ফুলবাড়ীতে ভিডব্লিউবি’র চাল বিতরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ

মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
২৫ মে, ২০২৩, 10:34 PM

ফুলবাড়ীতে ভিডব্লিউবি’র চাল বিতরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ভিডব্লিউবি’র চাল বিতরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার ৭ নং শিবনগর ইউনিয়নে ভিডব্লিউবি’র চাল বিতরণের সময় সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সামেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন উপকারভোগীরা। জানা গেছে, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর পরিচালিত ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে অতিদরিদ্র নারীদের উপকারভোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে দুইশত টাকা সঞ্চয় জমাদানের মাধ্যমে প্রতিমাসে ৩০কেজি চাল বিতরণ করা হয়।
উপকারভোগীরা প্রতিমাসে তাদের কার্ডে সঞ্চয় জমা করেন ২০০ টাকা করে। সঞ্চয় স্লিপের মাধ্যমে প্রতি মাসে এই চাল দেয়া হয়। এই সঞ্চিত অর্থ বছর শেষে তাদের ফেরত দেয়া হয়। এতে তারা পরিবারের জন্য সঞ্চয় করতে উদ্বুদ্ধ হবেন এবং সেই সঞ্চিত অর্থ পরিবারের বিভিন্ন কাজে লাগাতে পারবেন। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার উপজেলা শিবনগর ইউনিয়নে ৪৪০ জন উপকারভোগী অতিদরিদ্র নারীকে মে মাসের চাল বিতরণ করা হয়। কিন্তু প্রত্যেক উপকারভোগীর কাছে ২০০ টাকা সঞ্চয়ের স্থলে ২২০ টাকা আদায় করা হলেও অতিরিক্ত ২০ টাকা বইয়ে জমা করা হয়নি। কী কারণে অতিরিক্ত ২০ টাকা নেয়া হচ্ছে জানেন না উপকার ভোগীরা। কোন কোন উপকারভোগী বলছেন, চৌকিদারের খরচ বাবদ সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সামেদুল ইসলামের নির্দেশে এই টাকা নেয়া হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে উপকারভোগি আমিরন নেছা, কার্ড নং-৪/৮৫, জান্নাতুল ফেরদৌস-৪/৯, রোজিনা, ওছিমন আরা, নার্গিস বেগম, ফারজানাসহ অনেকেই জানান, আমরা ৫ মাস ধরে এই চাল উত্তোলন করছি। প্রতি মাসে চাল উত্তোলন করতে ২২০ টাকা করে জমা নিয়ে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের কাছে থাকা সঞ্চয় কার্ড বা বহিতে সঞ্চয়ের ঘরে ২০০ টাকা করে জমা করা হলেও অতিরিক্ত ২০ টাকা জমা হয়না এবং কোন হিসেব নেই। কী কারণে এই অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয় তাও আমরা জানি না। তবে শুনেছি এই অতিরিক্ত ২০ টাকা চেয়ারম্যান সামেদুল ইসলামের নির্দেশে চৌকিদারে খরচ বাবদ তোলা হয়।
সরজমিনে বৃহস্পতিবার শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের গিয়ে দেখা যায়, পরিষদের একপাশে ইউপি সচিব ও মেম্বার বসে মাষ্টার রোলে টিপ সহি নিচ্ছেন উপকার ভোগীদের। অন্যদিকে ব্যাংকের প্রতিনিধিরা বসে উপকার ভোগীদের কাছ থেকে ২২০ টাকা করে জমা নিচ্ছেন। সেখানে দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার এবং ইউপি চেয়ারম্যানের দেখা মেলেনি।এ সময় অতিরিক্ত ২০ টাকার কথা জানতে চাইলে শিবনগর ইউনিয়নের সচিব প্রদীপ কুমার অধিকারী বলেন, এ বিষয় আমি কিছু জানি না, চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন। ব্যাংক প্রতিনিধিরা বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশেই তারা অতিরিক্ত ২০ টাকা নিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে ট্যাগ অফিসার উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সোহানুর রহমান সুমন মুঠোফোনে জানান, চাল বিতরণের বিষয় উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে চাল উত্তোলনের পর বিতরণের সময় সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের জানানোর কথা থাকলেও তিনি আমাকে জানাননি।
এদিকে শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামেদুল ইসলামের সাথে বিষয়টি নিয়ে মুঠো ফোনে কথা বললে, প্রথমে তিনি বলেন, চাল বিতরণে চৌকিদারসহ সহযোগীদের খরচ বাবদ ওই অতিরিক্ত ২০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়নে নেয়া হয় তাই আমিও নিচ্ছি। তবে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর বিষয়টি অবগত নন। এটি নেয়ার কোন নিয়ম নেই তাই আন অফিসিয়ালি নেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে তিনি আবারও বলেন, আগে ২০০ টাকা করেই নেয়া হতো।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের নির্দেশে এই অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে। এ বিষয় কোন লিখিত চিঠি নেই। মৌখিকভাবে তারা বিষয়টি জানিয়েছেন। উপকারভোগীদের বইয়ে ভুলবশত ২০০ টাকা করে জমা করা হলেও ব্যাংক একাউন্টে ২২০ টাকা করেই জমা করা হবে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রীতা মন্ডল জানান, উপকারভোগীদের কাছ থেকে ২২০ টাকা করে নেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। তবে বইয়ে ২০০ টাকা করে জমা করার বিষয়টি চেয়ারম্যানের হেয়ালিপনা। চেয়ারম্যানের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই ব্যাংক স্টেটমেন্টের সাথে মিলিয়ে দেখা হবে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন, এ ব্যাপারে চেয়ারম্যানকে সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মোকাররম হোসেন, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর)
২৫ মে, ২০২৩, 10:34 PM

দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে ভিডব্লিউবি’র চাল বিতরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুর সাড়ে ১২টায় উপজেলার ৭ নং শিবনগর ইউনিয়নে ভিডব্লিউবি’র চাল বিতরণের সময় সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সামেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন উপকারভোগীরা। জানা গেছে, মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তর পরিচালিত ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি) প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে অতিদরিদ্র নারীদের উপকারভোগী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে দুইশত টাকা সঞ্চয় জমাদানের মাধ্যমে প্রতিমাসে ৩০কেজি চাল বিতরণ করা হয়।
উপকারভোগীরা প্রতিমাসে তাদের কার্ডে সঞ্চয় জমা করেন ২০০ টাকা করে। সঞ্চয় স্লিপের মাধ্যমে প্রতি মাসে এই চাল দেয়া হয়। এই সঞ্চিত অর্থ বছর শেষে তাদের ফেরত দেয়া হয়। এতে তারা পরিবারের জন্য সঞ্চয় করতে উদ্বুদ্ধ হবেন এবং সেই সঞ্চিত অর্থ পরিবারের বিভিন্ন কাজে লাগাতে পারবেন। এরই প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার উপজেলা শিবনগর ইউনিয়নে ৪৪০ জন উপকারভোগী অতিদরিদ্র নারীকে মে মাসের চাল বিতরণ করা হয়। কিন্তু প্রত্যেক উপকারভোগীর কাছে ২০০ টাকা সঞ্চয়ের স্থলে ২২০ টাকা আদায় করা হলেও অতিরিক্ত ২০ টাকা বইয়ে জমা করা হয়নি। কী কারণে অতিরিক্ত ২০ টাকা নেয়া হচ্ছে জানেন না উপকার ভোগীরা। কোন কোন উপকারভোগী বলছেন, চৌকিদারের খরচ বাবদ সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান সামেদুল ইসলামের নির্দেশে এই টাকা নেয়া হচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে উপকারভোগি আমিরন নেছা, কার্ড নং-৪/৮৫, জান্নাতুল ফেরদৌস-৪/৯, রোজিনা, ওছিমন আরা, নার্গিস বেগম, ফারজানাসহ অনেকেই জানান, আমরা ৫ মাস ধরে এই চাল উত্তোলন করছি। প্রতি মাসে চাল উত্তোলন করতে ২২০ টাকা করে জমা নিয়ে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হয়। কিন্তু আমাদের কাছে থাকা সঞ্চয় কার্ড বা বহিতে সঞ্চয়ের ঘরে ২০০ টাকা করে জমা করা হলেও অতিরিক্ত ২০ টাকা জমা হয়না এবং কোন হিসেব নেই। কী কারণে এই অতিরিক্ত টাকা নেয়া হয় তাও আমরা জানি না। তবে শুনেছি এই অতিরিক্ত ২০ টাকা চেয়ারম্যান সামেদুল ইসলামের নির্দেশে চৌকিদারে খরচ বাবদ তোলা হয়।
সরজমিনে বৃহস্পতিবার শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের গিয়ে দেখা যায়, পরিষদের একপাশে ইউপি সচিব ও মেম্বার বসে মাষ্টার রোলে টিপ সহি নিচ্ছেন উপকার ভোগীদের। অন্যদিকে ব্যাংকের প্রতিনিধিরা বসে উপকার ভোগীদের কাছ থেকে ২২০ টাকা করে জমা নিচ্ছেন। সেখানে দায়িত্বরত ট্যাগ অফিসার এবং ইউপি চেয়ারম্যানের দেখা মেলেনি।এ সময় অতিরিক্ত ২০ টাকার কথা জানতে চাইলে শিবনগর ইউনিয়নের সচিব প্রদীপ কুমার অধিকারী বলেন, এ বিষয় আমি কিছু জানি না, চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন। ব্যাংক প্রতিনিধিরা বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশেই তারা অতিরিক্ত ২০ টাকা নিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে ট্যাগ অফিসার উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. সোহানুর রহমান সুমন মুঠোফোনে জানান, চাল বিতরণের বিষয় উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে চাল উত্তোলনের পর বিতরণের সময় সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের জানানোর কথা থাকলেও তিনি আমাকে জানাননি।
এদিকে শিবনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সামেদুল ইসলামের সাথে বিষয়টি নিয়ে মুঠো ফোনে কথা বললে, প্রথমে তিনি বলেন, চাল বিতরণে চৌকিদারসহ সহযোগীদের খরচ বাবদ ওই অতিরিক্ত ২০ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। প্রতিটি ইউনিয়নে নেয়া হয় তাই আমিও নিচ্ছি। তবে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর বিষয়টি অবগত নন। এটি নেয়ার কোন নিয়ম নেই তাই আন অফিসিয়ালি নেয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে তিনি আবারও বলেন, আগে ২০০ টাকা করেই নেয়া হতো।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের নির্দেশে এই অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে। এ বিষয় কোন লিখিত চিঠি নেই। মৌখিকভাবে তারা বিষয়টি জানিয়েছেন। উপকারভোগীদের বইয়ে ভুলবশত ২০০ টাকা করে জমা করা হলেও ব্যাংক একাউন্টে ২২০ টাকা করেই জমা করা হবে। উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রীতা মন্ডল জানান, উপকারভোগীদের কাছ থেকে ২২০ টাকা করে নেয়ার নির্দেশনা রয়েছে। তবে বইয়ে ২০০ টাকা করে জমা করার বিষয়টি চেয়ারম্যানের হেয়ালিপনা। চেয়ারম্যানের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই ব্যাংক স্টেটমেন্টের সাথে মিলিয়ে দেখা হবে।
বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ জাফর আরিফ চৌধুরী বলেন, এ ব্যাপারে চেয়ারম্যানকে সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।