ইলন মাস্কের ‘পাখি’কে উড়তে হবে ইইউর আইন মেনে

#
news image

অভ্যন্তরীণ বাজারবিষয়ক ইউরোপীয় কমিশনার তিয়েরি ব্রেতঁ বলেছেন মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মের ব্যবসা ইউরোপে চালাতে গেলে জোটভুক্ত দেশগুলোর আইন মেনেই চলতে হবে ইলন মাস্ককে।

টুইটার নিজের অধীনে নিয়েই ইলন মাস্ক টুইট করেছিলেন, “পাখি এখন মুক্ত”। পাল্টা উত্তরে ব্রেতঁ বলেন,“পাখিকে ইউরোপে আমাদের নিয়ম মেনেই উড়তে হবে।”

শুক্রবারেই চার হাজার চারশ কোটি ডলারে টুইটার অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন ইলন মাস্ক। কোম্পানিটি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্রথমেই ছাঁটাই করেছেন কোম্পানির প্রধান নির্বাহীসহ শীর্ষ তিন কর্মকর্তাকে।

টুইটার ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়ার অনেক আগে থেকেই প্ল্যাটফর্মের সবচেয়ে খ্যাপাটে ব্যবহারকারীদের একজন হিসেবে আলাদা পরিচিত আছে ইলন মাস্কের। টেসলা ও স্পেসএক্সসহ নিজের অধীনে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকাণ্ড পোস্ট করার পাশাপাশি ইন্টারনেট মিম শেয়ার করা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত ক্ষোভ ঝাড়তেও বিভিন্ন সময়ে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করেছেন তিনি।

নিজেকে অতীতে বিভিন্ন সময়ে ‘বাকস্বাধীনতার চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবেও উপস্থাপন করেছেন মাস্ক; টুইটারের বর্ণনা দিয়েছেন ‘ডিজিটাল টাউন স্কয়্যার’ হিসেবে।

কার্যত, তার অধীনে টুইটার ব্যবহারকারীদের মতামতের প্রকাশের সুযোগের ওপর সীমাবদ্ধতা কম থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন তিনি।

মাস্কের এই মনোভাবই বাজার নিয়ন্ত্রকদের জন্য শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি। মাস্কের অধীনে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটিতে ভুয়া তথ্যের প্রচার আর বিদ্বেষপূর্ণ ভাবধারার প্রচার বাড়বে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

সম্প্রতি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে অনুমোদন পেয়েছে নতুন ‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’। নতুন আইনটির অধীনে বহুল ব্যবহৃত প্ল্যাটফর্মগুলোতে কঠোর ও কার্যকর মডারেশন ব্যবস্থা থাকতে হবে যেন বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য, সন্ত্রাসবাদে উস্কানী এবং শিশু নিপীড়ন সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট দ্রুত মুছে দেওয়া যায়।

টুইটারে বেআইনি কনটেন্ট না রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মাস্ক নিজেই, নতুন ‘কনটেন্ট মডারেশন কাউন্সিল’ গঠনের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে শুক্রবারেই টুইট করেছেন, “এই কাউন্সিলে থাকবে দৃষ্টিভঙ্গির বৈচিত্র্য। কাউন্সিলের সম্মতি ছাড়া কনটেন্ট বিষয়ে বড় কোনো সিদ্ধান্ত বা নিষিদ্ধ অ্যাকাউন্ট ফেরানো হবে না।”

আর ইউরোপীয় ইউনিয়নে নতুন আইন কার্যকর হবে ২০২৪ সাল থেকে। এ আইনের অধীনে কোম্পানিগুলোর বৈশ্বিক আয়ের ৬ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করতে পারবেন ইউরোপের কর্মকর্তারা।

এ প্রসঙ্গে শুক্রবারেই ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য গায় ভারহফস্টাড বলেছেন, “নীতিমালা এবং দায়িত্বশীলতার গুরুত্ব এখন অন্য যে কোনো সমেয় চেয়ে বেশি।”

“বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিতর্কের বিষয়টি এখন তো ওই এক ইলন মাস্কের মালিকানায়। সোশাল মিডিয়ায় বক্তব্য স্বব্যবস্থাপনার ভাবনা কখনোই কাজ করেনি।”

অন্যদিকে, ডিজিটাল খাতে ইউরোপের নীতিমালা পরিবর্তনের কারিগরদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচিত ব্রেতঁ। এর আগে ফরাসী কোম্পানি ‘অ্যাটস’-এর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’ এবং ‘ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট’ উভয় আইনের সঙ্গেই জড়িত ছিলেন তিনি। এর মধ্যে ‘ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট’ দিয়ে ইন্টারনেট জায়ান্ট হিসেবে পরিচিত কোম্পানিগুলোর আধিপত্য কমাতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

আর ‘বিগ টেক’ হিসেবে পরিচিতি কোম্পানিগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাই ‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’-এর লক্ষ্য বলে জানিয়েছে সিএনবিসি।

সংবাদমাধ্যম আরও জানিয়েছে, মে মাসেই দেখা হয়েছির ব্রেতঁ আর মাস্কের। সে সময়ে মাস্ক বলেছিলেন, ‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’ তার ভাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

কিন্তু আটলান্টিকের দুপাড়ের বাজার নিয়ন্ত্রকরাই মাস্কের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে শঙ্কিত।

 

