন-তখন বের করে দেন প্রতিষ্ঠান থেকে।
পূর্বের দুটি ব্যবস্থাপনা কমিটিকে পাশ কাটিয়ে সভাপতি তৃতীয় কমিটি অনুমোদনের জন্য জমা দেন বগুড়ায় অবস্থিত কথিত মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে। প্রস্তাবিত ওই কমিটির রেজুলেশনে সদস্যসচিব বা অধ্যক্ষের স্বাক্ষর ভূয়া মর্মে তা অনুমোদন না দেয়ার জন্যও আপত্তি দেন সদস্যসচিব। কিন্তু কমিটি অনুমোদিত হয় এবং অনুমোদনের এক মাস আগেই সভাপতি ব্যাংকের হিসাব থেকে একক ¯া^াক্ষরে তুলে নিয়েছেন এক লাখ টাকা। মৃদু প্রতিবাদ করায় দু’মাস আগে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন, মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানে পা না রাখার জন্য। আবার হঠাৎ করে কোন কারণদর্শাণো ছাড়াই ১১ জুন সভাপতি অধ্যক্ষকে অব্যাহতি দিয়েছেন, তার বাড়ির ঠিকানায় পাঠিয়ে দিয়েছেন ওই চিঠি । এ নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধারা, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও অধিকাংশ শিক্ষক।
ঘনঘন পরিবর্তণ করা হয় ব্যবস্থাপনা কমিটি। অধ্যক্ষের বদলে সভাপতিই সব প্রশাসনিক কাজ করেন। মন:পুত না হলে যাকে তাকে যখন-তখন বের করে দেন প্রতিষ্ঠান থেকে। শিক্ষক-কর্মচারিদের ছুটি দেন সভাপতি নিজে। শিক্ষার্থীদের চাঁদা ও সব পরিক্ষার ফিস জমা হয় সভাপতির কাছেই। কারিগরি বোর্ডের স্থলে অনুমোদন দিচ্ছে বগুড়ার ট্রাস্টিবোর্ড। সভাপতি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কোচিংসেন্টার চালু করেছেন এবং অফিসের একটি অংশ সাবলেট দিয়েছেন। টিইবি কর্মকর্তা বললেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ জাতীয় শিক্ষাপ ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও এসবের বৈধতা নেই।
কর্মরত কতিপয় শিক্ষক-কর্মচারি ও এলাকাবাসি জানান, বছর পাঁচেক আগে লুৎফর রহমান টুলু সভাপতি হিসাবে শৈলকুপা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে তার নিজ নামে লিজ নেয়া জমিতে পাকা ঘর বানিয়ে চালু করেন শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নামক প্রতিষ্ঠান। প্রাইমারি ও হাইস্কুল পর্যায়ে ক্লাস শুরু করলেও ওই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়া হয় অধ্যক্ষসহ ৩৭ জন কর্মচারি। প্রায় প্রত্যেকের কাছ থেকে অনুদানের নামে অর্থ নিয়ে তা রাখা হয় সভাপতির নিজের কাছেই। দেশের টেকনিক্যাল বা কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কারিগরি বোর্ডের অধীন হলেও সেটি বোর্ডের নজরে যায়নি। বগুড়ায় অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ট্রাস্টি বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়।
ট্রাস্টিবোার্ডের কথিত কর্মকর্তাদের সাথেই মূলত শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নামক প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ। ওই প্রতিষ্ঠানটিকে অনুমোদন দেবার আবেদন করা হলে পাঁচ লাখ টাকা জমা দিয়ে চলতি বছর ২৩ মার্চ বগুড়ার কথিত ট্রাস্টিবোর্ড অনুমাদন দিয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান বা একাডেমিক স্বীকৃতির জন্য শৈলকুপার এ প্রতিষ্ঠান এখনও তার ধারেকাছে যায়নি। বগুড়ার কথিত ট্রাস্টিবোর্ডের চারজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাও শৈলকুপা এসে প্রতিষ্ঠানটি দেখে গেছেন বলে সভাপতি লুৎফর রহমান টুলু জানালেন।
শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ-ও অধ্যক্ষ ও সদস্যসচিব মওলা হাবিব জানালেন, তাকে বড় একটা অংকের বিনিময়ে দায়িত্ব দেয়া হলেও আজতক তিনিসহ কাউকেই নিয়োগপত্র দেয়া হয়নি। প্রশাসনিক ও অন্যান্য দাপ্তরিক কাজ থেকে তাকে দূরে রেখে সভাপতি নিজেই সব করে থাকেন। শিক্ষক-কর্মচারিদের হাজিরা খাতা এবং হিসাব-নিকাশ অধ্যক্ষের বদলে তিনি নিজের কাছে রেখেছেন। সবার ছুটি ও এবং সুযোগ-সুবিধা তিনিই নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের নির্দেশণা দেয়া হয়েছে সব কাজে অধ্যক্ষের বদলে সভাপতির সাথে যোগাযোগের জন্য। শিক্ষার্থীদের দেয়া ফি এবং চাঁদাও সভাপতি নিজেই আদায় করে তার কাছে রাখেন। সভাপতি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কোচিংসেন্টার চালু করেছেন এবং অফিসের একটি অংশ সাবলেট দিয়েছেন । তিনি কতিপয় শিক্ষক-কর্মচারিকে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন যা শিক্ষাদান কার্যক্রমের জন্য শুভ নয়।
আগের দুটি ব্যবস্থাপনা কমিটি পর্যায়ক্রমে বাতিল করে অধ্যক্ষের জাল স্বাক্ষরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে খোলা প্রতিষ্ঠানের হিসাব যৌথ স্বাক্ষরের স্থলে সভাপতি এককভাবে পরিচালনা করে টাকা উত্তোলন করছেন এমন খবরের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা জানানোর পরও সেখান থেকে উত্তোলন করা হয়েছে এক লাখ টাকা।
শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ-পরিচালনা পর্ষদের বেশ কয়েকজন সদস্য যারা সবাই বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সিনিয়র সিটিজেন জানান, তাদের সাথে অলোচনা না করেই সভাপতি তৃতীয়বারের মত কমিটি তৈরি করেছেন। সব কাজই তিনি নিজের হাতে করছেন বিধায় তাদের মধ্যে ইতোমধ্যে বিভেদ সৃস্টি হয়েছে। তাছাড়া, কারিগরি বোর্ডের বদলে বগুড়ার কথিত ট্রাস্টিবোর্ড়ের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টিও তারা বুঝতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।
এব্যাপারে শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ-পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি লুৎফর রহমান টুলুর সাথে কথা বললে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে দাবি করে জানান, যেহেতু বেশকিছু শিক্ষক-কর্মচারি অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তাই তাকে মাস দুয়েক হলো সবরকম কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে । গত ১১ জুন তাকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দিয়ে সহকারি শিক্ষক রফিকুল ইসলাম সবুজকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে তা বগুড়ার ট্রাস্টিবোর্ড এবং ঝিনাইদহের সংশ্লিষ্ট শিক্ষা আফিস ও স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে বকওে জানলেন সভাপতি লুৎফর রহমান টুলু।
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
১৩ জুন, ২০২৩, 2:51 PM
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার জন্য শিক্ষা, বিশেষ করে কারিগরি শিক্ষায় গুরুত্বারোপ করে সেটিকে দেশের যুব সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাবার অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সবার জন্য কর্মসংস্থানের নির্দেশণা দিয়েছেন, ঠিক সে মুহুর্তে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে শতাধিক কর্মপ্রত্যাশি মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা। তবে বাংলাদেশ টেকনিক্যাল এডুকেশন বোর্ড বা টিইবি কর্মকর্তা বললেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ বা একই জাতীয় নামে শিক্ষাপ ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও মূলত: এসবের কোন বৈধতা নেই। এ ধরণের প্রতিষ্ঠান খোলার আগে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হবে।
