অনেকের মধ্যে থেকেও একা লাগে?
নাগরিক অনলাইন ডেস্ক
৩০ এপ্রিল, ২০২৩, 11:04 PM
অনেকের মধ্যে থেকেও একা লাগে?
বর্তমান সময়টাই মানসিক অবসাদের। কোথাও একদণ্ড শান্তির অবকাশ নেই। দিনশেষে আমরা সবাই একা–আমাদের এই কথাটি তো আছেই। তবে আমরা বর্তমানে কোলাহলের মাঝেও একা। এমনটা হওয়া কি ঠিক?
অনেকে বলেন, এই ভাবনা একধরনের রোগ। আসলেই কি তাই?
হ্যাঁ, অনেকে এমনটা বলেন। তবে বাস্তবে রোগ নয়; বলা যায়, আমাদের কাঠামো ও বর্তমান সংকটময় মুহূর্তের মাঝেও নিঃসঙ্গবোধ কাজ করে। এ সমস্যা থেকে বের হওয়ার কি উপায় নেই?
আছে, তবে এই বিষয়গুলো এতটাই সামান্য যে আপনি হয়তো ভেবেও দেখেননি। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? আসুন জেনে নিই বিষয়গুলো–
সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে যত মাথাব্যথা
সামাজিক সম্পর্কের একটি আদর্শ ও অনুভূত কাঠামো রয়েছে। সেই সম্পর্কে সামান্য গোলযোগ হলেই মর্মপীড়ার শুরু। সেখান থেকেই নিঃসঙ্গতা। বন্ধুরা নিয়মিত আড্ডা দিচ্ছেন, প্রিয়জনের সঙ্গে ঠিকই যোগাযোগ হচ্ছে, পরিবারেও সময় দিচ্ছেন— কিন্তু হয়তো এমন কিছু ঘটেছে যা আপনার মনে দাগ কেটেছে। অনেক সময় খুব সামান্য একটি ঘটনা আপনার মনে ছাপ ফেলে। সামনাসামনি আপনি হয়তো বলছেন সমস্যা নেই, কিন্তু আসলে এটিও সমস্যা। একটা চোরাকাঁটার মতো বিষয়টি মনের ভেতর আটকে আছে। এমনটা পরিবার, প্রিয়জন, বন্ধু সবার ক্ষেত্রেই হয়। এমন হলে তাদের সঙ্গে আলোচনা করুন। ঘটনা ঘটার কদিন পরই বলুন। ভুল বুঝাবুঝির সমাধান হয়ে একটি ভালো মুহূর্ত হতে কতক্ষণ?
আত্মকেন্দ্রিকতা বনাম সামাজিকতা
আমরা সবাই নিজেকে একটু সময় দিতে ভালোবাসি। মার্কিনরা এমন হলে বলেন, জাস্ট লিভ মি এলোন। এমন মুহূর্ত সোজাসাপ্টা আমাদের সংস্কৃতিতে বলার পথ খুব কম। নিজেকে সময় দিতে গিয়ে অভিমান ভর করে থাকার মানে হয় না। নিজেকে সময় দিন। তবে তা ঘরের কোণে নিজেকে আবদ্ধ রেখে নয় বরং এ সময় নানা কাজে মনোযোগ দিন। বই পড়ুন, ঘুরতে যান, ফিল্ম দেখুন।
বুদ্ধিবৃত্তিক যন্ত্রণার তাড়না
আমাদের অনেকের মধ্যেই ইগো কাজ করে। আবার যারা একটু বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা করতে চান তারা সচরাচর নিঃসঙ্গতায় ভোগেন। কারণ, অনেক মানুষের মধ্যে তারা কথা বলার শান্তিটুকু পান না। এমনটা হলে সত্যিই খারাপ। তবে এসব নিয়ে এত ভাবার কি আছে? নিজের মতো বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা চালান। বিভিন্ন প্লাটফর্মে সেই চর্চা প্রকাশ করুন। মানুষের সঙ্গেই আলাপ করতে গেলে শিল্প-সাহিত্য তো থাকতো না।
থেরাপিস্টের বিষয়ে গোঁড়া ভাবনার দরকার নেই
একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া নিয়ে আমাদের মনে সংস্কার থাকে। কিন্তু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা থেরাপিস্টের ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের ভুল ধারণা রয়েছে। একজন কনসালট্যান্ট আপনার কথা মন দিয়ে শোনেন। সেটি কোথাও ছড়ায় না। নিরপেক্ষ একটি যাচাইও তিনি দেন। পরিচিতদের মাঝে থেকে আমাদের মধ্যে যে অভিমান থাকে তা থেরাপিস্টের সামনে কাজ করে না। আর আমরা চাই পরামর্শ। এমন একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ পেলে আপনার একাকিত্ববোধ থেকে বের হওয়ার একটা সুরাহা তো পাওয়া যাবে, তাই না?
