শিরোনামঃ
সেন্ট মার্টিনের সামুদ্রিক কচ্ছপ বাঁচাতে উদ্যোগ নিন  সৌদি আরবে প্রথম নারী ব্যান্ড হিসেবে প্রকাশ্যে গান গাওয়ার অনুমতি পেয়েছে ‘সিরা’ চট্টগ্রাম বন্দরের কনটেইনার ডিপোর ‘গোপন চুক্তি’ বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ উন্নত চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়া লন্ডন যাচ্ছেন জানুয়ারির প্রথমার্ধে  হাসিনার সরকারকে হটানোর পর গণতন্ত্র পুনর্গঠনের কাজ করছেন শিক্ষার্থীরা: নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন জাহাজে ৭ খুনের বিষয়ে যা জানালো স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাশিয়ার বহুতল ভবনে ৯/১১-র ধাঁচে ড্রোন হামলা! শিক্ষকদের আবাসন নীতিতে সংস্কার প্রয়োজন সাকিব-তামিম চাইলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে পারবেন: বিসিবি সভাপতি বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন

 চিকিৎসার নাম করে ৮৭ জনকে ধ.র্ষ.ণ! প্রকাশ পেল ২০ বছর পর

#
news image

আর্নের বিরুদ্ধে মোট ৯৪ জন মহিলাকে যৌ.ন নিগ্রহ ও ধ.র্ষ.ণের অভিযোগ আনা হয়েছে। টানা দু’দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এই কুকীর্তি চালিয়ে যান বলে অভিযোগ।

পেশায় নামদাজা চিকিৎসক। অথচ সেই ভদ্র, মার্জিত মুখের আড়ালে লুকোনো ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক চেহারা। ২০ বছর ধরে চিকিৎসার অছিলায় একের পর এক নারকীয় ঘটনা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে এক স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।

আর্নে বাই। নরওয়ের বাসিন্দা ৫৫ বছরের এই সুদর্শন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৮৭ জন মহিলাকে ধ.র্ষ.ণ করেছেন তিনি। ভ.য়াবহ সব অভিযোগ জমা পড়ে আর্নের বিরুদ্ধে। আর্নের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে নড়ে গিয়েছে নরওয়ে প্রশাসন।

নরওয়ের ফ্রোস্টা নামের একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা এই স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নাবালিকা ধ.র্ষণের. দু’টি মামলা-সহ বেশ কয়েকটি গুরুতর মামলা দায়ের হয়েছে।

এই ঘটনাটিকে নরওয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় যৌন কেলেঙ্কারি বলে বর্ণনা করা হয়েছে। আর্নের বিরুদ্ধে মোট ৯৪ জন মহিলাকে যৌন নিগ্রহ ও ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৭ জন তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন। টানা দু’দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এই কুকীর্তি চালিয়ে যান বলে অভিযোগ।

সংবাদমাধ্যম ‘দ্য সান’ জানিয়েছে, আর্নের শিকারদের মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সি ছিল এক ১৪ বছরের কিশোরী। তাঁর যৌন লালসার হাত থেকে রেহাই পাননি এক বৃদ্ধাও। ৬৭ বছর বয়সি এক বৃদ্ধাকে তাঁর লালসার শিকার হতে হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে।

গ্রেফতারের সময় আর্নের কাছ থেকে ছ’হাজার ঘণ্টার বেশি ভিডিয়ো ফুটেজ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ, যার মধ্যে তাঁর স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত পরীক্ষার সমস্ত রেকর্ডিং রয়েছে। রোগীদের অজান্তেই তাঁদের চিকিৎসার দৃশ্য রেকর্ড হয়ে যেত ক্যামেরায়।

রেকর্ডিংগুলি পরীক্ষা করে পুলিশ জানিয়েছে, এতে এমন ভিডিয়ো তোলা হয়েছে, যা অত্যন্ত সংবেদনশীল। চিকি‌ৎসকের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ একাধিক ক্যামেরার হদিস পায়। এগুলি ব্যবহার করেই রোগীদের চিকিৎসার সময় ভিডিয়ো তৈরি করতেন আর্ন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহিলাদের পরীক্ষা করার সময় নানা উদ্ভট পদ্ধতি বেছে নিতেন আর্নে। সম্পূ্র্ণ অবৈজ্ঞানিক ভাবে মহিলাদের যৌনাঙ্গ পরীক্ষার জন্য ছোট গোলাকার বোতল এবং নলের মতো বস্তু ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে রোগীদের তরফ থেকে।