দীর্ঘ ৫ বছর ধরে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গায় অবৈধভাবে নির্মিত শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নামক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করলেও তাদের কেউ পাননি নিয়োগপত্র বা বৈধ কোন কাগজপত্র। একের পর এক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি পরিবর্তণ করা হলেও জানেন না অধিকাংশ সদস্য। সভাপতি নিজেই এসব করেন আর বাধ সাধলে যাকে তাকে যখন-তখন বের করে দেন প্রতিষ্ঠান থেকে।
পূর্বের দুটি ব্যবস্থাপনা কমিটিকে পাশ কাটিয়ে সভাপতি তৃতীয় কমিটি অনুমোদনের জন্য জমা দেন বগুড়ায় অবস্থিত কথিত মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ট্রাস্টি বোর্ডের কাছে। প্রস্তাবিত ওই কমিটির রেজুলেশনে সদস্যসচিব বা অধ্যক্ষের স্বাক্ষর ভূয়া মর্মে তা অনুমোদন না দেয়ার জন্যও আপত্তি দেন সদস্যসচিব। কিন্তু কমিটি অনুমোদিত হয় এবং অনুমোদনের এক মাস আগেই সভাপতি ব্যাংকের হিসাব থেকে একক ¯া^াক্ষরে তুলে নিয়েছেন এক লাখ টাকা। মৃদু প্রতিবাদ করায় দু’মাস আগে অধ্যক্ষের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন, মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানে পা না রাখার জন্য। আবার হঠাৎ করে কোন কারণদর্শাণো ছাড়াই ১১ জুন সভাপতি অধ্যক্ষকে অব্যাহতি দিয়েছেন, তার বাড়ির ঠিকানায় পাঠিয়ে দিয়েছেন ওই চিঠি । এ নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধারা, ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও অধিকাংশ শিক্ষক।
ঘনঘন পরিবর্তণ করা হয় ব্যবস্থাপনা কমিটি। অধ্যক্ষের বদলে সভাপতিই সব প্রশাসনিক কাজ করেন। মন:পুত না হলে যাকে তাকে যখন-তখন বের করে দেন প্রতিষ্ঠান থেকে। শিক্ষক-কর্মচারিদের ছুটি দেন সভাপতি নিজে। শিক্ষার্থীদের চাঁদা ও সব পরিক্ষার ফিস জমা হয় সভাপতির কাছেই। কারিগরি বোর্ডের স্থলে অনুমোদন দিচ্ছে বগুড়ার ট্রাস্টিবোর্ড। সভাপতি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কোচিংসেন্টার চালু করেছেন এবং অফিসের একটি অংশ সাবলেট দিয়েছেন। টিইবি কর্মকর্তা বললেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ জাতীয় শিক্ষাপ ্রতিষ্ঠান খোলা হলেও এসবের বৈধতা নেই।
কর্মরত কতিপয় শিক্ষক-কর্মচারি ও এলাকাবাসি জানান, বছর পাঁচেক আগে লুৎফর রহমান টুলু সভাপতি হিসাবে শৈলকুপা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছ থেকে তার নিজ নামে লিজ নেয়া জমিতে পাকা ঘর বানিয়ে চালু করেন শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নামক প্রতিষ্ঠান। প্রাইমারি ও হাইস্কুল পর্যায়ে ক্লাস শুরু করলেও ওই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়া হয় অধ্যক্ষসহ ৩৭ জন কর্মচারি। প্রায় প্রত্যেকের কাছ থেকে অনুদানের নামে অর্থ নিয়ে তা রাখা হয় সভাপতির নিজের কাছেই। দেশের টেকনিক্যাল বা কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কারিগরি বোর্ডের অধীন হলেও সেটি বোর্ডের নজরে যায়নি। বগুড়ায় অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ ট্রাস্টি বোর্ডের নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়।