বিশ্রাম ও স্বাস্থ্যের কথা ভাবা
মনের সঙ্গে শরীরের সংযোগ আছে। সুস্থ দেহে সুন্দর মন—এমন কথা আজকাল কমই শোনা যায়। কিন্তু কথাটির মর্ম বুঝতে হবে। ক্লান্তি আর অবসাদ থাকলে অনেক সময় কোলাহলে বিরক্তি লাগে। ভালো কথাও বিরক্তিকর মনে হয়। স্বাভাবিক। তাই পর্যাপ্ত ঘুম আর বিশ্রামে মনোযোগ দিন। বিশ্রামের মধ্যে অবকাশ যাপন এবং সৃজনশীল চর্চাও কিন্তু অন্তর্ভুক্ত। আর খাদ্যতালিকার উন্নতি করুন। স্বাস্থ্যেও মনোযোগ দিন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরে আসুন
স্মার্টফোন আর আপনি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত—এটাই এখন সত্য। কিন্তু এমনটা হওয়া উচিত নয়। বরং প্রযুক্তি আর ব্যক্তিগত জীবনে সমন্বয় করুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা হওয়াও এই কোলাহলের অংশ। নিজেকে এই বৃত্ত থেকে বের করুন। অন্য কাজে নিজের মেধা বিনিয়োগ করুন। একাকিত্ব ধারেকাছেও আসবে না। সময় টিভি
নাগরিক অনলাইন ডেস্ক
৩০ এপ্রিল, ২০২৩, 11:04 PM
বর্তমান সময়টাই মানসিক অবসাদের। কোথাও একদণ্ড শান্তির অবকাশ নেই। দিনশেষে আমরা সবাই একা–আমাদের এই কথাটি তো আছেই। তবে আমরা বর্তমানে কোলাহলের মাঝেও একা। এমনটা হওয়া কি ঠিক?
অনেকে বলেন, এই ভাবনা একধরনের রোগ। আসলেই কি তাই?
হ্যাঁ, অনেকে এমনটা বলেন। তবে বাস্তবে রোগ নয়; বলা যায়, আমাদের কাঠামো ও বর্তমান সংকটময় মুহূর্তের মাঝেও নিঃসঙ্গবোধ কাজ করে। এ সমস্যা থেকে বের হওয়ার কি উপায় নেই?
আছে, তবে এই বিষয়গুলো এতটাই সামান্য যে আপনি হয়তো ভেবেও দেখেননি। কি বিশ্বাস হচ্ছে না? আসুন জেনে নিই বিষয়গুলো–
সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে যত মাথাব্যথা
সামাজিক সম্পর্কের একটি আদর্শ ও অনুভূত কাঠামো রয়েছে। সেই সম্পর্কে সামান্য গোলযোগ হলেই মর্মপীড়ার শুরু। সেখান থেকেই নিঃসঙ্গতা। বন্ধুরা নিয়মিত আড্ডা দিচ্ছেন, প্রিয়জনের সঙ্গে ঠিকই যোগাযোগ হচ্ছে, পরিবারেও সময় দিচ্ছেন— কিন্তু হয়তো এমন কিছু ঘটেছে যা আপনার মনে দাগ কেটেছে। অনেক সময় খুব সামান্য একটি ঘটনা আপনার মনে ছাপ ফেলে। সামনাসামনি আপনি হয়তো বলছেন সমস্যা নেই, কিন্তু আসলে এটিও সমস্যা। একটা চোরাকাঁটার মতো বিষয়টি মনের ভেতর আটকে আছে। এমনটা পরিবার, প্রিয়জন, বন্ধু সবার ক্ষেত্রেই হয়। এমন হলে তাদের সঙ্গে আলোচনা করুন। ঘটনা ঘটার কদিন পরই বলুন। ভুল বুঝাবুঝির সমাধান হয়ে একটি ভালো মুহূর্ত হতে কতক্ষণ?
