ইউপিগুলোতে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন প্রশাসক ও প্যানেল চেয়ারম্যান 

#
news image

দেশের ইউনিয়ন পরিষদগুলোর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন প্রশাসক ও প্যানেল চেয়ারম্যানরা। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের প্রায় দেড় হাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার (সদস্য) গাঢাকা দেন। তারা প্রায় সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান-মেম্বার। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সেবাপ্রার্থী মানুষের দুর্ভোগ কমাতে জনপ্রতিনিধি না থাকা ৩৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদে সরকার প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। আর স্থানীয় সরকার বিভাগ এক হাজার ৫৩টি ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে দেশের মোট চার হাজার ৫৮০টি ইউনিয়নের মধ্যে কতটিতে বর্তমানে চেয়ারম্যান-মেম্বার অনুপস্থিত তার তথ্য চেয়ে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) চিঠি পাঠিয়েছে। ডিসিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী বিগত সরকার পতনের পর দেশের এক হাজার ৪১৬টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা অনুপস্থিত রয়েছেন, যা মোট ইউনিয়ন পরিষদের এক-তৃতীয়াংশ।

এই চেয়ারম্যানদের বেশির ভাগের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কের পাশাপাশি নিজেদের ওপর হামলা হওয়ার আশঙ্কায় কার্যালয়ে যাচ্ছেন না। তবে তিন হাজার ১৬৪ জন চেয়ারম্যান নিয়মিত অফিস করছেন। কিন্তু কতসংখ্যক ইউপি সদস্য (মেম্বার) অনুপস্থিত রয়েছেন ওই তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সূত্র জানায়, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতির হার কম হলে প্রশাসক নিয়োগ না করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনা ছিল।

কিন্তু ডিসিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী ওই সংখ্যা মোটেও কম নয়। প্রায় দেড় হাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অফিস করছে না। আর এতো বিপুলসংখ্যক ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়ার মতো কর্মকর্তাও নেই। ফলে যেসব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত, কিন্তু বেশির ভাগ মেম্বার উপস্থিত সেখানে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

আর যেসব ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের পাশাপাশি বেশির ভাগ মেম্বারও অনুপস্থিত, সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগ ‘ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনার জন্য আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ’ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে।

তাতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে যে দেশে কিছু ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বর্তমানে ধারাবাহিকভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। এর ফলে ইউনিয়ন পরিষদের জনসেবাসহ সাধারণ কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। উদ্ভূত অসুবিধাগুলো দূর করতে দুটি আদেশ জারি করা হলো- এর একটি হলো অনুপস্থিত চেয়ারম্যানদের কাজ পরিচালনা এবং জনসেবা অব্যাহত রাখতে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩৩, ১০১ ও ১০২ অনুযায়ী বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসক নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানকে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করতে পারবেন।

অন্যটি হলো প্যানেল চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে অথবা যেকোনো জটিলতা দেখা দিলে বর্ণিত আইনের ধারা ১০১ ও ১০২ প্রয়োগ করে বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসক নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে তাঁর অধীন কর্মকর্তা যেমন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদগুলোকে সচল রেখে জনসেবা অব্যাহত রাখবেন।

ওই আদেশ জারির ফলে ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত চেয়ারম্যান না থাকলেও তাঁদের অনুপস্থিতিতে সরকারের নিয়োগ করা প্রশাসক ও প্যানেল চেয়ারম্যানদের কাজ করতে আর কোনো সমস্যা রইলো না। এ বিষয়ে বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ জানান, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জনপ্রতিনিধিরা নিরুদ্দেশ হয়েছেন।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বাররা গাঢাকা দিয়েছেন। যেখানে ১০ থেকে ১২ জন থাকার কথা, সেখানে হয়তো দু-তিনজন আছেন। এতে জনগণ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। এ বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে। শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নাগরিক নিউজ ডেস্ক