বিগত কয়েক বছর ধরে নিজের গ্রামে বসেই এই কাণ্ড ঘটিয়ে গিয়েছেন এই চিকিৎসক। একটি-দু’টি করে অভিযোগ জমা পড়তেই বহু মহিলাই এই প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরব হন। আর্নের কাছে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নানা অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

আর্নের কাছে চিকিৎসা করাতে গিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন বলে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন এক রোগিণী। তিনি আদালতকে জানান, এমন কিছু যন্ত্রণাদায়ক চিকিৎসাপদ্ধতি আর্নে প্রয়োগ করেছিলেন, যাতে তাঁর মনে হয়েছিল তিনি মারা যেতে পারেন।

অন্য এক জন মহিলা অভিযোগ এনেছেন, গলায় ব্যথার জন্য আর্নের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। পরীক্ষানিরীক্ষার পর জ্ঞান ফিরলে ওই মহিলা দেখেন, একটি বেঞ্চে অন্তর্বাস পরে শুয়ে রয়েছেন তিনি। যে হেতু আর্নে তাঁদের গ্রামের চিকিৎসক ছিলেন, তাই তিনি যা যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তা অক্ষরে অক্ষরে মেনেছিলেন ওই মহিলা।

‘দ্য সান’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরীক্ষার সময় মহিলাদের তলপেটে মাসাজের নাম করে যৌন নিগ্রহ করতেন তিনি। নিজের চেম্বারে বসেই রোগী দেখার নাম করে যৌন লালসা মেটাতেন অভিযুক্ত চিকিৎসক।

নরওয়ের স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর ২০২২ সালের অগস্ট মাসে আর্নের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে নরওয়ের পুলিশ।

২০২৩ পর্যন্ত আর্নের বিরুদ্ধে কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা পড়েনি। তাই আর্নের পেশার উপর কোনও সরকারি বাধা আরোপ করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।

বিচার চলাকালীনও আর্নেকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে ২১ বছর কারাদণ্ড হতে পারে এই চিকিৎসকের।

মাত্র ২ হাজার ৬০০ বাসিন্দা থাকেন নরওয়ের ফ্রস্টার নামের এই ছোট্ট শহরটিতে। আর্নে একজন নামজাদা ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি খ্যাতনামা চিকিৎসক হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মারাত্মক অভিযোগ উঠে আসায় স্বাভাবিক ভাবেই তা নাড়িয়ে দিয়েছে নরওয়ের এই ছোট্ট জনপদের বাসিন্দাদেরও। উৎস: আনন্দবাজার পত্রিকা।

নাগরিক অনলাইন ডেস্ক

২৯ নভেম্বর, ২০২৪,  7:29 PM

news image

আর্নের বিরুদ্ধে মোট ৯৪ জন মহিলাকে যৌ.ন নিগ্রহ ও ধ.র্ষ.ণের অভিযোগ আনা হয়েছে। টানা দু’দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এই কুকীর্তি চালিয়ে যান বলে অভিযোগ।

পেশায় নামদাজা চিকিৎসক। অথচ সেই ভদ্র, মার্জিত মুখের আড়ালে লুকোনো ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন এক চেহারা। ২০ বছর ধরে চিকিৎসার অছিলায় একের পর এক নারকীয় ঘটনা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। এমনটাই অভিযোগ উঠেছে এক স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে।

আর্নে বাই। নরওয়ের বাসিন্দা ৫৫ বছরের এই সুদর্শন ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, ৮৭ জন মহিলাকে ধ.র্ষ.ণ করেছেন তিনি। ভ.য়াবহ সব অভিযোগ জমা পড়ে আর্নের বিরুদ্ধে। আর্নের ঘটনা প্রকাশ্যে আসতে নড়ে গিয়েছে নরওয়ে প্রশাসন।

নরওয়ের ফ্রোস্টা নামের একটি ছোট্ট গ্রামের বাসিন্দা এই স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নাবালিকা ধ.র্ষণের. দু’টি মামলা-সহ বেশ কয়েকটি গুরুতর মামলা দায়ের হয়েছে।

এই ঘটনাটিকে নরওয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় যৌন কেলেঙ্কারি বলে বর্ণনা করা হয়েছে। আর্নের বিরুদ্ধে মোট ৯৪ জন মহিলাকে যৌন নিগ্রহ ও ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৭ জন তাঁর বিরুদ্ধে সরাসরি ধর্ষণের অভিযোগ এনেছেন। টানা দু’দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এই কুকীর্তি চালিয়ে যান বলে অভিযোগ।