অনলাইন ডেস্ক

৩০ অক্টোবর, ২০২২,  11:43 PM

news image

অভ্যন্তরীণ বাজারবিষয়ক ইউরোপীয় কমিশনার তিয়েরি ব্রেতঁ বলেছেন মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মের ব্যবসা ইউরোপে চালাতে গেলে জোটভুক্ত দেশগুলোর আইন মেনেই চলতে হবে ইলন মাস্ককে।

টুইটার নিজের অধীনে নিয়েই ইলন মাস্ক টুইট করেছিলেন, “পাখি এখন মুক্ত”। পাল্টা উত্তরে ব্রেতঁ বলেন,“পাখিকে ইউরোপে আমাদের নিয়ম মেনেই উড়তে হবে।”

শুক্রবারেই চার হাজার চারশ কোটি ডলারে টুইটার অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন ইলন মাস্ক। কোম্পানিটি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে প্রথমেই ছাঁটাই করেছেন কোম্পানির প্রধান নির্বাহীসহ শীর্ষ তিন কর্মকর্তাকে।

টুইটার ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়ার অনেক আগে থেকেই প্ল্যাটফর্মের সবচেয়ে খ্যাপাটে ব্যবহারকারীদের একজন হিসেবে আলাদা পরিচিত আছে ইলন মাস্কের। টেসলা ও স্পেসএক্সসহ নিজের অধীনে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকাণ্ড পোস্ট করার পাশাপাশি ইন্টারনেট মিম শেয়ার করা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত ক্ষোভ ঝাড়তেও বিভিন্ন সময়ে প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করেছেন তিনি।

নিজেকে অতীতে বিভিন্ন সময়ে ‘বাকস্বাধীনতার চ্যাম্পিয়ন’ হিসেবেও উপস্থাপন করেছেন মাস্ক; টুইটারের বর্ণনা দিয়েছেন ‘ডিজিটাল টাউন স্কয়্যার’ হিসেবে।

কার্যত, তার অধীনে টুইটার ব্যবহারকারীদের মতামতের প্রকাশের সুযোগের ওপর সীমাবদ্ধতা কম থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন তিনি।

মাস্কের এই মনোভাবই বাজার নিয়ন্ত্রকদের জন্য শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি। মাস্কের অধীনে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটিতে ভুয়া তথ্যের প্রচার আর বিদ্বেষপূর্ণ ভাবধারার প্রচার বাড়বে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।

সম্প্রতি ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে অনুমোদন পেয়েছে নতুন ‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’। নতুন আইনটির অধীনে বহুল ব্যবহৃত প্ল্যাটফর্মগুলোতে কঠোর ও কার্যকর মডারেশন ব্যবস্থা থাকতে হবে যেন বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য, সন্ত্রাসবাদে উস্কানী এবং শিশু নিপীড়ন সংশ্লিষ্ট কনটেন্ট দ্রুত মুছে দেওয়া যায়।

টুইটারে বেআইনি কনটেন্ট না রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মাস্ক নিজেই, নতুন ‘কনটেন্ট মডারেশন কাউন্সিল’ গঠনের ঘোষণাও দিয়েছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে শুক্রবারেই টুইট করেছেন, “এই কাউন্সিলে থাকবে দৃষ্টিভঙ্গির বৈচিত্র্য। কাউন্সিলের সম্মতি ছাড়া কনটেন্ট বিষয়ে বড় কোনো সিদ্ধান্ত বা নিষিদ্ধ অ্যাকাউন্ট ফেরানো হবে না।”

আর ইউরোপীয় ইউনিয়নে নতুন আইন কার্যকর হবে ২০২৪ সাল থেকে। এ আইনের অধীনে কোম্পানিগুলোর বৈশ্বিক আয়ের ৬ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করতে পারবেন ইউরোপের কর্মকর্তারা।

এ প্রসঙ্গে শুক্রবারেই ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্য গায় ভারহফস্টাড বলেছেন, “নীতিমালা এবং দায়িত্বশীলতার গুরুত্ব এখন অন্য যে কোনো সমেয় চেয়ে বেশি।”

“বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিতর্কের বিষয়টি এখন তো ওই এক ইলন মাস্কের মালিকানায়। সোশাল মিডিয়ায় বক্তব্য স্বব্যবস্থাপনার ভাবনা কখনোই কাজ করেনি।”

অন্যদিকে, ডিজিটাল খাতে ইউরোপের নীতিমালা পরিবর্তনের কারিগরদের অন্যতম একজন হিসেবে বিবেচিত ব্রেতঁ। এর আগে ফরাসী কোম্পানি ‘অ্যাটস’-এর প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’ এবং ‘ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট’ উভয় আইনের সঙ্গেই জড়িত ছিলেন তিনি। এর মধ্যে ‘ডিজিটাল মার্কেটস অ্যাক্ট’ দিয়ে ইন্টারনেট জায়ান্ট হিসেবে পরিচিত কোম্পানিগুলোর আধিপত্য কমাতে চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

আর ‘বিগ টেক’ হিসেবে পরিচিতি কোম্পানিগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাই ‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’-এর লক্ষ্য বলে জানিয়েছে সিএনবিসি।

সংবাদমাধ্যম আরও জানিয়েছে, মে মাসেই দেখা হয়েছির ব্রেতঁ আর মাস্কের। সে সময়ে মাস্ক বলেছিলেন, ‘ডিজিটাল সার্ভিসেস অ্যাক্ট’ তার ভাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

কিন্তু আটলান্টিকের দুপাড়ের বাজার নিয়ন্ত্রকরাই মাস্কের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে শঙ্কিত।