১৭ নভেম্বর, ২০২৪,  10:36 PM

news image

দেশের ইউনিয়ন পরিষদগুলোর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন প্রশাসক ও প্যানেল চেয়ারম্যানরা। দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশের প্রায় দেড় হাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার (সদস্য) গাঢাকা দেন। তারা প্রায় সবাই আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান-মেম্বার। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সেবাপ্রার্থী মানুষের দুর্ভোগ কমাতে জনপ্রতিনিধি না থাকা ৩৬৩টি ইউনিয়ন পরিষদে সরকার প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে। আর স্থানীয় সরকার বিভাগ এক হাজার ৫৩টি ইউনিয়ন পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগ সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে দেশের মোট চার হাজার ৫৮০টি ইউনিয়নের মধ্যে কতটিতে বর্তমানে চেয়ারম্যান-মেম্বার অনুপস্থিত তার তথ্য চেয়ে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) চিঠি পাঠিয়েছে। ডিসিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী বিগত সরকার পতনের পর দেশের এক হাজার ৪১৬টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা অনুপস্থিত রয়েছেন, যা মোট ইউনিয়ন পরিষদের এক-তৃতীয়াংশ।

এই চেয়ারম্যানদের বেশির ভাগের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকে গ্রেপ্তার আতঙ্কের পাশাপাশি নিজেদের ওপর হামলা হওয়ার আশঙ্কায় কার্যালয়ে যাচ্ছেন না। তবে তিন হাজার ১৬৪ জন চেয়ারম্যান নিয়মিত অফিস করছেন। কিন্তু কতসংখ্যক ইউপি সদস্য (মেম্বার) অনুপস্থিত রয়েছেন ওই তথ্য নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সূত্র জানায়, ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধিদের অনুপস্থিতির হার কম হলে প্রশাসক নিয়োগ না করে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা নেয়ার পরিকল্পনা ছিল।

কিন্তু ডিসিদের পাঠানো তথ্যানুযায়ী ওই সংখ্যা মোটেও কম নয়। প্রায় দেড় হাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অফিস করছে না। আর এতো বিপুলসংখ্যক ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসক নিয়োগ দেয়ার মতো কর্মকর্তাও নেই। ফলে যেসব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান অনুপস্থিত, কিন্তু বেশির ভাগ মেম্বার উপস্থিত সেখানে প্যানেল চেয়ারম্যান গঠন করে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

আর যেসব ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের পাশাপাশি বেশির ভাগ মেম্বারও অনুপস্থিত, সেখানে প্রশাসক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার বিভাগ ‘ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনার জন্য আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ’ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে।

তাতে বলা হয়, সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে যে দেশে কিছু ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বর্তমানে ধারাবাহিকভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত আছেন। এর ফলে ইউনিয়ন পরিষদের জনসেবাসহ সাধারণ কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। উদ্ভূত অসুবিধাগুলো দূর করতে দুটি আদেশ জারি করা হলো- এর একটি হলো অনুপস্থিত চেয়ারম্যানদের কাজ পরিচালনা এবং জনসেবা অব্যাহত রাখতে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ধারা ৩৩, ১০১ ও ১০২ অনুযায়ী বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসক নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যানকে আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করতে পারবেন।

অন্যটি হলো প্যানেল চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে অথবা যেকোনো জটিলতা দেখা দিলে বর্ণিত আইনের ধারা ১০১ ও ১০২ প্রয়োগ করে বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসক নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে তাঁর অধীন কর্মকর্তা যেমন- উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদগুলোকে সচল রেখে জনসেবা অব্যাহত রাখবেন।

ওই আদেশ জারির ফলে ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত চেয়ারম্যান না থাকলেও তাঁদের অনুপস্থিতিতে সরকারের নিয়োগ করা প্রশাসক ও প্যানেল চেয়ারম্যানদের কাজ করতে আর কোনো সমস্যা রইলো না। এ বিষয়ে বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ জানান, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর জনপ্রতিনিধিরা নিরুদ্দেশ হয়েছেন।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান-মেম্বাররা গাঢাকা দিয়েছেন। যেখানে ১০ থেকে ১২ জন থাকার কথা, সেখানে হয়তো দু-তিনজন আছেন। এতে জনগণ সেবা বঞ্চিত হচ্ছে। এ বিষয়ে কাজ করা হচ্ছে। শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।