ট্রাস্টিবোার্ডের কথিত কর্মকর্তাদের সাথেই মূলত শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ নামক প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ। ওই প্রতিষ্ঠানটিকে অনুমোদন দেবার আবেদন করা হলে পাঁচ লাখ টাকা জমা দিয়ে চলতি বছর ২৩ মার্চ বগুড়ার কথিত ট্রাস্টিবোর্ড অনুমাদন দিয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান বা একাডেমিক স্বীকৃতির জন্য শৈলকুপার এ প্রতিষ্ঠান এখনও তার ধারেকাছে যায়নি। বগুড়ার কথিত ট্রাস্টিবোর্ডের চারজন উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাও শৈলকুপা এসে প্রতিষ্ঠানটি দেখে গেছেন বলে সভাপতি লুৎফর রহমান টুলু জানালেন।
শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ-ও অধ্যক্ষ ও সদস্যসচিব মওলা হাবিব জানালেন, তাকে বড় একটা অংকের বিনিময়ে দায়িত্ব দেয়া হলেও আজতক তিনিসহ কাউকেই নিয়োগপত্র দেয়া হয়নি। প্রশাসনিক ও অন্যান্য দাপ্তরিক কাজ থেকে তাকে দূরে রেখে সভাপতি নিজেই সব করে থাকেন। শিক্ষক-কর্মচারিদের হাজিরা খাতা এবং হিসাব-নিকাশ অধ্যক্ষের বদলে তিনি নিজের কাছে রেখেছেন। সবার ছুটি ও এবং সুযোগ-সুবিধা তিনিই নিয়ন্ত্রণ করছেন। তাদের নির্দেশণা দেয়া হয়েছে সব কাজে অধ্যক্ষের বদলে সভাপতির সাথে যোগাযোগের জন্য। শিক্ষার্থীদের দেয়া ফি এবং চাঁদাও সভাপতি নিজেই আদায় করে তার কাছে রাখেন। সভাপতি প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরে কোচিংসেন্টার চালু করেছেন এবং অফিসের একটি অংশ সাবলেট দিয়েছেন । তিনি কতিপয় শিক্ষক-কর্মচারিকে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন যা শিক্ষাদান কার্যক্রমের জন্য শুভ নয়।
আগের দুটি ব্যবস্থাপনা কমিটি পর্যায়ক্রমে বাতিল করে অধ্যক্ষের জাল স্বাক্ষরে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে খোলা প্রতিষ্ঠানের হিসাব যৌথ স্বাক্ষরের স্থলে সভাপতি এককভাবে পরিচালনা করে টাকা উত্তোলন করছেন এমন খবরের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা জানানোর পরও সেখান থেকে উত্তোলন করা হয়েছে এক লাখ টাকা।
শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ-পরিচালনা পর্ষদের বেশ কয়েকজন সদস্য যারা সবাই বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সিনিয়র সিটিজেন জানান, তাদের সাথে অলোচনা না করেই সভাপতি তৃতীয়বারের মত কমিটি তৈরি করেছেন। সব কাজই তিনি নিজের হাতে করছেন বিধায় তাদের মধ্যে ইতোমধ্যে বিভেদ সৃস্টি হয়েছে। তাছাড়া, কারিগরি বোর্ডের বদলে বগুড়ার কথিত ট্রাস্টিবোর্ড়ের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালনার বিষয়টিও তারা বুঝতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন।
এব্যাপারে শৈলকুপা মুক্তিযোদ্ধা টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ-পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি লুৎফর রহমান টুলুর সাথে কথা বললে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে দাবি করে জানান, যেহেতু বেশকিছু শিক্ষক-কর্মচারি অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তাই তাকে মাস দুয়েক হলো সবরকম কাজ থেকে বিরত রাখা হয়েছে । গত ১১ জুন তাকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দিয়ে সহকারি শিক্ষক রফিকুল ইসলাম সবুজকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দিয়ে তা বগুড়ার ট্রাস্টিবোর্ড এবং ঝিনাইদহের সংশ্লিষ্ট শিক্ষা আফিস ও স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে বকওে জানলেন সভাপতি লুৎফর রহমান টুলু।