আসন্ন নতুন শিক্ষাবর্ষেও শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে সব বই হাতে পাবে না
নাগরিক সংবাদ অনলাইন
১৪ নভেম্বর, ২০২৫, 12:18 AM
আসন্ন নতুন শিক্ষাবর্ষেও শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে সব বই হাতে পাবে না
আসন্ন নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে সব বই হাতে পারে না। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থী হাতে সব বই পৌঁছাতে চলতি বছরও প্রায় তিন মাস দেরি হয়েছিল। তাতে ক্ষতির মুখে পড়ে শিক্ষার্থীরা। আর আসন্ন শিক্ষাবর্ষেও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। যদিও নতুন শিক্ষাবর্ষে বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য প্রাথমিক স্তরের অর্ধেকের বেশি বই ছাপিয়ে মাঠপর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু মাধ্যমিক স্তরের কোনো বই এখনো জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সরবরাহ করতে পারেনি। কারণ এখনো দেয়া হয়নি ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশই। আর নবম শ্রেণির বই ছাপার বিষয়ে মুদ্রণকারীদের সঙ্গে মাত্রই চুক্তি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নতুন শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক বই নিয়ে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। যদিও এবার মোট বইয়ের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম। কিন্তু তারপরও বই ছাপার জটিলতায় বই পেতে দেরি হবে শিক্ষার্থীদের। কারণ এবার ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই আবার দরপত্র দিয়ে ছাপানো হচ্ছে। তাছাড়া দেরি হয়েছে মাধ্যমিকে বই ছাপার কাজে মন্ত্রণালয় ও ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদন পেতেও। ফলে কঠিনই হবে বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছানো।
সূত্র জানায়. এবার প্রাথমিক বই ছাপায় কোনো সমস্যা নেই। আগামী বছর বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য প্রাথমিক স্তরের মোট পাঠ্যবই ৮ কোটি ৫৯ লাখ ২৫ হাজার ৩৭৯ কপি। তার মধ্যে ৬ কোটি ৬৫ লাখের বেশি বই ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ছাপা ও বাইন্ডিং সম্পন্ন হয়েছে। ৫ কোটি ৫১ লাখের বেশি বইয়ে সরবরাহ-পূর্ব পরিদর্শন (পিডিআই) সম্পন্ন হয়েছে। আর মাঠপর্যায়ে ৪ কোটি ৮৫ লাখের বেশি বই সরবরাহ করা হয়েছে।
যদিও গত বছর বই সরবরাহে দীর্ঘ দেরির কারণে এনসিটিবি এবার আগেভাগেই দরপত্র প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করে মূল্যায়নের কাজও সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু হঠাৎ ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সেপ্টেম্বর মাসে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার দরপত্র বাতিল করা হয়। ওই তিন শ্রেণির বইয়ের বাতিল হওয়া দরপত্র গত মে ও জুনে আহ্বান করা হয়েছিল। তারপর আবার দরপত্র আহ্বান করে এনসিটিবি। দরপত্র আহ্বানের পর যাচাই-বাছাই শেষ হলেও এখনো দেয়া যায়নি ওই তিন শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশ। ফলে মাধ্যমিক বই নিয়ে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। যদিও এবার মোট বইয়ের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম।
সূত্র আরো জানায়, মুদ্রণকারীদের সঙ্গে নবম শ্রেণির বই ছাপানোর জন্য চুক্তি হচ্ছে এবং চলছে ছাপার কাজও। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশও দেয়া হবে। এবার ষষ্ঠ শ্রেণির বইয়ের সংখ্যা ৪ কোটি ৪৩ লাখের বেশি, সপ্তম শ্রেণির ৪ কোটি ১৫ লাখের বেশি ও অষ্টম শ্রেণির মোট বই ৪ কোটি ২ লাখের বেশি। দরপত্রের নিয়ম অনুযায়ী কার্যাদেশের পর চুক্তি হবে। আর চুক্তির পর ৪৫ দিনের মধ্যে ওই তিন শ্রেণির বই ছাপিয়ে সরবরাহের কথা।
এমন অবস্থায় কার্যাদেশ ও চুক্তি সম্পন্ন করে জানুয়ারির শুরুতেই সব শিক্ষার্থীর হাতে বই দেয়া নিয়ে শঙ্কা আছে। আর এবার নবম শ্রেণির মোট পাঠ্যবই ৫ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ২৮ কপি। তাছাড়া ইবতেদায়ি স্তরের মোট বই ৩ কোটি ১১ লাখের বেশি। তার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ছাপা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী চুক্তির পর ৬০ দিনের মধ্যে নবম শ্রেণির বই সরবরাহের কথা। কিন্তু নভেম্বর-ডিসেম্বরে মুদ্রণকারীরা নোট ও গাইড ছাপানোয় ব্যস্ত থাকেন। আবার ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে পোস্টার ছাপানোর কাজও বাড়বে। সব মিলিয়ে জানুয়ারির শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছানো সম্ভব হবে না।
এদিকে এ প্রসঙ্গে এনসিটিবির বিদায়ী চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী জানান, নবম শ্রেণির বই ছাপানোর জন্য মুদ্রণকারীদের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে এবং ছাপার কাজও চলছে। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশও দু-এক দিনের মধ্যেই দেয়া হবে। প্রাথমিক স্তরের বই ছাপার অগ্রগতি ভালো। আশা করা যায় বছরের শুরুতেই সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেয়া যাবে।