সংবাদমাধ্যম ‘দ্য সান’ জানিয়েছে, আর্নের শিকারদের মধ্যে সবচেয়ে কমবয়সি ছিল এক ১৪ বছরের কিশোরী। তাঁর যৌন লালসার হাত থেকে রেহাই পাননি এক বৃদ্ধাও। ৬৭ বছর বয়সি এক বৃদ্ধাকে তাঁর লালসার শিকার হতে হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে।

গ্রেফতারের সময় আর্নের কাছ থেকে ছ’হাজার ঘণ্টার বেশি ভিডিয়ো ফুটেজ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ, যার মধ্যে তাঁর স্ত্রীরোগ সংক্রান্ত পরীক্ষার সমস্ত রেকর্ডিং রয়েছে। রোগীদের অজান্তেই তাঁদের চিকিৎসার দৃশ্য রেকর্ড হয়ে যেত ক্যামেরায়।

রেকর্ডিংগুলি পরীক্ষা করে পুলিশ জানিয়েছে, এতে এমন ভিডিয়ো তোলা হয়েছে, যা অত্যন্ত সংবেদনশীল। চিকি‌ৎসকের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ একাধিক ক্যামেরার হদিস পায়। এগুলি ব্যবহার করেই রোগীদের চিকিৎসার সময় ভিডিয়ো তৈরি করতেন আর্ন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহিলাদের পরীক্ষা করার সময় নানা উদ্ভট পদ্ধতি বেছে নিতেন আর্নে। সম্পূ্র্ণ অবৈজ্ঞানিক ভাবে মহিলাদের যৌনাঙ্গ পরীক্ষার জন্য ছোট গোলাকার বোতল এবং নলের মতো বস্তু ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে রোগীদের তরফ থেকে।

বিগত কয়েক বছর ধরে নিজের গ্রামে বসেই এই কাণ্ড ঘটিয়ে গিয়েছেন এই চিকিৎসক। একটি-দু’টি করে অভিযোগ জমা পড়তেই বহু মহিলাই এই প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরব হন। আর্নের কাছে চিকিৎসা করাতে গিয়ে নানা অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা।

আর্নের কাছে চিকিৎসা করাতে গিয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন বলে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন এক রোগিণী। তিনি আদালতকে জানান, এমন কিছু যন্ত্রণাদায়ক চিকিৎসাপদ্ধতি আর্নে প্রয়োগ করেছিলেন, যাতে তাঁর মনে হয়েছিল তিনি মারা যেতে পারেন।

অন্য এক জন মহিলা অভিযোগ এনেছেন, গলায় ব্যথার জন্য আর্নের কাছে গিয়েছিলেন তিনি। পরীক্ষানিরীক্ষার পর জ্ঞান ফিরলে ওই মহিলা দেখেন, একটি বেঞ্চে অন্তর্বাস পরে শুয়ে রয়েছেন তিনি। যে হেতু আর্নে তাঁদের গ্রামের চিকিৎসক ছিলেন, তাই তিনি যা যা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন তা অক্ষরে অক্ষরে মেনেছিলেন ওই মহিলা।

‘দ্য সান’-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরীক্ষার সময় মহিলাদের তলপেটে মাসাজের নাম করে যৌন নিগ্রহ করতেন তিনি। নিজের চেম্বারে বসেই রোগী দেখার নাম করে যৌন লালসা মেটাতেন অভিযুক্ত চিকিৎসক।

নরওয়ের স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর ২০২২ সালের অগস্ট মাসে আর্নের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে নরওয়ের পুলিশ।

২০২৩ পর্যন্ত আর্নের বিরুদ্ধে কোনও আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা পড়েনি। তাই আর্নের পেশার উপর কোনও সরকারি বাধা আরোপ করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে।

বিচার চলাকালীনও আর্নেকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়নি বলেই জানা গিয়েছে। দোষী সাব্যস্ত হলে ২১ বছর কারাদণ্ড হতে পারে এই চিকিৎসকের।

মাত্র ২ হাজার ৬০০ বাসিন্দা থাকেন নরওয়ের ফ্রস্টার নামের এই ছোট্ট শহরটিতে। আর্নে একজন নামজাদা ব্যক্তিত্বের পাশাপাশি খ্যাতনামা চিকিৎসক হিসাবেও পরিচিত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক মারাত্মক অভিযোগ উঠে আসায় স্বাভাবিক ভাবেই তা নাড়িয়ে দিয়েছে নরওয়ের এই ছোট্ট জনপদের বাসিন্দাদেরও। উৎস: আনন্দবাজার পত্রিকা।