গুলিস্তানে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে ১৩টি প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন

নাগরিক প্রতিবেদক
১১ মার্চ, ২০২৩, 9:11 PM

গুলিস্তানে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে ১৩টি প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন
রাজধানীর গুলিস্তানে সিদ্দিকবাজারে ক্যাফে কুইন সেনিটারি মার্কেটে বিস্ফোরণের ঘটনায় ভবনের সামনের দিকের ৭টি পিলার ও বিম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি স্থিতিশীল করতে তৃতীয় দিনের মতো কাজ চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিকে স্থিতিশীল করতে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ১৩টি প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন করা হয়েছে।
ভবনটিকে ঝুঁকিমুক্ত করতে মোট ১৭টি প্রপিং স্থাপনের কথা রয়েছে। এছাড়াও ভবনের বেজমেন্ট থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের কাজও করা হয়েছে। এই প্রপিং সাপোর্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে এমএস (মাইল্ড স্টিল) পাইপ। ডায়ামিটার অনুযায়ী পাইপগুলোর ব্যাস ছয় ইঞ্চি। এই প্রপিংগুলো ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত বেইজ পিলারে সাপোর্ট হিসেবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা। রাজউক কর্মকর্তারা বলছেন, বিষ্ফোরণে ভবনটির অনেক ক্ষতি হয়েছে। ভবনের ২৪টি কলামের মধ্যে ৯টি কলাম ও বেইজ ভিম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যার কারণে ভবনটি সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনের অ্যাসেসমেন্ট করতে রাজউক ও বুয়েটের সমন্বয় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথমেই ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিকে স্থিতিশীল করতে প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন করা হচ্ছে। প্রপিং করা শেষে রাজউকের তত্ত্বাবধানে ভবনটির অ্যাসেসমেন্ড করা হবে। তারপর জানা যাবে ভবনের স্থায়ীত্ব কতটুকু। পরবর্তীতে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত সিদ্দিকবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজউকের তত্ত্বাবধানে শ্রমিকরা ভবনের প্রপিং সাপোর্ট স্থাপনের করছেন। লোহার পাইপগুলো কেটে দুই পাশে ঝালাই করে বসানো হচ্ছে গেটিজ। এরপর তৈরি প্রপিং সাপোর্ট নিয়ে ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত পিলারের পাশে মাপ অনুয়ায়ী বসানো হচ্ছে। সেখানেও ঝালাই করে দেওয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মরত এক শ্রমিক বলেন, গত শুক্রবার রাতে আমরা এখানে কাজ শুরু করেছি। এ পর্যন্ত ১৩টি প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।
আরও ৫টি প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন করা হবে। এরপর ভবনটিকে স্থিতিশীল বলা যাবে। এরপরও যদি আরও প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন করতে হয়, তবে রাজউকের পরামর্শে সেগুলো বসানোর কাজ চলবে। আপাতত ভবনটি অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত বলছেন এই শ্রমিকরা। প্রপিং সাপোর্ট বসানো শেষ হলে রাজউক ভবনের অ্যাসেসমেন্টের কাজ শুরু করবে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির সামনের সড়কটি বন্ধ রেখেই ভবনের কাজ চলছে। সড়কের নির্দিষ্ট অংশ সাময়িক বন্ধ থাকায় সিদ্দিকবাজার থেকে গুলিস্তান হয়ে পুরানা পল্টন পর্যন্ত সড়কে যানবাহনের প্রচ- চাপও বেড়ে গেছে। এই সড়কে যানবাহন খুব ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থল নিরাপদ রাখতে নিয়োজিত রয়েছেন র্যাব-পুলিশ সদস্যরা। এর আগে, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন কাজের অগ্রগতি দেখতে এসে রাজউকের জোন-৩ ও ৫ এর অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী রঙ্গন মন্ডল সাংবাদিকদের বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের অ্যাসেসমেন্ট করতে হবে। তারপর আমরা জানতে পারবো ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে না কি মেরামত করা যাবে।
এই অ্যাসেসমেন্ট করতে কম করে হলেও ৪৫ দিন সময় লাগবে। ৪৫ দিনের আগে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। গত ৭ মার্চ বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের কুইন্স স্যানেটারি মার্কেটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। বিস্ফোরণের ঘটনায় রাজধানীর বংশাল থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার একটি অপমৃত্যুর মামলা এবং বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বিস্ফোরণের ঘটনায় অবহেলার অভিযোগ এনে অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়।
দুটি মামলারই বাদী পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতনামা একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের গ্যাস সংযোগ, নকশাসহ কী কী গাফিলতি রয়েছে এবং ভবন মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের কোনো দায় আছে কিনা-এসব অবহেলাজনিত বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখবে পুলিশ।
নাগরিক প্রতিবেদক
১১ মার্চ, ২০২৩, 9:11 PM