নাগরিক সংবাদ অনলাইন
১৪ নভেম্বর, ২০২৫, 12:18 AM
আসন্ন নতুন শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীরা যথাসময়ে সব বই হাতে পারে না। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষার্থী হাতে সব বই পৌঁছাতে চলতি বছরও প্রায় তিন মাস দেরি হয়েছিল। তাতে ক্ষতির মুখে পড়ে শিক্ষার্থীরা। আর আসন্ন শিক্ষাবর্ষেও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। যদিও নতুন শিক্ষাবর্ষে বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য প্রাথমিক স্তরের অর্ধেকের বেশি বই ছাপিয়ে মাঠপর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে। কিন্তু মাধ্যমিক স্তরের কোনো বই এখনো জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) সরবরাহ করতে পারেনি। কারণ এখনো দেয়া হয়নি ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশই। আর নবম শ্রেণির বই ছাপার বিষয়ে মুদ্রণকারীদের সঙ্গে মাত্রই চুক্তি হচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নতুন শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক বই নিয়ে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। যদিও এবার মোট বইয়ের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম। কিন্তু তারপরও বই ছাপার জটিলতায় বই পেতে দেরি হবে শিক্ষার্থীদের। কারণ এবার ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই আবার দরপত্র দিয়ে ছাপানো হচ্ছে। তাছাড়া দেরি হয়েছে মাধ্যমিকে বই ছাপার কাজে মন্ত্রণালয় ও ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অনুমোদন পেতেও। ফলে কঠিনই হবে বছরের শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছানো।
সূত্র জানায়. এবার প্রাথমিক বই ছাপায় কোনো সমস্যা নেই। আগামী বছর বিনা মূল্যে বিতরণের জন্য প্রাথমিক স্তরের মোট পাঠ্যবই ৮ কোটি ৫৯ লাখ ২৫ হাজার ৩৭৯ কপি। তার মধ্যে ৬ কোটি ৬৫ লাখের বেশি বই ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ছাপা ও বাইন্ডিং সম্পন্ন হয়েছে। ৫ কোটি ৫১ লাখের বেশি বইয়ে সরবরাহ-পূর্ব পরিদর্শন (পিডিআই) সম্পন্ন হয়েছে। আর মাঠপর্যায়ে ৪ কোটি ৮৫ লাখের বেশি বই সরবরাহ করা হয়েছে।
যদিও গত বছর বই সরবরাহে দীর্ঘ দেরির কারণে এনসিটিবি এবার আগেভাগেই দরপত্র প্রক্রিয়া প্রায় শেষ করে মূল্যায়নের কাজও সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু হঠাৎ ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে সেপ্টেম্বর মাসে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠ্যবই ছাপার দরপত্র বাতিল করা হয়। ওই তিন শ্রেণির বইয়ের বাতিল হওয়া দরপত্র গত মে ও জুনে আহ্বান করা হয়েছিল। তারপর আবার দরপত্র আহ্বান করে এনসিটিবি। দরপত্র আহ্বানের পর যাচাই-বাছাই শেষ হলেও এখনো দেয়া যায়নি ওই তিন শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশ। ফলে মাধ্যমিক বই নিয়ে বড় ধরনের সংকট তৈরি হয়েছে। যদিও এবার মোট বইয়ের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম।
সূত্র আরো জানায়, মুদ্রণকারীদের সঙ্গে নবম শ্রেণির বই ছাপানোর জন্য চুক্তি হচ্ছে এবং চলছে ছাপার কাজও। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশও দেয়া হবে। এবার ষষ্ঠ শ্রেণির বইয়ের সংখ্যা ৪ কোটি ৪৩ লাখের বেশি, সপ্তম শ্রেণির ৪ কোটি ১৫ লাখের বেশি ও অষ্টম শ্রেণির মোট বই ৪ কোটি ২ লাখের বেশি। দরপত্রের নিয়ম অনুযায়ী কার্যাদেশের পর চুক্তি হবে। আর চুক্তির পর ৪৫ দিনের মধ্যে ওই তিন শ্রেণির বই ছাপিয়ে সরবরাহের কথা।
এমন অবস্থায় কার্যাদেশ ও চুক্তি সম্পন্ন করে জানুয়ারির শুরুতেই সব শিক্ষার্থীর হাতে বই দেয়া নিয়ে শঙ্কা আছে। আর এবার নবম শ্রেণির মোট পাঠ্যবই ৫ কোটি ৭০ লাখ ৬৮ হাজার ২৮ কপি। তাছাড়া ইবতেদায়ি স্তরের মোট বই ৩ কোটি ১১ লাখের বেশি। তার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ছাপা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী চুক্তির পর ৬০ দিনের মধ্যে নবম শ্রেণির বই সরবরাহের কথা। কিন্তু নভেম্বর-ডিসেম্বরে মুদ্রণকারীরা নোট ও গাইড ছাপানোয় ব্যস্ত থাকেন। আবার ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন ঘিরে পোস্টার ছাপানোর কাজও বাড়বে। সব মিলিয়ে জানুয়ারির শুরুতে সব শিক্ষার্থীর হাতে বই পৌঁছানো সম্ভব হবে না।
এদিকে এ প্রসঙ্গে এনসিটিবির বিদায়ী চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী জানান, নবম শ্রেণির বই ছাপানোর জন্য মুদ্রণকারীদের সঙ্গে চুক্তি হচ্ছে এবং ছাপার কাজও চলছে। ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির বই ছাপার কার্যাদেশও দু-এক দিনের মধ্যেই দেয়া হবে। প্রাথমিক স্তরের বই ছাপার অগ্রগতি ভালো। আশা করা যায় বছরের শুরুতেই সব শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দেয়া যাবে।