এইচএসসির প্রশ্নে সাম্প্রদায়িক উসকানির অভিযোগ, শিক্ষামন্ত্রীর ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস

#
news image

 “নেপাল ও গোপাল দুই ভাই। জমি নিয়ে বিরোধ তাদের দীর্ঘদিন। অনেক সালিশ-বিচার করেও কেউ তাদের বিরোধ মেটাতে পারেনি। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এখন জমির ভাগ বণ্টন নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। ছোট ভাই নেপাল বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে আব্দুল নামে এক মুসলমানের কাছে ভিটের জমির একটি অংশ বিক্রি করে। আব্দুল সেখানে বাড়ি বানিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। কোরবানির ঈদে সে নেপালের বাড়ির সামনে গরু কোরবানি দেয়। এই ঘটনায় নেপালের মন ভেঙে যায়। কিছুদিন পর কাউকে কিছু না বলে জমি-জায়গা ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যায় সে। ”

এভাবেই হুবহু সৃজনশীল প্রশ্নের উদ্দীপক তুলে দেয়া হয় চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্নপত্রে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অংশটুকু ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক ‘উসকানিমূলক’ অংশ যুক্ত রাখার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, চিহ্নিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার (০৭ নভেম্বর) ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথম পত্রে ঢাকা বোর্ডের দুটি সৃজনশীল প্রশ্নে ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক উসকানির অভিযোগ উঠেছে।  

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া থাকে যে কী কী বিষয় মাথায় রেখে প্রশ্নগুলো তারা করবেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িকতার কোনো কিছু যেন না থাকে সেটিও নির্দেশিকায় আছে। খুবই দুঃখজনক যে কোনো একজন প্রশ্নকর্তা হয়তো এ প্রশ্নটি করেছেন এবং যিনি মডারেট করেছেন তার দৃষ্টিও হয়তো কোনো কারণে এড়িয়ে গেছে বা তিনিও হয়তো এটা স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন।

‘আমরা চিহ্নিত করছি এই প্রশ্নটি কোন সেটার করেছেন বা কোন মডারেটর করেছেন, আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। কারণ বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে কোনো পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক কোনো কিছু থাকবে- এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা আমরা চিহ্নিত করছি। যারা চিহ্নিত হবেন, এ ধরনের সাম্প্রদায়িকতা প্রশ্নের মধ্যে নিয়ে আসবেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের মনের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপণ করবেন, নিশ্চয়ই তাদেরকে পরে এই ধরনের কার্যক্রমের মধ্যে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত করা হবে না। ’

দীপু মনি বলেন, প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তায় আমরা এত রকমের ব্যবস্থা নিয়েছি। বিজি প্রেসে প্রশ্ন ছাপা হয় বা প্রশ্ন যখন মডারেটর দেখেন বা প্রশ্ন সেটেল করেন- এরকম একেটা ধাপের কোনো একটা জায়গায় যদি কোনো একটি ছোট বিচ্যুতি হয় সেটা ডিটেক্ট হয় একেবারে পরীক্ষার হলে যখন পরীক্ষার্থী প্রশ্ন হাতে পায় তখন। তার আগে ডিটেক্ট করার সুযোগ নেই। সেই কারণে এই ছোটখাটো সমস্যাগুলো থেকে যাচ্ছে। আমরা দেখি এটাও কী করে দূর করা যায়। এত সমস্যা যখন দূর করা যায় এটাও দূর করার একটা ব্যবস্থা বের করা যাবে নিশ্চয়ই।

আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার ঢাকা বোর্ডের ১১ নম্বর প্রশ্নপত্রে এমন ত্রুটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। প্রশ্ন ‘সেটার’ এবং ‘মডারেটরের’ কারণে এমনটা হতে পারে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ নভেম্বর, ২০২২,  12:29 AM

news image

 “নেপাল ও গোপাল দুই ভাই। জমি নিয়ে বিরোধ তাদের দীর্ঘদিন। অনেক সালিশ-বিচার করেও কেউ তাদের বিরোধ মেটাতে পারেনি। কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। এখন জমির ভাগ বণ্টন নিয়ে মামলা চলছে আদালতে। ছোট ভাই নেপাল বড় ভাইকে শায়েস্তা করতে আব্দুল নামে এক মুসলমানের কাছে ভিটের জমির একটি অংশ বিক্রি করে। আব্দুল সেখানে বাড়ি বানিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে। কোরবানির ঈদে সে নেপালের বাড়ির সামনে গরু কোরবানি দেয়। এই ঘটনায় নেপালের মন ভেঙে যায়। কিছুদিন পর কাউকে কিছু না বলে জমি-জায়গা ফেলে সপরিবারে ভারতে চলে যায় সে। ”

এভাবেই হুবহু সৃজনশীল প্রশ্নের উদ্দীপক তুলে দেয়া হয় চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্নপত্রে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অংশটুকু ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

চলমান এইচএসসি পরীক্ষায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক ‘উসকানিমূলক’ অংশ যুক্ত রাখার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, চিহ্নিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সোমবার (০৭ নভেম্বর) ঢাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

এইচএসসি পরীক্ষার বাংলা প্রথম পত্রে ঢাকা বোর্ডের দুটি সৃজনশীল প্রশ্নে ধর্মীয় বা সাম্প্রদায়িক উসকানির অভিযোগ উঠেছে।  

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমাদের সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়া থাকে যে কী কী বিষয় মাথায় রেখে প্রশ্নগুলো তারা করবেন। সেক্ষেত্রে অবশ্যই কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িকতার কোনো কিছু যেন না থাকে সেটিও নির্দেশিকায় আছে। খুবই দুঃখজনক যে কোনো একজন প্রশ্নকর্তা হয়তো এ প্রশ্নটি করেছেন এবং যিনি মডারেট করেছেন তার দৃষ্টিও হয়তো কোনো কারণে এড়িয়ে গেছে বা তিনিও হয়তো এটা স্বাভাবিকভাবে নিয়েছেন।

‘আমরা চিহ্নিত করছি এই প্রশ্নটি কোন সেটার করেছেন বা কোন মডারেটর করেছেন, আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। কারণ বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। এই বাংলাদেশে কোনো পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক কোনো কিছু থাকবে- এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা আমরা চিহ্নিত করছি। যারা চিহ্নিত হবেন, এ ধরনের সাম্প্রদায়িকতা প্রশ্নের মধ্যে নিয়ে আসবেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের মনের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বীজ বপণ করবেন, নিশ্চয়ই তাদেরকে পরে এই ধরনের কার্যক্রমের মধ্যে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত করা হবে না। ’

দীপু মনি বলেন, প্রশ্নপত্রের নিরাপত্তায় আমরা এত রকমের ব্যবস্থা নিয়েছি। বিজি প্রেসে প্রশ্ন ছাপা হয় বা প্রশ্ন যখন মডারেটর দেখেন বা প্রশ্ন সেটেল করেন- এরকম একেটা ধাপের কোনো একটা জায়গায় যদি কোনো একটি ছোট বিচ্যুতি হয় সেটা ডিটেক্ট হয় একেবারে পরীক্ষার হলে যখন পরীক্ষার্থী প্রশ্ন হাতে পায় তখন। তার আগে ডিটেক্ট করার সুযোগ নেই। সেই কারণে এই ছোটখাটো সমস্যাগুলো থেকে যাচ্ছে। আমরা দেখি এটাও কী করে দূর করা যায়। এত সমস্যা যখন দূর করা যায় এটাও দূর করার একটা ব্যবস্থা বের করা যাবে নিশ্চয়ই।

আন্তঃশিক্ষাবোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার ঢাকা বোর্ডের ১১ নম্বর প্রশ্নপত্রে এমন ত্রুটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ বিষয়ে ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। প্রশ্ন ‘সেটার’ এবং ‘মডারেটরের’ কারণে এমনটা হতে পারে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।