রাজধানীর গুলিস্তানে সিদ্দিকবাজারে ক্যাফে কুইন সেনিটারি মার্কেটে বিস্ফোরণের ঘটনায় ভবনের সামনের দিকের ৭টি পিলার ও বিম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি স্থিতিশীল করতে তৃতীয় দিনের মতো কাজ চলছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিকে স্থিতিশীল করতে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে শনিবার বিকেল পর্যন্ত ১৩টি প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন করা হয়েছে।
ভবনটিকে ঝুঁকিমুক্ত করতে মোট ১৭টি প্রপিং স্থাপনের কথা রয়েছে। এছাড়াও ভবনের বেজমেন্ট থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের কাজও করা হয়েছে। এই প্রপিং সাপোর্ট তৈরিতে ব্যবহার করা হচ্ছে এমএস (মাইল্ড স্টিল) পাইপ। ডায়ামিটার অনুযায়ী পাইপগুলোর ব্যাস ছয় ইঞ্চি। এই প্রপিংগুলো ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত বেইজ পিলারে সাপোর্ট হিসেবে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা। রাজউক কর্মকর্তারা বলছেন, বিষ্ফোরণে ভবনটির অনেক ক্ষতি হয়েছে। ভবনের ২৪টি কলামের মধ্যে ৯টি কলাম ও বেইজ ভিম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যার কারণে ভবনটি সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ভবনের অ্যাসেসমেন্ট করতে রাজউক ও বুয়েটের সমন্বয় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথমেই ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিকে স্থিতিশীল করতে প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন করা হচ্ছে। প্রপিং করা শেষে রাজউকের তত্ত্বাবধানে ভবনটির অ্যাসেসমেন্ড করা হবে। তারপর জানা যাবে ভবনের স্থায়ীত্ব কতটুকু। পরবর্তীতে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত সিদ্দিকবাজারের ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের সামনে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাজউকের তত্ত্বাবধানে শ্রমিকরা ভবনের প্রপিং সাপোর্ট স্থাপনের করছেন। লোহার পাইপগুলো কেটে দুই পাশে ঝালাই করে বসানো হচ্ছে গেটিজ। এরপর তৈরি প্রপিং সাপোর্ট নিয়ে ভবনের ক্ষতিগ্রস্ত পিলারের পাশে মাপ অনুয়ায়ী বসানো হচ্ছে। সেখানেও ঝালাই করে দেওয়া হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কর্মরত এক শ্রমিক বলেন, গত শুক্রবার রাতে আমরা এখানে কাজ শুরু করেছি। এ পর্যন্ত ১৩টি প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।
আরও ৫টি প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন করা হবে। এরপর ভবনটিকে স্থিতিশীল বলা যাবে। এরপরও যদি আরও প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন করতে হয়, তবে রাজউকের পরামর্শে সেগুলো বসানোর কাজ চলবে। আপাতত ভবনটি অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত বলছেন এই শ্রমিকরা। প্রপিং সাপোর্ট বসানো শেষ হলে রাজউক ভবনের অ্যাসেসমেন্টের কাজ শুরু করবে। তবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির সামনের সড়কটি বন্ধ রেখেই ভবনের কাজ চলছে। সড়কের নির্দিষ্ট অংশ সাময়িক বন্ধ থাকায় সিদ্দিকবাজার থেকে গুলিস্তান হয়ে পুরানা পল্টন পর্যন্ত সড়কে যানবাহনের প্রচ- চাপও বেড়ে গেছে। এই সড়কে যানবাহন খুব ধীরগতিতে চলাচল করতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থল নিরাপদ রাখতে নিয়োজিত রয়েছেন র্যাব-পুলিশ সদস্যরা। এর আগে, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের প্রপিং সাপোর্ট স্থাপন কাজের অগ্রগতি দেখতে এসে রাজউকের জোন-৩ ও ৫ এর অথরাইজড অফিসার প্রকৌশলী রঙ্গন মন্ডল সাংবাদিকদের বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের অ্যাসেসমেন্ট করতে হবে। তারপর আমরা জানতে পারবো ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে না কি মেরামত করা যাবে।
এই অ্যাসেসমেন্ট করতে কম করে হলেও ৪৫ দিন সময় লাগবে। ৪৫ দিনের আগে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। গত ৭ মার্চ বিকেলে রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের কুইন্স স্যানেটারি মার্কেটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন শতাধিক। বিস্ফোরণের ঘটনায় রাজধানীর বংশাল থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার একটি অপমৃত্যুর মামলা এবং বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বিস্ফোরণের ঘটনায় অবহেলার অভিযোগ এনে অপর একটি মামলা দায়ের করা হয়।
দুটি মামলারই বাদী পুলিশ। মামলায় অজ্ঞাতনামা একাধিক ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের গ্যাস সংযোগ, নকশাসহ কী কী গাফিলতি রয়েছে এবং ভবন মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের কোনো দায় আছে কিনা-এসব অবহেলাজনিত বিষয়গুলো তদন্ত করে দেখবে পুলিশ।