শিশু টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হলে করণীয়

#
news image

সাম্প্রতিককালে শিশুদের জ্বরের প্রকোপ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ রোগের তীব্রতা অভিভাবক ও চিকিৎসকদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ডেঙ্গুজ্বর, টাইফয়েড জ্বর, প্রস্রাবে সংক্রমণজনিত জ্বর, রক্ত আমাশয় ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

পানিবাহিত রোগ টাইফয়েড জ্বর সালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে হয়ে থাকে। সংক্রমিত হওয়ার ১০ থেকে ১৪ দিন পর জ্বরসহ এ রোগের অন্য লক্ষণগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সালমোনেলা জীবাণু দূষিত পানি ছাড়াও দুধ অথবা দুগ্ধজাত সামগ্রী ব্যবহারের মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমিত হতে পারে। টাইফয়েডে প্রধানত জ্বর, যা ক্রমে সিঁড়ির ধাপের মতো বাড়তে থাকে; পাশাপাশি বমি, পাতলা পায়খানাসহ মাথাব্যথা হয়। এ ছাড়া পেটব্যথা, পেট ফুলে যাওয়াসহ জিহ্বার ওপর সাদা প্রলেপ পড়তে দেখা যায়।

সাত দিন জ্বর থাকার পর বুক-পেট ও পিঠে লালচে দানার মতো র‌্যাশ দেখতে পাওয়া যায়। প্রথম সাত দিনের জ্বর পার হওয়ার পরও যথাযথ চিকিৎসা শুরু না করলে শিশুদের মারাত্মক জটিলতা দেখা যায়। যেমনÑ খিঁচুনি, অসাড় বোধ করা, পেট ফুলে যাওয়া, রক্ত পায়খানা, জন্ডিস, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কখনো চতুর্থ সপ্তাহে এসে জ্বর নিজ থেকে ভালো হতে দেখা যায়। অন্যান্য জটিলতার মধ্যে নিউমোনিয়া, হাড়-অস্থি-সন্ধির প্রদাহ, স্নায়ুতন্ত্রের সংক্রমণ, হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশি ও কিডনির প্রদাহ দেখা দিতে পারে।

রোগ নির্ণয় : জ্বরের প্রথম সপ্তাহে টাইফয়েড জ্বর নির্ণয় করা বেশ কঠিন। তবে পরে রক্ত ও প্রস্রাব-পায়খানার কালচার পরীক্ষা এবং ভিডাল টেস্ট করে রোগ নিরূপণ করা সম্ভব। যখন হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে : মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, বারবার বমি, পেট ফুলে যাওয়া, পায়খানায় রক্ত, খিঁচুনি, অজ্ঞান হওয়ার মতো পরিস্থিতি হলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

চিকিৎসা : পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়া ও বিশ্রাম, জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল সিরাপ বা ট্যাবলেট দেওয়া যাবে। রক্তের কালচার পরীক্ষা করে যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হবে। জ্বর কমে যাওয়ার পরও ৩ থেকে ৫ দিন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে হবে।

প্রতিরোধ : পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা, নিরাপদ পানি বা খাবার গ্রহণ, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার, টিকা প্রদান করার মাধ্যমে টাইফয়েড থেকে মুক্ত থাকা যায়। টাইফয়েড ছোঁয়াচে জ্বর নয়। সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা নিলে শতভাগ ক্ষেত্রে এ রোগ ভালো হয়। তাই চিকিৎসা এর পরামর্শ নিয়ে রাখা উচিত।

নাগরিক নিউজ ডেস্ক

১১ নভেম্বর, ২০২৪,  7:23 PM

news image

সাম্প্রতিককালে শিশুদের জ্বরের প্রকোপ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে এ রোগের তীব্রতা অভিভাবক ও চিকিৎসকদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ডেঙ্গুজ্বর, টাইফয়েড জ্বর, প্রস্রাবে সংক্রমণজনিত জ্বর, রক্ত আমাশয় ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

পানিবাহিত রোগ টাইফয়েড জ্বর সালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে হয়ে থাকে। সংক্রমিত হওয়ার ১০ থেকে ১৪ দিন পর জ্বরসহ এ রোগের অন্য লক্ষণগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সালমোনেলা জীবাণু দূষিত পানি ছাড়াও দুধ অথবা দুগ্ধজাত সামগ্রী ব্যবহারের মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমিত হতে পারে। টাইফয়েডে প্রধানত জ্বর, যা ক্রমে সিঁড়ির ধাপের মতো বাড়তে থাকে; পাশাপাশি বমি, পাতলা পায়খানাসহ মাথাব্যথা হয়। এ ছাড়া পেটব্যথা, পেট ফুলে যাওয়াসহ জিহ্বার ওপর সাদা প্রলেপ পড়তে দেখা যায়।

সাত দিন জ্বর থাকার পর বুক-পেট ও পিঠে লালচে দানার মতো র‌্যাশ দেখতে পাওয়া যায়। প্রথম সাত দিনের জ্বর পার হওয়ার পরও যথাযথ চিকিৎসা শুরু না করলে শিশুদের মারাত্মক জটিলতা দেখা যায়। যেমনÑ খিঁচুনি, অসাড় বোধ করা, পেট ফুলে যাওয়া, রক্ত পায়খানা, জন্ডিস, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। কখনো চতুর্থ সপ্তাহে এসে জ্বর নিজ থেকে ভালো হতে দেখা যায়। অন্যান্য জটিলতার মধ্যে নিউমোনিয়া, হাড়-অস্থি-সন্ধির প্রদাহ, স্নায়ুতন্ত্রের সংক্রমণ, হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশি ও কিডনির প্রদাহ দেখা দিতে পারে।

রোগ নির্ণয় : জ্বরের প্রথম সপ্তাহে টাইফয়েড জ্বর নির্ণয় করা বেশ কঠিন। তবে পরে রক্ত ও প্রস্রাব-পায়খানার কালচার পরীক্ষা এবং ভিডাল টেস্ট করে রোগ নিরূপণ করা সম্ভব। যখন হাসপাতালে ভর্তি হতে হবে : মাত্রাতিরিক্ত জ্বর, বারবার বমি, পেট ফুলে যাওয়া, পায়খানায় রক্ত, খিঁচুনি, অজ্ঞান হওয়ার মতো পরিস্থিতি হলে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিতে হবে।

চিকিৎসা : পুষ্টিকর খাওয়া-দাওয়া ও বিশ্রাম, জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল সিরাপ বা ট্যাবলেট দেওয়া যাবে। রক্তের কালচার পরীক্ষা করে যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হবে। জ্বর কমে যাওয়ার পরও ৩ থেকে ৫ দিন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খেতে হবে।

প্রতিরোধ : পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলা, নিরাপদ পানি বা খাবার গ্রহণ, স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার, টিকা প্রদান করার মাধ্যমে টাইফয়েড থেকে মুক্ত থাকা যায়। টাইফয়েড ছোঁয়াচে জ্বর নয়। সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা নিলে শতভাগ ক্ষেত্রে এ রোগ ভালো হয়। তাই চিকিৎসা এর পরামর্শ নিয়ে রাখা উচিত।