আত্মকেন্দ্রিকতা বনাম সামাজিকতা
আমরা সবাই নিজেকে একটু সময় দিতে ভালোবাসি। মার্কিনরা এমন হলে বলেন, জাস্ট লিভ মি এলোন। এমন মুহূর্ত সোজাসাপ্টা আমাদের সংস্কৃতিতে বলার পথ খুব কম। নিজেকে সময় দিতে গিয়ে অভিমান ভর করে থাকার মানে হয় না। নিজেকে সময় দিন। তবে তা ঘরের কোণে নিজেকে আবদ্ধ রেখে নয় বরং এ সময় নানা কাজে মনোযোগ দিন। বই পড়ুন, ঘুরতে যান, ফিল্ম দেখুন।
বুদ্ধিবৃত্তিক যন্ত্রণার তাড়না
আমাদের অনেকের মধ্যেই ইগো কাজ করে। আবার যারা একটু বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা করতে চান তারা সচরাচর নিঃসঙ্গতায় ভোগেন। কারণ, অনেক মানুষের মধ্যে তারা কথা বলার শান্তিটুকু পান না। এমনটা হলে সত্যিই খারাপ। তবে এসব নিয়ে এত ভাবার কি আছে? নিজের মতো বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা চালান। বিভিন্ন প্লাটফর্মে সেই চর্চা প্রকাশ করুন। মানুষের সঙ্গেই আলাপ করতে গেলে শিল্প-সাহিত্য তো থাকতো না।
থেরাপিস্টের বিষয়ে গোঁড়া ভাবনার দরকার নেই
একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া নিয়ে আমাদের মনে সংস্কার থাকে। কিন্তু মনোরোগ বিশেষজ্ঞ বা থেরাপিস্টের ভূমিকা সম্পর্কে আমাদের ভুল ধারণা রয়েছে। একজন কনসালট্যান্ট আপনার কথা মন দিয়ে শোনেন। সেটি কোথাও ছড়ায় না। নিরপেক্ষ একটি যাচাইও তিনি দেন। পরিচিতদের মাঝে থেকে আমাদের মধ্যে যে অভিমান থাকে তা থেরাপিস্টের সামনে কাজ করে না। আর আমরা চাই পরামর্শ। এমন একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ পেলে আপনার একাকিত্ববোধ থেকে বের হওয়ার একটা সুরাহা তো পাওয়া যাবে, তাই না?
বিশ্রাম ও স্বাস্থ্যের কথা ভাবা
মনের সঙ্গে শরীরের সংযোগ আছে। সুস্থ দেহে সুন্দর মন—এমন কথা আজকাল কমই শোনা যায়। কিন্তু কথাটির মর্ম বুঝতে হবে। ক্লান্তি আর অবসাদ থাকলে অনেক সময় কোলাহলে বিরক্তি লাগে। ভালো কথাও বিরক্তিকর মনে হয়। স্বাভাবিক। তাই পর্যাপ্ত ঘুম আর বিশ্রামে মনোযোগ দিন। বিশ্রামের মধ্যে অবকাশ যাপন এবং সৃজনশীল চর্চাও কিন্তু অন্তর্ভুক্ত। আর খাদ্যতালিকার উন্নতি করুন। স্বাস্থ্যেও মনোযোগ দিন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরে আসুন
স্মার্টফোন আর আপনি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত—এটাই এখন সত্য। কিন্তু এমনটা হওয়া উচিত নয়। বরং প্রযুক্তি আর ব্যক্তিগত জীবনে সমন্বয় করুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা হওয়াও এই কোলাহলের অংশ। নিজেকে এই বৃত্ত থেকে বের করুন। অন্য কাজে নিজের মেধা বিনিয়োগ করুন। একাকিত্ব ধারেকাছেও আসবে না। সময় টিভি